ইনসাইড পলিটিক্স

মুরাদ-জাহাঙ্গীরের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করবেনা সরকার


প্রকাশ: 13/12/2021


Thumbnail

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান কানাডায় ঢুকতে পারেননি, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ঢুকতে পারেননি। গতকাল বিকেলে তিনি বাংলাদেশে এসে এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান গ্রহণ করছেন। কারো সাথেই তিনি যোগাযোগ করছেন না। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। অনেকটাই হতাশ এবং মুষড়ে পড়েছেন ডা. মুরাদ হাসান। কিন্তু সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেবে না সরকার। ইতিমধ্যে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ থেকে মুরাদ হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি এখন আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য নন। আর এ কারণেই ডা. মুরাদের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কিনা এ নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।  তবে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ডা. মুরাদ হাসানের সদস্যপদ খারিজ হওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত লাগবে এবং এই সিদ্ধান্তের কপি স্পিকার বরাবর প্রেরণ করতে হবে। 

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ মহান বিজয়ের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপন নিয়ে ব্যস্ত। আগামী ২৩, ২৪ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপ সফরে যাবেন। কাজেই চট জলদি করে মুরাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে না বলেই অনেকে মনে করছে। তাছাড়া মুরাদের বিরুদ্ধে যে বিভিন্ন জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা করছেন সেই মামলাকেও সরকার উৎসাহিত করতে চায় না। বরং সরকার মনে করে, মুরাদ একটি সাক্ষাৎকারে যে বক্তব্য দিয়েছে সেই বক্তব্য অনভিপ্রেত ও অনুচিত। কিন্তু বিএনপি এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত এর চেয়ে নোংরা, কুৎসিত এবং অসভ্য বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধুমাত্র মুরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নীতিতে সরকারের সায় নেই বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সরকারের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন যে, মুরাদ যে শাস্তি পাবার তা পেয়েছে। মুরাদকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি একটি নজির এবং এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না। 

কিন্তু মুরাদের যখন মন্ত্রীত্ব চলে গেল সেই সময়ে মোয়াজ্জেম হোসেন আলালেরও কুরুচিপূর্ণ নোংরা বক্তব্য বেরিয়েছিল। কিন্তু আলালের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিএনপি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাছাড়া বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক নোংরা, কুৎসিত অপপ্রচার করছে বিএনপি-জামাতপন্থী একটি গোষ্ঠী। তাদের বিরুদ্ধেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বিএনপি-জামাতপন্থীরা। আর সেকারণেই সরকার মনে করছে যে, একতরফাভাবে শুধু আওয়ামী লীগ যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে সেটি একটি ভুল বার্তা সৃষ্টি করবে। এ কারণেই ডা. মুরাদের ব্যাপারে ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছে সরকার। আপাতত মুরাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। একইভাবে গাজীপুরের সদ্য বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রলম্বিত হতে পারে। বরং সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছে জাহাঙ্গীর আলমও যা শাস্তি পাওয়ার পেয়েছেন। তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মেয়রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আপাতত তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। মুরাদ এবং জাহাঙ্গীর দুজনেই আওয়ামী লীগের পর্যবেক্ষনে থাকবেন। তাদের প্রাথমিক শাস্তি হয়ে গেছে বলে আওয়ামী লীগ মনে করে। ভবিষ্যতে তারা কি করে সেটার উপর নির্ভর করবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭