ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

‘ব্লক রাজনীতি’ থেকে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশকে কেন দূরে থাকতে বলছে চীন?

প্রকাশ: ০৯:৫০ এএম, ১৩ জুন, ২০২২


Thumbnail

একুশ শতককে ‘দ্য এশিয়ান সেঞ্চুরি’ বা এশিয়ার শতক অভিহিত করার মধ্য দিয়ে এর কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকাকে তুলে ধরা হয়। মহাদেশটি তার ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি ও জনসংখ্যার গতিপ্রকৃতির মধ্য দিয়ে সে ভূমিকাই রাখতে যাচ্ছে। ফলে এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে চীনের গভীর বন্ধন ও এর ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাব যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের ভয়, চীন বুঝি এই বন্ধনের মাধ্যমে ভূরাজনীতিতে বড় দাঁও মারতে যাচ্ছে। 

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে রাশ টেনে ধরতে ও নিজের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ঠাণ্ডা যুদ্ধের আবহ ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এ কথা অস্বীকার করার জো নেই যে এ অঞ্চল ঘিরে তিন জোট—ট্রান্স–প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি), ইন্দো–প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) ও ইন্দো–প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আইপিইএফ) প্রমাণ করে—যুক্তরাষ্ট্র শীতল যুদ্ধকালীন মানসিকতার মধ্যে আছে।

তবে এই জোট নিয়ে চীনেরও যথেষ্ট মাথা ব্যথার কারণও রয়েছে। ‘স্নায়ুযুদ্ধকালীন মানসিকতা ও ব্লক বা গোষ্ঠী রাজনীতি’ পরিহার করতে সম্প্রতি বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। একই সঙ্গে দেশগুলোকে নিজেদের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা ও সত্যিকারের বহুত্ববাদ সুরক্ষারও আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কিছু গণমাধ্যম এই বলে প্রচার ছড়াচ্ছে, বাংলাদেশ নিজের পররাষ্ট্রনীতি কীভাবে প্রতিপালন করবে, সে বিষয়ে চীন নসিহত করছে। 

এমন পটভূমিতে এটা বুঝে দেখা জরুরি, এমন আহ্বানের মাধ্যমে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়াবিষয়ক মহাপরিচালক লুই জিনসং আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন, চীন কেন আঞ্চলিক দেশগুলোকে ব্লক রাজনীতির ফাঁদে পা না দেওয়ার জোরালো আহ্বান জানিয়েছে এবং কোনো গ্রুপে না জড়িয়ে এসব দেশ কীভাবে নিজেদের স্বকীয় পরিচয় তুলে ধরবে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তিনটি জোট টিপিপি, আইপিএস, আইপিইএফ থেকেই চীনকে কৌশলে বিযুক্ত রাখা হয়েছে। যেমনটা প্রথম স্নায়ুযুদ্ধকালে করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইভাবে তারা এখন এশীয় দেশগুলোকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চাপ দিচ্ছে তাদের পক্ষভুক্ত হতে। 

ভূরাজনৈতিক এ উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষভুক্ত হওয়া মানে চীনের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রাখা।

উল্লিখিত বিশ্লেষণ এ কথা বোঝার জন্য যথেষ্ট যে ব্লক রাজনীতির ফাঁদে পড়ার ঝুঁকি থেকে আঞ্চলিক দেশগুলো দূরে থাকুক—চীন কেন এটি চায়। উপরন্তু বহু কারণের কথাও বিবৃত করা যায়, কেন এ অঞ্চলে ‘ব্লক রাজনীতি’ চীন সমর্থন করে না। 

প্রথমত বলা যায়, যদি এশীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার নতুন স্নায়ুযুদ্ধের কোনো এক পক্ষ নেয়, তাতে পরিস্থিতি কেবল মারাত্মক আকারই ধারণ করবে না, আঞ্চলিক শান্তি ও সমৃদ্ধিও হুমকির মুখে পড়বে।



দ্বিতীয়ত, এই ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যদি এশীয় দেশগুলো শামিল হয়, তাহলে বিশ্ব আসলে দুটি পরস্পরবিরোধী গ্রুপে ভাগ হবে। অর্থাৎ এশিয়ার বাইরে বাকি বিশ্বের দেশগুলোরও এই দুই পক্ষের যেকোনো একটিতে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। অন্যদিকে মহাশক্তিধর দেশগুলো এখন যে অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে, সেখান থেকে তারা তখনই নড়তে বাধ্য হবে, যখন কেউ কোনো ব্লকে শামিল হবে না।

তৃতীয়ত, যদি এশিয়ার দেশগুলো এই অর্থনৈতিক ও আদর্শিক সংঘাত থেকে দূরে থাকে, তাতে তাদের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় ঝুটঝামেলা মিটিয়ে ফেলা সহজ হবে।

চতুর্থত, প্রতিটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অধিকার রয়েছে তার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অবস্থান, উদ্দেশ্য নিজের মতো করে নির্ধারণ করার। যদি এশিয়ার দেশগুলো এ নতুন স্নায়ুযুদ্ধের পক্ষভুক্ত হয়ে পড়ে, তাহলে এসব বিষয়ে তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ ও তা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। কেননা, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্লকের নেতৃত্বাধীন বিশ্বশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নই তখন মুখ্য হয়ে পড়বে।

পঞ্চমত, ঔপনিবেশিক শাসনে দীর্ঘদিন শোষিত হয়েছে এশিয়ার বেশির ভাগ দেশ। তখন থেকে তাদের আর্থসামাজিক নানা সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্লকের ফাঁদে পা দেওয়া মানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাববলয় অটুট রাখা।

ষষ্ঠত, সুনির্দিষ্ট কোনো আদর্শকে সমর্থন দেওয়া কোনো কাজের কথা নয়; বরং বিশ্বে আরও সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এসব দেশের একযোগে কাজ করা উচিত।

সপ্তমত, স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা লালন না করে এশিয়ার দেশগুলোর উচিত হবে বৃহত্তর সহযোগিতায় আবদ্ধ হওয়া। যাতে দেশগুলো নিজেদের ভূমি, অভ্যন্তরীণ বাজার ও জনশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।

অষ্টমত, এশিয়ার দেশগুলো যদি গ্রুপের চক্করে পড়ে, তাহলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তা একদিন পূর্ণাঙ্গ সংঘাতে গড়াতে পারে, এমনকি তা হতে পারে পারমাণবিক যুদ্ধও। সে ক্ষেত্রে এশিয়াই সবচেয়ে বেশি ভুগবে, যেভাবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন বেশি ভুগতে হচ্ছে ইউরোপকে।

এশিয়ার উদীয়মান দেশগুলোর উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্যাটেলাইট স্টেট’ না হয়ে একসঙ্গে কাজ করে ‘কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন’ নিশ্চিত করা। চীনের অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করে যুক্তরাষ্ট্র আসলে তার একক আধিপত্য ধরে রাখতে চায়। এ কারণেই ওয়াশিংটন চেষ্টা করছে এশিয়ার দেশগুলোকে ‘বলির পাঁঠা’ বানাতে। যুক্তরাষ্ট্র যে কৌশল গ্রহণ করেছে, তা এরই মধ্যে অনেকাংশে ভুল ও অনুপযুক্ত প্রমাণিত হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, ইন্দো–প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির (আইপিএস) অর্থনৈতিক অসংগতি যুক্তরাষ্ট্রকে ইন্দো–প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক (আইপিইএফ) গঠনে ধাবিত করেছে। আইপিইএফে যেহেতু কোনো অগ্রাধিকারমূলক বাজারে প্রবেশাধিকার কিংবা শুল্ক ছাড়ের সুবিধা নেই, তাই এটিও ব্যর্থ হওয়া সময়ের ব্যাপার।

যুক্তরাষ্ট্রের মনে রাখা উচিত, সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নেওয়া যে কৌশল ইউরোপে কাজে দিয়েছে, একই কৌশল এশিয়ায় চীনের বিরুদ্ধে খাটবে না। কেননা, ভূরাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক দিক থেকে এশিয়া ও ইউরোপ আলাদা।

‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতি’ মেনে ১৯৫৪ সাল থেকে চীন তার পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ‘নাক না গলানো’র চর্চা জারি রেখেছে। চীন এটা খুব ভালোভাবেই বোঝে, যদি এই অঞ্চলের দেশগুলো ব্লক রাজনীতিতে যুক্ত হয়, তাহলে নতুন স্নায়ুযুদ্ধ আরও তীব্র হবে। কেননা, সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা শুরু হওয়া মানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকিতে পড়া, নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়া। ফলে জনগণের স্বস্তি দূর হবে, তাদের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়বে। দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি ও সমৃদ্ধির খাতিরে ব্লক রাজনীতির মানসিকতা থেকে দূরে থাকতে চীন তাই আঞ্চলিক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র: সিজিটিএন

এশিয়া   চীন   যুক্তরাষ্ট্র   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

এবার কেজরিওয়াল বিতর্কে জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৩:৪৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের পর ভারতের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার দেশ জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র সংশয় প্রকাশ করার পর এবার বিতর্কে এলো জাতিসংঘ। 

বৃহস্পতিবার(২৯ মার্চ) রাতে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকও জানান, তাদের আশা, ভোটের সময় অন্য দেশের মতো ভারতেও রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রত্যেকের অধিকার রক্ষিত হবে, যাতে সবাই সুষ্ঠুভাবে, মুক্ত মনে ভোট দিতে পারেন।  

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার এবং তাকে হেফাজতে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে, ভারতকে তা বিব্রত করলেও কূটনৈতিক পর্যায়ে তার জবাব দেয়া হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিতে নিযুক্ত জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের শীর্ষ কূটনীতিকদের ডেকে এ ধরনের মন্তব্যে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র থেমে থাকেনি। দ্বিতীয়বারও তারা এ বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে, মন্তব্য করেছে। তাদের সঙ্গে এবার বিতর্কে যুক্ত হলো জাতিসংঘও। 

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে স্টিফেন ডুজারিককে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রশ্নে কংগ্রেস দলের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার বিষয়টিও উত্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয়, ভোটের ঠিক আগে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কংগ্রেসের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। নাগরিক অধিকার আন্দোলনকর্মীরা মনে করছেন, এভাবে বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি জাতিসংঘ কীভাবে দেখছে?  

এমন প্রশ্নে, তিনি মুক্ত মনে ভোট দেওয়া এবং রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কথাটি ভারতের পক্ষে অবশ্যই বিব্রতকর।   

প্রথম দফায় সাত দিন হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার কেজরিওয়ালকে দিল্লির নিম্ন আদালতে পেশ করা হয়। সেখানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) হেফাজতের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানোর দাবি জানায়। বিচারক চার দিন মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। তবে তার আগে কেজরিওয়ালকে অনুমতি দেন এজলাসে নিজের হয়ে সওয়াল করার। অনুমতি পেয়ে কেজরিওয়াল বলেন, তাকে ফাসানোই ইডির একমাত্র লক্ষ্য।


কেজরিওয়াল   বিতর্ক   জাতিসংঘ   পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়   ভারত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফিলিস্তিনিরা এখনো যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে

প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসকে নির্মূলের জন্য কয়েক মাস ধরে টানা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তবে এমন আক্রমণের পরও হামাসের যুদ্ধ করার সক্ষমতা এখনো অটুট রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার (আইএসডব্লিউ)। 

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা আল শিফা হাসপাতালের কাছাকাছি এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে প্রায় ৭০টি হামলা চালিয়েছে। গত বছরে গাজার এ হাসপাতালটিতে তাণ্ডবের পর আবারও চলতি বছরের মার্চে সেখানে ফিরে আসে ইসরায়েলি সেনারা।

ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার (আইএসডব্লিউ) এবং ক্রিটিকাল থ্রেট প্রজেক্ট (সিটিপি) তাদের সর্বশেষ গাজার যুদ্ধাবস্থার মূল্যায়নে জানিয়েছে, হামলার তীব্রতা এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের যুদ্ধের সক্ষমতা এখনো অটুট রয়েছে। যদিও গাজায় ইসরায়েলের হামাসকে নির্মূলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক জানিয়েছে, আল শিফা হাসপাতাল এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের অন্তত ছয়টি যোদ্ধা দল সক্রিয় রয়েছে।

সবশেষ তথ্যে পর্যবেক্ষক সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৩ মার্চ গাজার জেইতুন এলাকা থেকে হামাসকে পুরোপুরিভাবে নির্মূলের দাবি করে। তবে বুধবার এ এলাকায় আবারও ফিরে এসেছে ইসরায়েলি সেনারা। তাদের ফিরে আসা এটাই প্রমাণ করে যে গাজার অন্যান্য এলাকার মতো সেখানেও নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে হামাসের যোদ্ধারা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দেশেটির এ হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের হামলার কারণে উপত্যকা এখন তাঁবুর বসতির জনপদে পরিণত হয়েছে।

ইসরায়েলের দাবি, গাজা থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা এ অভিযান চালিয়ে যাবে। অন্যদিকে অব্যাহত হামলার কারণে উপত্যকার ব্যপক আকারে খাদ্য ও মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।


ফিলিস্তিন   যুদ্ধ   ইসরায়েল   হামাস   গাজা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কাশ্মীরে গভীর খাদে যাত্রীবাহী ট্যাক্সি, নিহত ১০

প্রকাশ: ০১:৫৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী ট্যাক্সি গভীর খাদে গড়িয়ে পড়ে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) এবং কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে। 

দেশটির গণমাধ্যম বলছে, শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে একটি যাত্রীবাহী ট্যাক্সি শ্রীনগরের দিকে যাচ্ছিল। পরে জম্মু ও কাশ্মীরের রমবান এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রী-সহ ট্যাক্সিটি আচমকা রাস্তার পাশে থাকা গভীর খাদের মধ্যে পড়ে যায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে বিপর্যয় মোকাবিলা দলও। তাদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে স্থানীয় বাসিন্দারাও যোগ দিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চলছে। তবে বৃষ্টির কারণে রাস্তা ভেজা থাকায় উদ্ধারকারীদের বেগ পেতে হচ্ছে।


কাশ্মীর   ট্যাক্সি   এসডিআরএফ   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নির্বাচনের আগেই ‘কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে’ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ: ১২:৫০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের পর, ভারতে নিযুক্ত মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করে নয়াদিল্লি। সেই তলবের প্রতিক্রিয়ায় নয়াদিল্লির আপত্তি অগ্রাহ্য করে আরও একবার মুখ খোলে ওয়াশিংটন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ফের কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। সব মিলিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা এখন তুঙ্গে।

লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতে বির্তকিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু করে বিজেপি শাসিত দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইন নিয়ে সমালোচনা করায় ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মতবিরোধ চলছিল। সেই আগুনে ঘি ঢালে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার ইস্যু। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছে দেশ দুটি। 

গ্রেফতার হওয়া আম আদমি পার্টির নেতা কেজরিওয়ালের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ‘সুষ্ঠু আইনি প্রক্রিয়ায়’ বিচারকাজ সম্পন্ন করতে নয়াদিল্লিকে আহ্বান জানায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। কিন্তু বিষয়টিকে মোটেও ভালো চোখে দেখেনি ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশটি। 

এমনকি দিল্লিতে মার্কিন শীর্ষ কূটনীতিককে তলব করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৭ মার্চ) ভারতে নিযুক্ত মার্কিন মিশনের ভারপ্রাপ্ত উপপ্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করা হয়। ওয়াশিংটনের মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ ও আপত্তি জানিয়ে নয়াদিল্লি বলে, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থি।

তবে নয়াদিল্লির এসব আপত্তি অগ্রাহ্য করে, বিষয়টি নিয়ে আরও একবার মুখ খোলে ওয়াশিংটন। মার্কিন কূটনীতিককে তলব এবং ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক একাউন্ট জব্দের অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। 

মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, কেজরিওয়াল ইস্যুতে ‘নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ’ করছে যুক্তরাষ্ট্র। দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টিও তাদের নজরে আছে। এছাড়া কংগ্রেস পার্টির কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের বিষয়ে মিলার বলেন, 

মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। এতে আসন্ন নির্বাচনে প্রচারণা চালানো তাদের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে বলে মনে করে ওয়াশিংটন। 

এর প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের আচরণকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন,  মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের করা মন্তব্যের বিষয়ে দেশটির কূটনীতিকের কাছে আপত্তি ও প্রতিবাদ জানিয়েছি। মন্তব্যগুলো একেবারেই অযৌক্তিক। আমাদের নির্বাচনী এবং আইনি প্রক্রিয়ার ওপর বহিরাগত যেকোনো অভিযোগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। ভারতে আইনের শাসনেই সব আইনি প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। 

এমন ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ভারতীয় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলেও। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নাক না গলানোর আহ্বান জানিয়েছেন কেউ কেউ।


ভারত   যুক্তরাষ্ট্র   কূটনৈতিক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাফায় প্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেনাবাহিনী: নেতানিয়াহু

প্রকাশ: ১২:২৯ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি দক্ষিণ গাজার মিশর সীমান্তবর্তী এলাকা রাফায় আশ্রয় নেয়। এরই মধ্যে উত্তর ও মধ্য গাজাকে ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এখন আন্তর্জাতিক সব চাপ উপেক্ষা করে রাফায়ও অভিযান চালাবে ইসরায়েল। সূত্র: আল-জাজিরা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি সেনাদের পরিবারের সদস্যদের বলেছেন, একমাত্র সামরিক চাপের মাধ্যমেই তাদের মুক্ত করা সম্ভব। তাছাড়া রাফায় সেনাবাহিনী অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি। এসময় তিনি রাফায় স্থল অভিযানের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে উত্তর গাজা ও খান ইউনিস জয় করেছি।

এদিকে গাজায় গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও দুইটি ইস্যু জারি করেছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। সেখানে মৌলিক সেবা ও মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চিয়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৩২ হাজার ৫৫২ জন নিহত হয়েছেন। আহাত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৯৮০ জন।

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাস হামলা চালানোর পর থেকে গাজায় যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, সে বিষয়ে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।

গত ২৫ মার্চ গৃহীত প্রস্তাবটিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ‘অবিলম্বে’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা উচিত এবং ‘একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে রমজান মাসের প্রতি সব পক্ষেরই শ্রদ্ধা দেখানো উচিত’। তবে যুক্তরাষ্ট্র গত ২৫ মার্চ পাস হওয়া ২৭২৮ নম্বর প্রস্তাবটিকে বাধ্যতামূলক নয় বলে বর্ণনা করেছে। তাদের যুক্তি, ওই প্রস্তাবে ‘যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে’ কথাগুলোর পরিবর্তে ‘যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করা হয়েছে’ অভিব্যক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারও সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি বাধ্যতামূলক প্রস্তাব নয়।


রাফা   সেনাবাহিনী   নেতানিয়াহু   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন