বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম চলচ্চিত্র। আর মান সম্মমত চলচ্চিত্র নির্মাণ বৃদ্ধির জন্য ১৯৭৬-৭৭ অর্থবছর থেকে দেশীয় চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদানের প্রথা চালু হয়। মাঝখানে বন্ধ থাকলেও ২০০৭ সাল থেকে নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্রে অনুদান দেয়া হচ্ছে। তবে সেসব সিনেমায় চলচ্চিত্রের মূল ধারার তারকা শিল্পীদের তুলনামূলক কম দেখা যেতো। কিন্তু সম্প্রতিক সময়ে অনুদানের সিনেমায় আগ্রহ বাড়ছে চলচ্চিত্রের মূল ধারার শিল্পীদের।
২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট ২০টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অনুদান দিয়েছে সরকার। গত বছরের চেয়ে এবার সিনেমার সংখ্যা ৪টি বাড়িয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অনুদানের সিনেমার কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো হলো- মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘টুঙ্গিপাড়ার দুঃসাহসী খোকা’, অরুণ চৌধুরীর ‘জ্বলে জ্বলে তারা’, মীর্জা সাখাওয়াত হোসেনের ‘ভাঙন’, আশুতোষ সুজনের ‘দেশান্তর’, কাজী হায়াতের ‘জয় বাংলা’, জাহিদ হোসেনের ‘সোনার চর’, এস এ হক অলিকের ‘গলুই’ ও কবিরুল ইসলাম রানার (অপূর্ব রানা) ‘জলরঙ’।
এস এ হক অলিক পরিচালিত ‘গলুই’ সিনেমা দিয়ে অনুদানের সিনেমায় নাম লিখালেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের মেগা স্টার শাকিব খান।
এদিকে, এরই মধ্যে বন্ধন বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘ছায়াবৃক্ষ’- নামের একটি সরকারি অনুদানের সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস।
পরিমনি ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম গ্ল্যামার নায়িকাদের মাঝে অন্যতম। দর্শকপ্রিয় এই নায়িকাও কাজ করেছেন বেশ কিছু অনুদানের সিনেমায়। আসছে নতুন বছর সরকারি অনুদানে নির্মিত 'মুখোশ' ছবিটি মুক্তি পাবে। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা ইফতেখার শুভ। পাশাপাশি নির্মাতা আবু রায়হান জুয়েলের 'অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন' সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন সিয়াম-পরীমনি। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের সরকারি অনুদানে নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। এই ছবিটিও মুক্তির অপেক্ষায় আছে।
অন্যদিকে দুটি অনুদানের সিনেমায় অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক নিরব। একটি বন্ধন বিশ্বাসের ‘ছায়াবৃক্ষ’, অন্যটি রোজিনার ‘ফিরে দেখা’।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের বর্তমান প্রজন্মের নায়িকা নায়িকা পূজা চেরি। এই নায়িকাও দুটি অনুদানের সিনেমায় অভিনয় করেছেন। একটি ইস্পাহানী আরিফ জাহান পরিচালিত ‘হৃদিতা’, অন্যটি এস এ হক অলিক পরিচালিত ‘গলুই’।
পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার ‘টুঙ্গিপাড়ার দুঃসাহসী খোকা’- নামের একটি অনুদানের সিনেমা নির্মাণ করছেন। তিনি বলেন, অনুদানের সিনেমা ভালো গল্প নিয়ে নির্মিত হচ্ছে। এই সিনেমাগুলোতে অভিনয়ের স্কোপ আছে। আবার পুরস্কার পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। এসব কারণেই শিল্পীদের অনুদানের সিনেমার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
অনুদানের চলচ্চিত্র নিয়ে নায়িকা অপু বিশ্বাস বলেন, আগে একটা ধারণা ছিল, শুধু বাণিজ্যিক ছবিই দর্শক বেশি দেখে। তবে এখন সে ধারণা থেকে বেরিয়ে এসেছেন অনেকেই। অনুদানের সিনেমায় আগ্রহ বাড়ছে দিনকে দিন। যেমন আমি নিজেও অনুদানের সিনেমা ‘ছায়াবৃক্ষ’তে কাজ করেছি। আমার গল্পটা খুব মনে ধরেছে। এ রকম করে হয়তো বাকি শিল্পীরাও বিভিন্ন ভালো লাগা-আস্থার জায়গা থেকে কাজটা করছে। সেইসঙ্গে সরকার আগের থেকে আনুদানের পরিমাণটাও বাড়িয়েছে।