ইনসাইড পলিটিক্স

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী: কোন পথে রাজনীতি?


প্রকাশ: 16/12/2021


Thumbnail

দেশব্যাপী নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং সরকার ঘোষিত মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১০ দিনব্যপী চলবে নানা আয়োজন। করোনার কারণে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষও পরিকল্পনা অনুযায়ী উদ্‌যাপন করা সম্ভব হয়নি। ৫০ বছরে উন্নত বিশ্বের নজর কেড়েছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মেগা প্রকল্পগুলো। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের সুপারিশ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতি বর্তমানে কতটা মানছে দেশের রাজনীতিবিদরা, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদরা, রাজনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপট কি -এসব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, বিজয় দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে বড় বিজয় হচ্ছে বিজয়ের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের চূড়ান্ত শিখরে উন্নীত হয়েছে। মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, লেখাপড়া হচ্ছে। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে আজকের বাংলাদেশ। তবে ব্যবসায়ী, আমলারা যে রাজনীতিতে এসেছে, তার শুরু ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আমদানি নির্ভরশীল অর্থনীতি চালু করার পাশাপাশি আমলাদের রাজনীতিতে প্রবেশ ঘটিয়েছিলেন। একাত্তরে যে সমস্ত আমলারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলেন, তাদেরকে তিনি রাজনীতিতে এনেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া, ২৮ বছর যারা দেশ পরিচালনা করেছেন, তারা প্রত্যেকেই আমলাদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ব্যবসায়ীদের রাজনীতিতে আনতে তিনি বলেছিলেন ‘মানি ইজ নো প্রবলেম। উই উইল মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান।’ তারপর থেকেই কিন্তু রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতির পথ বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে আজকেও সেই আবর্জনা দূর করতে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে লড়াই করতে হচ্ছে।  

অন্যদিকে বিএনপি নেতা ও সাবেক সাংসদ মেজর আখতারুজ্জামান বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, রাজনীতি তো এখন নেই। যার ফলে আজ এই প্রশ্ন উঠেছে। যারা এখন রাজনীতিতে আছেন তাদের কতজন বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, তারা জনগণের রাজনীতিটা করছেন? আপনি কাউকে খুঁজে পাবেন না। এই হচ্ছে রাজনীতি।
 
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, রাজনীতি এখন আর রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতিবিদের বদলে রাজনীতিতে এখন  প্রাধান্য পাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি জনগণের খেদমতে ন্যাস্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরও দৌরত্ব বেড়েছে। এখন যারা নির্বাচিত হচ্ছেন তারা ব্যবসা বানিয়ে ফেলেছেন রাজনীতিকে। কাজ করছেন অর্থ উপার্জনের মানসিকতা নিয়ে ৷ কিছু ব্যতিক্রম নিশ্চয় আছে৷ একদিকে বর্তমান সংসদের শতকরা ৭০জনই ব্যবসায়ী। তারা অনেকাংশেই জনগণের বদলে তাদের ব্যবসার দিকটা দেখে। অন্যদিকে জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও অবসর জীবনে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়তে ইচ্ছুক। সাংসদ হওয়ার বাসনা তীব্র। কিন্তু সাংসদের কাজ হচ্ছে জনগণের জন্য আইন তৈরি করা। জনগণের আগামী দিনের ভাগ্য তার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু সাংসদ যদি আইন-ই না বুঝেন, তাহলে তিনি জনগণের জন্য আইন প্রণয়ন করবেন কিভাবে? অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করবেন কিভাবে? আমরা আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বহুদূর সরে গেছি৷ আমাদের এখানে রাজনীতির ধারণাই উল্টে গেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭