ইনসাইড বাংলাদেশ

নিরাপত্তাহীনতায় কুয়েটের সেই শিক্ষকের স্ত্রী-সন্তান


প্রকাশ: 09/12/2021


Thumbnail

রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুবরণ করা পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের স্ত্রী স্ত্রী সাবিনা খাতুন এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি। শিক্ষকের মৃত্যুর পর নানা ধরণের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তার স্ত্রী ও সন্তান। বর্তমানে ড. সেলিমের স্ত্রী তার বাবার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের তালতলা গ্রামে অবস্থান করছেন। 

সাবিনা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের পর থেকে হুমকি-ধামকি বেশি আসছে। অশ্রাব্য ভাষায় উচ্চস্বরে ধামকি দেওয়া হচ্ছে। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাড়া আমি আইনগত পদক্ষেপও নিতে পারছি না। এসব অপ্রত্যাশিত ঘটনায় আমি আতঙ্কিত, আশঙ্কিত। বিভিন্ন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন।

সাবিনা খাতুন আরও বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পেছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। সে মারা যাওয়ার আগের রাতে লালন শাহ হলে ছাত্ররা মিটিং করে। ওই মিটিংয়ে সে বেশি সময় ছিল না। সে চলে আসার পরেও নাকি কয়েক ঘণ্টা মিটিং হয়েছে। ওই মিটিংয়ে কারা ছিল, সেখানে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে তা তদন্তের প্রয়োজন। তবে, সবকিছু হলের ম্যানেজিং নিয়ে হয়েছে এটা আমি নিশ্চিত।

এদিকে প্রফেসর বাবা হারিয়ে মায়ের মতোই দিশা হারিয়েছে একমাত্র শিশুকন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস আনিকা। বর্তমানে ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন তার শিশুকন্যা নিয়ে বাবার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামে অবস্থান করছেন।

এ সময় ড. সেলিমের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, একমাত্র সাড়ে ৬ বছর বয়সী শিশুকন্যাকে নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা ও শঙ্কায় পড়েছি। একটি বিপদ কাটতে না কাটতে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকিতে আরও শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এরই মধ্যে ছোট্ট শিশু সন্তানটি শুধুই তার বাবাকে খুঁজে ফিরছে। সে হয়তো বাবার অনুপস্থিতি অনুধাবন করতে পারছে। বাবা হারানোর পর থেকে নাওয়া খাওয়া ভুলেই গেছে আনিকা। দরজায় কেউ টোকা দিলেই দৌড়ে গিয়ে দেখে বাবা ফিরেছে কিনা ছুটে যাচ্ছে

ড. সেলিমের শ্যালক মো. হাসান বলেন, আমার ভগ্নীপতি ছিলেন মাটির মানুষ। মানুষের সঙ্গেও মিশতো খোলা মনে। তিনি ছিলেন শতভাগ সৎ মানুষ। এমন একজন মানুষের মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ অবস্থায় তার মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি করতে হবে।

তবে, চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, হুমকি-ধামকি কিংবা নিরাপত্তাহীনতার ব্যাপারে থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেননি। তবে, আমরা ওই পরিবারটির প্রতি বিশেষ নজর রাখবো।

৩০ নভেম্বর মারা যান কুয়েট শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) পদে নিজের লোককে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। ঘটনার দিন দাপ্তরিক কক্ষে সাদমান নাহিয়ান ও তার অনুগতদের অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন ড. সেলিম।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭