ইনসাইড গ্রাউন্ড

ফুটবল পায়ে যুদ্ধ করেছিল যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯


Thumbnail

স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ যা করেছেন, তার কোন তুলনা হয় না। কেউ কলম তুলে নিয়েছেন। কেউ গান গেয়েছেন। কেউ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছেন। তবে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন ফুটবলাররা। হাতে বন্দুক নিয়ে নয়, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গড়ে মুক্তিযুদ্ধে লড়েছিলেন এ দেশের ফুটবলাররা।

যখন পাকিস্তানি হানাদার সৈন্যদের তাণ্ডবে পুরো দেশ তছনছ হয়ে পড়ে, মানুষ ছুটতে থাকেন বনপোড়া হরিণীর মতো, সেই বেসামাল পরিস্থিতিতে শরণার্থী হয়ে বিদেশের মাটিতে একটি ফুটবল দল গড়ে তুলে বাংলার দামাল ছেলেরা খেলে গেছে ১৬ টি ফুটবল ম্যাচ!

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত ও তহবিল গড়ে তোলার জন্য ভারতের মাটিতে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল যা করেছে, তা ব্যতিক্রমধর্মী ও অবিশ্বাস্য। যখন পাকিস্তানি হানাদার সৈন্যদের তাণ্ডবে পুরো দেশ তছনছ হয়ে পড়ে, মানুষ ছুটতে থাকেন বনপোড়া হরিণীর মতো, সেই বেসামাল পরিস্থিতিতে শরণার্থী হয়ে বিদেশের মাটিতে একটি ফুটবল দল গড়ে তুলে বিভিন্ন স্থানে ম্যাচ খেলাটা মোটেও সহজ ছিল না।

স্বীকৃতিহীন একটি ছন্নছাড়া দেশের পক্ষে চাইলেও কোনো ফুটবল ম্যাচ খেলা সম্ভব ছিল না। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ফুটবলার ও ছাত্রনেতা সাইদুর রহমান প্যাটেল, ফুটবলার আলী ইমাম, আওয়ামী লীগের নেতা মো. সামছুল হক এমএনএ, লুৎফর রহমান প্রমুখ।

প্রাথমিকভাবে ভারতে শরনার্থী হিসেবে অবস্থানরত বাংলাদেশের ফুটবলারদের নিয়ে দল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। অল ইন্ডিয়া রেডিও ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে থাকা ফুটবলারদের ট্রায়ালের জন্য কলকাতায় শরণার্থী শিবিরের আসার আহ্বান জানায়। অবশেষে ২৫ জন খেলোয়াড়কে ভারত সফরের আগে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের জন্য মনোনীত করেন।

ক্যাম্পের পর অল্প কয়েকজন দলে যোগ দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম প্রতিভাধর কাজী সালাহউদ্দিন। সালাহউদ্দিন তখন মুক্তিযুদ্ধের জন্য গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। কলকাতার একজন চিত্র সাংবাদিক তাকে ফুটবল দলের ক্যাম্পেইনের কথা জানান।

তিনি তখন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে নিয়মিত খেলতেন এবং পূর্ব পাকিস্তান ফুটবল দলের নেতৃস্থানীয় সদস্য ছিলেন। সালাহউদ্দিন অবিলম্বে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি প্লেনে করে কলকাতায় দলের সঙ্গে যোগ দেন। এভাবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের জন্ম।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল নদীয়া জেলা একাদশ। ম্যাচটি ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় কৃষ্ণনগরে। কোনো দেশের মুক্তিসংগ্রামে ফুটবল খেলা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেদিনের আগে দেখা যায়নি। ম্যাচ শুরুর আগে বাংলাদেশ দল ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত বাজানোর অনুরোধ জানায়।

বাংলাদেশ যেহেতু স্বীকৃত দেশ নয়, এ কারণে স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করে। তবে শেষ অবধি বাংলাদেশ দল ও দর্শকদের দাবির মুখে তারা সম্মতি দেয়। আর এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব নেন নদীয়ার জেলা প্রশাসক ডি কে ঘোষ। সে দিনটি ঐতিহাসিক এক দিন। স্বাধীন দেশ না হয়েও ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং বাজানো হয় জাতীয় সংগীত।

এই দিন মেহেরপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ম্যাচ উপভোগ করতে স্টেডিয়ামে আসে। ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়। স্বাধীন বাংলা দলের হয়ে প্রথম গোল করেন শাহজাহান। এ ঘটনা যুদ্ধরত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে।

বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানোয় নদিয়াকে ভারতীয় ফুটবল এসোসিয়েশন থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। দ্বিতীয় ম্যাচটি কলকাতায় আয়োজিত হওয়ায় বিপুলভাবে সাড়া পড়ে। তবে আগের ম্যাচের বিতর্কের কারণে মোহন বাগান নাম পাল্টে গোষ্ঠ পাল (গোষ্ঠ পাল ছিলেন কিংবদন্তি ভারতীয় ফুটবলার) একাদশের ব্যানারে খেলতে রাজি হয়।

এ ম্যাচকে কেন্দ্র করে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক কভারেজ দেওয়া হয়। গোষ্ঠপাল একাদশের অধিনায়ক ছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক চুনী গোস্বামী। ম্যাচে প্রধান অতিথি ছিলেন কিংবদন্তি ফুটবলার গোষ্ঠপাল। এরপর ভারতের বিভিন্ন স্থানে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল খেলায় অংশ নেয়।

মুম্বাই সফরটিও বেশ আলোচিত হয়। মুম্বাই দলের হয়ে খেলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনসুর আলী খান পতৌদি। উপস্থিত ছিলেন বলিউড কাঁপানো অভিনেতারা। ড্যাশিং ক্রিকেটার মনসুর আলী খান পতৌদি ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব পালন করেন এবং ‘স্পোর্টস উইকের’ হয়ে একমাত্র গোলটি করেন।

ম্যাচটি বাংলাদেশ ৩-১ গোলে জয়লাভ করে। পরে পতৌদি, মুম্বাই গভর্নর এবং বলিউড তারকা দিলীপ কুমার বাংলাদেশের ত্রাণ তহবিলে বিপুল অর্থ দান করে। ম্যাচের টিকেট বিক্রি করে ১৮০০ মার্কিন ডলার সংগ্রহ হয়েছিল এবং সেটিও তহবিলে জমা করা হয়।

বাংলাদেশ তাদের সর্বশেষ ম্যাচটি খেলেছিল পশ্চিবঙ্গ বালুরঘাট একাদশের বিপক্ষে। বাংলাদেশের গেরিলা ক্যাম্পটিও ছিল বালুরঘাটে। খেলা শুরুর আগে খেলোয়াড়রা গেরিলা বাহিনীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে। এরপর বাংলাদেশ একাদশ

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিল । ততদিনে ভারতে ১৬ টি প্রীতি ম্যাচ খেলে তারা মুক্তি তহবিলে ৫ লক্ষ টাকা জমা দিয়েছে, যা তখনকার দিনে অনেক। যার ১২টিতে জয়, ৩টিতে ড্র এবং একটিতে হেরেছে। দিল্লিতে তহবিল সংগ্রহের জন্য যখন খেলতে যাওয়ার কথা, এমন সময় তারা বহুল প্রতীক্ষিত সংবাদটি পেল- বাংলাদেশ পাকিস্তানের রোষানলমুক্ত একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র।

সব যুদ্ধ যে শেষ, এবার বাড়ি ফেরার পালা। স্বাধীন মায়ের কোলে মুক্ত সন্তানদের ফেরার পালা। দেশেও সবাই উদগ্রীব হয়ে রয়েছে তাদের প্রতীক্ষায় । বাংলাদেশে সবাই তাদের বরণ করে নিল মুক্তির বার্তাবাহক, বিপ্লবের মুখবন্ধ হিসেবে।

সেদিন নিশ্চয় ফুটবল ঈশ্বর খুব আনন্দ পেয়েছিলেন আর মিটিমিটি হেসেছিলেন এই বিপ্লবী দামাল ফুটবল সন্তানদের দেখে, আর স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল? তারা কেউ নিযুক্ত হন জাতীয় আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের গৌরব বাড়াতে। কেউ বা নিজেকে সঁপে দেন বাংলাদেশ প্রশাসনের বিভিন্ন কাজে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএম

 



মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

১৪ হাজার মাইল পাড়ি দিচ্ছে টি-২০ বিশ্বকাপের পিচ

প্রকাশ: ১১:৩৭ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলতি বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে বসতে যাচ্ছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। যাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই প্রতিটি দল শুরু করেছে প্রস্তুতি, গোছাচ্ছে স্কোয়াড। শুধু তাই নয়, এবারের আসরের ভেন্যুগুলো পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে আইসিসি। 


তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা গেছে, নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ এখনো চলমান রয়েছে। আর এই স্টেডিয়ামের জন্য ১০টি পিচ নেওয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড থেকে। ফলে সে পিচগুলো বিশ্বকাপের অংশ হতে পাড়ি দিচ্ছে প্রায় ১৪ হাজার মাইল (প্রায় ২২ হাজার ৫৩০ কিলোমিটার)। অ্যাডিলেড থেকে জাহাজে করে ফ্লোরিডা, এরপর সেখান থেকে সড়কপথে সেগুলোর গন্তব্য নিউইয়র্ক।


এবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আইসিসির বড় কোনো টুর্নামেন্ট। নিউইয়র্কের এ স্টেডিয়াম ছাড়াও টেক্সাস ও ফ্লোরিডার দুটি ভেন্যুতে হবে বিশ্বকাপের যুক্তরাষ্ট্র-অংশের ম্যাচগুলো। সব মিলিয়ে ১৬টি ম্যাচ হবে সেখানে, ৩৯টি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। নিউইয়র্কের মাঠটিতে হবে ৮টি ম্যাচ।


এর মধ্যে নিউইয়র্কের নাসাউ স্টেডিয়ামকে বলা হচ্ছে ক্রিকেটের প্রথম ‘অস্থায়ী’ স্টেডিয়াম। এ প্রযুক্তিতে স্টেডিয়ামটির বেশির ভাগ অংশই বানানো হচ্ছে অস্থায়ীভাবে, যেগুলো এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। গ্যালারির একটা অংশ যেমন ফর্মুলা ওয়ানে গত বছরের লাস ভেগাস গ্রাঁ প্রিঁ ব্যবহার করা হয়েছিল।


ড্রপ-ইন পিচগুলো তৈরির দায়িত্বে থাকা অ্যাডিলেড ওভালের কিউরেটর ড্যামিয়েন হোউ সম্প্রতি বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গতি ও সমান বাউন্স থাকবে, এমন পিচ তৈরি করা। যেখানে খেলোয়াড়রা শট খেলতে পারবেন। আমরা বিনোদনদায়ী ক্রিকেট চাই, কিন্তু চ্যালেঞ্জ আছে।’


গত অক্টোবরে হোউ ১০টি ড্রপ-ইন পিচ তৈরির কাজ শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে এগুলো ট্রেতে বসানো হয়। প্রতিটি পিচকে ভাগ করা হয়েছে দুটি ট্রেতে। সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলার মতো ৪টি ও অনুশীলনের জন্য আরও ৬টি পিচ প্রস্তুত করা হচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রে বেসবলের ভেন্যুগুলোতে যেমন দেখা যায়, তেমন মাটি ব্যবহার করা হয়েছে পিচগুলো তৈরিতে। সঙ্গে একটা নির্দিষ্ট ধরনের ঘাসও আছে, যেটি উষ্ণ আবহাওয়া এবং রোলিং ও ভারী ব্যবহারের উপযোগী।


পিচগুলো যে ট্রেতে স্থাপিত, সেগুলো কনটেইনারে ভরে জাহাজে করে অ্যাডিলেড থেকে ফ্লোরিডা নিয়ে যাওয়া হয়েছে গত জানুয়ারিতে। এর পর থেকে অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়ায় রেখে দেওয়া হয়েছে, কারণ, নিউইয়র্কে তখন আবহাওয়া ছিল বেশ শীতল। ফ্লোরিডা থেকে সড়কপথে চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছাবে পিচগুলো। রাস্তায় যাতে বেশিক্ষণ না থাকতে হয়, সে কারণে বহনকারী প্রতিটি ট্রাকে থাকবেন দুজন করে চালক। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর নির্দিষ্ট স্থানে পিচগুলো বসাতে হোউ ও তাঁর দলের লাগবে প্রায় ১২ ঘণ্টা।


পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে হোউয়ের অনুভূতি এ রকম, ‘আমার আসলে মিশ্র অনুভূতি। সত্যিই রোমাঞ্চিত, কিন্তু একই সঙ্গে একটু চিন্তাও হচ্ছে। কিছু ব্যাপার এখনো অজানা। বেশ লম্বা একটা প্রক্রিয়া। আমরা যা জানি, নিজেদের সেরাটি দিয়েছি। সম্ভাব্য সব রকমের ফলই আমরা বিস্তারিত ভেবে রেখেছি, সামনে কী কী হতে পারে। আশা করছি, এগুলো বেশ ভালো ক্রিকেট পিচই হবে।’


আগামী ১ জুন ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বিশ্বকাপ। নিউইয়র্কে প্রথম ম্যাচটি ৩ জুন, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার। ১০ জুন এ মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।


টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ   ক্রিকেট   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

কবে অবসরে যাচ্ছেন কুইন অব ফুটবল?

প্রকাশ: ০৯:০৫ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ব্রাজিলিয়ান তারকা ফুটবলার মার্তা ভিয়েরা দা সিলভা। ইতোমধ্যেই নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেলেছেন ‘কুইন অব ফুটবল’খ্যাত এই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি। এখন কেবল ফুটবলকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানানোটা বাকি। নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছয়বার ব্যালন ডি’অরজয়ী এই তারকা ফুটবলার এবার অবসর নেওয়ার সময় জানিয়ে দিলেন। তার তথ্যমতে, চলতি ২০২৪ সালের শেষদিকেই ফুটবলকে বিদায় বলবেন মার্তা।

সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান। মার্তা বলেন, ‘এটি আমার শেষ বছর, আমি ইতোমধ্যে এর নিশ্চয়তা দিয়েছি। এমন মুহূর্ত থাকে যখন আমরা বুঝতে পারি সেই সময় (বিদায়ের) এসে গেছে। এ নিয়ে আমি শান্ত আছি, কারণ তরুণ অ্যাথলেটদের সঙ্গে যে সম্পর্ক রয়েছে, তার মাধ্যমে ফুটবলের ব্যাপক উন্নতি হবে বলে আমি অনেক আশাবাদী।’

এই বছর শেষেই অবসরের কথা বললেও, আরও একটি অলিম্পিকে ব্রাজিলের হলুদ জার্সি গায়ে তোলার আশা করছেন মার্তা। এর আগে তিনি পাঁচটি অলিম্পিকে অংশ নিয়ে দু’বার রোপ্য পদক পেয়েছিলেন (২০০৪ এবং ২০০৮)। আবারও অলিম্পিকে খেলার স্বপ্ন নিয়ে মার্তা বলেন, ‘আমি যদি অলিম্পিকে যেতে পারি, সেখানকার প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করব। কারণ সেটি অলিম্পিক হোক কিংবা অন্যকিছু, এটি ব্রাজিল জাতীয় দলে আমার শেষ বছর। ২০২৫ সালে ব্রাজিল জাতীয় দলে মার্তা বলে কোনো অ্যাথলেট থাকবে না।’

বর্তমানে একেবারে নতুন একটি দল হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছে ব্রাজিলের মেয়েরা। আর্থুর ইলিয়াসের ডাকে শেষবার কনকাক্যাফ গোল্ড কাপের দলে ছিলেন মার্তা। এখন ৩৮ বছর বয়সী এই তারকা স্ট্রাইকার ফিফার পরবর্তী মে’র উইন্ডোতে ডাক পাওয়ার আশায় আছেন। সেটি হবে ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের আগে খেলোয়াড়দের যাছাইয়ের শেষ সুযোগ কোচের সামনে।

উল্লেখ্য, বিশ্বকাপে নারী এবং পুরুষ দুই সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের (১৭) রেকর্ড রয়েছে মার্তার দখলে। তবে বিশ্বকাপ না জেতার আক্ষেপ রয়ে গেছে এই সেলেসাও কিংবদন্তির। ব্যক্তিগতভাবে ২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত টানা ৫ বছর জিতেছেন বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের খেতাব। ৮ বছর বিরতি দিয়ে ২০১৮ তে আরও একবার সেই সম্মাননা জেতেন তিনি। অবশ্য ব্রাজিলের জার্সিতে একেবারেই শূন্য নন তিনি। প্যান অ্যামেরিকান ফুটবলের শিরোপা আর গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের কীর্তি আছে তার। এছাড়া কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছেন তিনবার।


মার্তা ভিয়েরা দা সিলভা   ব্রাজিল   ফুটবল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

মুস্তাফিজকে ‘বাংলা লায়ন’ বলে আখ্যায়িত করল চেন্নাই

প্রকাশ: ০৭:২৩ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail মুস্তাফিজুর রহমান

চলমান আইপিএলে দল পাওয়া নিয়ে ছিল শঙ্কা। পরবর্তীতে বিকল্প হিসেবে দল পেলেও একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কম। তবে পাথিরানার ইঞ্জুরি যেন ভাগ্যের চাকা ঘোরায় বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের। একাদশে সুযোগ পেয়েই চলতি আসরের শুরু থেকেই বল হাতে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন দ্য ফিজ। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকাতেও শীর্ষের দিকে রয়েছেন তিনি।

তবে শেষ কয়েক ম্যাচে ছন্দপতন হয়েছে তার। যদিও এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে পার্পল ক্যাপ জয়ের দৌড়ে শীর্ষের দিকে আছেন এ টাইগার পেসার।

যদিও টানা কয়েক ম্যাচে বাজে পারফরম্যান্সের পরও তার ওপর ভরসা রাখছে চেন্নাই। প্রমাণ হিসেবে বলা যায়, তাকে নিয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে আইপিএলের সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ীরা। সেখানে ক্যাপশনে কাটার মাস্টারের নতুন নাম দিয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিটি। সেখানে মুস্তাফিজকে ‘বাংলা লায়ন’ বা বাংলার সিংহ বলে আখ্যায়িত করেছে চেন্নাই।

চেন্নাইয়ের জার্সিতে আইপিএলের শুরু থেকেই খেলার স্বপ্ন দেখতেন মুস্তাফিজ। অবশেষে এবারের আসরে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার। তিনি বলেন, ‘এটা চেন্নাইয়ের হয়ে আমার প্রথমবার খেলতে আসা। ২০১৬ সালে আইপিএলে আমার অভিষেক হয়, তবে সবসময় স্বপ্ন ছিল এই ফ্র্যাঞ্চাইজির (চেন্নাই) হয়ে খেলা। যখন চেন্নাই টিম ম্যানেজমেন্টের কল আসে, এরপর থেকে সারারাত আর ঘুম আসতেছিল না। একরকম উত্তেজনা কাজ করছিল।’


মুস্তাফিজ   চেন্নাই সুপার কিংস   আইপিএল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

কৃত্রিম টার্ফের কারণে মেসির খেলা নিয়ে শঙ্কা!

প্রকাশ: ০৬:২৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে প্রায় এক মাস মাঠের বাইরে ছিলে ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। এ সময়ে তার ক্লাব ইন্টার মায়ামিও যেন হারের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারছিল না। তবে মেসি সম্প্রতি ফিরেছেন মাঠে। খেলেছেন কয়েকটি ম্যাচ। আর এই কয়েক ম্যাচের মধ্যেই মায়ামিকে আবারও লিগের শীর্ষে তুলেছেন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা।

তবে মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) মায়ামির শীর্ষস্থান ধরে রাখতে হলে পরবর্তী ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু আসন্ন ম্যাচে দলের এই প্রধান তারকার খেলা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে এবার চোট নয়, এর নেপথ্যে মাঠের কৃত্রিম টার্ফ! এর আগে মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম আর্টিফিশিয়াল টার্ফে মেসির খেলা নিয়ে কিছুটা দোদুল্যমান অবস্থা দেখা দিয়েছিল। ন্যাচারাল মাঠের চেয়ে যেখানে চোটে পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ওই সময় তাকে কৃত্রিম টার্ফের মাঠে খেলানো হয়নি। তেমন পরিস্থিতি আবারও সামনে এসেছে এই তারকা ফরোয়ার্ডের সামনে।

মায়ামি আগামী রোববার তাদের পরবর্তী ম্যাচে মুখোমুখি হবে নিউ ইংল্যান্ড রিভোলিউশনের। ম্যাচটি হবে কৃত্রিম টার্ফ দিয়ে গড়া জিলেট স্টেডিয়ামের মাঠে। তাই চোটের ঝুঁকি এড়াতে ম্যাচটিতে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের না খেলার সম্ভাবনাই বেশি!

অন্যদিকে, চোটের সমস্যা রয়েছে মেসির দীর্ঘদিনের বন্ধু ও মায়ামির উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজের। তিনি হাঁটুর চোট নিয়ে ভুগছেন লম্বা সময় ধরে। যার কারণে তার ক্যারিয়ারও আর বেশি বড় না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই মেসির মতো মায়ামির আসন্ন ম্যাচে হয়তো সুয়ারেজকেও পাবে না। এ নিয়ে কথা বলেছেন মায়ামি ও যুক্তরাষ্ট্রের তারকা ফুটবলার জুলিয়ান গ্রেসেল।

একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে সতীর্থ ফুটবলারদের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে গ্রেসেল বলেন, ‘আমরা যখন ম্যাচটির জন্য প্রস্তুতি শুরু করব, তখন (তাদের খেলা ব্যাপারে) জিজ্ঞেস করব। তখন আসলে জানতে পারব যে আসন্ন ম্যাচটিতে কারা খেলবেন। কিন্তু তিনিই একমাত্র (সুয়ারেজ) যার খেলা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অবশ্য আলবারও (জর্দি) চোট আছে।’

মেসি ওই ম্যাচের একাদশে থাকবেন কি না, এ নিয়ে অবশ্য ভিন্ন কথা বললেন গ্রেসেল, ‘আমি যতটুকু শুনেছি সম্ভবত (একাদশে) নাম আছে তার।’

মায়ামির জার্সিতে সবশেষ ম্যাচটা ছিল মেসিময়। কারণ তিনি জোড়া গোলের পাশাপাশি অপর গোলেও অবদান রেখেছিলেন। ম্যাচটিতে ন্যাশভিলেকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ফ্লোরিডার ক্লাবটি। এই জয়ে এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সের লিগ টেবিলে আবারও শীর্ষস্থানে উঠল মায়ামি। ১০ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩ ড্র নিয়ে তাদের পয়েন্ট ১৮। এক ম্যাচ কম খেলেও সমান পয়েন্ট নিয়ে এরপরই অবস্থান নিউইয়র্ক আরবির।


লিওনেল মেসি   আর্জেন্টিনা   ইন্টার মায়ামি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড গ্রাউন্ড

মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে যা বললেন মুস্তাফিজ

প্রকাশ: ০৫:৩৪ পিএম, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আইপিএলে এবারের আসরে স্বপ্নের মতো সময় কাটাচ্ছেন বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ২০১৬  থেকে আইপিএল ক্যারিয়ার শুরু করে সেবার সানরাইজার্স হায়দ্রবাদের হয়ে অম্ল-মধুর সময় কাটিয়েছিলেন ফিজ। এরপর কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ঘুরলেও সেগুলোতে খুব একটা ছন্দে দেখা যায়নি ফিজকে। তবে এবার চেন্নাইয়ে যোগ দিয়ে শুরু থেকেই বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে তাকে।

এরই মধ্যে চেন্নাইয়ের মিডিয়া বিভাগকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মুস্তাফিজ। যা বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছেন তারা। সেই ভিডিওতে চেন্নাইয়ের ডাক পাওয়ার পরের অনুভূতি, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের সঙ্গে আলোচনা ও দলের অভ্যন্তরীণ আবহ নিয়ে কথা বলেছেন দ্য ফিজ।

কাটার মাস্টার বলেন, ‘এটা চেন্নাইয়ের হয়ে আমার প্রথমবার খেলতে আসা। ২০১৬ সালে আইপিএলে আমার অভিষেক হয়, তবে সবসময় স্বপ্ন ছিল এই ফ্র্যাঞ্চাইজির (চেন্নাই) হয়ে খেলা। যখন চেন্নাই টিম ম্যানেজমেন্টের কল আসে, এরপর থেকে সারারাত আর ঘুম আসতেছিল না। একরকম উত্তেজনা কাজ করছিল।’

মুস্তাফিজ বলেন, ‘এখানকার (চেন্নাইয়ের) সবাই খুব আন্তরিক, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের। জাতীয় দলে যেমন সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, তেমনি এখানেও শুরু থেকে আমার অস্বস্তি লাগেনি। এখানে বড় ভূমিকা ছিল মাহি (মহেন্দ্র সিং ধোনি) ভাইয়ের, ডিজে ব্রাভো (চেন্নাইয়ের বোলিং কোচ) এবং অন্যান্য কোচিং স্টাফের। ডেথ ওভারে ফিল্ডিং সেট-আপ থেকে শুরু করে ছোট ছোট কিছু বিষয় জানায়, সেগুলো আমার ডেথ ওভারের বোলিংয়ে খুব ভালো কাজে লাগে।’

ধোনিকে নিয়ে ফিজ আরও বলেন, ‘উনার (ধোনি) সঙ্গে বেশিরভাগ বোলিং নিয়েই কথা হয়, তবে যা হয় মাঠেই। এর বাইরে তেমন কথা হয় না। মাহি ভাই এসেই বলেন যে এটা (কৌশল) করলে ভালো হয়। আইপিএলে খেললে একজন ক্রিকেটার অনেক আত্মবিশ্বাস পায়, পুরো টুর্নামেন্টে আন্তর্জাতিক সব তারকা ক্রিকেটাররা থাকে। এখানে যদি আমি সফল হই, যেকোনো জায়গায় সফল হওয়াটা সহজ হয়।’

প্রসঙ্গত, এবারের আইপিএলে চেন্নাইয়ের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলেছেন মুস্তাফিজ। যেখানে ১০.৭ ইকোনোমিতে ১২ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এতে অবশ্য টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন এই টাইগার পেসার।


মুস্তাফিজ   চেন্নাই সুপার কিংস   আইপিএল   মহেন্দ্র সিং ধোনি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন