ইনসাইড বাংলাদেশ

পাঁচ কারণে মুরাদকে ঢুকতে দিল না কানাডা


প্রকাশ: 11/12/2021


Thumbnail

সদ্য পদত্যাগী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান গত বৃহস্পতিবার কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু আজ বাংলাদেশ সময় সকালে তিনি কানাডায় নামলে কানাডার ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে কানাডায় প্রবেশ করতে দেয়নি। জানা গেছে যে, এখন তিনি দুবাইতে আসবেন এবং সেখানে অবস্থান করবেন। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন বিভাগ তাকে ছাড় দিলে এবং এমিরেটস এয়ারলাইন্স তাকে বোর্ডিং করার অনুমতি দিলেও কানাডার ইমিগ্রেশন কেন তাকে কানাডায় প্রবেশ করতে দিলো না এ নিয়ে নানা রকম ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে। অবশ্য কানাডার ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী, যেকোনো ব্যক্তি যদি বৈধ ভিসা নিয়েও আসেন, কানাডা সরকার যদি মনে করে যে, তার কানাডার নিয়ম-নীতি এবং কানাডার শান্তি শৃঙ্খলার বিঘ্ন সৃষ্টি হতে পারে, সেজন্য কানাডার কর্তৃপক্ষ তার প্রবেশ রহিত করতে পারে এবং এটি ডা. মুরাদের ক্ষেত্রে করা হয়েছে। কানাডা তার ইমিগ্রেশন আইনে নন-এন্ট্রি বা অনুপ্রবেশ রহিতকরন সংক্রান্ত ধারাটি প্রয়োগ করেছে মূলত পাঁচটি কারণে বলে জানা গেছে। কারণগুলোর মধ্যে রয়ছে:

১. লাল পাসপোর্ট নিয়ে যাওয়া: ডা. মুরাদ হাসান আর মন্ত্রী নন। মন্ত্রী না থাকার কারণে তিনি লাল পাসপোর্টের বৈধ অধিকারী না। যখন একজনের মন্ত্রিত্ব চলে যায় তখন তার দায়িত্ব এ পাসপোর্টটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেয়া এবং একটি নতুন পাসপোর্ট গ্রহণ করা। কিন্তু মুরাদ হাসান এই পাসপোর্টটি জমা দেয়ার পর আবার নিয়েছিলেন এবং সেই লাল পাসপোর্টটি নিয়েই তিনি কানাডার উদ্দেশে যান। সে কারণে কানাডার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানতে চেয়েছে তিনি লাল পাসপোর্ট ব্যবহারের বৈধ অধিকারী কিনা। যখন তিনি এটির সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি, তখন তাকে কানাডায় প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।

২. ভিসা জটিলতা: ডা. মুরাদ হাসান এই ভিসাটি নিয়েছিলেন দু’বছর আগে যখন তিনি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সে সময় একটি সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা ছিলো, সেটি একটি অফিসিয়াল বিষয় ছিল এবং তার ভিসাতে ভ্রমণের কারণ হিসাবে দেয়া হয়েছিল ‘অফিসিয়াল’। কিন্তু মুরাদ এখন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী নন, এমনকি মন্ত্রীসভারও সদস্য নন এবং তার ভিসার ক্যাটেগরি অফিসিয়াল। তিনি কোন সরকারি কাজে কানাডা যাচ্ছেন না। এজন্য কানাডা কর্তৃপক্ষ তাকে কানাডায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।

৩. কানাডার নাগরিকদের প্রতিবাদ: কানাডায় ডা. মুরাদ হাসান যাচ্ছেন এটি শুনে কানাডায় অবস্থানরত বাংলাদেশিরা এর প্রতিবাদ করেছেন। তারা মানববন্ধন করেছেন এবং এরকম একজন নারী নিপীড়ককে কানাডায় যেন প্রবেশ করতে না দেয়া হয়, সে ব্যাপারে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। একই বিষয় তারা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছেন। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি আমলে নিয়ে তাকে কানাডায় প্রবেশ করতে দেননি।


৪. যৌন নিপীড়কদের ক্ষেত্রে কানাডায় প্রবেশে কড়াকড়ি: কানাডা নারীর স্বাধীনতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সকল ধরনের যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থানকারী একটি দেশ। ডা. মুরাদের বিরুদ্ধে যেহেতু যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে এবং নারীকে অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছে, সে কারণে কানাডার সরকার ডা. মুরাদকে কানাডায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি। কানাডার সংবিধান এবং মৌল নীতির পরিপন্থী আচরণ করার জন্য তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

৫. কানাডার সরকারের ইচ্ছা: কানাডার সরকারের সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে যেকোনো ব্যক্তির কানাডায় প্রবেশ রহিত করতে পারে এবং সেই ধারাই প্রয়োগ করা হয়েছে।

মূলত এই পাঁচটি কারণে ডা. মুরাদ হাসান কানাডায় প্রবেশ করতে পারেননি বলে বিভিন্ন মহল জানিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭