ইনসাইড বাংলাদেশ

দেশবিরোধী তৎপরতায় কিছু এনজিও


প্রকাশ: 11/12/2021


Thumbnail

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র‍্যাবের ৭ জন বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেতে পারবে না। এটি একদিকে যেমন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে সুস্পষ্ট হস্তক্ষেপ, অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতির একটি সুস্পষ্ট প্রকাশ। কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরকম সিদ্ধান্ত নিলো? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার এই সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি সেই বিজ্ঞপ্তিতে এর বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে, একজন পৌরসভার কাউন্সিলারের মৃত্যুর ঘটনা অনুসন্ধান করতে গিয়ে তারা মনে করছে যে এটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। মজার ব্যাপার হলো যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেরা অনুসন্ধান করেনি, তারা স্থানীয় এনজিওর ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলো এই বিষয়টি গবেষণা করার জন্য। স্থানীয় এনজিও আইন সালিশ কেন্দ্র (আসক) এ বিষয়ে গবেষণা করে এবং সেই গবেষণা প্রতিবেদনে তারা র‍্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে।

উল্লেখ্য যে, আইন সালিশ কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ করছে এবং এই অভিযোগগুলো তারা যে দেশে দিচ্ছে তা না, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই অভিযোগগুলো বিভিন্ন সংস্থার কাছে দিচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আইন সালিশ কেন্দ্রের এই তৎপরতার ফলে শুধুমাত্র যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এরকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল তা না। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশ সম্বন্ধে ভুল ধারণা পাচ্ছে আইন সালিশ কেন্দ্র সহ কিছু এনজিওর এ ধরনের মনগড়া, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং একপেশে প্রতিবেদনের কারণে। বাংলাদেশে কিছু এনজিও বিদেশি অর্থ আদায়ের জন্য বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করছে এবং বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল অভিযোগ করেছে। শুধু আইন সালিশ কেন্দ্র না, অধিকার শীর্ষক একটি এনজিও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার নিয়ে লাগাতার কাজ করছে এবং তারা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানারকম প্রতিবেদন দিচ্ছে। বাংলাদেশে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি নিয়ে শুধুমাত্র পত্রিকার রিপোর্টের ভিত্তিতেই তারা প্রতিবেদনগুলো দিচ্ছে, যা কখনো একটি দেশের স্বার্থের স্বপক্ষে নয়।

এছাড়াও বাংলাদেশের দুর্নীতি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত মনগড়া দুর্নীতির অভিযোগ দিচ্ছে। যার ফলে বাংলাদেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও বাংলাদেশের দুর্নীতি প্রতিরোধ সূচক এখনও ঊর্ধ্বমুখী নয়। বাংলাদেশে যে দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে না তা নয়। কিন্তু দুর্নীতির ঘটনা গুলোকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে এমন অবস্থায় নিয়ে আসা হচ্ছে যেন মনে করা হয় যে, বাংলাদেশে বোধহয় দুর্নীতি ছাড়া কিছু নেই। গুম নিয়েও এনজিও এবং কিছু প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকা কিছু প্রতিবেদন করছে। আর যার ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য নিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের দুটো শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রতিনিয়ত গুম, হত্যাকাণ্ড, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ইত্যাদি নিয়ে প্রতিনিয়ত কলাম ইত্যাদি প্রকাশ করছে। এই কলাম এবং প্রতিবেদনগুলোর ওপর নির্ভর করেই এনজিওরা প্রতিবেদন করছে এবং সেই প্রতিবেদনগুলো বিদেশে যাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই প্রতিবেদনগুলোর ওপর বিশ্বাস করে বাংলাদেশ সম্বন্ধে ধারণা দিচ্ছে। এখানে বাংলাদেশের প্রধান দুটি গণমাধ্যম দেশের স্বার্থ যেমন দেখছে না, তেমনি বাংলাদেশের কয়েকটি আইন এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা এনজিও দেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। এই সমস্ত অপপ্রচার গুলোর মূল উৎস হলো এরাই। এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রিপোর্টার্স উইথআউট বর্ডার্সের প্রতিবেদনগুলোর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়ার আগে আমাদের এই তথ্য পাচারের এবং বিকৃত তথ্য প্রদানের উৎস গুলো বন্ধ করতে হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭