ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

জ্বলছে ইউক্রেন: প্রেক্ষাপট ও পেছনের গল্প

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২


Thumbnail জ্বলছে ইউক্রেন: প্রেক্ষাপট ও পেছনের গল্প

“বিচ্ছেদের করুণ সুর বাজে আজ এই মধুর অনুরাগে
পুড়ে ছারখার এই পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়
হে প্রিয়তমা, তুমি আমার
মনে রেখো না কোনো দ্বিধা, ভয়, সংশয়”

গত দু’দিন ধরে ইউক্রেনিয়ান এক যুগলের ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মাস্ক পরিহিত তরুণ-তরুণীর চেহারা বোঝা না গেলেও তাদের অব্যক্ত অনুভূতির কথা ঠিকই বোঝা যাচ্ছে। হয়ত তারা একে অপরকে আশ্বস্ত করছেন ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ইউক্রেন একদিন নিশ্চয়ই শান্ত হবে। তখন তাদের আবার দেখা হবে, পরিণয় হবে, মিলন হবে। নেটিজেনরা ছবিটিকে নানাভাবে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে নিচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক ডামাডোলে অনেকেই ভুলে গিয়েছেন আজ এই যুগলের যে অবস্থা, তা তো হবার কথা ছিল না। নাকি ছিল? আসুন, একটু প্রেক্ষাপটের দিকে ফেরা যাক-

সময়টা তখন ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রতিবাদের ঢল নেমেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে বেশ লাভজনক একটি অর্থনৈতিক চুক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। স্টেট সিকিউরিটি ফোর্স রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার পর তারা আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। ফলে আন্দোলনটি আরও বেগবান হলো। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট চাপ সামাল দিতে না পেরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন।

২০১৪ সালের মার্চ মাস। রাশিয়ান সেনারা ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করলো। ক্রিমিয়রা রাশিয়ান ফেডারেশনে যোগ দেবার আগেই প্রয়োজন ছিল একটি স্থানীয় গণভোটের আয়োজনের। তার আগেই রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বললেন রাশিয়ান জনসাধারণ এবং ক্রিমিয়া ও দক্ষিন-পূর্ব ইউক্রেনের রুশ বক্তাদের অধিকার তিনি রক্ষা করতে চান। দুই মাস পর দনেতস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলের মানুষেরা একটি ভোটের আয়োজন করলো, যেখানে তারা চায় ইউক্রেন থেকে নিজেদের স্বাধীনতা হাসিল করতে।  

রাশিয়ার মদদ পাওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং ইউক্রেনিয়ান সেনাবাহিনীর মধ্যকার গোলযোগ পূর্ব ইউক্রেনে বেড়ে চলেছে। ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে এই পর্যন্ত যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার তিনশত মানুষেরও অধিক প্রাণ হারায়, আহত হয় প্রায় ২৪ হাজার। মস্কো তার সংযুক্তি থাকবার কথা অস্বীকার করলেও ইউক্রেন এবং ন্যাটো বারংবার বলে আসছে যে দনেতস্ক এবং রুশ ক্রস-বর্ডারে রাশিয়ান সেনা নিযুক্ত রয়েছে এবং তারা যোদ্ধাদের নানা অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছে।

২০১৪ সালের জুলাই মাস থেকেই দেখা গেলো যে ইউক্রেনের আভ্যন্তরীণ সমস্যা একটি আন্তর্জাতিক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে রাশিয়ার অবস্থা আরও সঙ্কটময় হয়ে দাঁড়ায়, যখন ইউক্রেনের আকাশসীমায় একটি মালয়েশিয়ান ফ্লাইটকে গুলি করে অন্তত ২৯৮ জন যাত্রীকে হত্যা করা হয়। ডাচ এয়ার এক্সিডেন্ট তদন্তকারীরা তাদের তদন্তের ফলাফলে ২০১৫ সালের অক্টোবরে জানায় যে রাশিয়ার তৈরি একটি সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলের মাধ্যমে এই আঘাত হানা হয়েছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তারা আরও জানায় যে মিসাইল সিস্টেমটি তৈরি করা হয়েছিল রাশিয়ায়। ধারণা করা হয়েছিল এটি নেয়া হয়েছিল পূর্ব ইউক্রেনে এবং এয়ারপ্লেনটি বিধ্বস্ত করবার পর তা আবার রাশিয়ার সীমানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং ইউক্রেন চেষ্টা করে যাচ্ছে মিনস্ক চুক্তির সাপেক্ষে এই হানাহানি বন্ধ করবার। এই চুক্তির মধ্যে রয়েছে যুদ্ধসমাপ্তি, ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের সমাপ্তি, গোলযোগপূর্ন স্থানে ইউক্রেনিয়ান সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। তবে তাদের এই কূটনৈতিক বোঝাপড়ার ব্যাপারটি আর সদগতির দিকে যায়নি।

২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ন্যাটো ঘোষণা দেয় যে মিত্রশক্তির সেনাবাহিনী পূর্ব ইউরোপে চক্কর দেবে যাতে রাশিয়ার আগ্রাসন রোধ করা যায়। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং পোল্যান্ড। মূলত, বাল্টিক অঞ্চলে রাশিয়া যেন আধিপত্য বিস্তার করে আগ্রাসন চালাতে না পারে, সেটিই ছিল ন্যাটোর লক্ষ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটো ট্যাঙ্ক ব্রিগেডকে সেনাদলের সাথে পোল্যান্ডে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে যোগ দেয়, যাতে আরও জোরদার বাঁধার মুখে তারা তীব্রভাবে রুখে দাঁড়াতে পারে।

২০১৪ সালে সংকটময় পরিস্থিতি শুরু হবার পর থেকে এই পর্যন্ত ইউক্রেন বেশ কয়েকবার সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। ২০১৫ সালের দিসেম্বর মাসে প্রায় সোয়া দুই লক্ষ মানুষ সাইবার আক্রমণের কারণে সংযোগ হারায়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে কিয়েভ ঠিক একইধরণের একটি সাইবার আক্রমণের কারণে ব্ল্যাকআউটের শিকার হয়। ২০১৭ সালের জুন মাসে ইউক্রেনের সরকার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নটপেট্যা সাইবার আক্রমণের শিকার হয়। এই আক্রমণের ফলে ইউক্রেনের কম্পিউটার সিস্টেমে এককথায় ধস নামে এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিসাধন হয়।  

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ইউক্রেনে সিকিউরিটি সহায়তা আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়, যদিও পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা তখনও ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন রাশিয়ার বেশ কিছু কর্মকর্তাসহ ২১ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এছাড়াও নয়টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় যারা এই সঙ্কটের সাথে যুক্ত ছিল। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ইউক্রেনের কাছে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ওয়েপন বিক্রি করার জন্য সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোভুক্ত আরও সাতটি দেশের সাথে যোগ দেয়। পশ্চিম ইউক্রেনে এই আকাশসীমায় কুচকাওয়াজ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ২০১৮ সালে সবচেয়ে বিশাল আকারের কুচকাওয়াজ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার এই আঘাত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুবই বিশাল এবং সংঘাতময় পদক্ষেপ। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক আরও তলানিতে এসে ঠেকেছে। এছাড়াও ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশের সাথে রাশিয়ার যে সম্পর্ক, তাও ক্রমহ্রাসমান। ইউক্রেনের সাথে এই সংঘাতময় পরিস্থিতি রাশিয়া ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের সম্পর্কও খারাপের দিকে নিয়ে যাবে। বৈশ্বিকভাবে এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে প্রতিটি দেশে। অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ, সাইবার সিকিউরিটি, নিউক্লিয়ার চুক্তি, এনার্জি সিকিউরিটি, কাউন্টার টেরোরিজমসহ রাজনৈতিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে। সিরিয়া, লিবিয়ার মতো দেশগুলো হয়ে পড়বে আরও সংঘাতময় এবং অসহায়। ইতোমধ্যেই ন্যাটো বলে দিয়েছে যে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো যদি আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, তাহলে এই সংঘাতের মধ্যে তারা জড়াবে না। ইউক্রেনের অবস্থা হয়ে গিয়েছে এখন পাড়ার যুদ্ধগুলোর মতো, যেখানে বড়ভাইয়ের ভরসায় বাকিরা যুদ্ধে নেমে দেখে বড়ভাই পিঠটান দিয়েছে।

সংঘাতময় এই পরিস্থিতি থেকে ইউক্রেনের উত্তরণের উপায় কী, সেটা সময়ই বলে দেবে!

ইউক্রেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা শোষণের শিকার: জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৬:৪৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

 শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ।

সংস্থাটির জেনেভা থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরেই দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসীরা অসম্মানজনক অবস্থায় বসবাস করছে। এজন্যে দেশটির সরকারের প্রতি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। একই সাথে বাংলাদেশি শ্রমিকের ওপর যেন কোন শোষণ, অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন না করা হয় সেজন্যে জরুরি পদক্ষেপ নিতে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বেশিরভাগ অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেখেন যে তাদের প্রতিশ্রুত অনুযায়ী কর্মসংস্থান নেই। এমন অবস্থায় প্রায়শই তাদের ভিসা শেষ করতে বাধ্য করা হয়।

ফলস্বরূপ এই অভিবাসীরা গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছে।

মালয়েশিয়া   বাংলাদেশি শ্রমিক   জাতিসংঘ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানে ইসরায়েলের হামলায় সায় ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ: ০৬:১৭ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের ওপর ইসরায়েল হামলার খবর আগেই পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই হামলাকে সমর্থন বা হামলায় কোনো ধরনের ভূমিকা পালন করেনি দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ভূখণ্ডে ইসরায়েল হামলা করেছে, তবে ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্য পারমাণবিক স্থাপনা ছিল না। 

একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়, তারা সামনের দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের এই প্রতিক্রিয়া সমর্থন করেনি বলেও জানান তিনি।

এদিনের হামলার পর হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। হোয়াইট হাউসের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এ মুহূর্তে দেয়ার মতো কোনো খবর নেই।’

শুক্রবার সকালে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজ জানায়, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে। তবে কোথায় আঘাত হেনেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তারা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া অন্য কোনো যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা-ও জানাননি।

এদিকে আজ ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এরপর ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দেশটির কয়েকটি শহরে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।

এর আগে ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা হয়। এতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে। জবাবে গত শনিবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

ইরান   ইসরায়েল   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   ক্ষেপনাস্ত্র হামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভোট দিতে গিয়ে শুনলেন, তিনি মারা গেছেন

প্রকাশ: ০৩:০৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভোট দিতে গিয়ে এক বৃদ্ধা শুনেছেন- তিনি মারা গেছেন, আর ভোট দিতে না পেরে নিরাশ তিনি। কাগজে-কলমে মৃত হওয়ায় বাস্তবে জীবিত এই ভোটারের ভোট দিতে ব্যর্থ হওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিভি৯ বাংলা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার নাম বাসন্তী দাস। তিনি শুক্রবার সকাল সকাল চলে গিয়েছিলেন ভোট দিতে। কিন্তু, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে শুনলেন তিনি নাকি মারা গেছেন। তাই ভোট দিতে দেওয়া হবে না তাকে। কাগজে-কলমে তিনি মৃত। তাই ভোটাধিকার নেই।

পরে অশ্রুসজল চোখ নিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে ফিরে আসেন বাসন্তী দাস নামে ওই বৃদ্ধা। এদিন ভোটের সকালে এই ঘটনা ঘটেছে ধূপগুড়ি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ধূপগুড়ির বৈরাতীগুড়ি হাই স্কুলে ভোট কেন্দ্র বাসন্তী দেবীদের। এদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি।

ভোটের ডিউটিতে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার জানান, তার কিছু করার নেই, ভোটার তালিকায় ডিলিট রয়েছে তাই ভোট দিতে পারবেন না তিনি, তাই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই বৃদ্ধাকে।

ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার ছেলে উজ্জ্বল দাস বলছেন, 'মা একাই ভোট দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওখান থেকে বলেছে- তোমার নাম নেই, তুমি মৃত। মা বাইরে এসে আমাদের জানায়। ফের কথা বললে জানায়- নামের জায়গায় মৃত লেখা আছে। আমরা পরে বুঝে নেব।' 

তিনি আরও বলেন, মা প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তারপরেও ভোট দিতে পারেনি। আমরা তো প্রতিবার তো এখানেই ভোট দিই। এবারে কী হলো জানি না।

অন্যদিকে অশ্রুসজল চোখে বাসন্তী দেবী বলেন, 'আমি তো সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সাড়ে সাতটার সময় ভোট দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ লাইনে থাকার পরেও ভোট দিতে পারিনি। সরকারের খাতায় নাম নেই বলছে। অনেকক্ষণ ওরা কোথায় কোথায় সব ফোন করল। জেলা প্রশাসকের অফিসেও ফোন করেছিলাম। তারপর বলল আপনি এখন যান। এই বছর আর হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এলাকার লোকজনও অনেক চেষ্টা করল। কিন্তু ভোট দিতে পারলাম না। খুবই খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে- আমি মরে গিয়েছি। আমি তো প্রতিবারই ভোট দিই। কিন্তু, এবার পারলাম না।' 

উল্লেখ্য, শুক্রবার থেকে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় দেশটির ২১ রাজ্যের ১০২ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিন আসন- জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র।


ভোট   ভারত   পশ্চিমবঙ্গ   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: প্রথম দফায় ভোটে প্রার্থী যারা

প্রকাশ: ০১:৩৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। আজ শুক্রবার সকাল সাতটায় শুরু হয় এ ভোট গ্রহণ। শেষ হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। নির্বাচন হচ্ছে সাত দফায়। 

আজ শুরু হয়েছে প্রথম দফার ভোট। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ১০২টি আসনে ভোট হচ্ছে আজ। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ৩ আসনও।

ভোট শুরু হয়েছে দেশের ২৮টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। আজ নির্বাচন হচ্ছে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্য বিধানসভার ৬০টি ও সিকিমের ৩২টি বিধানসভা আসনে। 

পশ্চিমবঙ্গের যে তিন আসনে ভোট শুরু হয়েছে, সেগুলো হলো কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার। কোচবিহারে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক, কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী ও বামফ্রন্টের শরিক ফরোয়ার্ড ব্লকের নীতীশ চন্দ্র রায়।

জলপাইগুড়ি আসনে লড়ছেন তৃণমূলের নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপির জয়ন্ত কুমার রায়, বাম ফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণ।

আলিপুরদুয়ারে লড়ছেন তৃণমূলের প্রকাশ চিক বরাইক, বিজেপির মনোজ টিগ্গা, বাম ফ্রন্টের মিলি ওঁরাও।

প্রথম পর্বের ভোটের দিন আজ নির্ধারিত হবে ভারতের আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভাগ্যও। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের। নিশীথ দাঁড়িয়েছেন কোচবিহার আসনে। এ আসনেরই সংসদ সদস্য তিনি।

এবার পশ্চিমবঙ্গে ভোট দেবেন ৭ কোটি ৬৯ লাখ ভোটার। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। নারী ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪ হাজারের বেশি। রাজ্যে আরও রয়েছেন ট্রান্সজেন্ডার ১ হাজার ৮৩৭ ভোটারও।

আজ পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনে ভোট দিচ্ছেন ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ১০৮ ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৫ হাজার ৮১৪টি। এর মধ্যে স্পর্শকাতর কেন্দ্র ৮৩৭টি।

এবারের ভোটকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ভোটকেন্দ্রগুলো। নিয়োগ করা হয়েছে ২৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য। প্রতিটি কেন্দ্রেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আরও থাকছেন ১২ হাজার ৩১০ রাজ্য পুলিশ সদস্য। নির্বাচন কমিশন স্পর্শকাতর কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

প্রথম পর্বের ভোটের দিন আজ নির্ধারিত হবে ভারতের আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভাগ্যও। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের। নিশীথ দাঁড়িয়েছেন কোচবিহার আসনে। এ আসনেরই সংসদ সদস্য তিনি।

অন্য আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন নীতিন গড়করি, কিরেন রিজিজু, ভূপেন্দ্র যাদব, সর্বানন্দ সেনেওয়াল, জিতেন্দ্র সিং, অর্জুন রাম মেঘওয়াল, সঞ্জীব বালিওয়ান এবং এল মুরুগান।


লোকসভা নির্বাচন   ভোট   লোকসভা   পশ্চিমবঙ্গ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: প্রথম দিনেই তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। প্রথম দফার লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে আজ সকাল ৭ টায়। ভোটগ্রহণ শেষ হবে সন্ধ্যা ৬ টায়। 

চলমান এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চাঁদমারি এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উভয় পক্ষ থেকে ইট-পাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে একজন আহত হয়েছে।

এবার পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন হচ্ছে সাত দফায়। আজ প্রথম দফা। এই দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের ভোট নেওয়া শুরু হয়েছে। আসন তিনটি হলো কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার আসন।

সকাল নয়টা পর্যন্ত তিনটি আসনে গড়ে ১৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।

সকালেই কোচবিহারের দিনহাটার বিজেপি এজেন্ট বিশ্বনাথ পালকে ভোটকেন্দ্র  থেকে অপহরণ করার অভিযোগ তোলে বিজেপি। নির্বাচন কমিশনও এ ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে ভোটকেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। দিনহাটায় তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতিকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আহত ব্যক্তিদের দেখতে হাসপাতালে যান তৃণমূল নেতা ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। 

এদিকে, কোচবিহারের চান্দামারিতে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে ভোটদান নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের তুফানগঞ্জের হরিহরহাটে আজ সকালে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে বিজেপি-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে। বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, তাদের অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। 

শীতলখুচির শালবাড়ি এলাকায় তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন সমর্থক আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত তৃণমূল নির্বাচন কমিশনে ৩৭টি অভিযোগ দায়ের করেছে। জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় বিজেপির একটি বুথ অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার তুফানগঞ্জের তৃণমূলের নির্বাচন অফিসও পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। 

কোচবিহারে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক, কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী এবং বাম ফ্রন্টের শরিক ফরোয়ার্ড ব্লকের নীতীশ চন্দ্র রায়। 

জলপাইগুড়ি আসনে লড়ছেন তৃণমূলের নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপির জয়ন্ত কুমার রায়, বাম ফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণ। আলিপুরদুয়ার আসনে লড়ছেন তৃণমূলের প্রকাশ চিক বরাইক, বিজেপির মনোজ টিগ্গা, বাম ফ্রন্টের মিলি ওঁরাও। এই তিনটি আসনে আরও লড়ছেন ছোটখাটো রাজনৈতিক দল ও নির্দলীয় প্রার্থীরা।

আর আজ পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনে ভোট দেবেন ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ১০৮ জন ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৫ হাজার ৮১৪টি। এর মধ্যে স্পর্শকাতর কেন্দ্র হচ্ছে ৮৩৭টি।

প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আরও থাকছে ১২ হাজার ৩১০ জন রাজ্য পুলিশ। নির্বাচন কমিশন স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।


তৃণমূল   বিজেপি   সংঘর্ষ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন