ইনসাইড বাংলাদেশ

সিইসি পদে আলোচনায় ৫ নাম


প্রকাশ: 10/12/2021


Thumbnail

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে। নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য সরকার শিগগিরই উদ্যোগ নেবে বলে জানা গেছে। বিজয় দিবসের পর পরই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হতে পারে বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে, সরকার প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে সার্চ কমিটির মাধ্যমে। কিন্তু বিরোধী দলসহ সুশীল সমাজের তীব্র আপত্তির মুখে সরকার সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ইতিমধ্যে জানিয়েছেন যে নির্বাচন কমিশনের জন্য নতুন আইন তৈরি করা হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে নির্বাচন কমিশন আইন নিয়ে তারা কাজ করছেন এবং খুব শীঘ্রই আইনটি চূড়ান্ত হবে। যদি আইন চূড়ান্ত করা সম্ভব হয় তাহলে হয়তো একটি আইনের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। আর যদি আইন শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত করা সম্ভব না হয় তাহলে গতবারের মতো সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশনার কে হবেন এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানামুখী আলোচনা চলছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে হবেন তা নির্ভর করছে কোন প্রক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার গঠন হবে। যদি আইনের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তৈরি করা হয় সেক্ষেত্রে এক রকম হিসেব-নিকেশ হবে আর যদি সার্চ কমিটির মাধ্যমে হয় সেক্ষেত্রে আরেকরকম হিসেব-নিকেশ হবে। তবে যে হিসেব নিকেশ হোক না কেন সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে পাঁচটি নাম ঘোরাফেরা করছে। এদের এই নাম গুলোর মধ্যে:

মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা: তিনি সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব। বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী হিসেবে চাকরি শেষ করে এখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তিনি একজন মেধাবী এবং  দক্ষ সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন।

আলী ইমাম মজুমদার: আলী ইমাম মজুমদার ফখরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন। তিনি এখন একজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। সরকার আগামী নির্বাচনকে খুব বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে এবং সেই চ্যালেঞ্জের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং আস্থাভাজন একজন ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করতে চান। সেক্ষেত্রে আলী ইমাম মজুমদার সরকারের তালিকায় রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ড. জাফর আহমেদ খান: ড. জাফর আহমেদ খান সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসর নিয়েছেন। তার আগে তিনি স্থানীয় সরকার সচিব, পানি সচিব এবং প্রবাসী কল্যাণ সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন দক্ষ মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে এবং  কোন রাজনৈতিক দলের প্রতি তার পক্ষপাত নেই। কাজেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তিনি ও সরকারের ভাবনার মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

সিরাজুল হক খান: সিরাজুল হক খান সাবেক স্বাস্থ্য সচিব। তিনি একজন সৎ, মেধাবী এবং দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তেমন কোনো বিরোধ হবে না বলেই সরকারের একাধিক মহল মনে করেন। এজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের তালিকায় সিরাজুল হক খান এর নামও আলোচনায় রয়েছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

নজিবুর রহমান: নজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ছিলেন। তার আগে তিনি এনবিআরের চেয়ারম্যান হিসেবে  দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হওয়ার কারণেই শেষ পর্যন্ত তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হলে সেটি রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। এ বিবেচনা থেকে তিনি আলোচনার দৌড়ে একটু পিছিয়ে আছেন, তবে শেষ পর্যন্ত সরকার যদি নির্বাচনের ব্যাপারে তার নিজস্ব অবস্থানে অটল থাকে এবং গতবারের মতোই নির্বাচন কমিশন গঠন করতে চায় তাহলে নজিবুর রহমানের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

এই পাঁচজনের বাইরেও বেশকিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আসতে পারেন। তবে সরকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশন যেই হোক না কেন একজন আমলাই হবে। কারণ সরকার আমলাদের বাইরে কাউকে আপাতত প্রধান নির্বাচন কমিশনার করার কথা ভাবছেন না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭