ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি নেতাদের বাঁধা দিলেন তারেক


প্রকাশ: 30/11/2021


Thumbnail

বিএনপি নেতারা চেয়েছিলেন আন্দোলন না করে সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর। কিন্তু বিএনপির এই উদ্যোগে বাধা দিয়েছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে তৃতীয় দফায় এভারকেয়ার হাসপাতাল ভর্তি হওয়ার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করেন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। তিনি সে সময় বলেন যে, তার সঙ্গে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কথা হয়েছে এবং সেজন্য তিনি নতুন করে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে একটি আবেদন করেছেন। এ আবেদনের জন্য যেন বিএনপি নেতারা চেষ্টা করে।

শামীম এস্কান্দার এটাও বলেছিলেন যে এ নিয়ে কোনো রাজনীতি না করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রার্থনা করা এবং প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টা বুঝালে তিনি সহানুভূতিশীল হবেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এ ব্যাপারে শামীম এস্কান্দার সাথে সহমত পোষণ করেন। এর পরপরই তিনি আরো কয়েকজন নেতাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। এই পরিকল্পনার বিষয়টি জানেন লন্ডনে পলাতক বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। এরপর তিনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে টেলিফোন করেন এবং টেলিফোন করে তাকে রীতিমত ধমক দিয়ে বলেন যে এ ধরনের উদ্যোগ কেন নেয়া হচ্ছে। এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হলে সেটি বিএনপি'র জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজনীতির মাঠ গরম করার জন্য পরামর্শ দেন তারেক জিয়া।

বর্তমানে বিএনপি যে ৮ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে সে কর্মসূচি তারেক জিয়ারই প্রেসক্রিপশনে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেক জিয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে এর ফলাফল খারাপ হবে। যদি শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়াটাই প্রধান বিষয় হয় তাহলে সরকারের সাথে দেন-দরবার করে প্রধানমন্ত্রীর সহানুভূতি আদায় করে এটা করতে হবে। কিন্তু তারেক জিয়া এটি চান নাই। তারেক জিয়া এক ঢিলে তিন পাখি মারার পরিকল্পনা থেকেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকে উস্কে দিচ্ছেন বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

প্রথমত, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিটি যেহেতু একটি স্পর্শকাতর মানবিক দাবি সেজন্য সাধারণ মানুষের সহানুভূতি সহজে আদায় করা যেতে পারে এই ধারণা থেকে তারেক জিয়া এ ধরনের আন্দোলন উৎসাহী।

দ্বিতীয়ত, এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি স্থবিরতা কিছুটা হলেও কাটবে। বিএনপি আন্দোলনের ইস্যুতে নিজেদেরকে সংগঠিত করতে পারবে, বিশেষ করে কর্মীরা আগের চেয়ে একটু চাঙ্গা হবে।

তৃতীয়ত, শেষ পর্যন্ত যদি বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হয় সেক্ষেত্রে গরম মাঠেই তারা নতুন করে আন্দোলন করতে পারবেন। কিন্তু তারেক জিয়া কখনো অনুধাবন করেনি যে এটিকে রাজনীতিকরণ করা হলেও শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বা চিকিৎসার বিলম্বিত হতে পারে। আর এটি তারেক জিয়া ইচ্ছাকৃত ভাবে করেছেন বলেই অনেকে মনে করেন।

বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করেন যে তারেক জিয়া ভারপ্রাপ্ত থেকে ভারমুক্ত হতে চান। ভারমুক্ত হওয়ার জন্য তিনি তার মাকে বলিদান করতেও কার্পণ্য করবেন না। তারেক জিয়া ভালোমতোই জানেন যে খালেদা জিয়ার জামিন কোনো আন্দোলন বা আইনি প্রক্রিয়া হয়নি, খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী অনুকম্পায়। ঠিক একইভাবে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার যদি অনুমতি পেতে হয় সেটি আন্দোলন করে, আইনি প্রক্রিয়ায় সম্ভব না। এটি পেতে হবে সরকারের সাথে দেন-দরবার এবং সমঝোতার মাধ্যমে। কিন্তু সেই সমঝোতার পথ বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন আন্দোলন খেলে আসলে তারেক জিয়া কি অর্জন করতে চাইছেন এটি বিএনপি'র অনেকের কাছে প্রশ্ন। তারেক জিয়ার বাধার কারণে শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি বরং তারা আন্দোলনের পথে এগিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার পথ কে আরো বাধাগ্রস্ত করলেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭