ইনসাইড টক

‘একটা দেশের উপর সব অস্ত্রের নির্ভরশীল হওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ’


প্রকাশ: 18/11/2021


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, সব দেশেরই প্রতিরক্ষার বিষয়ে কোন একটা দেশের উপর নির্ভরশীল হতে চায় না। বিশেষ করে যেসব দেশ অস্ত্র নিজে উৎপাদন করে না, বাহির থেকে যারা নেয়। যেহেতু আমরা বড় আকারে অস্ত্র উৎপাদন করি না এবং সেই ধরণের অস্ত্রের গবেষণাও আমাদের দেশে এখনো হয়নি। তো আমরা বাহির থেকে কিনি। সে হিসাবে একটা দেশের উপর সব অস্ত্রের নির্ভরশীল হওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। কোন সন্দেহ নেই, আমাদের এখন যত বেশি পার্টনার হবে তত এটা সুবিধা।

স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন কপ-২৬’ এ বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন শেষে ফ্রান্সের সঙ্গে হওয়া তিনটি চুক্তি এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরের ফলে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কেমন হবে এইসব বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তবে দ্বিতীয়টা হলো এই যেটা আরো গুরুত্বপূর্ণ যে, যতটা না আমরা আগ্রহী এ ব্যাপারে তার চেয়ে ফ্রান্স আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এমনকি এর আগে ইউকেও নৌ-জাহাজ দিতে চেয়েছিল, যদিও আমরা ওটা আপাতত একসেপ্ট করিনি। অন্য দেশগুলো বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সাহায্য বা লোন দেয়ার ব্যাপার, এক ধরণের টেকনোলজি ট্রান্সফারে তারা আগ্রহী। এর একটা বড় কারণ হলো যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেহেতু মোটামুটি একটা ভালো অবস্থায় এসেছে এবং অনেকেই মনে করেন যে ভবিষ্যতে একটা ভালো ট্র্যাক যেহেতু আছে সেখানে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা আরো বাড়বে এতে কোন সন্দেহ নেই। যেকোনো দেশ যত বেশি তার ডেভেলপমেন্ট হয়, তার প্রতিরক্ষাও সেইভাবে বাড়ে।

ফ্রান্সের আগ্রহটা বেশি হওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি যে, যেহেতু সে কিছুদিন আগে অনেকটা হোঁচট খেয়েছে যে, আমেরিকা, ইউকে এবং অস্ট্রেলিয়া -এই তিন দেশ যেভাবে একত্রিত হয়েছে ফ্রান্সকে বাদ দিয়ে এবং ফ্রান্সের যে চুক্তি ছিলো অস্ট্রেলিয়ার সাথে সেটাও বাদ পড়েছে। এই হোঁচট খাওয়ার ফলে যেটা হয়েছে, ফ্রান্সও চাইবে সরাসরি এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক করার। কারণ, সে বুঝতে পেরেছে যে আমেরিকা অত নির্ভরশীল না এবং বিশেষ করে আমেরিকা, ইউকে এবং অস্ট্রেলিয়া -এই তিন দেশ এক হওয়ায় ফ্রান্স ভালো করে বুঝতে পেরেছে এটা ইংরেজি ভাষার তিনটা রাষ্ট্র এক হয়েছে। সেখানে তার মধ্যে স্বাভাবিকভাবে এক ধরণের চিন্তা আসাটাই স্বাভাবিক যেটা হয়তো ইতিহাসেও এক সময় ছিলো। তো ওই হোঁচট খাওয়ার ফলে ফ্রান্সও চাইবে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক করা এবং এশিয়ায় একটা উপস্থিতি যেন থাকে, সেটা যেন আমেরিকার মাধ্যমে যেন না  হয় বা অন্য দেশের মাধ্যমে যেন না হয়। সে হিসবেও তারা মনে করে যে, বাংলাদেশের সাথে, যেহেতু বাংলাদেশের একটা জিও পলিটিকাল ইম্পোর্ট্যান্স দিন দিন বাড়ছে, সে হিসেবে তার সাথে যদি একটা প্রতিরক্ষার সম্পর্ক করতে পারে তাহলে তার দিক থেকে তার যে জাতীয় স্বার্থ সেটাও রক্ষা হলো। তো সব মিলিয়ে আমি মনে করি যে এটা একটা ভালো জিনিস। কারণ, কোন একটা দেশের উপর এককভাবে নির্ভরশীল হওয়াটা প্রতিরক্ষার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তো সেই যায়গা থেকে আমি মনে করি একটা পজিটিভ স্টেপ।

ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নে অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ফ্রান্সের সাথে চীনের কোন দ্বন্দ্ব নেই। যেই দ্বন্দ্ব আছে আমেরিকা, ব্রিটেনের সাথে। এখন অস্ট্রেলিয়াও হয়তো ঢুকেছে। ফ্রান্স বা ইউরোপের সাথে বড় আকারে চীনের সঙ্গে সেই রকম কোন কম্পিটিশন না। মনে রাখতে  হবে যে অস্ত্রের বিভিন্ন দিক থাকে। তো সেই হিসেবে ফ্রান্স থেকে যেটা আনা হবে সেটা আনলেই যে চীন চিন্তিত হয়ে যাবে এমন নয়। কারণ আমাদের ফরেন পলিসি কখনোই একটা দেশের সাথে অন্য দেশের মিলাই না। তো চীনের বন্ধু যারা চীনের বন্ধু, চীনের শত্রু যারা চীনের শত্রু। এমনকি ফ্রান্সের শত্রু ফ্রান্সের শত্রু, তারা বাংলাদেশের শত্রু না। তো সেই হিসেবে আমার মনে হয়না যে এখানে চীনের চিন্তার কোন কারণ আছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭