নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 24/11/2017
ওমর ফারুক মগবাজার রেল লাইনের পাশেই একটি খাবার হোটেল চালান। ৩-৪ জন কর্মচারী ও স্ত্রীকে নিয়ে হোটেলটি চালাচ্ছেন তিনি। পাশের কারওয়ান বাজার থেকে মোটের বাজার-সদাই করেন। শুক্রবার সকালে হোটেলের বাজার করতে এসেছেন ফারুক। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। জানালেন, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে।
তাঁর কথার প্রমাণ পাওয়া গেল গুটিকয়েক দোকান ঘুরে। আবারও পেঁয়াজের ঝাঁজে অস্থির সাধারণ ক্রেতা। মাত্র একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। পাশাপাশি উর্ধ্বমুখী প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। গত সপ্তাহে বেশ কিছু সবজির দাম কেজিতে ৩০ টাকায় নেমে এলেও আজ ৪০ টাকার নিচে কেনাই যাচ্ছে না।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৭০-৭৫ টাকা। আর এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬৫-৭০ টাকায়।
অন্যদিকে, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এক লাফে বেড়ে কেজিতে হয়েছে ৮০ টাকা, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৫০-৫৫ টাকায়। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে এর দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রহমত আলী জানান, চলতি মাসের শুরুতে পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পর মাঝে কিছুটা কমেছিল। কিন্তু আজ আবার বেড়েছে। মূলত আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাবে দেশি পণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী।
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, এখন দাম কমার কথা। কারণ কিছুদিন পরেই বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা হচ্ছে না, বরং দাম বেড়েছে। এটা ঠিক নয়।
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউয়ে বাজার ভরপুর। সঙ্গে ঝিঙা, পটল, করলা, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, শালগম, পাঁকা ও কাঁচা টমেটা সবকিছুর সরবরাহই রয়েছে পর্যাপ্ত। এরপরও প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।
দরবৃদ্ধির তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে পাকা টমেটো। প্রতি কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ১০০-১১০ টাকা। সে হিসেবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা।
গত সপ্তাহে প্রতি কেজি শিম ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও আজ তা ১০ টাকা বেড়ে হয় ৫০-৫৫ টাকায়। বেগুনের দাম ৪০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০ টাকা। আর প্রতি কেজি পটলের দাম গত সপ্তাহে ৩০ টাকায় নামলেও আজ সকালে বিক্রি হয় ৪০-৫০ টাকায়। তবে মূলা আগের মতোই ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শালগম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। আর ৩০ টাকায় নেমে আসা ধুন্দলের কেজি আবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা।
তবে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে করলা। এ সবজিটির কেজি ৪০-৪৫ টাকা। আর ৩০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি ও বাধাকপি আজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. জামান বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের সবজি ভরপুর। আড়তে কোনো সবজির অভাব নেই। কিন্তু এরপরও সেখানে দাম চড়া। আর বেশি দামে কিনে আনার কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমার হিসেব মতে এখন কোনো সবজির দাম ৩০ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। কিন্তু বাজারে আজ কোনো সবজিই ৪০ টাকার নিচে পাবেন না।
এ ছাড়া স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির মাংসের বাজারও। সাদা ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতোই ১২০-১২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লাল কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংস ৪৮০ এবং খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএ/টিবি
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭