ইনসাইড টক

‘পাকিস্তানের ওদ্ধত্যপূর্ণ কাজের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/11/2021


Thumbnail

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, এটাতো অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। কারণ খেলাধুলার প্র্যাকটিসে কখনো কোনো জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত গাওয়ার নিয়ম নেই। একমাত্র বিদেশের মধ্যে ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা যথাযথভাবে নিয়ম অনুযায়ী উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু পাকিস্তানি ক্রিকেট দল যেটা করেছে, তা চরম ধৃষ্টতা, ওদ্ধত্যপূর্ণ। এটাকে আমরা মনে করি, বাংলাদেশের ক্রিয়া নীতির প্রতি চরম অবজ্ঞা। তারা এ ধরণের কাজ আগেও করেছে। আমি মনেকরি ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের উচিত তাদের কৈফিয়ত তলব করা এবং তাদেরকে এ ওদ্ধত্যপূর্ণ কাজের জন্য ক্ষমা চাইতে বলা। তারা যদি তা না করে, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলার কোনো দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। 

বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তান ক্রিকেট দল অনুশীলনের সময় পাকিস্তানী পতাকা উড়ানো সহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শাহরিয়ার কবির এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য শাহরিয়ার কবির এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম।

এখানে রাজনীতি আছে কি না জানতে চাইলে শাহরিয়ার কবির বলেন, এটা সবসময়ই রাজনীতির ব্যাপার। তারা তো কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, পাকিস্তান কর্তৃক গণহত্যা কোনো কিছুই স্বীকৃতি দেয়নি। যেই মিরপুর স্টেডিয়ামে তারা এই কাজটি করেছে, এই গোটা মিরপুরই একাত্তর সালে ছিল পাকিস্তানের বধ্যভূমি। ঢাকার সবচেয়ে বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এই মিরপুরে। সেই শহীদদের প্রতি তো তাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই। একাত্তর সালে তারা যাদের হত্যা করেছে, এখন সেই জায়গায় পাকিস্তানের পতাকা উড়াচ্ছে। প্রতিবাদ করাটা ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব। সব ব্যাপারে তো প্রধানমন্ত্রী বা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কথা বলার দরকার নেই। এর জন্য ক্রিকেট বোর্ডই যথেষ্ট। ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড তাদের কাছে কৈফিয়ত তলব করবে যে কেন তারা প্রথা ভেঙ্গে এটা করেছে? পাশাপাশি এ ঘৃণ্য কাজের জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন কাণ্ড না ঘটায় তার জন্য সতর্ক করে দেবে। যদি পাকিস্তান এটা না করে তাহলে তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠিয়ে দিতে হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট না খেললে আমাদের ক্রিকেটের মান কমে যাবে না।

তিনি আরও বলেন, তাদের উচিৎ হচ্ছে পাকিস্তানের কাছে এটা কৈফিয়ত তলব করা। বাংলাদেশে এসে তারা এভাবে আমাদের শহীদদের অবমাননা করবে, প্রথা ভাঙ্গবে, এটা তো হতে পারেনা। এটা তো প্রথা ভঙ্গ, পৃথিবীর কোন দেশে এই ধরণের নিয়ম নাই। তার মানে বাংলাদেশে কোন নিয়ম-নীতি আছে, এটা তারা মানার দরকার মনে করে না। পাকিস্তানী পতাকা উড়িয়ে দিল। আমাদের পতাকা উড়াবার কতগুলো নিয়ম আছে। বাংলাদেশের মাটিতে বিদেশী পতাকা যখন-তখন যেখানে-সেখানে উড়ানো যায় না। বিশেষ করে বিদেশিরা। খেলার সময় কোন বাংলাদেশী পতাকা দেখালে আমরা তার সমালোচনা করতে পারি কিন্তু সেটা আইনত নিষিদ্ধ না। কিন্তু এরা যেটা করেছে এটা তো বে-আইনি কাজ করেছে, নীতি বহির্ভূত কাজ এটা। পৃথিবীর কোন দেশে এটা করা হয়না।

শাহরিয়ার কবির বলেন, এই ধরণের ধৃষ্টতা পাকিস্তান ক্রিকেট দল আগেও এখানে দেখিয়েছে। আমাদের অনেকের মধ্যে তো এখনো পাকিস্তান প্রেম আছে। একাত্তরে যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে গণহত্যায় সহযোগিতা করেছিল তারা তো এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের মধ্যেও তাদের অনেকে অনুপ্রবেশ করেছে। আমাদের যেটা বলার আমরা সেটা বলে যাচ্ছি ধারাবাহিকভাবে। আমরা সবসময় বলেছি যে পাকিস্তানের দূতাবাস বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছে সেটার সমালোচনা করেছি। বলেছি যে কূটনৈতিক পর্যায়ের সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ের নামিয়ে আনার জন্য। কারণ, বারবার তারা আমাদের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে কটাক্ষ করেছে। গণহত্যাকে অস্বীকার করছে, গণহত্যার দায় বাংলাদেশের ওপর চাপাচ্ছে। তাদের ধৃষ্টতার তো কোন অন্ত নেই। তো সেই জন্য তারা ক্রিকেট খেলতে এসেও সেই ধরণের ধৃষ্টতা প্রদর্শন করবে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করবে, ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের নিয়ম-নীতিকে অগ্রাহ্য করবে এটাতো মেনে নেয়া যায়না। গর্হিত অপরাধ তারা করেছে, এর জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭