ইনসাইড বাংলাদেশ

‘ক্রসফায়ার বৈধ’ বলা সেই বারী এখন যুক্তরাষ্ট্রে


প্রকাশ: 14/12/2021


Thumbnail

চৌধুরী ফজলুল বারী, ওয়ান ইলেভেনের সময় আলোচনায় ছিলেন। তিনি তখন ডিজিএফআইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় যে সমস্ত ব্যক্তিরা সবচেয়ে ক্ষমতাবান ছিলেন তাদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার বারী ছিলেন অন্যতম। ২০০৫ সালে তিনি ছিলেন কর্নেল এবং সে সময় তিনি র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তখন বেগম খালেদা জিয়া ছিল ক্ষমতায়। আর সেই সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কাউন্সিলরের এবং তারা দুজন একান্ত আলাপচারিতায় এই অভিমত প্রকাশ করেন যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে ক্রসফায়ার বা এনকাউন্টার বৈধ। উইকিলিকস থেকে এই তথ্যটি পাওয়া হয়। উইকিলিকস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক গোপন নথি প্রকাশিত করে আলোচনায় আসে।

উইকিলিকসের তথ্যভাণ্ডারে দেখা যায়, ২০০৫ সালের জুন ্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সেখানে তিনি ক্রসফায়ারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। উইকিলিকসের তথ্য অনুযায়ী ২০০৬ সালের ১৩ এপ্রিল চৌধুরী ফজলুল বারী আবার দেখা করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিসের কাছে এবং তখন তিনি একইভাবে ক্রসফায়ারে পক্ষে সাফাই গান। সেসময় চৌধুরী ফজলুল বারী কখনো অস্বীকার করেননি যে ক্রসফায়ার করা হয়না। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ব্যাপক ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে এবং অন্তত একজন কর্মকর্তা পাওয়া গেছে উইকিলিকসের তথ্য অনুযায়ী যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রসফায়ারকে কবুল করেছেন এবং এর প্রয়োজনীয়তা কথা বলেছেন।

২০০৪ সালে মার্কিন দূতাবাসের অভিযোগ অনুযায়ী ৭০০ ব্যক্তিকে ক্রসফায়ার করা হয়েছে এবং যার মধ্যে ২০০ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। আর এই সমস্ত ক্রসফায়ারকে জায়েজ বলেছিলেন চৌধুরী ফজলুল বারী। পরবর্তীতে ওয়ান-ইলেভেন আসে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চৌধুরী ফজলুল বারীর ঘনিষ্ঠতা আরও বৃদ্ধি পায় এবং এসময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের রুপরেখা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রায়ই বৈঠক করেছেন বলে উইকিলিকসের তথ্যে জানা যায়। সেই ফজলুল বারী নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোনঠাসা হয়ে পরেন। এরপর আস্তে আস্তে বের হতে থাকে তার অকথিত অধ্যায়। পঁচাত্তরের খুনী চক্রের সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক, চাঁদাবাজি এবং অর্থ আদায় ইত্যাদি নানা অভিযোগে অভিযুক্ত তিনি। সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং এখন তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক আশ্রয় আছেন।

তাহলে প্রশ্ন হল যে, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামাত যখন ক্রসফায়ার করেছিল তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন হয়নি। এমনকি সেই সময়ে ্যাবের কর্মকর্তা নিজেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছিলেন যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্রসফায়ার করতে হয়, তাকেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেনি। অথচ বর্তমান সরকার যখন এসে ক্রসফায়ারকে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন এবং কোনোভাবেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড নয়, এই উক্তিটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী করেছেন তখন সাতজন কর্মকর্তাকে ক্রসফায়ারের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা একটি হাস্যকর বিষয়। এখান থেকেই বুঝা যায় যে, নিষেধাজ্ঞার নাটকটি করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং একটি রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের লক্ষ্যে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭