সম্প্রতি প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকাকে একটি ভিডিও ইন্টারভিউ দিয়েছেন অধ্যাপক যতীন সরকার। সেই ভিডিও ইন্টারভিউয়ের প্রতিক্রিয়ায় নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন তার ‘সুষুপ্ত পাঠক’ নামক ফেসবুক পেইজে অধ্যাপন যতীন সরকারের ইন্টারভিউয়ে বলা বক্তব্য নিয়ে লিখেছেন নিজের মন্তব্য। অধ্যাপক যতীন সরকারকে নিয়ে তসলিমা নাসরিনের লেখাটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
‘সুষুপ্ত পাঠক’ -পেইজে তসলিমা নাসরিনের লেখা:
লেখক অধ্যাপক মার্কসবাদী যতীন সরকার ‘প্রতিদিনের বাংলাদেশ’ পত্রিকায় ভিডিও ইন্টারভিউতে বলেছেন, নাস্তিকতা মুরতাবাদ!... ইসলামের জন্ম না হলে পৃথিবী এক হাজার বছর পিছিয়ে থাকতো...
যতীন সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি করা প্রগতিশীল মানুষদের সংখ্যা অনেক। আমার মধ্যে কোন ভক্তি শ্রদ্ধা নেই। ফলে যত বড় মানুষ হোন তাকে সমালোচনা করতে আমার দ্বিধা হয় না। ব্লগার কিলিংয়ের সময় ইস্টিশন ব্লগে যতীন সরকারের একটি ইন্টারভিউ বের হয়েছিলো, সেখানেও তিনি ‘নাস্তিকতার আস্ফলন’ বলে ব্লগারদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছিলেন। তখন তাকে ‘বুড়ো মানুষ’ বলে অনেকে এড়িয়ে যেতে বলেছিলেন। যতীন সরকার পাকিস্তান শাসনের বিরুদ্ধে বলা ও মার্কিসবাদ প্রচার ছাড়া তাদের চিন্তা চেতনা এই সমাজে একজন মানুষকেও ভাবতে সাহায্য করেনি। যিনি মনে করেন ইসলামের জন্ম হয়েছিলো বলে পৃথিবী এক হাজার বছর এগিয়ে গেছে, নাস্তিকতা বর্জনীয়- তিনি কট্টর মৌলবাদীদের কাছে কতখানি সন্মান পাবেন ভেবে দেখুন। এখন হুমুয়ূন আজাদকে রেখে কি তাকে কেউ কোপাতে আসবে? তসলিমা নাসরিন দেশ ছাড়বে না তো কি যতীন সরকার দেশ ছাড়বে? ব্লগাররা মরবে নাকি যতীন সরকার মরবে?
'প্রতিদিনের বাংলাদেশ' পত্রিকা ইসলামের প্রগতীশীল ভূমিকা নিয়ে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, ইসলাম নিয়ে তিনি অনেক পড়েছেন।... যদিও তিনি এক জায়গায় স্বীকার করেছেন তিনি ধর্মকে জেনেছেন মার্কসবাদ পড়ে! তিনি যে ইসলাম পড়েননি সেটা স্পষ্ট। ইসলাম জানতে হলে মাদ্রাসায় হায়ার ক্লাশে যেভাবে পড়ানো হয় সেভাবে জানতে হয়। যতীন খুড়ো সেভাবে পড়েননি তাতে কোন সন্দেহ নেই। যাই হোক, তিনি বলছেন খ্রিস্টান ধর্মের ক্যাথলিকরা গ্রীক জ্ঞান-বিজ্ঞানকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করেছে। আর মুসলমানরা সেই গ্রীক জ্ঞানবিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। এটা পুরোপুরি মিথ্যাচার ছিলো যতীন খুড়োর! কেন? বাগদাদের ‘মুতাজিলাদের’ ঠিক একইভাবে ইসলামের মোল্লাতন্ত্র হত্যা করেছে। দেশান্তরিন করেছে। কারাগারে আমৃত্যু বন্দি করে রেখেছে তখনকার বিজ্ঞানী দার্শনিকদের। কেন? কারণ গ্রীক জ্ঞানবিজ্ঞানের সঙ্গে ইসলামের সাংঘর্ষিকতা দেখতে পেয়েছে ইমাম গাজ্জালির মত আলেমরা। ইবনে সিনা, আল বেরুণীরা কাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতেন? যতীন খুড়ো সেটা বেমালুম ভুলে গেলেন নাকি গোপন করলেন?
নাস্তিকতা নিয়ে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিলেট থেকে ‘যুক্তি’ নামের একটা পত্রিকা বের হতো। এক লোক তার কাছে লেখা চাইলে তিনি ‘নাস্তিকতা মুরতাবাদ’ লেখাটা দেন। সম্পাদক লেখার শিরোনামটা বদলের অনুরোধ করলে তিনি অনড় থাকেন... বলে হা হা হা করে হাসেন যতীন সরকার। কেন, উনি কি জানেন না সেই সম্পাদকটি অনন্ত বিজয় দাস? যাকে কুপিয়ে খুন করেছে খুড়ো যাদের জন্ম না হলে পৃথিবী এক হাজার বছর পিছিয়ে যেতো বলে দাবী করেছেন! পত্রিকার নাম যুক্তি মনে আছে কিন্তু অনন্ত বিজয় দাসের নাম মনে নেই? অনন্ত বিজয় দাস এদেশের বুদ্ধির মুক্তির জন্য প্রাণ দিয়েছেন। মার্কসবাদী যতীন খুড়োদের কাছে তিনি চক্ষুশূল হবেনই। তাই অবাক হইনি। আমার রাগ বা বিরক্তি আসলে বিজয়দের উপরই! বেঁচে থাকতে তিনি এই মার্কসবাদী যতীন সরকারদের মনে করতেন চিন্তা ভাবনায় সমগোত্র! অভিজিত রায়ও তাই। 'মুসলিম লীগ নাস্তিকদের' সঙ্গে গলায় গলায় মিলতেন। অভিজিত মারা যাবার পর তার ব্লগের মুসলিম লীগ নাস্তিকরা তাদের আসল চেহারা দেখিয়ে দিয়েছে। আমার চাইতে সেটা কে আর বেশি জানে?
যতীন সরকার কোন মুক্তচিন্তার লেখক নন। তিনি এদেশে চিরদিন নিরাপদে লেখালেখি করে গেছেন। তার সময়ে তিনি সন্তুষ্ঠ ছিলেন। তার লেখায় একটি কিশোর কিশোরীও তাদের পঁচাগলা চিন্তা বিশ্বাস ধারণা থেকে বের হবার কোন পথ পাবে না। তিনি একজন সাধারণ লেখক। তাকে নিয়ে আমার আর কোন ভাবনা নেই।
যতীন সরকার নাস্তিকতা মুরতাবাদ তসলিমা নাসরিন
মন্তব্য করুন
সাম্প্রদায়িকতা
নির্মূলের অঙ্গীকার নিয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, ‘এই পূজা অশুভ শক্তির অবসান ঘটাক
এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ সমাজে মানুষের সমৃদ্ধি হোক।’
তিনি
আরও বলেন, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’
সজীব
ওয়াজেদ আরও লিখেছেন, সবাইকে দুর্গাপূজার অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
উল্লেখ্য,
গত ২০ (অক্টোবর) থেকে শুরু হয় শারদীয় দুর্গোৎসব
। আজ রোববার মহাঅষ্টমী। সকাল ৬টা ১০ মিনিটে মহাঅষ্টমী পূজা শুরু হয়। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে
পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয় এবং ১১টায় কুমারী পূজা। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত
হয়।
রাত ৮টা ৬ মিনিটে সন্ধিপূজা
শুরু হবে। রাত ৮টা ৫৪ মিনিটে পূজা শেষ হবে
পূজা সাম্প্রদায়িক অবসান ঘটাক শক্তির উৎসব
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
তরুণ ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিবের নারীদের নিয়ে তার একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল হয় এবং এর পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পরেন এই ক্রিকেটার। সাকিবের অসম্মাজনক পোস্টকে নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এছাড়া এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক নারী তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় তার এই পোষ্ট নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সাথে শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) কথা বলেছেন দুইজন কর্মজীবী নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নিউজরুম এডিটর ও নিউজ প্রেজেন্টার জেনিসিয়া বর্ণা। অন্য আরেকজন হলেন, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক ব্যবস্থাপক মেহের নেগার।
সাকিবের ফেইজবুক পোষ্ট প্রসঙ্গে প্রথমেই বর্ণা বলেন, আমার মনে হয় সবার দেখার ধরণ এবং পয়েন্ট অব ভিউ এক নয়। সাকিব যা বলেছেন সম্পূর্ণই তার নিজের পয়েন্ট অব ভিউ থেকে বলেছেন। তার সাথে আমার বা আপনার মতামত মিলবে এর কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে তিনি যা বলছেন তার সাথে আমি একমত নই।
আমি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ছি পাশাপাশি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে নিউজরুম এডিটর ও প্রেজেন্টার হিসেবে কাজ করছি। ক্লাস, অফিস সামলে আমি বাসা বেশ ভালো ভাবে সামলে নিতে পারি। আমার দৈন্দিন জীবন ব্যাবস্থা নিয়ে আমি এবং আমার পরিবার বেশ খুশি।
তিনি বলেন, এসময়ে এসে নারী পুরুষ সকলে যেখানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে সেখানে আমার পয়েন্ট অব ভিউ থেকে সাকিবের এমন মন্তব্য অহেতুক। একজন নারী যখন শিক্ষিত এবং সাবলম্বী হবেন তখন তিনি তার সন্তান কেও সঠিক শিক্ষা দিতে পারবেন, নিজের এবং পরিবারের খরচ বহন করতে পারবেন। কখনোই একজন চাকরিজীবী স্ত্রীদের জন্য সমাজ পরিবার ধ্বংশ হয় না। বরং একজন কর্মজীবী মহিলার জন্য সমাজ এবং পরিবারের বন্ধন শক্ত হয় ভালো হয় । আর একজন চাকরিজীবী স্ত্রী সবসময় চারদিক মানে পরিবার, সমাজ,চাকরি সবকিছুই সমানভাবে সামলানোর ক্ষমতা রাখেন। একজন কর্মজীবি নারী সবসময় অনেক গোছানো হয়।
এবার আসি পর্দার কথায় পর্দার সাথে চাকরীর কোনো সম্পর্ক নেই। চাকরী করলেযে কেউ পর্দা করতে পারবে না এমন কোনো বাধ্যকতা নেই। আমি মনে করি পর্দা করার ইচ্ছে থাকলে যে কোনো অবস্থাতেই করা সম্ভব। অনেক নারীই আছেন যারা চাকরী করেন না, কই তারাতো পর্দা করেনা তাহলে তাদের উদ্দেশ্য সাকিব কি বলবে?
পাশাপাশি হিসাবরক্ষক ব্যবস্থাপক মেহের নেগার বলেন, যদিও এটা তানজিম হাসান সাকিবের ব্যক্তিগত অভিমত। কিন্তু তিনি পুরো নারী সমাজকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেছেন। তাছাড়া উনি বাংলাদশেকে রিপেজেন্ট করছেন তাই উনার এমন মন্তব্য একদমই গ্রহণযোগ্য নয়। উনাকে অনেকেই অনুসরণ করেন তাই তার এমন মন্তব্য সমাজের কর্মজীবী নারীদের উপর নেগেটিভ ইমপেক্ট পরতে পারে।
মেহের বলেন, একজন শিক্ষিত এবং কর্মজীবী নারী অন্য সাধারণ নারীদের চেয়ে অনেক বেশি স্মাট এবং রেসপন্সিবিল হন বলে আমি মনে করি। কর্মজীবী নারীরা যেমন সাহসিকতার সাথে অফিসের কাজ সামলান ঠিক তেমনি সংসারও সামলান। চাকরীজীবী স্ত্রীরা হাজবেন্ডের সাথে সংসারে কন্ট্রিবিউট করে হাজবেন্ডের চাপ কমিয়ে আনেন।
এমনকি সন্তানদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠা এবং তাদের সুন্দর চরিত্র গঠনে অনেক বড় ভূমিকা রাখেন একজন শিক্ষিত ও কর্মজীবী নারী। তাই স্বামী এবং সন্তানদের হক নষ্ট হওয়ার কথা একদম অযৌক্তিক। আর পর্দা করা একজনের ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার । কেউ পর্দা করতে চাইলে সে যেকোনো অবস্থাতেই পর্দা করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, পর্দা চাকরি করার উপর নির্ভর করে না। সামগ্রিকভাবে একজন শিক্ষত এবং কর্মজীবী নারী দেশের অর্থ সামাজিক উন্নয়ন থেকে শুরু করে পারিবারিক বন্ধন শক্ত করে সর্বক্ষেত্রে সমান ভূমিকা রাখেন। তানজিম হাসান সাকিবের এমন সংকীর্ণ চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন করা উচিৎ।
উল্লেখ্য, নারীদের নিয়ে তানজিম সাকিবের অসম্মাজনক পোস্টটিতে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।
মন্তব্য করুন
সম্প্রতি তরুণ ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিবের নারীদের নিয়ে তার একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয় এবং এর পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পরেন এই ক্রিকেটার।
নারীদের নিয়ে তার এমন অসম্মাজনক পোস্টটিতে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।
তানজিম হাসান সাকিবের এমন অসম্মাজনক পোস্টকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক নারী তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
তার এই পোষ্ট নিয়ে বাংলাইসাডারের সাথে বুধবার ( ২০ সেপ্টেম্বর) কথা বলেছেন দুইজন নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন লেখক ও কলামিস্ট সোনিয়া তাসনিম এবং অন্য আরেকজন হলেন চারুকল্প'পের প্রতিষ্ঠাতা একজন নারী উদ্যোক্তা তাহমিনা আক্তার পিংকি।
লেখক ও কলামিস্ট সোনিয়া তাসনিম সাকিবের পোস্ট প্রসঙ্গে বলেন, বস্তুত ইসলাম প্রচার এবং প্রসারের সমৃদ্ধকাল থেকেই মুসলিম নারীরা ধর্মীয় বিধান মেনেই বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে অংশ নিয়ে এসেছে। এমনকি প্রাক শিল্পায়িত সমাজেও মুসলিম নারীরা নানা অর্থনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।
সুতরাং ধর্মীয় দিক থেকে নারীদের আসলে শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে অংশ নেবার বিষয়ে কোন বাধা নেই একথা নিশ্চিত। আমি মনে করি, একজন নারী যখন কর্মক্ষেত্র অবতীর্ণ হয় তখন তার মাঝে দায়িত্ব বোধ এবং চেতনার এক সুষম মিশ্রণ হয়। নিঃসন্দেহে একজন কর্মজীবী মহিলা একজন দায়িত্বশীল স্ত্রী, মা, বোন হিসেবেও নিজেকে শতভাগ প্রমাণ করতে সক্ষম।
তিনি বলেন, আমার নিজের মা একজন শিক্ষিকা ছিলেন। মায়ের কাছ থেকে সবসময় আমরা সহনশীলতা আর দায়িত্ববোধ, নৈতিকতার শিক্ষা পেয়েছি। নিজেরাও পড়াশোনা করেছি ভবিষ্যতে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য। আলহামদুলিল্লাহ। তেমনটা করছিও। এমনকি আমার মেয়ে দুটোকেও লেখা পড়া শিখাচ্ছি যেন পরবর্তী জীবনে তারা স্বাবলম্বী হতে পারে। আর এটাই একটা প্রগতিশীল সমাজের বাস্তব চিত্র। আদৌ আমরা অবশ্যই প্রগতীশীল হব এবং সেটা অবশ্যই ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি সম্মান রেখেই।
ক্রিকেটার তানজিম তানিমের বক্তব্য সম্পর্কে বলতে গেলে বলব, ওনার এই মতামত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। স্বাধীন দেশে মত প্রকাশের অধিকার যেহেতু সবার আছে, সেহেতু নিজের বক্তব্য উনি রাখতেই পারেন। সেই হিসেবে এটাকে তার নিজস্ব ভাবনা বলেই মনে করছি। তবে হ্যাঁ, দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলকেই মন্তব্য প্রদানের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া জরুরী।
এদিকে নারী উদ্যোক্তা তাহমিনা আক্তার পিংকি বলেন, একজন পুরুষ যদি চায় তার সন্তান ভবিষ্যতে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বা মেজিট্রট হবে নিজের একটি ভালো জায়গা তৈরি করবে, একজন ভালো মানুষ হবে তাহলে অবশ্যই তার স্ত্রীকে শিক্ষিত হতে হবে। আর একজন শিক্ষিত নারীর অবশ্যই চাকরি করেতে চাইবে এটা একটা নারীর অধিকারই বলা যায়।
তিনি বলেন, একটা নারী যদি কর্মজীবি হয় তাহলে স্বামীর হক আদায় হয় না ,সংসারে শান্তি থাকে না এই যে কথাটা বলেছেন ক্রিকেটার তানজিম শাকিব, এই কথাটার সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। কারণ আমাদের দেশের বাহিরের কথা যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে দেখা যায় বিশ্বের সকল দেশেই স্বামী-স্ত্রী দুজনে চাকরি করছে। তবে তারা যদি চাকরি করে সংসারে শান্তি রাখতে পারে, স্বামী-স্ত্রীর সর্ম্পক ভালো রাখতে পারে, পরিবারে সকল দায়িত্ব একজন স্ত্রী সঠিকভাবে পালন করতে পারে, তাহলে আমাদের দেশের নারীরা কেন পারবে না। আমি মনে করি যে নারী ঘর সামলাতে পারে, সে নারী চাকরিও সামলাতে পারবে।
এখন আসি পর্দা করার কথায়, আসলে চাকরি - বিজনেস করেও পর্দা মেনে চলা যায়। আবার অনেকে হচ্ছে চাকরি করেনা, শুধু গৃহিনী তারা কিন্তু পর্দা মেনে চলে না। তো পর্দা করারটা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, সেটা চাকরি করা না করার সাথে সর্ম্পক নেই।
কর্মজীবী মহিলা দায়িত্বশীল স্ত্রী তানজিম হাসান সাকিব
মন্তব্য করুন
তরুণ ক্রিকেটার তানজিম হাসান সাকিব এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে সবার নজরে আসেন এবং ব্যাপক প্রশংসিত হন। কিন্তু এর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারীদের নিয়ে তার একটি পোস্ট ভাইরাল হয় এবং এর পরই তীব্র সমালোচনার মুখে পরেন এই ক্রিকেটার।
নারীদের নিয়ে তার এমন অসম্মাজনক পোস্টটিতে তিনি বলেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।
তানজিম হাসান সাকিবের এমন অসম্মাজনক পোস্টকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক নারী তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
তার এই পোষ্ট নিয়ে বাংলাইসাডারের সাথে আজ মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) কথা বলেছেন প্রাইভেট কোম্পানির দুইজন কর্মজীবী নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার রিসার্চ ডিপার্টমেন্টের ফাতেমা ইসলাম অংকন এবং অন্য আরেকজন হলেন আমেরিকান ভিত্তিক নিউজ চ্যানেল টিবিএন টোয়েন্টিফোরের নিউজ প্রেজেন্টার আফরোজা আদিবা।
প্রথমে ফাতেমা ইসলাম অংকন সাকিবে এই পোষ্ট নিয়ে বাংলাইনসাইডারকে বলেন, অবশ্যই শিক্ষিত ও কর্মজীবী মা একজন ভালা সন্তান গড়তে যথেষ্ট ভূমিকা রাখেন বলে আমি মনে করি। কারণ আমার মা একজন শিক্ষিকা ছিলেন, তিনি নিজেও পড়াশোনা করেছেন এবং আমাদের ভাই-বোনদেরকেও পড়াশোনা করিয়েছেন। একইসাথে আমাদের প্রতি প্রত্যকটি দ্বায়িত্ব তিনি সঠিক ভাবে পালন করেছেন। কেন আমরাতো আমাদের মায়ের থেকে কখন অবহেলিত হয়নি, আদর স্নেহ যত্নে আমার মা'তো আমাদের কখনো কমতি রাখেননি। তিনিতো একজন চাকরিজীবী স্ত্রী'ই ছিলেন।
তিনি বলেন, আমি নিজেও এখন চাকরি করছি, ফলে পরিবারে কন্ট্রিবিউট করতে পারি সে ক্ষেত্রে আমার পরিবারও খুবই উপকৃত হচ্ছে। আমি বলবো একটি মেয়ে চাকরি করার জন্য কখনো পারিবার ধ্বংস হয় না বরং আরও স্টং হয়। আমি মনে করি চাকরির জন্য একজন স্ত্রী, একজন মা, একজন নারীর 'দায়িত্ববোধ আরও বাড়ে। আমি তানজিম হাসান সাকিবে এই কথার সাথে একমত হতে পারলাম না এবং বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরে এমন কারো থেকে এ ধরণের মন্তব্য মোটেও আসা করা যায় না।
এদিকে তরুণ এই ক্রিকেটারের পোষ্ট ক্ষিপ্ত হয়ে টিবিএন টোয়েন্টিফোরের নিউজ প্রেজেন্টার আফরোজা আদিবা বলেন, ‘আমার মনে হয় সে এটা সম্পূর্ণ না ভেবেই বলেছেন। চাকরি করলে কখনোই স্বামীর হক নষ্ট হয় না, চাকরি করেও বিভিন্ন ভাবেই স্বামীর হক আদায় করা যায়। যে নারী চাকরি সামলায়, সে ঘরও সামলাতে জানে। তানজিম হাসান সাকিবের এই কথায় কোনো যুক্তি এবং ভিত্তি নেই।‘
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে হাজার হাজার মেয়ে আছে যারা চাকরি করেও ঘর সংসার সবকিছুই সমানতালে সামলায়। এছাড়া যে পর্দায় থাকতে চায় সে পর্দায় থেকেও চাকরি করতে পারে। আর যে পর্দায় থাকতে চায় না সে চাকরি না করেও পর্দা করেনা। আর চাকরিজীবী স্ত্রীদের জন্য সমাজ পরিবার দুটোই উন্নত হচ্ছে। একজন তারকা একজন তারকা হয়ে স্ত্রীদের নিয়ে এই ধরনের পোষ্ট তিনি করতে পারেনা।‘
তানজিম সাকিবের পোস্ট নিয়ে নেটিজেনরা এখন আলোচনা-সমালোচনায় ব্যস্ত। অনেকে তরুণ এই ক্রিকেটারকে দল থেকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে অনেকে তার পক্ষেও মতামত দিয়েছে।
তানজিম হাসান সাকিব নারী চাকরি স্ত্রী চাকরি
মন্তব্য করুন
সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলের অঙ্গীকার নিয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছেন, ‘এই পূজা অশুভ শক্তির অবসান ঘটাক এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ সমাজে মানুষের সমৃদ্ধি হোক।’
ধর্মীয় দিক থেকে নারীদের আসলে শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে অংশ নেবার বিষয়ে কোন বাধা নেই একথা নিশ্চিত। আমি মনে করি, একজন নারী যখন কর্মক্ষেত্র অবতীর্ণ হয় তখন তার মাঝে দায়িত্ব বোধ এবং চেতনার এক সুষম মিশ্রণ হয়। নিঃসন্দেহে একজন কর্মজীবী মহিলা একজন দায়িত্বশীল স্ত্রী, মা, বোন হিসেবেও নিজেকে শতভাগ প্রমাণ করতে সক্ষম।