ইনসাইড বাংলাদেশ

কক্সবাজারে চার স্কুল শিক্ষার্থী অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি


প্রকাশ: 10/12/2021


Thumbnail

সংঘবদ্ধ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা কক্সবাজারের চার স্কুল শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন। গত মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপ মাঙ্গালাপাড়ার মেরিন ড্রাইভ এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়। মেরিন ড্রাইভে বাতিঘর নামের একটি কটেজের দুই রোহিঙ্গা কর্মচারী তাদের সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী রোহিঙ্গা দলের হাতে তুলে দেয়। টেকনাফ থানা পুলিশ স্কুলছাত্রদের উদ্ধারে রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় অভিযান শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার এলাকায় স্থানীয়দের ওপর সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য অনেক দিন ধরেই বেড়েছে। গত সপ্তাহেও সশস্ত্র রোহিঙ্গারা টেকনাফের সেন্ট মার্টিন নৌঘাট এলাকা থেকে প্রকাশ্যে এক পর্যটন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। টেকনাফ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা সৈয়দ আলম নামের ওই ব্যবসায়ী এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে তিন দিন পর মুক্তি পান।

গত মঙ্গলবার অপহৃত স্কুলছাত্ররা উখিয়ার সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা হচ্ছেন- পেঁচারদ্বীপের মাঙ্গালাপাড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে মোহাম্মদ কায়সার (১৪), মোহাম্মদ আলমের ছেলে মিজানুর রহমান নয়ন (১৪), আব্দুস সালামের ছেলে জাহেদুল ইসলাম (১৫) ও ফরিদুল আলমের ছেলে মিজানুর রহমান (১৪)। তাদের মধ্যে জাহেদুল ইসলাম দশম শ্রেণিতে পড়ে। বাকিরা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

কক্সবাজার জেলা শহরসহ মেরিন ড্রাইভের হোটেল-মোটেল, কটেজ ও রিসোর্টগুলোতে শত শত রোহিঙ্গা কর্মচারী হিসেবে কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অপহরণের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে এলাকার পর্যটন ব্যবসায়ীরা ওই সব রোহিঙ্গার তরফে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটার আশঙ্কা করছেন।

মাঙ্গালাপাড়া এলাকার হাজি আবদু শুক্কুর জানান, বাতিঘর রিসোর্টের পাশে বাড়ি হওয়ায় ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুই রোহিঙ্গা কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ ইব্রাহীমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্রে শিক্ষার্থীদের কৌশলে সেন্ট মার্টিন বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীম। টেকনাফে নিয়ে তাদের তুলে দেয় সশস্ত্র অপহরণকারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে।

অপহরণকারীরা গত বুধবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে সন্তানদের জীবনের বিনিময়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অভিভাবকরা রামু থানায় গতকাল বৃহস্পতিবার একটি অভিযোগ দেয়। এর পরই অপহরণের কথা জানাজানি হতে থাকে।

রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসেন বলেন, শিক্ষার্থী অপহরণের অভিযোগটি পাওয়ার পরপরই টেকনাফ থানাকে অবহিত করেছি। টেকনাফ থানা পুলিশ তাদের উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে।

পুলিশ জানায়, রোহিঙ্গা জাহাঙ্গীর টেকনাফের নয়াপাড়া শিবিরের ২৬ নম্বর ব্লকের মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে ও তার সহযোগী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের বাড়িও সেখানে। তারা দুজনই বাতিঘর কটেজের বয় (কর্মচারী) হিসেবে কর্মরত।

অপহৃত স্কুলছাত্র জাহেদুলের বাবা আব্দুস সালাম জানান, মুক্তিপণের এত টাকা তারা কিভাবে জোগাড় করবেন তা জানেন না। তিনি বলেন, মেরিন ড্রাইভের হোটেল-মোটেল, কটেজ ও রিসোর্টগুলোতে শত শত রোহিঙ্গা কর্মচারী হিসেবে কাজ করছে। কর্মচারীর ছদ্মবেশে এসব রোহিঙ্গা আরো অনেক অপকর্ম ঘটাতে পারে বলে তার আশঙ্কা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭