ইনসাইড ইকোনমি

ঝুঁকিতে থেকেও দাম বাড়ছে ইস্টার্ন ক্যাবলস, অ্যামারেল্ডের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/11/2017


Thumbnail

আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস মাত্র ৩ পয়সা। আর ওই কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও এক হাজার ৮৬৬, যা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। গত দুই সপ্তাহ জুড়ে সর্বাধিক ঝুঁকির এই শেয়ারের প্রতিই বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। গত পাঁচ দিনে এ কোম্পানির শেয়ারের দামও বেড়েছে ২৭ শতাংশেরও বেশি। উঠে এসেছে সাপ্তাহিক দাম বেড়ে যাওয়া কোম্পানির তালিকায় শীর্ষে। বলা হচ্ছে, প্রকৌশল খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন ক্যাবলসের কথা। এছাড়া, খুঁড়িয়ে উৎপাদন চললেও কোনো কারণ ছাড়াই গত সপ্তাহে অ্যামারেল্ড অয়েলের দামও প্রায় ১১ শতাংশ বেড়ে যায়।বেড়েছে লোকসানি কোম্পানি দুলামিয়া কটনের দামও। এই সপ্তাহে যেমন এ ধরণের অঘটন ঘটেছে তেমনি ডিএসইতে সূচক ও বাজার মূলধনে নতুন রেকর্ডও হয়েছে।

সরকারি কোম্পানি ইস্টার্ন ক্যাবলসের দাম বাড়ার মতো কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য তো নেই-ই, উল্টো এ সময়ে কোম্পানির এক পরিচালক প্রায় সাড়ে তিন লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন।তারপরও এ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে।গত ১২ নভেম্বর এ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল ১৪০ টাকা ৫০ পয়সা। এরপর টানা ১০ দিনে প্রায় ১০০ টাকা দাম বেড়ে ২২ নভেম্বর তা ২৩৮ টাকায় দাঁড়ায়।তবে ২৩ নভেম্বর সেটি কিছুটা কমে ২২৪ টাকায় নামে। এ সময় ডিএসই অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ জানতে চিঠিও দেয়।জবাবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা দাম বাড়ার কারণ তো জানেই না, এমনকি অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিরর মতো কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্যও তাদের হাতে নেই। ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালকিাভুক্ত হওয়া ২৪ কোটি টাকা মূলধনের এ কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার।এরপর সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।ফলে প্রায় দুই হাজার পিই’র এ কোম্পানির অস্বাভাবিক দাম বাড়ায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরাই।পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, যে কোম্পানির পিই যত বেশি, সে কোম্পানিতে বিনিয়োগ তত ঝুঁকিপূর্ণ।

ব্যবসা চালানোর মতো মূলধন নেই, উৎপাদনও নামমাত্র, বেসিক ব্যাংকে ঋণ কেলঙ্কারির দায়ে পলাতক কোম্পানির চেয়ারম্যান, এমডিসহ একাধিক পরিচালক।অ্যামারেল্ড অয়েলের এসব ঘটনার কথা বিনিয়োগকারীসহ যারা শেয়ারবাজারের খোঁজ খবর রাখেন তাদের সবারই কম বেশি জানা। তারপরও প্রায়ই দাম বাড়ার তালিকায় উঠে আসছে কোম্পানিটি। গত সপ্তাহেও এ কোম্পানির দাম বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। গত জুনে হিসাবে বছর শেষ হলেও এখন পর্যন্ত শেয়ারধারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবদেন অনুযায়ী শেয়ার প্রতি আয় ২ পয়সা। আর পিই ১৬০ এ । এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।এদিকে, বছর বছর লোকসান দিলেও দাম বাড়া থেমে নেই বস্ত্র খাতের দুলামিয়া কটনের।এক বছর আগে ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ শেয়ারের দাম মাত্র ৭ টাকা থাকলেও, বৃহস্পতিবার এ শেয়ার ২১ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়। এমনকি ১০ শতংশ দাম বেড়ে দিনের শুরুতেই এর কোন ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ এ কোম্পানির শেয়ার প্রতি রোকসান এক টাকা ১২ পয়সা।আর প্রথম প্রান্তিক শেষে শেয়ার প্রতি সম্পদের দায় ২৯ টাকা ৭৭ পয়সা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সূচক, মূলধন মিলিয়ে গত সপ্তাহে ঢাকার বাজারে আবারও তিনটি নতুন রেকর্ড হয়েছে। এসয় ডিএসইএক্স সূচকটি ৪০ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩২২ দশমিক ৫১ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এটি ২০১৩ সালে এই সূচক চালুর পর সর্বোচ্চ।সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে ডিএসইর শরীয়াহ সূচক ডিএসইএসও।আর চার লাখ ২৬ হাজার ২৬৫ কোটি টাকায় উঠে রেকর্ড হয়েছে বাজার মূলধনেও। এর আগে ১৯ নভেম্বর বাজার মূলধন চার লাখ ২৬ হাজার ১০৭ কোটি টাকায় উঠে।তবে গত সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে মাত্র ৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭