ইনসাইড টক

“বিদ্রোহী প্রার্থীদের পৃষ্ঠপোষকদের নজরদারিতে আনা হচ্ছে”


প্রকাশ: 01/12/2021


Thumbnail

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এবারের ইউপি নির্বাচনটাকে আমরা বেশ তাৎপর্যপূর্ণভাবেই দেখছি। কারণ এবারের নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা মূলক ছিলো। নির্বাচনে মানুষের ভোট প্রদানের আকাঙ্ক্ষা যে ইচ্ছা তার একটা বহিঃপ্রকাশ এই নির্বাচনে দেখা গেছে। একটা সময় মানুষের ভোট প্রদানের যে আকাল ছিলো সেই আকাল কিন্তু কাটিয়ে উঠেছে এবং এটাকে খুব ইতিবাচক ভাবে দেখছি আমরা। স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় প্রতীকে ভিত্তিতে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা খুবই কম আমাদের। সেই বিবেচনায় বিরোধীদল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কারণে মাঠে কিন্তু আমরাই আছি। সেক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রার্থী যারা মনোনয়ন পেয়েছে তারা কিন্তু নির্বাচনটাতে সরবে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। মাঠে-ময়দানে তো আমরাই।

ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সংঘাত সহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিরোধীদল নির্বাচনে না থাকার কারণে কিছু জায়গায় তাদের দলীয় পরিচয় গোপন করে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সেক্ষেত্রে তারা কোন কোন জায়গায় জয় লাভ করছে আবার অনেক জায়গায় হেরে যাচ্ছে। এটা একটা ভিন্ন রূপ। আমাদের দলীয় প্রার্থী থাকার কারণে আওয়ামী লীগে একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছে, সকলের জনপ্রিয়তা এখানে উনিশ কি বিশের মত পার্থক্য। খুব বেশি পার্থক্য এখানে থাকে না। যেহেতু আমাদের একাধিক প্রার্থী, কোন কোন জায়গায় চার-পাঁচ জন প্রার্থীও থাকে। যখন একজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পান মানে নৌকার প্রতীক পান তখন কোন কোন জায়গায় আমরা দেখেছি বাকি প্রার্থীরা মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর বিপক্ষে একজোট হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে যেটিকে আমরা একেবারের ভালো চোখে দেখছি না।

বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে শোকজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে বিরোধীদল বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপি সমর্থক কর্মীরা তাদের প্রার্থী না থাকার কারণে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়। এটা তাদের একটি নেতিবাচক মনোভাবের জায়গা। এটিই তারা মনে করে যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীকে বিজয়ী করলে, এটা তাদের বিজয়। আসলে ব্যাপারটি কিন্তু তা না। এটা কিন্তু একটা সময়ে যেয়ে বের হচ্ছে। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে আমরা কখনোই গুরুত্ব দেই না। বরঞ্চ শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে অতীতের চাইতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদেরকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। সাসপেন্ড করা হচ্ছে। এবার নতুন করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে প্রষ্ঠপোষকতা করেছে,  তাদের কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাননীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা তাদের নাম, তালিকাও কিন্তু সংগ্রহ করছি।  কোথায় এধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করছে দলের বিপক্ষে দলের প্রার্থীর বিপক্ষে দলীয় প্রতিনিধির বিপক্ষে যদি কোন নেতা, মন্ত্রী, এমপি অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে এবং এইটা তাদেরকেও আমরা নজরদারির ভিতর রেখে তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং আমাদের মাননীয় নেত্রী বলেছে এই সকল যারা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে তাদেরকেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে, প্রয়োজনে আগামীতে তাদেরকে দলীয় মনোনয়ন থেকেও বঞ্চিত করা হবে। এটা আমাদের দলীয় নীতি এবং এই দলীয় নীতির সাথে কোন মতের পার্থক্য নেই সাথে অন্য চিন্তাও আওয়ামী লীগের মধ্যে নেই। এটা খুব পরিষ্কার।

মনোনয়ন বাণিজ্য প্রসঙ্গে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে  দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মনোনয়ন বোর্ডের মাধ্যমে। এই মনোনয়ন বোর্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ নেই। কারণ, এটি দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্যায়। যারা মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং যারা দলের নীতি আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব আছে এবং হাইব্রিড প্রকৃতির লোকেরা মনোনয়নের আশায় আওয়ামী লীগ করতে এসে মনোনয়ন পায় নি তারা এসব কথা বলছে। তাদের কথার কোন মূল্য দলের কাছে নেই। প্রয়োজনে এধরণের অবাঞ্ছিত কথাবার্তা বলা, ভাবনা বা চিন্তা যাদের মধ্যে আছে তাদের দলে কঠিন শাস্তির মুখামুখি হতে হবে। এধরনের লোকদের জায়গা আওয়ামী লীগে থাকার জায়গা আছে বলে আমি মনে করি না।

তৃণমূলের বিভক্তিতে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হবার চেষ্টা করে তবে তৃণমূল আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়েছে এটা কিন্তু বোঝায় না। আর এভাবে বোঝার কোন সুযোগও নাই। আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করার কোন সুযোগ কারো নেই। তৃণমূল আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ আছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগের যে মূল লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে আদর্শ-নীতি, যে নীতিকে অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ তার ই সুযোগ্য সন্তান দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ভিতরে যে দ্বিধা-বিভক্ত অথবা মত পার্থক্যের কোন সুযোগ আছে বলে আমরা কখনো ভাবি না, মনেও করি না।

তিনি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের যে নির্বাচনটা আমাদের দেশে দীর্ঘদিনের অভ্যাস যে স্থানীয়ভাবেই নির্বাচনটা হয়ে আসতেছে। সেখানে স্থানীয় ভিত্তিতেই মানুষ ভোট প্রদান করে আসার একটি দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া ছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে দলীয় প্রতীকের ভিত্তিতে নির্বাচন এর যে প্রক্রিয়াটা সে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তৃণমূলের মানুষের যে অভ্যাস সে অভ্যাস কাটিয়ে উঠতে এখনকার যে পরিস্থিতি প্রতীকের ভিতর নির্বাচন হচ্ছে কয়েকটা নির্বাচন হলে এগুলো মানুষ কাটিয়ে উঠবে তখন আর এ ধরনের বিষয়াদি থাকবে না।

আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা খুবই আশাবাদী একটা পর্যায়ে যেয়ে যখন স্থানীয় নির্বাচনে দলের মার্কার ভিত্তিতে যে নির্বাচন হচ্ছে এটা যখন চলবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যখন অংশগ্রহণ করবে তখন কিন্তু এই ধরনের ভেদাভেদ, মতবাদ, অপবাদ স্থানীয় ভিত্তিতে যে প্রভাব সে প্রভাবটা কমে আসবে । তখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হবে, ভোটাররা দলীয় কমিটমেন্টের ভিত্তিতে ভোটকেন্দ্রে যাবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭