ইনসাইড টক

‘বুস্টার ডোজ ওমিক্রন মোকাবেলায় ৮৫ শতাংশ কার্যকর’


প্রকাশ: 20/12/2021


Thumbnail

স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ (স্বাচিপ) এর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ এই বিজয়ের মাসে বুস্টার ডোজ শুরু করার জন্য। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ইতোমধ্যে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বুস্টার ডোজ দেয়ার অনুমতি না থাকলেও যেসব দেশ বুস্টার ডোজ দিচ্ছে তাদের সাথে দ্বিমত করছে না। উন্নত ধনী দেশগুলো তাই দিচ্ছে। এটা সুখবর যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিজয়ের মাসে বুস্টার ডোজ দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। এই বুস্টার ডোজ দেয়ার কারণ হিসেবে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত গবেষণা, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে যে, দুই ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পর থেকে শরীরের এন্টিবডি কমতে থাকে কিংবা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। এটি ভালো না। সেই প্রেক্ষাপটে একটি ‍বুস্টার দেয়া প্রয়োজন। এ জন্যই বিভিন্ন দেশ বুস্টার ডোজ দিচ্ছে। 

বুস্টার ডোজ কার্যক্রম শুরু করাসহ দেশে চলমান টিকা কর্মসূচির বিভিন্ন দিক নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ`র সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডারের নিজস্ব প্রতিবেদক অলিউল ইসলাম। 

ডা. এম এ আজিজ বলেন, যখন ওমিক্রন আসলো, তখন আবার পুরো বিশ্ব নড়েচড়ে বসেছে। ওমিক্রন মোকাবেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে কিনা, এ নিয়ে তোলপাড় বিশ্ব। আরও তোরেজোড়ে পশ্চিমা ধনী দেশগুলো বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বুস্টার ডোজ নিলে শরীরের ইমিউনিটি বাড়ে। কোনও কোনও গবেষণায় এও বলা হয়েছে যে, বুস্টার ডোজ ওমিক্রন মোকাবেলায় ৮৫ শতাংশ কার্যকর। সেই প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশের সরকার বুস্টার ডোজ দিচ্ছে। যেহেতু ছয় মাস পর দুই ডোজ টিকার কার্যক্ষমতা কমে আসে, তাই সরকার এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। 

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেসব টিকা গ্রহীতার ছয় মাস অতিবাহিত হয়েছে এবং যারা এস্ট্রোজেনেকা এবং ফাইজার টিকা নিয়েছে, তাদের দিয়ে এ বুস্টার ডোজ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবং এই কার্যক্রম একযোগে সারাদেশে চলবে। আমাদের দেশে এস্ট্রোজেনেকা, ফাইজার ডোজ দিয়ে বুস্টার কার্যক্রম চলবে।মডার্না কিংবা সিনোফার্ম ডোজ গ্রহীতাদের জন্যও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেহেতু আমরা তিন মাস সময় পাবো, এর মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ আলোচনা করে বাকিদেরও  বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে। এই হচ্ছে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট। কিন্তু আমাদের দেশে যেসমস্ত হাসপাতালগুলোতে এস্ট্রোজেনেকা কিংবা ফাইজার টিকা কর্মসূচি চলেছে, সেসব হাসপাতাল গুলোতে বুস্টার ডোজ দেয়া হবে।  

তিনি আরও বলেন, বুস্টার ডোজ কাদেরকে দেয়া হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, পলিসি হিসেবে প্রথম টিকার বুস্টার ডোজ পাবেন ষাটোর্ধ্বরা এবং সম্মুখ সারির করোনাযোদ্ধারা। তবে অনেকে সমালোচনা করে বলছেন যে, যেসব ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা এখনও প্রথম ডোজই পাননি, তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? এটা অনেকেই আলোচনা করছে। তবে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। সরকার গোটা জনগোষ্ঠীকেই ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনতে বদ্ধ পরিকর। এ নিয়েই তারা এগুচ্ছে। এর কারণ হলো আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা আছে। পাশাপাশি সরকারের টিকাপ্রাপ্তিতেও কোনো সমস্যা নেই। পাশপাশি সরকার ভ্যাক্সিন ইনন্সিটিটিউটও করতে যাচ্ছে। 

ডা. আজিজ বলেন, টিকার সরবরাহ নিয়ে যেহেতু সরকারের কোনো সমস্যা নেই, ফলে সব জনগোষ্ঠীই টিকা পাবে। যারা এখনও প্রথম ডোজ পাননি, তাদেরকেও সরকার টিকা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসবে। তবে আমরা মনে করি, যারা এখনও প্রথম ডোজ নেননি, তাদের জন্য সরকার আরও প্রচার প্রচারণা চালাবে যাতে তারা টিকা নিতে আগ্রহী হয়। পাশাপাশি সহজে টিকা নিতে আসতে উদ্বুদ্ধ করতে রেজিস্ট্রেশন সহজ করাসহ বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি নিতে পারে। উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা দিয়েও ২০ শতাংশ মানুষ টিকা নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। আমরা মনে করি, আমাদের দেশে সরকার একটু প্রচার-প্রচারণা করলেই মানুষ টিকা নিতে আসবে। সুতরাং এই প্রেক্ষাপটে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট।

তিনি বলেন, এটা ঠিক যে, সবাইকে সুরক্ষিত রাখতে হলে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে। আগত দিনগুলোতে নতুন নতুন ভেরিয়েন্টও আসতে পারে। সুতরাং আমাদের সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। সরকারের প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি মানার যেসব নির্দেশনা আছে, সেগুলো মানতে হবে। সবাইকে মাস্ক পড়া উচিত। চলমান টিকা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা উচিত। তাহলেই আমরা সুরক্ষিত থাকবো। সারা বিশ্বই ওমিক্রন আসার পর সবাই সতর্ক হচ্ছে। ওমিক্রন মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমাদের জন্য সুখবর হচ্ছে যে দুই জন ধরা পড়েছিল, তারপর আর নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭