ইনসাইড থট

নৌকা বিজয়ের প্রতীক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/11/2021


Thumbnail

বিশ্বের শোষিত বঞ্চিত নিপিড়িত নির্যানিতত মেহনতী মানুষের অসংবাদিত নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রকৃতি, মাটি ও মানুষের সাথে ছিল তাঁর আত্মার সম্পর্ক সে কারণে তিনি প্রকৃতি ও মানুষের ভাষা বুঝতেন পারতেন। নদী মাতৃক এদেশে আবাহমান কাল ধরে প্রধান বাহন ছিল নৌকা। নদীতে পাল তুলে চলত বিভিন্ন ধরনের নৌকা আবার বড় বড় কোষা নৌকায় শুনটেনে মাঝিরা গান ধরতো মাঝি বাইয়া যাওরে, নাইয়া ধীরে চালাও তরণী এ ধরনের অনেক আকর্ষনীয় গান। বঙ্গবন্ধু তাইতো বেছে নিয়ে ছিলেন নৌকা দলীয় প্রতীক হিসেবে। দীর্ঘ ২৪ বছর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের মাঝে শোষণ, বঞ্চনা আর বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি স্বাধীকার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার জন্য শারীরীক ও মানসিক ভাবে জনগণকে প্রস্তুত করে ছিলেন। আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে নৌকা একাকার হয়ে অনুপ্রেরনার প্রতীক হিসেবে শক্তি যুগিয়েছিল। ১৯৬৯ সালের গন অভ্যুত্থানের পর দিয়ে ১৯৭০ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে ঐতিহাসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে পূর্ব বাংলার ১৬০টি এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৭টি আসনসহ মোট ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয় লাভের মধ্যদিয়ে বাংলার জনগণের নিরুঙ্কুশ ম্যান্ডেট লাভ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবির্ভূত হন বাংলার গণমানুষের অসংবাদিত ও অপ্রতিদ্বন্দী নেতা হিসেবে। নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ সংখ্যা গরিষ্ঠ আসন পেয়ে একক বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। নির্বাচনের এ ফলাফলে পাকিস্তানী শাষক গোষ্ঠি হতচকিত ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে নতুন যড়যন্ত্র আরম্ভ করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়। বঙ্গবন্ধু দৃঢ়তার সাথে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং দলীয় নেতা কর্মীদের সংগঠিত করে এ দেশের মানুষকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে থাকেন। তিনি ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জনে চূড়ান্ত সংগ্রামের আহব্বান জানিয়ে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই জগৎ বিখ্যাত ভাষনে তিনি বলেন, `এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

২৫ শে মার্চ কালরাত্রিতে পাক হানদার বাহিনী বাংলার মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন নেতা গড়ার এক নিপুণ কারিগর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে তিনি জাতীয় পর্যায়, বিভাগ, জেলা ও থানা পর্যায়ে বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্ব তৈরী করে ছিলেন। তিনি ছিলেন এ বিষয়ে খুব উদার, শিক্ষা যেমন দান করলে বেড়ে যায় সে রকম নেতৃত্বের গুণাবলি দান করলেও বেড়ে যায় আর এ কারণেই বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্য ও অপ্রতিদ্বন্দী মহান নেতা। মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে ১০ এপ্রিল এ দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এক অধিবেশনে মিলিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা অনুমোদন করেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করেন। ঐ দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে গঠন করা হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর বলে খ্যাত মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা আম্রকাননে স্বাধীন সর্বভৌম বাংলাদেশের সরকার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করে।

বিশ্ব বরেণ্য রাজনীতিবিদ ও মহিয়ষী নারী তৎকালীন ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দীরা গান্ধী প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার পরিচালনা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষন ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেন। তিনি প্রায় ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান করে তাদের খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। প্রবাসী আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে পরিচালিত ৯ মাসের বীরোচিত মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্ত এবং তিন লক্ষাধিক মা-বোনের হিন্দুতের বিনিময়ে বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পনের মধ্যদিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ানি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি কাল বিলম্ব না করে শুরু করেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের দুরাহ কাজ। একান্ত শূন্যহাতে তিনি দেশ পুনর্গঠনের কাজ আরম্ভ করেন কিন্তু তাঁর চলার পথ মশূন ছিল না। দেশ গঠনে সহযোগিতার বিপরীতে শুরু হয় বিরুধিতা আর বৈরিতা। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে জাসদ ভাক্তন সৃষ্টি করে দেশের রাজনীতিতে সর্বনাশা আগুন জালিয়ে দেয়।। স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতারা বিভক্তির মাধ্যমে শুরু করে চরম নৈরাজ্য উগ্র হঠকারী স্লোগন ও কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত হয় পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির সিরাজ শিকদার। রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধি দের হত্যা, ব্যাংক লট, থানালুট ও পাটের গুদামে আগুনসহ তারা দেশে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আর বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে চালায় চরম মিথ্যা কুৎসা, প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা। এত কিছু প্রতিকূলতার মধ্যে ও বঙ্গবন্ধু দৃঢ়চিত্তে দেশগড়ার কাজে ব্রতী হন। তিনি প্রতিটি সেক্টরে সংস্কার আর নতুন অবয়বে রূপ দান করেন।

বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টিসহ বাম প্রগতিশীল দলগুলো সে সময় দৃঢ়ভাবে বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়ালে তাঁর পক্ষে অরাজগতা দমন অনেক সহজ হতো। তথাকতি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের বৈরী কর্মকান্ডের সুযোগ নেয় স্বাধীনতা বিরোধী দেশী ও বিদেশী অপশক্তি। অবশেষে প্রাসাদ যড়যন্ত্রের স্বীকার হয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট নৃশংসভাবে জীবন দিতে হয় বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে। পরবর্তীতে বাংলার মীর জাফর খন্দকার মোস্তাক আহমেদকে হঠিয়ে সামরিক ফয়মানে ক্ষমতা দখলকরে ১৫ আগষ্টের নেপথ্য নায়ক জিয়াউর রহমান। শুরু হয় হত্যা-কুর রাজনীতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর একই কায়দায় ক্ষমতা দখল করে সেনা শাসক হুয়েইন মোহাম্মাদ এরশাদ। চরম বৈরীতার মধ্যে চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি সে সময় নেতাদের মধ্যে দেখা দেয় অনৈক্য ও বিভেদ এ পর্যায়ে ১৯৮১ সালে ইডেন কাউন্সিলে দিল্লিতে নির্বাচিত মুজিব কন্যা শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের ঐকের প্রতীক হিসেবে সভানেত্রী নির্বাচিত করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের এক পর্যায়ে ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার এক পর্যায়ে নৌকা প্রতীকের বিজয় ১০০ আসন অতিক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে টনক নড়ে সামরিক জান্তা এরশাদ সাহেবের। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত ভেবে তিনি মধ্য রাতে হঠাৎ ফলাফল প্রকাশ বন্ধ করেন। নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিয়ে আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতীককে হারানো হয়। ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে জোট সরকার গঠন করে। ২০০১ সালে লতিফ সাহেবের তত্ত্বাবধায় সরকার ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগ তথা নৌকা প্রতীকে হারিয়ে দেয়। শুরু হয় সাম্প্রদায়িকতা, নির্যাতন আর প্রতিহিংসার রাজনীতি জীবন দিতে হয় অগনিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীর। নিপিড়ন আর নির্যাতন করে অকুতোভয় শেখ হাসিনাকে দমানো যায় নি। তিনি সব রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যান। ২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লবে নৌকা প্রতীকের বিশাল নিরুঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা দিয়েছেন কিন্তু অর্থ নৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি তাঁকে সে সুযোগ দেয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজের সূত্রধরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নৌকা কের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা দীর্ঘ ১২ বছর শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকায় উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশের গড়ার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হচ্ছেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে আওয়ামী লীগ সরকার জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (২০০১-২০১৫) এম ডি জি অর্জনে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। ২০০৯ সালে প্রণীত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম দীর্ঘমেয়াদী সুস্পষ্ট কর্মসূচী যা উন্নয়ন অথযাত্রায় পথ নির্দেশক `রূপকল্প-২০২১` নামে অভিহিত। এদিকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ২০১৬-২০৩০ অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা `রূপকল্প-২০৪১` প্রণয়ন করেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ফাস্টট্র্যাকভূক্ত ১০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দ, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মেট্রোরেল, ঢাকা দ্রুত গণ পরিবহন মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম কর্ণফুলী ট্যানেল ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন স্থাপন। এছাড়াও সারাদেশে ৪ লেন রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। "অপ্রতিরোধ্য অন্নযাত্রায় বাংলাদেশ আজ পৃথিবীতে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৪ নভেম্বর জাতীয়সংঘে এসডিজি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১০ টি মেগা প্রকল্পসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের প্রায় শেষ ধাপে, এগুলো বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ ২০৩০ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে ইনশাআল্লাহ তবে আমরা লক্ষ্য করেছি স্বাধীনতার প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধুর দেশ পুনর্গঠনের পথ যেমন মসৃন ছিলনা ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে ধারবার গতি রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে তেমনি বঙ্গবন্ধুর কন্যার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথও মসৃন নয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বারবার তাঁর জীবনের উপর হুমকি এসেছে এবং ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে তাই অতি সাবধানে সতর্কতার সাথে এগুতে হবে।

নৌকা প্রতীক নির্বাচন বঙ্গবন্ধুর এক অনদবা সৃষ্টি কারণ সংগ্রামের প্রতীক নৌকা, অনুপ্রেরনার প্রতীক নৌকা, বিজয়ের প্রতীক নৌকা, স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা এবং গণ মানুষের হৃদয়ের প্রতীক নৌকা। ১৯৭০ সালে থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচনে ষড়যন্ত্র ছাড়া নৌকাকে হারানো যায়নি। সাম্প্রতিক কালে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় নৌকাকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রতীক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিশেষ করে ইউনিয়ন পর্যায়ে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নির্ধারণ করায় স্থানীয় তৃণমূল পর্যায়ে দলের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য ও সংঘাত দেখা দিয়েছে এর উন্নতম কারণ সঠিক ভাবে প্রার্থী নির্বাচন না করা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে চাটুকার, মোসাহেব ও অপেক্ষাকৃত কম জনপ্রিয় নেতাদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে না। উপজেলা কমিটির সাথে কোন আলোচনা না করে সংসদ সদস্যগণ নিজে ইউনিয়ন কমিটির সভাপতির ও সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে নিজের মনগড়া তালিকা জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নিয়ে কেন্দ্রে সুপারিশসহ জমা দিচ্ছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে জেলা কমিটির সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদককে ও অবজ্ঞা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মনোনয়ন বাণিজ্য ও নিজের পকেটের প্রার্থী নির্বাচন করার প্রবনতা এর অন্যতম কারণ ফলে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ এমপিগন নিজেদের স্বার্থ ও জেদ বহাল রাখার জন্য অনেক সময় দলীয় প্রার্থীর বিরোধীতা করছেন আবার কোন কোন সময় বিদ্রোহী প্রার্থীদের মদদ দেয়ার ফলে দলের অভ্যন্তরে বিভেদ ও সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।

আমার ধারণা প্রতীক ছাড়া উন্মুক্ত প্রতিযোগীতার সুযোগ দেয়া হলে মেধাবী, জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতাদের সনাক্ত করা সহজ হবে এবং বিভেদ ও সংঘাত নিরসন করা সম্ভব হবে। যুগযুগ ধরে মানুষের মনিকোঠায় নৌকা প্রতীকের আবেদন ছিল বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যৎ ও থাকবে। মেধাবী, ত্যাগী ও জনপ্রিয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হলে নৌকার বিজয় হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭