টেক ইনসাইড

প্রযুক্তির উৎকর্ষতা, লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়া যাবে দেড় ঘন্টায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৪০ এএম, ১৮ অক্টোবর, ২০২১


Thumbnail

আকাশ ভ্রমণে মানুষের স্বপ্ন দিনকে দিন যেনো বড়ই হচ্ছে। মানুষ যেখানে ভ্রমণ করতে মহাকাশে পাড়ি জমাচ্ছে সেখানে সাধারণ বিমান সেবায় যদি দ্রুত গতি না আসে তবে সেটি সত্যিই বেমানান। একসময় যাত্রীবাহী বিমান পরিসেবার সবচেয়ে বড় নাম ছিলো কনকর্ড, ব্রিটেইন ও ফ্রান্সের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ফ্ল্যাগ শিপ দ্রুত গতির উড়োজাহাজে চড়ে নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন পাড়ি দিতে সময় লাগতো তিন ঘণ্টা। কিন্তু এয়ারলাইনসগুলো তাতে সন্তুষ্ট নয়। তারা চাইছে হাইপারসনিক গতির উড়োজাহাজ। এ ধরনের একটি উড়োজাহাজে নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন পাড়ি দিতে দেড় ঘণ্টা লাগতে পারে। এই দুই শহরের দূরত্ব ৩ হাজার ৪৭০ মাইল। 

হাইপারসনিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে উড়োজাহাজের গতি দাঁড়ায় ম্যাক ৫। লন্ডন নিউইয়র্ক এর এই পথ পাড়ি দিতে সেখানে সাধারণ যাত্রীবাহী জেট বিমানে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হাইপারসনিক এই উড়োজাহাজ কি তৈরি করা করা যাবে এবং তাতে ভ্রমণ করা কি সম্ভব?

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টাভিত্তিক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বা স্টার্টআপ হার্মিউসের লক্ষ্য হচ্ছে হাইপারসনিক উড়োজাহাজ তৈরি করা। তারা মনে করছে, শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ দ্রুতগতিতে ছুটতে পারে, এমন উড়োজাহাজ তৈরি করা সম্ভব। তারা নতুন ধরনের ইঞ্জিন নিয়ে ইতিমধ্যে পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়েছে। এই ইঞ্জিনের ম্যাক ৫ (ঘণ্টায় তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি) পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এই ইঞ্জিনের নকশা করা হয়েছে ছোট ও মনুষ্যবিহীন উড়োজাহাজের জন্য।

হার্মিউস বর্তমানে মার্কিন বিমানবাহিনীর জন্য এ ধরনের ইঞ্জিন তৈরির কাজ করছে। তাদের দাবি, ইঞ্জিনের আকার বড় করা হলেই তা যাত্রীবাহী বিমান চালাতে সক্ষম হবে।

সিএনএন বলছে, এ ধরনের হাইপারসনিক যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের নাগাল পেতে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। তবে হার্মিউস আশা করছে, এই দশক শেষ হওয়ার আগেই তারা হাইপারসনিক উড়োজাহাজের পরীক্ষা শুরু করতে পারবে। তার জন্য ২০২৯ সাল পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। ওই সময়ের মধ্যে প্রযুক্তি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে। হার্মিউস বাণিজ্যিকভাবে উড়োজাহাজ তৈরির পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছে।

শুরুতে বর্তমান এয়ারলাইনসগুলোকে ব্যবহৃত উড়োজাহাজের চেয়ে অনেক ছোট হবে হার্মিউসের উড়োজাহাজ। এমনকি তা ১০০ যাত্রী পরিবহনে সক্ষম কনকর্ডের চেয়ে আকারে ছোট হবে। হার্মিউসের প্রধান নির্বাহী এ জে পিপলিকা বলেন, ‘উড়োজাহাজের আকার নির্ধারণ করার জন্য আমরা মূলত একটি বিমান সংস্থার জন্য ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করেছি। আমরা ব্যবসায়ী শ্রেণি এবং প্রথম শ্রেণির ভ্রমণকারীদের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এরপর আমরা গতি ও পরিচালনা ব্যয়ের বিষয়গুলোর মতো কিছু পরিমিতি নির্ধারণ করেছি। তা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি, এমন একটি উড়োজাহাজ প্রয়োজন, যাতে ২০ যাত্রীর একটি কেবিন থাকে।’

অর্থাৎ একটি উড়োজাহাজে কেবল একটি শ্রেণি থাকবে। পিপলিকা বলেন, ‘আমরা আশা করি, এটি আজকের ব্যবসায়িক শ্রেণির দামে লাভজনক হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, পাঁচ গুণ দ্রুতগতিতে ওড়ার জন্য মানুষ কত টাকা দিতে প্রস্তুত হবে, তার হিসাব করা কঠিন।’

সিএনএন বলছে, প্লেনের পরিসীমা হবে প্রায় চার হাজার নটিক্যাল মাইল। এটি নিউইয়র্ক থেকে প্যারিসের মতো ট্রান্স অ্যাটলান্টিক পথের জন্য যথেষ্ট হবে। কিন্তু লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে টোকিওর মতো ট্রান্স প্যাসিফিক পথের জন্য এটি যথেষ্ট নয়। এ পথে বিরতির প্রয়োজন পড়বে।

যাত্রীবাহী ম্যাক ৫ উড়োজাহাজের গতি কেমন হবে, তা বুঝতে উড়োজাহাজের গতির রেকর্ডের দিকে নজর দেওয়া যায়। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুতগতির উড়োজাহাজের ইঞ্জিনের গতি উঠেছিল ম্যাক ৯ দশমিক ৬ (ঘণ্টায় প্রায় ৬ হাজার ৮০০ মাইল)। নাসার এক্স-৪৩এ নামের একটি মনুষ্যহীন উড়োজাহাজে ওই গতি ওঠে। এ উড়োজাহাজের দৈর্ঘ্য ছিল ১২ ফুট।

তবে ওই ফ্লাইটের স্থায়িত্ব ছিল মাত্র কয়েক সেকেন্ড। তবে ম্যাক ৫ গতি সবচেয়ে বেশিক্ষণ ধরে রেখেছিল বোয়িং এক্স-৫১ নামের একটি মনুষ্যবিহীন পরীক্ষামূলক উড়োজাহাজ। ২০১৩ সালে ওই উড়োজাহাজটি ম্যাক ৫ দশমিক ১ (ঘণ্টায় প্রায় ৩ হাজার ৪০০ মাইল) গতিতে তিন মিনিট উড়েছিল। দুটি উড়োজাহাজকেই বি-৫২ বোম্বার নামের একটি উড়োজাহাজ থেকে নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে ছাড়া হয়েছিল।

যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে গতির রেকর্ড হচ্ছে ম্যাক ৬ দশমিক ৭ (ঘণ্টায় ৪ হাজার ৫২০ মাইল)। এক্স-১৫ নামের একটি উড়োজাহাজ এই গতি তুলতে সক্ষম হয়। এটি ছিল মূলত একট রকেট, যার সঙ্গে আসন বসানো ছিল। রকেট ছাড়া জেট ইঞ্জিনচালিত উড়োজাহাজের ক্ষেত্রে গতির রেকর্ড সর্বোচ্চ ম্যাক ৩ দশমিক ৩, যা ১৯৭৬ সালে একটি সামরিক গোয়েন্দা বিমান এসআর-৭১ ব্ল্যাকবার্ড তুলতে সক্ষম হয়েছিল।

কনকর্ডের ক্ষেত্রে দুটি যাত্রীবাহী সুপারসনিক উড়োজাহাজের একটি বাণিজ্যিকভাবে ওড়ার সময় ম্যাক ২ দশমিক ০৪ (ঘণ্টায় ১ হাজার ৩৫০ মাইল) গতি তুলতে সক্ষম হয়।

হার্মিউসের প্রস্তাবিত উড়োজাহাজ প্রকল্প সফল হলে তা কনকর্ডের গতি সহজেই পেরিয়ে যাবে। এটি শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে উড়তে সক্ষম হবে।

তাই হার্মিউসের নির্মাতারা এখন ইঞ্জিনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। নতুন ধরনের ইঞ্জিন নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে। জেনারেল ইলেকট্রিকের তৈরি ফাইটার উড়োজাহাজের মডেলের ওপর ভিত্তি করে এ ইঞ্জিন তৈরির কাজ চলছে। এটি হবে প্রচলিত দুই ধরনের প্রযুক্তির হাইব্রিড মডেল। একটি হচ্ছে প্রচলিত এয়ারলাইনসগুলোর ব্যবহৃত টার্বোজেট ও সুপারসনিক গতির জন্য ব্যবহৃত র‌্যামজেট প্রযুক্তি। শুরুতে মার্কিন বিমানবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ছয় কোটি মার্কিন ডলারের হাইপারসনিক ড্রোন কোয়ার্টারহাউসে এটি ব্যবহৃত হবে।



মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

আজ দিবাগত রাতে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট সেবা

প্রকাশ: ০৮:৪৬ এএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে।

গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌লস (বিএসসিপিএলসি)-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএসসিপিএলসির সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো যাচ্ছে, কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্‌ল রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এ কারণে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এই কেব্‌লের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

বিএসসিপিএলসি জানিয়েছে, এতে গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে অন্য সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে।


ইন্টারনেট   বিএসসিপিএলসি  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

১ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট

প্রকাশ: ০৭:১৪ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল (সি-মি-উই-৫)। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ক্যাবলটির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ফলে ইন্টারনেট ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে পড়বেন গ্রাহকরা। 

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির (বিএসসিপিএলসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা কামাল আহম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মির্জা কামাল আহম্মদ বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের (সি-মি-উই-৫) রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ক্যাবলটির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। 

তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে (সি-মি-উই-৪) সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে বলে জানিয়েছে বিএসসিপিএলসি।

ইন্টারনেট সেবা   সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি লিমিটেড  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

আবারও হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রামে বিভ্রাট

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ০৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আবারও মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে থমকে গেছে এই দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিষেবা। বার্তা আদান-প্রদানে সমস্যার মুখে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা।

তবে কী কারণে এই বিভ্রাট, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি মেটা। এক মাসের মধ্যেই দু’বার মেটার বিভিন্ন পরিষেবা বিভ্রাটের সম্মুখীন হলো।

বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২টা নাগাদ সমস্যার শুরু হয়। অনেক ব্যবহারকারী লক্ষ করেন তারা হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েব সংস্করণে লগইন করতে পারছেন না। মোবাইল অ্যাপ থেকে মেসেজ পাঠানোর চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হন তারা।

এ ছাড়া সমস্যা দেখা দেয় ইনস্টাগ্রামেও। ব্যবহারকারীরা বার বার তাদের ফিড রিফ্রেশ করলেও নতুন কোনো পোস্ট দেখতে পারছিলেন না। তবে ফেসবুকের পরিষেবা ঠিকই ছিল। সেখানেই অনেকে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের পরিষেবা বিভ্রাট সংক্রান্ত সমস্যার কথা।


হোয়াটসঅ্যাপ   ইনস্টাগ্রাম   মেটা  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

সরকারি-বেসরকারি অনেক ওয়েবসাইট ডাউন

প্রকাশ: ০৩:৪৪ পিএম, ০৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট কাজ করছে না। এ কারণে সেবা গ্রহণে ভোগান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা। বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

জানা গেছে, যেসব ওয়েবসাইটের শেষে ডট গভ, ডট বিডি, ডট বাংলা বা ডট কম ডট বিডি রয়েছে সেগুলো বিটিসিএলের সার্ভার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এসব সাইট খোলা যাচ্ছে না। দেশের সবকটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এসব ডোমেইন দিয়ে বানানো। ফলে সেগুলোতে প্রবেশ করতে পারছেন না ব্যবহারকারীরা।

এ ছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ, ইভ্যালি ও সংবাদ সংস্থা ইউএনবিসহ বহু বেসরকারি ওয়েবসাইট এসব ডোমেইন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করায় সেগুলোতেও প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার রাত থেকেই এসব ডোমেইন সার্ভার নিয়ন্ত্রিত কোনো সরকারি-বেসরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারছেন না ব্যবহারকারীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম (ডোমেইন) আনোয়ার পারভেজ বলেন, হঠাৎ করেই পরিষেবায় বিভ্রাট দেখা দিয়েছে আমরা জলদি বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করছি। প্রস্তুত হলেই পুনরায় সচল হবে সব ওয়েবসাইট।

ওয়েবসাইট ডাউন   বিটিসিএল  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

১০ মিলিয়নের বেশি বাংলাদেশির তথ্য হ্যাকারদের দখলে

প্রকাশ: ০৯:৫২ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া একটি হ্যাকার গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, তাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেন্দ্রিক তথ্য, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ইমেইল ঠিকানাসহ আরও কিছু তথ্য রয়েছে।

তারা দাবি করছে এগুলো ১২ হাজার ডলারে বিক্রির জন্য হ্যাকারদের একটি প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের প্রকৃত সংখ্যা কয়েক কোটি হতে পারে। এ ধারণা সঠিক হলে এটিই বাংলাদেশ থেকে তথ্য ফাঁসের সর্ববৃহৎ ঘটনা।

জানা গেছে, ‘ব্ল্যাক হ্যাট’ নামে পরিচিত ক্ষতিকারক হ্যাকারদের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘ব্রিচ ফোরাম’। এরা কোন দেশ থেকে পরিচালিত হয় অথবা এর সদস্যদের পরিচয় এখনো অজানা। গত ২৬ মার্চ এই প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া হ্যাকারের দাবি, তার কাছে বাংলাদেশের কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে সংগৃহীত তথ্য রয়েছে। কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর মধ্যে ‘এসএ পরিবহন’, ‘রেডেক্স’ এবং ‘সুন্দরবন’-এর নাম উল্লেখ করে ‘অন্যান্য’ প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। পুলিশ সম্পর্কিত তথ্য থাকার বিষয়ে হ্যাকারের দাবি, ‘পুলিশ ডাটা, যেখানে সব পুলিশের তথ্য রয়েছে।’

হ্যাকারের দাবি, ১০ মিলিয়নের (১ কোটি) বেশি বাংলাদেশি নাগরিকদের এনআইডি সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছে তার কাছে। যার মধ্যে আছে নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ এবং এনআইডি নম্বর। এ ছাড়া নাগরিকদের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট নম্বর ও শাখার নামসহ আরও বেশকিছু তথ্য রয়েছে বলেও দাবি তার। পুলিশের তথ্যসহ নাগরিকদের এসব তথ্য বিক্রির জন্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার চেয়েছে হ্যাকার। পাশাপাশি এনআইডির তথ্য চাইলে দিতে হবে আরও ২ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে এসব তথ্য ১২ হাজার ডলারে বিক্রির ঘোষণা দিয়ে ‘ব্রিচ ফোরাম’-এর ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’।

বিপুল পরিমাণ তথ্য ফাঁসের এ ঘোষণা ইতোমধ্যেই দেশীয় হ্যাকার কমিউনিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তবে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করার আগে পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট)।

যোগাযোগ করা হলে নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান এবং সার্টের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল আলম খান কালবেলাকে পৃথকভাবে জানান, এখনো তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।

তবে একাধিক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং এথিক্যাল হ্যাকার কালবেলাকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা নিশ্চিত করেছে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এথিক্যাল হ্যাকার বলেন, বিক্রির জন্য উত্থাপিত তথ্যের কিছু নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য হ্যাকারের দখলে রয়েছে। এসব নমুনার কিছু তথ্য যাচাই করে সেগুলো সঠিক পেয়েছি। নমুনার সূত্র ধরে কুমিল্লার এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কল দিলে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্মতারিখ এবং ঠিকানা নিশ্চিত হয়েছি। অর্থাৎ তথ্যগুলো সঠিক।’

বিষয়টি আরও যাচাই করতে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ আল জাবের দেশের এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্রিচ ফোরাম হ্যাকারদের একটি গোষ্ঠী, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের হ্যাকাররা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এখানে কেউ কারও সঠিক পরিচয় জানে না। কারও কাছে এ ধরনের তথ্য এলে বেচাকেনার জন্য এখানে যোগাযোগ করেন তারা। কোনো ভুয়া তথ্য দিয়ে এখানে পোস্ট করা কঠিন। ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়ে থাকলে এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা।’

এ ধরনের তথ্য ফাঁসের ভয়াবহতা কী জানতে চাইলে জাবের বলেন, ‘একজন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ব্যাংক হিসাবের নম্বর এসব তথ্য অন্য কারও হাতে থাকা মানে ওই ব্যক্তির সবকিছুই হ্যাকারের দখলে। খেয়াল করলে দেখবেন, সম্প্রতি আপনার আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ইংরেজিতে কথা বলে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এটা মূলত চায়নিজ হ্যাকারদের কাজ। তারা আমাদের নম্বর, নাম এবং অন্যান্য তথ্য কীভাবে পায়? এভাবেই কারও বিক্রি করা বা ফাঁস করা থেকে পায়। এ ধরনের তথ্য গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলারে বেচাকেনা হয়ে থাকে ভার্চুয়াল জগতে।’

তবে এক কোটির বেশি মানুষের তথ্য বিক্রির বিজ্ঞাপনকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে পাতা ফাঁদ উল্লেখ করে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য তাদের কাছে আছে বলে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এটা করে তারা। এটা তেমনি একটা জিনিস। আমাদের কোনো ধরনের তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রির কথা কেউ যদি বলে থাকে তাহলে সেটা মিথ্যা বলছে। ওরা প্রতারণার উদ্দেশ্যে এটা করছে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের জুনের শেষ দিকে বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের তথ্যভান্ডার থেকে বড় পরিসরে নাগরিকদের তথ্য উন্মুক্ত থাকার খবরে দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। ভিক্টর মার্কোপোলস নামে একজন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের কারিগরি দুর্বলতা তুলে ধরে সেসব তথ্য খুব সহজেই উন্মুক্ত অবস্থায় পেয়েছিলেন বলে জানান।


হ্যাকার   বাংলাদেশি   ডাটাভেঞ্চার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন