সোশ্যাল থট

করোনাকাল; পুলিশ-নাট্য পরিচালক-সাংবাদিকের ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৬ এপ্রিল, ২০২০


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ তাদের মতামত প্রকাশ করেন সেখানে সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে তাদের মনের অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে। বাংলা ইনসাইডার নিয়মিত আপনাদের সেসবের খোঁজ দেবে। তবে এই লেখার সমস্ত দায় দায়িত্ব একান্তই পোস্ট দাতার।

সানী সানোয়ার

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা (এসপি)

কয়েকদিন আগে একজন আমাকে ইনবক্স করলো

- ভাই, প্রতিটি থানায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দাফন-কাফন-জানাজা পড়ানোর নিয়ম শিখিয়ে দিন। কাজে লাগবে।

আমি কোন উত্তর দিলাম না। কারণ আমি `থ খাইয়া` গেছি। এ কাজও পুলিশকে করতে হবে!!

আবার একজন ইনবক্স করলো,

- ভাই, মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তদের জন্য কিছু করেন। এরা তো সাহায্যও চাইতে পারছে না! খুব কষ্টে আছে এরা।

- আমি তো পুলিশে আছি, ভাইয়া?

- আমি জানি। আর বলার মতো কাউকে দেখছি না। তাই আপনাকে বললাম আর কি।

সেদিন রাতেই আরেকজন ইনবক্স করলো। একটা নাম-ঠিকানা-ফোননাম্বার দিয়ে বলল,

- মোহাম্মদপুর এলাকায় এই লোক আমার প্রাক্তন কলিগ। গতকাল রাত থেকে নাকি বাসায় খাবার নেই। কিছু কি করা যায়?

আমি ঐ এলাকার একজন পূর্ব পরিচিত পুলিশ অফিসারকে বিষয়টি জানালে সে বলল,

- স্যার, দুই ঘন্টার মধ্যে বাজার পৌচ্ছে যাবে। আমি ওনার সাথে কথা বলে নিচ্ছি। কোন চিন্তা করবেন না আপনি।

পরদিন সকালে আরো একটা ঠিকানা পাঠালো একজন বন্ধু। এক ভদ্রলোকের বাসায় নাকি বাজার-সদাই-টাকা-পয়সা কিছুই নেই। থাকেন ওয়ারী। আমি তৎক্ষণাৎ ওয়ারী বিভাগের ডিসি, আমার দোস্ত-কাম-ব্যাচমেট ইফতিকে বিষয়টি জানালাম। সে সাদরে একটি ছোট্ট নোটবুকে তার নাম-ঠিকানা লিখে নিয়ে বলল,

- দোস্ত, আজকেই এরকম ৭টি পরিবারের নাম নোট করলাম। এপর্যন্ত কয়েক ডজনের ব্যবস্থা হয়েছে । এই পরিস্থিতি যতদিন থাকবে এই পরিবারগুলোকে তাই দেয়া হবে যা আমার পরিবার পাবে ইনশাআল্লাহ,

-আরেহ তুই দিবি কিভাবে! অনেকেই তো দিচ্ছে তাদেরকে দিতে বল।

-সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।

- আচ্ছা। থ্যাংক্স।

একলোক ইনবক্স করলো,

- ভাইয়া, পুলিশ সব বিষয়ে এত কড়া হলে হবে। ধানকাটার শ্রমিক পাচ্ছি না। ধান না উঠলে খাবো কি?

- হমম৷ কি একটা অবস্থা!

পরদিন পত্রিকায় দেখলাম চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ নিজ উদ্যোগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কয়েক হাজার ধানকাটা শ্রমিকদের গাড়ির বহর নিয়ে হাওর এলাকায় যাচ্ছে। মুগ্ধ হয়ে গেলাম। চারিদিকে এসব হচ্ছেটা কি!

ভাড়া দিতে না পারায় এক ভাড়াটিয়েকে বাসা থেকে বের করে দিলো আড়াই-কাঠা জমির এক বাড়িওয়ালা জমিদার। পুলিশ গিয়ে তাদের আবার সেই বাসায় তুলে দিয়ে আসলো। জমিদার পরলো ফ্যাসাদে।

`করোনা রোগী` ভেবে অসুস্থ জ্যান্ত মা`কে ফেলে দিল সন্তান, মৃত ভাইকে ফেলে দিল সহোদর… এরকম অহরহ ঘটনায় পুলিশ তাদের তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেল কিংবা দাফনের ব্যবস্থা করলো।

চাল চোর, তেল চোরদের ধরে জেলে ঢুকালো পুলিশ। এটা অবশ্য তাদের নিয়মিত কাজ, তবুও চোখ খোলা রেখেছিল বলে সাধুবাদ পেলো।

দোকান, বাজার, মহল্লায় সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে ২৪ ঘন্টা জেগে রইল।

অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চল কলারোয়া থানা, সাতক্ষীরার পুলিশও আধুনিক প্রযুক্তি তথা ড্রোন উড়িয়ে পেট্রোলিং করে আড্ডাবাজদের গ্রেফতার করলো।

করোনা রোগীদের অনেক কবরস্থান দাফন করতে দিচ্ছে না। গেইটে নোটিশ ঝুলিয়ে দিল। এসব দেখে এক পুলিশ অফিসার তার এক টুকরো জমি `করোনা কবরস্থান` -এর জন্য ওয়াকফ করে দিল।

ডিএমপি`র পুলিশ লাইনের কিচেন থেকে প্রতিদিন সাত হাজার লোকের খাবার রান্না হচ্ছে আর পৌচ্ছে যাচ্ছে ক্ষুধার্তদের ঘরে ঘরে।

পুলিশের দুই শতাধিক সদস্য করোনা আক্রান্ত, কোয়ারেন্টাইনে কয়েক হাজার। প্রতি ইউনিটের পুলিশকে ভাগ করা হয়েছে ২-৩টি ভাগে। এক ভাগের সাথে আরেক ভাগের দেখা করা নিষেধ। উদ্দেশ্য একটিই- ন্যুনতম কোন একটি ভাগকে শেষ দিন পর্যন্ত হলেও ডিউটি`র জন্য সুস্থ রাখা। কারণ - "পুলিশ ব্যর্থ হলে দেশ ব্যর্থ হবে।"

আজ সকালে একজন সাংবাদিক ভাই ইনবক্স করেছে। তিনি একটি তালিকা তৈরি করে লিখেছে যে, পুলিশ বর্তমানে নিজ কাজের অতিরিক্ত হিসেবে ৯টি মন্ত্রণালয়ের কাজ একাই করছে। আমি সঙ্গত কারণে তালিকাটি এখানে দিলাম না। কারণ, ঐসব মন্ত্রণালয়ও তাদের সামর্থের মধ্যে চেষ্টা করে যাচ্ছে। হয়তো এরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা কম, কিন্তু তারা কেউ বসে নেই।

যাহোক, পুলিশের মধ্যে এই ব্যতিক্রমধর্মী মানসিকতা থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে পুলিশ সব সময় প্রতিকূলতার মধ্যেই কাজ করে আসছে। পুলিশের কমিউনিটি এনগেইজমেন্ট, মনোবল, অভিজ্ঞতা, পেশাগত জ্ঞান, মানবিকবোধ, শৃঙ্খলাবোধ, আনুগত্য যেকোন পেশার উর্ধ্বে। বিষয়টির উপর ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানীদের গবেষণা করা দাবি রাখে।

একটু খুলে বলিঃ

১৮৬১ সালে পুলিশ গঠনের পর থেকে পুলিশ কখনো পিছ পা হয়নি। পুলিশের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেনি। পুলিশ সব সময় সব যুগে তার সীমিত সাধ্য এবং ইকুইপমেন্ট দিয়েই অপরাধ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছে। ব্রিটিশ, পাকিস্তানী, গণতান্ত্রিক, সামরিক প্রভৃতি শাসনামলে তারা ছিল আনুগত্যের প্রতীক। সমালোচনা হতে পারে - কোন কোন ক্ষেত্রে কতিপয় সদস্যের অসদাচরণ নিয়ে, শোষনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করা নিয়ে। একথাও আসতে পারে - তাদের কি মেরুদন্ড ছিল না! এসব প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। তবে, ২৫ মার্চ কালো রাতে কিন্তু তেমনটি ঘটেনি। তারাই সবার আগে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করেছিল।

একবার ভেবে দেখুন ন্যুনতম একটি ইউনিট এমনই দরকার আছে কিনা, যে ইউনিট রাষ্ট্রের প্রতি শতভাগ অনুগত থাকবে। নিজেদের জীবন-মৃত্যু-লাভ-লোকসান তোয়াক্কা না করে শুধু সরকারের আদেশ-নিষেধ মেনে চলবে। আজ পুলিশের মাঝে এই চর্চাটুকু আছে বলেই সরকারি আদেশে পুলিশের মধ্যে অসম্ভবকে সম্ভব করার এক আদিম প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বণ্যায় সব ডুবে গেলেও ডুবন্ত থানার পাশে কৃষকের গরুর নিরাপত্তার জন্য খোয়ারের ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে পরিবার কর্তৃক ফেলে রাখা `করোনায় মৃত` লাশের দাফন-কাফন করা পর্যন্ত অনেক বিরল কাজের ধারাবাহিকতা শুধুমাত্র পুলিশেরই আছে। কয়েক লাখ উন্মাদ লোকের বিপক্ষে করেক শত অপ্রস্তুত পুলিশ (বর্তমান আইজিপি, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার ড. বেনজীর আহমেদ -এর নেতৃত্বে) লড়াই করে ন্যুনতম ক্যাজু্য়্যালিটির মাধ্যমে শাপলা চত্তর দখল করে নিয়েছিল। চাল-চুলাহীন পুলিশের নবগঠিত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট দুই বছরের মধ্যে (সিটি চীফ জনাব মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে) দেশের জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা শূণ্যের কোঠায় নিয়ে এসেছে। আর বিশ্বের দরবারে সব থেকে দ্রুতগতিতে উগ্রবাদ নিয়ন্ত্রণের রোল মডেল হিসেবে অনুকরণীয় একটি ইউনিটের মর্যাদা পেয়েছে। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে পুলিশের পিকুলিয়ার আচরণ, সাহসিকতা, মানসিকতা, পেশাদারিত্ব, অভিজ্ঞতার এবং আনুগত্যের ফলে। তাই `করোনা` আক্রান্ত হবার এই চরম ঝুঁকির মধ্যেও ২ লাখ ১২ হাজার পুলিশের একজন সদস্যও আজ পর্যন্ত এই `করোনা যুদ্ধে` দায়িত্ব পালন করতে অস্বীকৃতি জানায়নি। ভয় পায়নি। এখনো পরিবারের পিছু টান তাদেরকে কর্তব্য পালন থেকে এতটুকু বিচ্যুত করতে পারেনি।

এটি গর্ব বা অহংকারের বিষয় নয়। এটি গবেষণার বিষয়। একটি তুমুল অজনপ্রিয় পুলিশ ইউনিট কিভাবে এতটা মানবিক, জনপ্রিয় এবং আস্থার প্রতীক হয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নিল?

মাহফুজুর রহমান

সাংবাদিক ও নারায়ণগঞ্জের স্থানীয়

সকালে ভাবছিলাম, এলাকায় কোলাহল বেড়ে গেছে কেন?

দুপুরে জানলাম, নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে।

অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে, ভাবতে ভাল লাগছে।

কিন্তু হাসপাতালগুলো রোগীর মিছিল সামাল দিতে প্রস্তুত তো?

কামরুজ্জামান মিলু

পাবলিক রিলেশন অফিসার- স্বপ্ন

করোনার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের নিজ নিজ জেলখানা ও ডিটেনশন সেন্টারগুলো খালি করতে শুরু করেছে। সৌদি আরবের পর এবার মাস্কাটের জেলে থাকা ২৯২ বাংলাদেশিকে স্পেশাল ফ্লাইটে ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছে ওমান সরকার।

যদিও ঢাকা চেয়েছিল করোনার এই কঠিন মুহুর্তে কোনো প্রবাসী ফেরত না আসুক। বিশেষ করে জরুরি ভিত্তিতে তৈরি হতে যাওয়া ৪০০০ প্রবাসী বা বিদেশ ফেরতের একসঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিন সুবিধার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু না, তার আগেই সৌদি আরব চলতি মাসের মাঝামাঝিতে ওমরাহ করতে গিয়ে আটকে পড়া ১৪৪ বাংলাদেশির সঙ্গে ১৬৮ প্রবাসী, যারা বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে ছিলেন তাদের স্পেশাল বিমানে তুলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়। এই কায়দায় শুক্রবার সন্ধ্যায় ওমানে এয়ারের বিশেষ ফ্লাইটটি ঢাকায় নামে।

মাসুদ হাসান উজ্জল

পরিচালক

দু:খজনক ভাবে আমি মধ্যবিত্ত। গাড়ি চড়া মধ্যবিত্ত। আমার মত আর যারা গাড়ি চড়া মধ্যবিত্ত তারা সম্ভবত কোনভাবেই এটা প্রকাশ করতে নারাজ যে আমরা বিত্তবান নই! সমাজে ছোট হয়ে যাওয়ার একটা ব্যপার আছে না ! আমি বিনীতভাবে বলতে চাই এটা একধরণের Un Smartness ! রুবানা হককে দেখে শিখেন কীভাবে টাকা চাইতে হয় !

এদেশে এই করোনা ইস্যুতে দুই শ্রেণীর মানুষ হাত পেতে টাকা চাইতে দ্বিধা করছে না -এক হলো বিত্তবান শ্রেণী ( যাদের টাকা চাওয়া শেষই হচ্ছে না ) আরেক হলো দরিদ্র শ্রেণী । এই মধ্যবিত্ত শ্রেণী যাত যাওয়ার টেনশনে টু শব্দটিও করছে না - যদি কেউ ফকির ভাবে! অথচ কেউ জানেই না আমরা ট্যাক্স কেন দেই ! কেউ বোঝেনা আপদকালীন সময়ে প্রণোদনা , ভর্তুকী এসব সরকার নিজের গাঁটের টাকা খরচ করে দেয় না , আপনার আমার ট্যাক্সের টাকা থেকেই দেয় । আর সেই টাকার সিংহভাগই আমার আপনার মত মধ্যবিত্তর রক্ত পানি করা টাকা । বিত্তবানরা হাজার কোটি টাকার ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আরো বেশী বিত্তবান হয়। মধ্যবিত্তর পালানোর কোন পথ নেই , সরকারী কোষাগারে নিয়মিত কর দিতেই হবে !

অথচ অবাক হয়ে দেখলাম এই লকডাউনের কর্মহীনতায় সরকারের মধ্যবিত্ত নিয়ে নুণ্যতম কোন পরিকল্পনা নেই -আলাপও নেই! মধ্যবিত্তরও তাতে কোন হেলদোল নেই ! লকডাউনে স্বামী রান্না করছে , স্ত্রী থালাবাসন মাজছে , দাম্পত্ত সম্পর্ক গভীর হচ্ছে , এতেই সবাই খুশী ! আর আমাদের মিডিয়ার সবাই তো সুপারস্টার , সুপারস্টারদের কী যেকোন পরিস্থিতে মাটিতে নামলে চলে!

আমি ভাই ক্যামেরাট্যামেরা নিয়ে কাজে নেমে পড়ব! নিউজ পড়লাম ভিআইপিদের করোনা চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল, ভেন্টিলেটর প্রস্তুত করা হচ্ছে। সুতরাং সরকারের যেহেতু করোনা প্রস্তুতি ভিআইপি আর সিআইপি নিয়ে , আমি যে আদৌ Exist করি কীনা তা নিয়ে কোন মাথাব্যথা নাই , আমার জন্য এই লকডাউন বিলাসীতা ছাড়া আর কিছুই নয়। সুতরাং এইসব গালভরা শব্দ কোয়ারেন্টিন , Stay home -stay safe দিয়ে আমার কোন কাজ নাই! আপনারা যারা করোনা আসার পর এমন আচরন করছেন যে এর আগে অমরত্ব পেয়ে বসেছিলেন , তাদের সাথে স্বর্গে দেখা হচ্ছে না, আফসোস !



মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

আপনার চারপাশের ‘টক্সিক’ ব্যক্তিদের চিনবেন যেভাবে

প্রকাশ: ০৮:০০ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

যে কোনো কিছুতে অসম্মত হওয়ার প্রবণতাকে টক্সিক পারসোনালিটি বলে। এ ধরণের মানুষ আশেপাশে থাকলে তাদের জীবন থেকে এড়িয়ে চলাই উত্তম। কারণ এ ধরণের মানুষের ব্যবহার আপনার মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, এমনকি সামাজিকভাবেও হেয় করে। টক্সিক পারসোনালিটির মানুষকে কেউ পছন্দ করে না। টক্সিক পারসোনালিটির মানুষকে এড়িয়ে চলতে পারাটাই নিজের জন্য মঙ্গল।

কথায় বলে, আপনি আপনার আশপাশের সবচেয়ে কাছের পাঁচজন মানুষের গড়। এর মানে হলো আপনার জীবনে গুরুত্ব পাওয়া মানুষগুলো আপনার চিন্তা, জীবনসঙ্গী বাছাই, পছন্দ, অপছন্দ, রুচি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এ সবকিছুতে প্রভাব ফেলে। আপনি এই মানুষগুলোর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হন। এই মানুষগুলো আপনাকে ক্রমাগত পিছিয়ে দেয়। এমনকি জীবন থেকে ছিটকেও পড়তে পারেন।

তাই ‘টক্সিক’ এই মানুষগুলো থেকে দূরে থাকার জন্য আপনি আগে জীবন থেকে এই মানুষগুলোকে বিদায় করুন, নিজে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন।

১. ‘টক্সিক’ মানুষেরা সাধারণত কোনো কিছুর দায়িত্ব নিতে চায় না। যেকোনো কিছুর দায়ভার অন্যের কাঁধে চাপাতে তারা ওস্তাদ। তাদের নিজেদের দুরবস্থার জন্য আপনাকে বা অন্যদের দায়ী করে। অন্যদিকে কৃতিত্ব নিজের দিকে টেনে নেওয়ার বেলায় পটু।

২. এরা সহানুভূতিশীল নয়। ‘টক্সিক’ এই মানুষেরা কখনো আপনার জুতায় নিজের পা গলিয়ে আপনার অবস্থা বা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করবে না। এই মানুষদের আপনি আপনার অনুভূতি বোঝাতে ব্যর্থ হবেন।

৩. সমালোচনা, কথা লাগানো তাদের অবসরের প্রিয় কাজ। বিয়ের পর মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্ক, চরিত্রের বিশ্লেষণ, নেতিবাচক চর্চা-এগুলোতে তারা কখনোই ক্লান্ত হয় না। আপনি মনে রাখবেন, আপনার কাছে অন্যের সম্পর্কে এই ধরনের কথা বলছে। এর অর্থ হলো আপনার সম্পর্কে এই ধরনের কথা বলতেও তাদের নীতিতে আটকাবে না।

৪. সম্পর্ক মানেই বিশ্বাস, ভরসা আর স্বস্তির একটি জায়গা। তা হোক বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিংবা ভালোবাসার। কিন্তু এই সম্পর্ক যদি আপনাকে তিনটি উপাদানের একটি দিতেও ব্যর্থ হয় তবে বুঝতে হবে, কোথাও সমস্যা আছে।

৫. ব্যক্তিভেদে সম্পর্কের ধরন ভিন্ন হয়, সম্পর্কের সংজ্ঞাও একেকজনের কাছে একেক রকম। তবে আপনার সঙ্গী যদি প্রতিনিয়ত আপনাকে ছোট করে কথা বলে, যেকোনো কাজে জবাবদিহিতা চায় এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, সবসময় আপনাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে এমন সম্পর্ককে টক্সিক বলা যায়।

৬. আপনাকে আপনার পরিবার বা কাছের মানুষদের থেকে দূরে সরিয়ে নিতে পারে এই টক্সিক মানুষেরা। এসব টক্সিক মানুষ আপনাকে ‘একঘরে’ করে ফেলতে পারে।

৭. এসব ‘টক্সিক’ মানুষদের সঙ্গে কথোপকথনের পর আপনার হালকা অনুভূত হয় না। বরং আবেগীয়ভাবে ভার ভার লাগে। আমাদের আশপাশেই রয়েছে অনেক ‘টক্সিক মানুষ’। এই মানুষদের সঙ্গে কথা বলার পর আপনার ওপর ‘নেতিবাচক এনার্জি’ ভর করে। মাঝেমধ্যে বিরক্তি, হতাশা আর রাগ আপনাকে গ্রাস করে।

৮. আসলে আমাদের জীবনে বাড়ির বাস্তুর প্রভাব খুব বেশি করে পড়ে।

৯. নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করতেও পিছপা হয় না তারা।



মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

তবে কি তাদের নিজেদের বিশ্বাসেই ঘাটতি রয়েছে?

প্রকাশ: ০৯:২৯ এএম, ০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের কোনোকিছু খারাপ লাগলেও সেটি মাথা ব্যথার কারণ কখনোই হয়নি, যে পর্যন্ত সেটি সমাজের জন্য হানিকর বলে বিবেচিত না হয়েছে!

ষাটোর্ধ্ব বয়সী এক লোক সম্প্রতি বিয়ে করেছেন, এই বয়সী ব্যক্তির অষ্টাদশী তরুণীর সাথে বিয়ে গ্রামে প্রায়শই কম করে হলেও ঘটে! সমস্যা এখানে নয়, সমস্যা হলো সম্প্রতি তৃতীয় বিয়ে সম্পন্নকারী এই ব্যক্তি তার বিয়ে পরবর্তী সময়কে দারুণভাবে গ্লোরিফাই করে বেড়াচ্ছেন। একইসাথে তার মত অতি প্রাপ্তবয়স্ক লোকের সাথে স্বাভাবিকভাবেই তার সহধর্মিণী সহমত পোষণ করে আরও ঝাঁঝালো বক্তব্য রেখে যাচ্ছেন এবং তিনি তা উপভোগও করছেন।

আজ বইমেলায় স্কুল, কলেজ পড়ুয়া অনেক বাচ্চারা নববিবাহিত এই দম্পতির বই কিনতে যেয়ে, শ্যুগা ( Sugar) ড্যাডি টার্মকে রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে এই ধরনের বিয়ে অথবা ড্যাডি টাইপ কারো সাথে থাকাকে জায়েজ মনে করে নিচ্ছে! এই কিশোরীদের সামনে প্রশ্নগুলো ছুঁড়ছে কারা? বোধহীন এই প্রশ্নগুলো করছেন, তথাকথিত কিছু ইউটিউব চ্যানেলের বুমধারী ব্যক্তিগণ, যাদের কাছে নিজ চ্যানেল অথবা পেইজের কিছু সস্তা ভিউজ প্রাপ্তি ছাড়া আর কোনো দায়বদ্ধতা নেই!

আমাদের স্বল্পশিক্ষিত, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত অথচ মননে অশিক্ষিত সম্প্রদায়ের হাতে নতুন কিছু ভুলক্রমে চলে আসলে সেটি ভাজা ভাজা না করে আমাদের নিস্তার নাই। সম্প্রতি শ্যুগা (Sugar) ড্যাডি অথবা মম বিষয় নিয়ে অতি উৎসাহী হওয়ার মানে দাঁড়াচ্ছে, এই মস্তিষ্ক বিবর্জিত শ্রেণী অতি সম্প্রতিই এই শব্দদ্বয়ের সাথে পরিচিত হয়েছে! যার কারণে নিজ নিজ পেইজে ১৮+ কনটেন্টের মত বিষয়াদি ছাড়াও আরও বর্জ্য সংযুক্ত করে নিচ্ছে!

অন্যদিকে ষাটোর্ধ্ব ভদ্রলোকের সহধর্মিণী তাদের এই বিয়েকে প্রতিনিয়ত জাস্টিফাই করে যাচ্ছেন। তিনি ভুল করছেন এই জায়গাতেই! কোনোকিছু স্বাভাবিক মনে করলে সেটিকে বারবার বলে বুঝাতে হয় না এটি স্বাভাবিক! এই দম্পতি সমাজের একমাত্র দম্পতি নন, অন্য সবাই তাদের মত জাস্টিফাই করতে তো আসছেন না! তারা তবে কেন এই চেষ্টা করছেন? নিজ সম্পর্ককে স্বাভাবিক বোধ করলে অন্যের কাছে তা প্রতিষ্ঠিত করার এত তীব্র চেষ্টা কেন করছেন? তবে কি তাদের নিজেদের বিশ্বাসেই ঘাটতি রয়েছে?

বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ভুল নয় কিন্তু সেটিকে প্রচারণার মাধ্যমে জৌলুসপূর্ণ করে প্রকাশ করে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের বিভ্রান্ত করা, অত্যন্ত ভুল একটি পদ্ধতি! ১৮ বছর বয়সী কারো মাথায় সেই বোধ পুরোপুরি না-ই আসতে পারে, ষাটোর্ধ্ব কারো মাথায় এটি কেন কাজ করছে না সেটাই বোধগম্য নয়!

লেখক : ইফতেখায়রুল ইসলাম

এডিসি, ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স ডিভিশন।

(লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত)



মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

টাঙ্গাইল শাড়ির তাঁতিরা অনেকটা আমার মতো: তসলিমা নাসরিন

প্রকাশ: ০১:৫০ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪


Thumbnail

টাঙ্গাইল শাড়ি এবং টাঙ্গাইল শাড়ির তাঁতিরা অনেকটা আমার মতো। বাংলাদেশে জন্ম, কিন্তু নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি বলে মন্তব্য করছেন ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিন। 

তসলিমা নাসরিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে টাঙ্গাইল শাড়ি ও টাঙ্গাইল শাড়ির তাঁতিদের নিয়ে লিখতে গিয়ে বলেন, টাঙ্গাইল থেকে প্রচুর হিন্দু তাঁতি ভারত ভাগের পর পূর্ব বঙ্গ থেকে, বা পূর্ব পাকিস্তান থেকে বা বাংলাদেশ থেকে মুসলমানের অত্যাচারের ভয়ে ভারতে চলে এসেছেন। ভারতেই তাঁরা টাঙ্গাইলে যেভাবে শাড়ি বুনতেন, সেভাবেই শাড়ি বুনছেন। কিন্তু প্রচুর তাঁতি তো টাঙ্গাইলে রয়েও গেছেন। তাঁরাও বুনছেন টাঙ্গাইল শাড়ি। 

আশির দশকে, আমি যখন থেকে শাড়ি পরতে শুরু করেছি, আমার সবচেয়ে প্রিয় শাড়ি ছিল টাঙ্গাইল শাড়ি। দামে কম, মানে ভাল। আমার বাড়ির কাছে বেইলি রোডে ছিল টাঙ্গাইল শাড়ি কুটির। ডাক্তারি চাকরি করতাম প্রথমে মিটফোর্ডে তারপর ঢাকা মেডিকেলে। বেতনটা পেলেই বেইলি রোডের দুটো দোকানে চলে যেতাম, টাঙ্গাইল শাড়ি কুটির থেকে কিনতাম টাঙ্গাইল শাড়ি, আর তার পাশের সাগর পাবিলিশার্স নামের বইয়ের দোকান থেকে কিনতাম বিস্তর বই। আমি প্রচুর বই পড়তাম, এবং খুব গুছিয়ে শাড়ি পরতাম। রঙ মিলিয়ে কপালের টিপ পরতাম, রঙ মিলিয়ে হালকা কানের দুল বা হাতের চুড়ি পরতাম। আমার যত শাড়ি ছিল, তার সত্তর বা পঁচাত্তর ভাগই ছিল টাঙ্গাইল শাড়ি। টাঙ্গাইল শাড়ির প্রতি আমার ভালবাসার কথা অনেকেই জানতো। আমার সেই জীবনকে এখন রূপকথা বলে মনে হয়। 

এখন টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই অর্থাৎ জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশান ভারত পেয়েছে বলে চারদিকে বিতর্ক চলছে। ভারতের লোকেরা বলছে, কাজটা ভাল হয়েছে, বাংলাদেশের লোকেরা বলছে, কাজটা ভাল হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, টাঙ্গাইল থেকে তাঁতিরা ভারতে চলে গিয়ে একই পদ্ধতিতে যদি টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করতে পারেন, তাহলে কি তাঁরা টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব আইনত পেতে পারেন? এ নিয়ে কেউ বলছেন পারেন, কেউ বলছেন পারেন না। টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব হয়তো ভারতে চলে আসা তাঁতিরা পেতে পারতেন, যদি টাঙ্গাইল শাড়ি বোনা টাঙ্গাইলে বন্ধ হয়ে যেত, যদি টাঙ্গাইল শাড়ি বোনার কেউ আর বাস না করতো টাঙ্গাইলে, যদি কারখানায় তালা পড়তো এবং যদি ভবিষ্যতে এই তাঁত শিল্প রক্ষা করার উপায় না থাকতো। তা কিন্তু ঘটনা নয়। 

টাঙ্গাইল শাড়ি বোনার তাঁতিদের মধ্যে বসাক বংশ বিখ্যাত। বসাক বংশের সবাই বাংলাদেশ ত্যাগ করেননি। প্রচুর বসাক রয়ে গেছেন টাঙ্গাইলে, এবং বংশ পরম্পরায় তাঁরা আজও শাড়ি বুনছেন। টাঙ্গাইল টাঙ্গাইলেই আছে, থাকবে। যে বসাক তাঁতিরা টাঙ্গাইল থেকে ভারতে চলে গিয়ে শান্তিপুরে স্থায়ী হয়েছেন, সেই শান্তিপুরও শান্তিপুরেই আছে, থাকবে। শান্তিপুরের বসাকরা কিন্তু যে শাড়ি বুনছেন, সেই শাড়িকে শান্তিপুরী শাড়ি না বলে টাঙ্গাইল শাড়ি বলছেন। শান্তিপুরের নাম তাঁরা চাইলেও বদলে দিতে পারেন না, বদলে  টাঙ্গাইল রাখতে পারেন না। এই তাঁতিদের একজন পদ্মশ্রী পেলেও, শান্তিপুরে বোনা শাড়িকে টাঙ্গাইল শাড়ি বলে ডাকলেও শান্তিপুরের নাম টাঙ্গাইল হবে না এবং টাঙ্গাইলের নাম টাঙ্গাইলই রয়ে যাবে। এবং টাঙ্গাইলে বোনা শাড়ির নামও টাঙ্গাইল শাড়িই রয়ে যাবে।  

মনে রাখতে হবে টাঙ্গাইলের তাঁতিরা দু’দেশে ভাগ হয়ে গেছেন। টাঙ্গাইল নামের অঞ্চল তো শাড়ি বানায় না, শাড়ি বানায় মানুষ। মানুষই কারিগর। ঢাকায় যেমন আমার বাড়ির পাশে টাঙ্গাইল শাড়ির দোকান ছিল, আমি ভারতের যে শহরে এখন বাস করছি, সে শহরেও আমার বাড়ির পাশে রয়েছে একটি টাঙ্গাইল শাড়ির দোকান। এখান থেকেও আমি যখন ইচ্ছে টাঙ্গাইল শাড়ি কিনতে পারি। দেশের কত কিছু মিস করি, টাঙ্গাইল শাড়ি মিস করি না। কলকাতায় মরণচাঁদের মিষ্টির দোকান দেখে একবার চমকে উঠেছিলাম। ঢাকার মরণচাঁদের দই আর মিষ্টি স্পেশাল ছিল। এখন মরণচাঁদের উত্তরাধিকারীরা যদি তাঁদের সিক্রেট রেসিপি  নিয়ে ঢাকা থেকে ব্যবসা গুটিয়ে কলকাতায় আসেন, এবং পুরোনো রেসিপি অনুযায়ী দই মিষ্টি বানান, তবে তাঁদের কেন অধিকার থাকবে না সেসবের স্বত্ব পাওয়ার? একবার তো শুনেছিলাম বাসমতি চালের স্বত্ব  দাবি করেছে আমেরিকা। রসগোল্লার স্বত্ব নিয়ে বহুদিন মারামারি চলেছে পশ্চিমবঙ্গ আর উড়িষ্যার মধ্যে।

এখন জরুরি কথা হলো, শাড়ি পরা তো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে দু’দেশেই, তাহলে শাড়ির মালিকানা নিয়ে কী লাভ কার? আমি খুব চাই মেয়েরা শাড়ি পরুক, ভালবেসে পরুক। টাঙ্গাইল শাড়ি দু’দেশেই পাওয়া যায়। একই কোয়ালিটির, একই স্টাইলের। স্বত্ব নিয়ে যখন লড়াই চলছে, অনেকে হয়তো নামটা প্রথম জানবে শাড়ির। শাড়ি কেমন দেখতে চাইবে, পরতে কেমন তাও জানতে চাইবে। এভাবে আগ্রহ বাড়ুক। টাঙ্গাইল নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। টাঙ্গাইলকে কেউ ধরে বেঁধে কোথাও নিয়ে যায়নি। টাঙ্গাইল শাড়ি  টাঙ্গাইলেরই থাকবে। ভারত সেই স্বত্ব ভুল করে পেলে ভারতকে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশভাগের আগে টাঙ্গাইল ভারতবর্ষের অংশ হলেও দেশভাগের পর টাঙ্গাইল বাংলাদেশের অংশ। তারপরও এ কথা আমাদের অস্বীকার করার উপায় নেই যে কাঁটাতার পেরিয়ে টাঙ্গাইলের যে তাঁতিরা এপারে অর্থাৎ ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁরাও বুকের ভেতর তাঁদের জন্মের ভূমি টাঙ্গাইলকে লালন করেন, তাঁদেরও স্বত্ব  পাওয়ার অধিকার আছে বলে তাঁরা মনে করেন। সেক্ষেত্রে অন্য কোনও নামে টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব তাঁরা পেতে পারেন, যেমন আদি টাঙ্গাইল শাড়ি বা নিউ টাঙ্গাইল শাড়ি। এই নামের মধ্যে রয়ে যাবে দেশ ভাগের আর সাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস। বাংলাদেশের কিন্তু টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব আমার আমার বলে চেঁচালে চলবে না, টাঙ্গাইলে যে তাঁতিরা শাড়ি বানাচ্ছেন, তাঁরা যেন টাঙ্গাইলে নিরাপদে বাস করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। যে বসাকরা টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করছেন, তাঁরা যেন তল্পি তল্পা গুটিয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য না হন, তা দেখতে হবে। যেন সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা আর না ঘটে দেশে।    

টাঙ্গাইল শাড়ি এবং টাঙ্গাইল শাড়ির তাঁতিরা অনেকটা আমার মতো। বাংলাদেশে জন্ম, কিন্তু  নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাংলাদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছি। বাংলাদেশ এবং ভারত...এই দু’দেশে বসবাসের সময় অনেকটা সমান হয়ে এসেছে আমার। বাংলাদেশ যতটুকু আমার, ভারতও ঠিক ততটুকু আমার। বাংলাদেশ আর ভারত দু’দেশের ক্রেতারা আমাকে ভুলতে বসেছে, এ যেমন ঠিক, আমাকে নিয়ে গর্ব করার লোকও এদেশে ওদেশে কিছু আছে...এও তেমন ঠিক।



টাঙ্গাইল শাড়ি   তাঁতি   তসলিমা নাসরিন  


মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

এই পূজা অশুভ শক্তির অবসান ঘটাক: সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ২২ অক্টোবর, ২০২৩


Thumbnail

সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলের অঙ্গীকার নিয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, ‘এই পূজা অশুভ শক্তির অবসান ঘটাক এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ সমাজে মানুষের সমৃদ্ধি হোক।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’

সজীব ওয়াজেদ আরও লিখেছেন, সবাইকে দুর্গাপূজার অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

উল্লেখ্য, গত ২০ (অক্টোবর) থেকে শুরু হয়  শারদীয় দুর্গোৎসব । আজ রোববার মহাঅষ্টমী। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে মহাঅষ্টমী পূজা শুরু হয়। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয় এবং ১১টায় কুমারী পূজা। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

রাত ৮টা ৬ মিনিটে সন্ধিপূজা শুরু হবে। রাত ৮টা ৫৪ মিনিটে পূজা শেষ হবে


পূজা   সাম্প্রদায়িক   অবসান   ঘটাক   শক্তির   উৎসব  


মন্তব্য করুন


সোশ্যাল থট

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য স্বচ্ছ নয়: এডিটরস গিল্ড

প্রকাশ: ০৯:২৪ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩


Thumbnail

বাংলাদেশের মিডিয়াও মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় আসতে পারে—ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের এমন বক্তব্যে উদ্বেগ জানিয়েছে এডিটরস গিল্ড।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগ জানিয়েছে সংগঠনটি।

এতে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর স্পষ্টভাবে বলেছে, বাংলাদেশে যাদের ওপর মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ শুরু করেছে এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছে। ঘোষিত নীতিমালায় গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম পেশাজীবীদের বিষয়ে কিছুই ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই ২৪ সেপ্টেম্বর পিটার হাস একটি সাক্ষাতকারে বলেন যে, বাংলাদেশের মিডিয়াও মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় আসতে পারে। 

পিটার হাস এর এই বক্তব্যের পর বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে মার্কিন সরকার বাংলাদেশের মিডিয়ার ওপর তার আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে নাকি মিডিয়া পেশাদারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব মতপার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বিবাদমান দলগুলোর কোনো পক্ষ না নিয়ে টিভি চ্যানেল, সংবাদপত্র এবং অনলাইন পোর্টালে নির্বাচনের পূর্ববর্তী ঘটনাগুলো কভার করছেন এবং নির্বাচনকে একাধিক ফরম্যাটে কভার করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আমরা জানতে চাই কী কারণে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মিডিয়াকে হেয় করার জন্য ব্যস্ত সক্রিয়তা শুরু করেছিলেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য যথেষ্ট স্বচ্ছ নয় এবং এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন। সাংবাদিকদের উপর ভিসা বিধিনিষেধ সম্প্রসারণের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে জনগণের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার এবং গণমাধ্যমের উপর অদৃশ্য সেন্সরশিপ আরোপ করার একটি প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা যেতে পারে, যা গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ বাকস্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নীতির পরিপন্থী। এবং শাসন।


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন