ইনসাইড টক

‘যাচাই বাছাই না করে নেতৃত্ব দেয়া উচিত না’


প্রকাশ: 09/12/2021


Thumbnail

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা তো বটেই, কিন্তু যারা মন্ত্রী, এমপি, নির্বাচিত প্রতিনিধি তাদের চলন, কথা বলায় শিষ্টাচার তো অবশ্যই থাকতে হবে। তাদের কথা বার্তায় যদি এমন প্রকাশ হয় যে সে যদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, ধর্ম নিরপেক্ষতা এসবের বাইরে গিয়ে যদি সে কোন উক্তি করে বা বক্তব্য দেয় তাইলে বুঝতে হবে সে দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইছে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করতেই হবে। এর বাইরে সামাজিক ভাবে যে বিষয়গুলো বিতর্কিত অথবা যে গুলো নিয়ে কথা বললে অন্য মানুষ অমর্যাদা হয় যেমন নারী নিয়ে বা কোন একটা বিশেষ গোষ্ঠী নিয়ে , কিংবা প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল নিয়েও যদি সমালোচনা করতে হয় তাহলে শালীনতার সাথে করতে হবে। সবকিছু ছাপিয়ে যখন তার ব্যক্তিগত আচরণ যেটা গ্রহণযোগ্য নয় সেটার প্রতিফলন যদি ঘটে তার বক্তব্যে তখনও এটা দলকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে।

সম্প্রতি পদত্যাগ করা সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মুখে পদত্যাগ, বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার সহ নানা আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযানের নানা বিষয়ে বাংলা ইনসাইডার এর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, মুরাদ অনেক দিন ধরেই এই রকম করে যাচ্ছিল। তার বক্তব্যের মধ্যে অসংলগ্নতা, বেপরোয়া ভাব ছিল, এটা দলের জন্য ক্ষতি করেছিল। আমি মনে করি আওয়ামী লীগ সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই অপরাধে যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধেও যদি এখনই ব্যবস্থা নিয়ে নেয়া হয় তাহলে আমি মনে করি দল কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যখন নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসবে তখন সামাজিক যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে তখন সেটা সামাল দেয়া কঠিন হবে। যারা আওয়ামী লীগ করে, দলের সুবিধা নিচ্ছে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ , অসাম্প্রদায়িকতা এগুলাতে বিশ্বাস করে না তাদেরকে বাছাই করে একই প্রক্রিয়ায় দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। 

তিনি আরও বলেন, আর যারা বিভিন্ন পদ নিয়ে আছে তাদের চাল চলনে যদি এমন কিছু হয় যেটা দলকে বিব্রত করে কিংবা জনগণকে বিক্ষোভ করে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। গাজীপুরের মেয়র এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রীর ব্যাপারে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এ রকম ব্যবস্থা অনেকের বিরুদ্ধেই নেয়া উচিত। তাহলে দল শৃঙ্খলার মধ্যে আসবে , ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার যে  সম্ভাবনা ছিল তা দূর হবে। 

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ছাত্রজীবনের শুরুতে ছাত্রদল করা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ওর বাবা ছিল আওয়ামী লিগের নেতা। অসুস্থ ছিলেন, একদম চলাফেরা করতে পারতেন না। তার বাবাই তাকে যুবলীগ অফিসে নিয়ে আসে। তার বাবা আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী কর্মী, তার ছেলে যুবলীগ করতে চায়। সে যে ছাত্রদল করতো সেটা তখন সেভাবে ক্ষতিয়ে দেখা হয়নি, যেহেতু তার পারিবারিক সমস্যা ছিলো না। আর এভাবেই সে যুবলীগে জড়িয়ে পরে।  কেউ যদি একটা দল করে এবং ভুল বুঝে আরেকটা দলে যোগ দেয় -এরকম ঘটনা বহু আছে। তারা একেবারে নেতৃত্বে চলে আসার সময় এ বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়। কারণ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যখন হয় তখন অনেকেই নমিনেশন পাওয়ার জন্য সামনে চলে আসে। কিন্তু তখন তার ব্যাক গ্রাউন্ড দেখা হয়।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র জীবনে কেলেঙ্কারি আছে কিনা, সে ছাত্র জীবনে কোন বিতর্কিত কাজ করছে কিনা। একই ভাবে আওয়ামী লীগ যেহেতু গণ মানুষের পার্টি। বহু লোক আগে হয়তো অন্য দল করতো, ভুল করছে, তারা এসে আওয়ামী লীগ করবে। তাদের নেতৃত্বে চলে আসার ব্যাপারটি যেন আরও ক্ষতিয়ে দেখা হয়। সে কর্মী হিসেবে থাকতে পারে। কিন্তু নেতৃত্বে আসার ক্ষেত্রে তাদেরকেও আরও যাচাই বাছাই না করে নেতৃত্ব দেয়া উচিত না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭