প্রিমিয়ারে প্রশংসিত ‘মিশন এক্সট্রিম’, মুক্তি পেলো সর্বাধিক প্রেক্ষাগৃহে

অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো। ইতিহাস সৃষ্টি করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫টি দেশে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) একযোগে একইদিনে মুক্তি পেল আলোচিত সিনেমা ‘মিশন এক্সট্রিম’। ধাপে ধাপে যোগ হবে আরও প্রায় ৮ থেকে ১০টি দেশ। পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমাটি মুক্তির একদিন আগে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলের স্টার সিনেপ্লেক্সে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো প্রিমিয়ার শো। 

স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রবেশ করতেই দেখা মিলে আরিফিন শুভর সঙ্গে। সরাসরি ‘বঙ্গবন্ধু’ সিনেমার শুটিং থেকে প্রিমিয়ারে অংশ নেন তিনি। আরিফিন শুভর কাছে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রটি সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত। এজন্যই চরিত্রটি নিয়ে যথেষ্ট লুকোছাপা করেছেন তিনি। অবশেষে বঙ্গবন্ধু রূপে সামনে এলেন এই অভিনেতা। প্রিমিয়ারে ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি দেখে আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রশংসা করেছেন।

বিশেষ করে আরিফিন শুভ, সাদিয়া নাবিলা, সুমিত, ঐশী, রাশেদ মামুন অপু সহ অনন্য শিল্পীদের অভিনয় ছিল নজর কাড়ার মতো। দীর্ঘদিন পর ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলা সিনেমার চেনা রূপ ফিরে এসেছে! কারণ সিনেমাটির কিছু সংলাপ আর অভিনয় দেখে প্রিমিয়ারে উপস্থিত সবাই হাততালি দিয়েছেন। পাশাপাশি গানের তালে তালে কেউ কেউ নেচেছেন ও শিস বাজিয়েছেন। সর্বোপরি দীর্ঘদিন পর দর্শকদের বিনোদন দিয়েছে সিনেমাটি।

প্রিমিয়ারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার); তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল আইজিপি, এন্টি টেররিজম ইউনিট) মো. কামরুল আহসান বিপিএম (বার); স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব অপারেশন্স মালিক মোহাম্মদ সাঈদ প্রমুখ।

এছাড়া ‘মিশন এক্সট্রিম’র দুই পরিচালক সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেতা ‘মাসলম্যান’খ্যাত চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ, মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশে ২০১৮-এর জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, অভিনেতা সুমিত সেনগুপ্ত, মাজনুন মিজান, সুদীপ দীপ ও দিপু ইমামসহ সিনেমাটির অন্যান্য শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

‘মিশন এক্সট্রিম’র অন্যতম পরিচালক সানী সানোয়ার বলেন, সিনেমা মানে স্বপ্ন। কিন্তু বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে সিনেমা মানে একটি যুদ্ধের প্রতিরূপ! পুরো ইন্ডাস্ট্রি এই যুদ্ধে লিপ্ত। ‘মিশন এক্সট্রিম’ সেই যুদ্ধ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তি পেল। আশা করছি, দর্শক সিনেমাটি দেখে পছন্দ করবেন।

চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ বলেন, আমাদের দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল ‘মিশন এক্সট্রিম’। এই সিনেমায় আমার এবং পুরো টিমের অনেক ত্যাগ রয়েছে। দর্শক আজ তা পর্দায় দেখছেন। দর্শকদের বলব, সবাই ‘মিশন এক্সট্রিম’ দেখবেন এবং দেখে ভালো লাগলে অন্যদেরও দেখতে বলবেন।

‘মিশন এক্সট্রিম’র আরেক পরিচালক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘প্রথম সিনেমা, প্রথম সন্তানের মতো। মনের মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছে। কয়েকটা বছর রাত-দিন এক করে সিনেমাটার জন্য কাজ করেছি। এবার দর্শকদের মূল্যায়নের পালা।

বাংলাদেশের বিজয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে ‘মিশন এক্সট্রিম’ মহাসমারোহে মুক্তি পেল দেশের পঞ্চাশ প্রেক্ষাগৃহে। পুরো সিনেমা টিমের জন্য এটি গৌরবের বলে জানিয়েছেন নির্মাতা। গত ১৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) খুলনার ‘শঙ্খ’ ও ‘চিত্রালি’ দিয়ে শুরু হয় সিনেমাটির হল বুকিং পর্ব। এরপর একে একে আরও ৪৮ হলে প্রথম সপ্তাহে ‘মিশন এক্সট্রিম’ মুক্তির ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়েছে।

বহুল প্রতীক্ষিত এই সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আরও রয়েছেন— তাসকিন রহমান, সাদিয়া নাবিলা, রাইসুল ইসলাম আসাদ, ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ, ইরেশ যাকের, মনোজ প্রামাণিক, আরেফ সৈয়দ, রাশেদ মামুন অপু, এহসানুল রহমানসহ অনেকে।

কুল নিবেদিত ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তথা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘সিটিটিসি’র কিছু শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত। এর গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) সানী সানোয়ার নিজেই। সিনেমাটির সহযোগী প্রযোজক হিসেবে রয়েছে মাইম মাল্টিমিডিয়া ও ঢাকা ডিটেকটিভ ক্লাব।