ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের অবনতি: নেপথ্যে ড. ইউনুস?


প্রকাশ: 11/12/2021


Thumbnail

সাম্প্রতিক সময় নানা ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে টানাপোড়ন চলছে। প্রকাশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাপার নাক গলাচ্ছে এবং বাংলাদেশে বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করছে। কিছুদিন আগেও দুই দেশের সম্পর্ক ছিলো অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ। যদিও বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, দু’দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো কিন্তু কার্যত ডেমোক্রেটরা আসার পর একের পর এক বাংলাদেশবিরোধী সুস্পষ্ট পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে। এর প্রথমটি দেখা গেছে যে, গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো। বাংলাদেশের চেয়ে ভঙ্গুর গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের চেয়েও গণতন্ত্র নাজুক অবস্থায় থাকা অনেক দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। যদিও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়েছে। তারা বলছে যে, গণতন্ত্র সম্মেলনে আমাদেরকে আমন্ত্রণ না জানানোটা আমাদের জন্য ইতিবাচক। কিন্তু এগুলো সবই সান্ত্বনার কথা, আসল বিষয় হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ব্যাপারে আগের অবস্থানে নেই। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এইজন্যই বাংলাদেশকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটির রেশ কাটতে না কাটতেই বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাতজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে এবং তাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক এবং মানহানিকর বলেই কূটনৈতিক মহল মনে করছেন। বিশেষ করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ওপর এরকম নিষেধাজ্ঞা জারি নজিরবিহীন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের একটি সুস্পষ্ট নজির বলেই অনেকে মনে করছেন।

কেন বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান নিয়েছে, এ ব্যাপারে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্রেটদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। হিলারি ক্লিনটনের সাথে তার ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব ছিলো। এছাড়াও বারাক ওবামা যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন ড. ইউনুসকে সর্বোচ্চ মার্কিন খেতাবে ভূষিত করা হয়েছিল। হিলারি ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে তাকে বাদ দেয়া হয়। এটির প্রতিবাদ করেছিলেন হিলারি ক্লিনটন। ডেমোক্রেটরা বিভিন্ন কারণেই ড. ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল এবং ডেমোক্রেটদের অন্যতম অর্থদাতা হিসেবে যে তালিকা আছে তাতে ড. ইউনূসের নাম আছে। ইউনূসের সঙ্গে ডেমোক্রেটদের গভীর সম্পর্কের কথা কারো অজানা নয়। আর সেকারণেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশবিরোধী মার্কিন প্রশাসনের নীতি এবং অবস্থান গ্রহণ একটা বড় রকম ভূমিকা রেখেছেন বলেই অনেকে মনে করেন।

কারণ দীর্ঘদিন ধরেই ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে একটি সরব অবস্থান নিয়েছেন। সম্প্রতি কিছুদিন আগে তার গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদেরকে প্রতারিত করার অভিযোগে আদালতে তাকে হাজির করা হয়েছে। এর আগেও তিনি অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত লোকজনকে ঠকানোর অভিযোগে আদালতের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ড. ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এরকম একটি বার্তা দিয়েছেন যে, তার ওপর হয়রানি করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই ড. ইউনূসের প্রেসক্রিপশন এবং ইউনূসের ভূমিকার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে বিরোধী একটি অবস্থান নিয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষ করে বর্তমান সরকার ডেমোক্রেটরা আসার পর ইউনূসের প্রভাব মার্কিন নীতিনির্ধারক মহলে অনেক বেড়ে গেছে বলে কূটনৈতিকরা মনে করে। উল্লেখ্য, এর আগেও পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন না করতে বিশ্বব্যাংককে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে ড. ইউনূস অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এখন একের পর এক বাংলাদেশ সম্পর্কে যে নেতিবাচক সিদ্ধান্তগুলো নিচ্ছে তার নেপথ্যে যুদ্ধাপরাধী বা বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর ভূমিকা থাকলেও মূল ভূমিকা পালন করছেন ড. ইউনূস। কারণ ড. ইউনূস মার্কিন নীতি-নির্ধারকদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। আর তিনি খুব সহজেই বাংলাদেশ সরকারবিরোধী অবস্থানের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করেছেন বলে অনেকে মনে করেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭