প্রকাশ: 29/11/2021
অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসক টিমকে। তাঁরা অবশেষে সকলের সামনে খোলাসা করলেন ম্যাডামের লেটেস্ট গুরুতর অবস্থার কথা। তাঁরাই অ্যাপ্রোপিয়েট ও অথেন্টিক অথোরিটি এই কথাগুলো বলবার জন্য।
রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখো
শোকর তাঁর অপরিসীম কৃপায় এই চিকিৎসক দল তাঁদের প্রাণান্তকর প্রয়াসে কোটি কোটি মানুষের
প্রিয় নেত্রীর জীবনশিখা এখনো জ্বালিয়ে রেখেছেন। এরজন্য বিপুল কৃতজ্ঞতা তাঁদের প্রতি।
ম্যাডামের সর্বশেষ অবস্থাটুকু
জানবার জন্য মানুষ ব্যাকুল ও উন্মুখ হয়ে ছিল। সঠিক তথ্য না জানানো হলে যা হয়, গুজব
দখল করে নিয়েছিল সত্যের জায়গা। গুজব থেকে অনেক সময় বড় অনেক অঘটন ও অনর্থ কাণ্ড ঘটে
যায়। আল্লাহর রহমতে তেমন কিছু ঘটেনি।
আরও আট/নয় দিন আগে হর্সেস
মাউথ থেকে জেনে ম্যাডামের সর্বশেষ অবস্থা আমি জানিয়েছিলাম। লিখেছিলাম: "তিনি তাঁর
পুরনো জটিল রোগগুলো ছাড়াও ডিকমপেন্স্যাটেড লিভার সিরোসিস-এ আক্রান্ত।" লিখেছিলাম
NASH (Non-alcoholic steato hepatitis)-এর কথা। লিখেছিলাম, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা
গুরুতর। বর্তমানে তাঁর যে অবস্থা তাতে দেশে চিকিৎসার সুযোগ নাই বললেই চলে। জীবন বাঁচাতে
হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতেই হবে।
আমি লিখেছিলাম, শরীর থেকে
রক্ত যেতে যেতে তাঁর হিমোগ্লোবিন একেবারে কমে গেলে এবং রক্তবমি হতে থাকলে তাঁকে এবার
হাসপাতালে নেয়া হয়। ডাক্তারেরা এন্ডোস্কপি করে তাঁর লিভার সিরোসিস শনাক্ত করেন। তাঁর
দেহে দফায় দফায় রক্ত দেয়া হয় এবং তাঁর বড় হয়ে যাওয়া রক্তনালী এন্ডোস্কপির মাধ্যমে
Oesophageal Band ligation করা হয়েছে এবং সিসিইউ-তে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এর বেশি কিছু বাংলাদেশের ডাক্তারদের করার নাই বলেই জানানো হয়েছে।
লিখেছিলাম, বেগম জিয়া দীর্ঘদিন
ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ এবং হার্ট, কিডনি ও চোখের সমস্যায়
ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত চিকিৎসাধীন ও চিকিৎসকদের তদারকিতে ছিলেন। তাঁকে জেলে নেয়ার পর
সব বন্ধ হয়ে যায়। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হতে থাকে, তার অবস্থারও
গুরুতর অবনতি ঘটে। বারবার দাবি সত্বেও তাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত হাসপাতালে নিতে
দেয়া হয়নি। পরিস্থিতি খুব জটিল হয়ে দাঁড়ালে এবং বেগম জিয়ার শারীরিক পরিস্থিতির যথেষ্ট
অবনতি হলে সরকার তাঁকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা করাবার সুযোগ দেয়। কিন্তু যখন দেয়া
উচিত ছিল তখন না দিয়ে তারা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতির জন্য অপেক্ষা করেছে।
আমি লিখাছিলাম, এরপর তিনি
করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁর দেহের অন্যান্য অর্গান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রোগগুলোও আরো জটিল
হয়ে ওঠে। এবার শনাক্ত হলো আরও জটিল ব্যাধি - লিভার সিরোসিস। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে
তাঁর চিকিৎসা অসম্ভব। এখন বিদেশে সবগুলো রোগের সমন্বিত চিকিৎসার সুযোগ সম্বলিত কোনও
হাসপাতালে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে না পারলে বেগম জিয়ার জীবন রক্ষা অসম্ভব হয়ে
পড়বে। যে কোনও সময়ে লিভার ফেলিওর এবং লিভার ক্যান্সারের দিকে মোড় নেয়ার প্রবল ঝুঁকিতে
আছেন তিনি। কেননা তাঁর বয়সটাও অনুকূল নয়।
তবে, আমি যা-কিছুই জানাই,
আমি তো প্রোপার অথোরিটি নই। তাই হয়তো আমার তথ্য তেমন গুরুত্ব পায়নি। অবশেষে চিকিৎসকগণ
দায়িত্ব নিয়ে বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরায় সবাই জানলো। আমি কৃতজ্ঞ। তাঁদের
বিবরণ আট দিন আগে দেয়া আমার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে দুঃখের ব্যাপার হলো,
এমন গুরুতর একটা বিষয়েও এতোটা পিছিয়ে পড়ায়। কয়েকটা দিন নষ্ট হলো। ম্যাডামের জীবনরক্ষার
জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার্থে তাঁকে বিদেশে নেয়ার সুযোগ ক্ষমতাসীনেরা আদৌ দেবে কিনা কিংবা
দিলেও কবে নাগাদ দেবে তা' আমি জানিনা। তবে এর জন্য বিষয়টির গুরুত্ব আরো আগে এভাবে তুলে
ধরতে পারলে চাপটা হয়তো আরো আগে থেকে সৃষ্টি হতে পারতো। এখনো তো ম্যাডামের পাসপোর্টটা
পর্যন্ত ওরা আটকে রেখেছে।
আসুন, আমরা সকলে ম্যাডামের
জন্য কায়মনোবাক্যে দোয়া করি এবং যার যেটুকু সাধ্যশক্তি আছে তা দিয়ে সোচ্চার হই।
(মারুফ কামাল খানের ফেসবুক
থেকে সংগৃহীত)
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭