ইনসাইড পলিটিক্স

ব্যবসা পেতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এত তোড়জোড়


প্রকাশ: 21/12/2021


Thumbnail

সাম্প্রতিক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করেছে। গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো, বাংলাদেশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি ইত্যাদি সবই বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন যে এসবের পিছনে শক্তিশালী লবিস্ট গ্রুপ কাজ করছে, যুদ্ধাপরাধী এবং বিএনপি'র পয়সায় বিভিন্ন লবিস্ট গ্রুপ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। সেই অপপ্রচার অংশ হিসেবেই মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে বাংলাদেশে বিরোধী তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে মনে করেন বিভিন্ন মহল। আর এসব প্রেক্ষিতেই মনে করা হচ্ছে যে বাংলাদেশ সরকারের উপর নতুন করে দ্রুত চাপ সৃষ্টির জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল যে লবিস্টদের কথায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন কেন বাংলাদেশে বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করবে। কেনই বা তারা গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাবে না কিংবা সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। কূটনৈতিক মহল মনে করছেন এটি আসলে বাংলাদেশের উপর একটি চাপ সৃষ্টির কৌশল এবং এই চাপ প্রয়োগের মূল লক্ষ্য হলো ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো। 

গত এক দশকে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে এবং বিশ্বে বাংলাদেশ একটি বড়বাজার হিসেবে ক্রমশ পরিচিত হতে যাচ্ছে। আর বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অংশীদার হচ্ছে চীন। মূলত চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নৈকট্য একটা নূতন মাত্রায় উপনীত হয়েছে। যে কারণে অনেকেই মনে করছেন যে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ঈর্ষান্বিত করেছে। তবে চীনের সাথে আরো অনেক দেশেরই অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে, এটি বিশ্বে বর্তমানে বাস্তবতা যে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক না থাকলে কোনো দেশই এখন অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি অর্জন করতে পারছেনা। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশকে চীন থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আছে কিনা এ নিয়েও অনেকের সন্দেহ রয়েছে। তবে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে অর্থনীতিতে ধুঁকতে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাজার এখন বড় প্রয়োজনীয় আর বাংলাদেশ যেহেতু ক্রমবর্ধমান একটি বাজার এবং এখানে অর্থনীতি বিকাশমান হচ্ছে সেইজন্য এই বাজারে অংশদারিত্বের জন্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাপ দিচ্ছে। 

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ডেভিড মিলারের বদলে নতুন রাষ্ট্রদূতের নাম ঘোষণা করেছেন এবং এই নতুন রাষ্ট্রদূত যখন বাংলাদেশে আসবেন তার মূল লক্ষ্য হবে বাংলাদেশ বাজার সম্প্রসারণ। বাংলাদেশে এখন অনেকগুলো মেগা প্রকল্প চলছে, অনেক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে। কিন্তু কোনোটাতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নেই। এখানে মার্কিন নীতি নির্ধারকরা মনে করেন যে বাংলাদেশে মার্কিন বাজার ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। যদিও বোয়িং সহ বেশ কিছু বিমান ক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে ভালো ব্যবসা করেছে কিন্তু এটুকুই যথেষ্ট নয়। তারা এখন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের ভূমিকা বাড়াতে চায় এবং এই বাজারে তাদের হিস্যা নিতে চায়। আর এই হিস্যা বাড়ানোর জন্যই এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগের কৌশল নিয়েছে বলেই বিভিন্ন মহল মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭