বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ১১০টি দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ডব্লিউএইচওর মূল কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ওমিক্রন পরিবারের দুই ভাইরাস- ভাইরাস বিএ পয়েন্ট ফোর এবং বিএ পয়েন্ট ফাইভের কারণে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে ১১০ দেশে। এসব দেশে সংক্রমণ বাড়ার কারণে গত এক মাসে বিশ্বজুড়ে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘শুরুর সময়ের তুলনায় বর্তমানে করোনাভাইরাসের তেজ কিছুটা কমেছে, কিন্তু মহামারি এখনও শেষ হয়ে যায়নি। বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ১১০টি দেশে করোনা সংক্রমণে উর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে এবং প্রতিদিন এসব দেশে করোনায় গুরুতর অসুস্থ প্রত্যেক ৬ জনের মধ্যে ৩ জনই মারা যাচ্ছেন।’
‘আরও একটি বিপজ্জনক ব্যাপার হলো, বিশ্বের কয়েকটি অঞ্চলে করোনাভাইরাসের রূপান্তরিত ধরন ওমিক্রনের জেনোমিক সিকোয়েন্স পরিবর্তন হয়েছে।’
‘ফলে একদিকে ভাইরাসটিকে আমাদের ট্র্যাক করার ক্ষমতা যেমন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে এই ভাইরাসটির আরও নতুন পরিবর্তিত ধরনের আগমনের সম্ভাবনাও বাড়ছে।’
মহামারির দুই বছর পেরিয়ে গেলেও টিকাদান কর্মসূচি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে না পারায় খেদ প্রকাশ করেছেন গেব্রিয়েসুস। সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মহামারি নির্মূল করতে হলে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৭০ শতাংশকে অবশ্যই করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করতে হবে।’
‘কিন্তু আমাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মাত্র ৫৮টি দেশের ৭০ শতাংশ টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।’
মহাসচিব বলেন, ‘এখনও বিশ্বের অনেক দেশে সাধারণ মানুষ তো দূর—স্বাস্থ্যকর্মী ও বয়স্ক লোকজনও টিকার ডোজ পাননি; অনেক দেশ টিকাদান কর্মসূচি শুরুই করতে পারেনি, কিংবা করলেও টিকার স্বল্পতার কারণে মাঝপথে থামিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এসব খুবই দুঃখজনক।’
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫৫ কোটি ১৯ লাখ ২৯ হাজার ৫২৮ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৬৩ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬২ জনের।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের পর দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।