ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সম্পর্কের শীতলতা ঝেড়ে হঠাৎ কেনো সৌদির ঘনিষ্ঠ হতে উদগ্রীব তুরস্ক?

প্রকাশ: ১২:২০ পিএম, ২৪ জুন, ২০২২


Thumbnail সম্পর্কের শীতলতা ঝেড়ে হঠাৎ কেনো সৌদির ঘনিষ্ঠ হতে উদগ্রীব তুরস্ক?

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষুব্ধ তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান খোলাখুলি আঙ্গুল তুলেছিলেন যুবরাজ মোহামেদ সালমানের দিকে।

তারপর খুব দ্রুত মুসলিম বিশ্বের দুই প্রভাবশালী দেশের সম্পর্কে ধস নামতে শুরু করে। বছরে খানেকের মধ্যে সম্পর্ক এতটাই তলানিতে গিয়ে ঠেকে যে সৌদি আরব অনানুষ্ঠানিকভাবে তুরস্কের পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

অন্যদিকে, বহুদিন পর্যন্ত সুযোগ পেলেই সৌদি রাজপরিবারকে একহাত নিতে ছাড়েননি মি. এরদোয়ান। দুই দেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় নিয়মিত দুই সরকারের মধ্যে প্রকাশ্যে নিয়মিত কাদা ছোঁড়াছুড়ি চলেছে অনেকদিন।

কিন্তু এপ্রিলে হঠাৎ মি. এরদোয়ানের সৌদি আরব সফর এবং জেদ্দায় যুবরাজ সালমানের সাথে তার করমর্দনের ছবি প্রকাশ হওয়ার পর ইঙ্গিত মেলে হাওয়া বদলাতে শুরু করেছে।

গত কয়েক মাসে দুই দেশের সম্পর্কে উষ্ণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ব্যবসা, বিমান চলাচলে বিধিনিষেধ উঠে গেছে। সৌদি আরবে তুর্কি টিভি সিরিজের সম্প্রচার শুরু হয়েছে । দু দেশের মিডিয়ার পরস্পরের বিরুদ্ধে যে প্রচারণা চলছিল তা বন্ধ হয়েছে। এরপর বুধবার যুবরাজ মি. এরদোয়ানের বিশেষ আমন্ত্রনে যুবরাজ সালমান তুরস্কে যাওয়ার পর এটি এখন পরিষ্কার যে আঙ্কারা এবং রিয়াদের সম্পর্কের জমাট বরফ গলছে।

কেন হাত বাড়ালেন এরদোয়ান?

আন্তর্জাতিক রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই যে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানই সৌদি আরবের সাথে নতুন করে সুসম্পর্ক তৈরিতে উদগ্রীব হয়ে পড়েছেন।

"আমি বলবো মি. এরদোয়ান কিছুটা হলেও নতজানু হয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে বিশেষ করে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে চটে যাওয়া সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে তিনি উঠে-পড়ে লেগেছেন," বিবিসি বাংলাকে বলেন লন্ডনে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশন্যাল ইন্টারেস্টের প্রধান সাদি হামদি।

কিন্তু কেন মি. এরদোয়ান তার চিরাচরিত যুদ্ধংদেহী ভাবমূর্তি আড়ালে রেখে নতজানু হচ্ছেন? সাদি হামদি মনে করেন, প্রথম এবং প্রধান কারণ তুরস্কের অর্থনৈতিক সংকট।

তুরস্কের মুদ্রা লিরা একরকম মুখ থুবড়ে পড়েছে। রয়টার্স বার্তা সংস্থার খবর অনুয়ায়ী ২০২১ সালে এক বছরেই ডলারে বিপরীতে লিরার মূল্যমান অর্ধেক হয়ে গেছে। মুদ্রাষ্ফীতির হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। 



"নির্বাচনের মাত্র এক বছর বাকি। নির্বাচনের আগে উপসাগর থেকে বিশেষ করে সৌদি আরব থেকে বিনিয়োগ ফিরিয়ে এনে অর্থনৈতিক সংকট কিছুটা হলেও সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন মি. এরদোয়ান," বলেন মি. হামদি।

গত সপ্তাহে মি. এরদোয়ান বলেন, তিনি এবং সৌদি যুবরাজ "দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কতটা উচ্চতায় নেওয়া সম্ভব" তা নিয়ে কথা বলবেন। তার সরকারের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, সৌদি যুবরাজের সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যে "সংকট পূর্বকালীন (২০১৮ সালে খাসোগজি হত্যাকান্ডের আগে) সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্টিত হবে এবং সম্পর্ক পুরোপুরি স্বভাবিক হবে।"

জানা গেছে, জ্বালানি, ব্যবসা এবং নিরাপত্তা বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হবে। সেই সাথে, তুর্কি স্টক মার্কেটে সৌদি বিনিয়োগ নিয়ে কথা হবে। সৌদি আরবের কাছে তুরস্কের তৈরি সামরিক ড্রোন বিক্রি নিয়ে কথা হবে।

অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনের নির্বাচনের আগে তুরস্কের অর্থনীতির দুরাবস্থা কাটাতে মি.এরদোয়ান সৌদিদের কাছ থেকে ব্যবসা এবং বিনিয়োগ চাইছেন।

পিছু হটছেন এরদোয়ান?

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশন্সের গত মাসে প্রকাশিত একটি প্রকাশনায় গবেষক স্টিভেন এ কুক লিখেছেন - মি. এরদোয়ান তার 'স্বভাবসুলভ আগ্রাসি' পররাষ্ট্রনীতি থেকে হয়তো পিছু হটছেন।

"তার অনর্থক আগ্রাসি পররাষ্ট্র নীতির কারণে মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে ধনী উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছিলেন তিনি। তাতে তুরস্কের কোনো লাভ হয়নি," বলছেন মি. কুক।

২০১৩ সালে মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুড সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর প্রেসিডেন্ট সিসির ওপর প্রচণ্ড খেপে যান মি. এরদোয়ান। তখন থেকেই মিশরের বিরোধী রাজনীতিকদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন তিনি। ইস্তাম্বুলে বসে সিসি সরকারের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাতে দিয়েছেন।

সৌদি আরব মিশরের ঐ সামরিক অভ্যুত্থান সমর্থন করলে সৌদি রাজপরিবারের ওপর ক্ষেপে যান মি. এরদোয়ান। ফলে, ২০১৭ সালে সৌদি আরব, ইউএই সহ চারটি উপসাগরীয় দেশ কাতারের ওপর অবরোধ দিলে কাতারের সমর্থনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তুরস্ক।



এরপর ২০১৮ সালে খাসোগজি হত্যাকান্ডের পর সৌদি আরব এবং ইউএইকে একহাত নেওয়ার সবরকম চেষ্টা করেন মি এরদোয়ান। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের বিচারের চেয়ে মি. এরদোয়ানের প্রধান লক্ষ্য ছিল ঐ ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে সৌদি আরবকে ঘায়েল করা।

ফলে, ক্রমশ চটে যেতে থাকে সৌদি আরব, ইউএই এবং মিশরের মত মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশগুলোর সাথে তুরস্কের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক।

সম্পর্কে চিড় ধরার আগে সৌদিরা ছিল তুরস্কে স্থাবর সম্পত্তির সবচেয়ে বড় ক্রেতা। একশো'রও বেশি তুর্কি কোম্পানি সৌদি আরবে ব্যবসা করছিল। এক লাখের মত তুর্কি নাগরিক সৌদি আরবে কাজ করে।

সৌদি অর্থনৈতিক বিশ্লেষক আমাল আব্দুল-আজিজ আল-হাজানির দেওয়া হিসাব মতে তুরস্ক ২০২৩ সালের মধ্যে ২,৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের সৌদি বিনিয়োগ টার্গেট করেছিল, আর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২,০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। সেসব টার্গেট ভেস্তে যায়।

'বন্ধু কমছে, শত্রু বাড়ছে'

সাদি হামদি বলেন, তুরস্কের ভোটারদের কাছে পররাষ্ট্রনীতির চেয়ে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির গুরুত্ব অনেক বেশি। "অনেক মানুষের ভেতর এমন ধারণা শক্ত হচ্ছে যে মি. এরদোয়ানের কারণে তুরস্কের বন্ধু কমছে, শত্রু বাড়ছে।"

সম্প্রতি একটি ভিডিও ফুটেজ তুরস্কের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় যেখানে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে এক নারী উদ্যোক্তা দাঁড়িয়ে চিৎকার করে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে বলছেন সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক চটে যাওয়ার তার ব্যবসা লাটে ওঠার পথে।



শুধু অর্থনীতিই নয়, ভূ-রাজনীতিতে তুরস্ককে পাল্টা ঘায়েল করতে সৌদি আরব এবং ইউএই তৎপরতা শুরু করেছিল। পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মজুদ জ্বালানির মালিকানা নিয়ে তুরস্কের সাথে বিরোধে সাইপ্রাস ও গ্রিসের সমর্থনে এগিয়ে আসে মিশর, সৌদি আরব আরব এবং ইউএই।

২০২০ সালে গ্রীষ্মে গ্রীসের বিমানবাহিনীর এক মহড়ায় অংশ নেয় সৌদি এবং আমিরাতে বিমান বাহিনীর পাইলটরা।

এসব ঘটনা তুরস্ককে উদ্বিগ্ন করে তুলছিল।

স্টিভেন এ কুক তার বিশ্লেষণে বলেন, "এরদোয়ান সরকার এখন উপলব্ধি করছে যে আঞ্চলিক দেশগুলোর ওপর তার ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার মত শক্তি তাদের নেই।"

আর এসব প্রেক্ষাপটেই দৃশ্যত উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছেন মি এরদোয়ান।

যেসব ছাড় দিয়েছে তুরস্ক

সম্প্রতি খাসোগজির বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

মিশরের বিরোধী বেশ কিছু রাজনীতিক ইস্তাম্বুলে বসে প্রেসিডেন্ট সিসির সরকারের বিরুদ্ধে যে তৎপরতা চালাচ্ছিল তা প্রায় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের পরিচালিত অনেক টিভি চ্যানেলে তালা ঝোলানো হয়েছে। মিশরীয় সরকার বিরোধীদের পরিচালিত বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া সাইটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের অনেককে তুরস্ক ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তাহলে মি. এরদোয়ান তার পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে অনুশোচনা করছেন? ভুল স্বীকার করছেন? সাদি হামদি মনে করেন ভুল স্বীকার না করলেও মি. এরদায়ান মেনে নিচ্ছেন যে তিনি যেমনটা চেয়েছিলেন তা হয়নি।

মি হামদির মতে - নির্বাচনের আগে তিনি তুরস্কের মানুষকে দেখাতে চাইছেন যে অভ্যন্তরীন বিষয়গুলোকে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে তিনি মনে করেন না যে মি. এরদোয়ান তার বিদেশ নীতি বর্জন করছেন, বড়জোর "স্বল্প মেয়াদে অগ্রাধিকার বদলাচ্ছেন।"

সৌদি আরবের দিতে হাত বাড়িয়ে এরদোয়ানের শক্তিশালী ভাবমূর্তি চোট খেয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু একইসাথে এটাও সত্যি যে তুরস্ক এখনও সদম্ভে লিবিয়ায় রয়েছে। মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বাড়াচ্ছে। ভূমধ্যসাগরে এখনও তুরস্ক অনেক বড় শক্তি। সিরিয়া থেকে তারা নড়বে বলে মনে হয়না। এমনকি সাব-সাহারা অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের পথ থেকে সরে যাবার কোনো লক্ষণ তারা দেখাচ্ছে না।

মি. হামদি মনে করেন, সম্ভবত সৌদি আরব এবং ইউএই বা মিশরের নেতারাও মি. এরদোয়ানের মনোভাব সম্পর্কে এখনও সন্দিহান।

"প্রথম যখন এরদোয়ান সৌদি এবং আমিরাতিদের কাছে যান, তারা উৎসাহ দেখায়নি। তাদের আস্থা অর্জন করতে গত কয়েকমাসে অনেক ছাড় দিয়েছেন এরদোয়ান। তারপরও মিশর এখনও তার ব্যাপারে শীতল।"

মি. হামদি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বিশ্লেষক বলছেন এবং লিখছেন যে বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট ঘুচলে এবং নির্বাচন পেরুলে মি.এরদোয়ানের পুরনো রূপ ধারণ করবেন।

কেন সাড়া দিচ্ছে সৌদি আরব

এমন সন্দেহ থাকা সত্বেও সৌদি আরব বা ইউএই কেন সাড়া দিচ্ছে?

প্রথম কথা, খাসোগজি হত্যাকান্ডের পর গোত্তা খাওয়া ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন যুবরাজ সালমান। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তাকে খানিকটা হলেও সুযোগ করে দিয়েছেন।

তবে একইসাথে সাদি হামদি মনে করেন, বর্তমান অথনৈতিক সংকটে সস্তায় তুরস্কের সম্পদে অংশীদার বা মালিক হওয়ার সুযোগ সৌদি আরব ছাড়তে চাইছে না।

তাছাড়া, তিনি বলেন, তুরস্কের সমাজ ও রাজনীতির অন্যান্য অংশের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ পেয়েছে সৌদি আরব এবং আমিরাত।

"মোহাম্মদ সালমান এবং মোহামেদ বিন জায়েদ হয়তো মনে করছেন এরদোয়ান দীর্ঘদিন থাকবেন না এবং তুরস্কের বিরোধীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের এটাই সুযোগ।" সূত্র: বিবিসিবাংলা 

সৌদি আরব   তুরস্ক   আরব আমিরাত   এরদোয়ান   মোহাম্মদ বিন সালমান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পূর্বনির্ধারিত ভারত সফর স্থগিত করলেন ইলন মাস্ক

প্রকাশ: ০৪:০১ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পূর্বনির্ধারিত ভারত সফর স্থগিত করেছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার মালিক ইলন মাস্ক। টেসলার বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় সফর স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক বার্তায় সফর স্থগিত করা কথা জানিয়েছেন মাস্ক।

টেসলার সিইও ইলন মাস্ক ভারতে তার পূর্বপরিকল্পিত সফর স্থগিত করেছেন। ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার দুই দিনের মাথায় আগামীকাল রবিবার ইলন মাস্কের ভারত সফর করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে টেসলার বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকায় সে সফর স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন ইলন মাস্ক। 

জানা গেছে, ২১ ও ২২ এপ্রিল দু’দিনের ভারত সফরে আসার কথা ছিল মাস্কের। এই সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়েছিলেন তিনি। ইলন মাস্ক নিজেই সে কথা জানিয়েছিলেন। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মাস্ক লিখেছিলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’ তার পর থেকেই মাস্কের সফর নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।

তবে এ সফরের একদিন আগে আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) ইলন মাস্ক জানালেন তিনি এই মুহূর্তে ভারত সফরে আসছেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে শীর্ষ এই ধবকুবের লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত টেসলায় প্রচুর কাজ জমে থাকায় ভারত সফর  পিছিয়ে দিতে হচ্ছে। কিন্তু চলতি বছরের শেষেই ভারতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানত ভারতে নতুন একটি ফ্যাক্টরি চালু করার কথা ছিল টেসলার এবং তার জন্য নয়া দিল্লিতে মাস্কের ২ বিলিয়ন থেকে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। কোম্পানিগুলো স্থানীয় উৎপাদনে বিনিয়োগ করলে আমদানি করা গাড়ির ওপর উচ্চ শুল্ক কমানো হবে- ভারত সরকার এমন নীতির ঘোষণা দেয়ার পরেই এ বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টেসলা।


ভারত   সফর   স্থগিত   ইলন মাস্ক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানের প্রেসিডেন্টকে বরণ করতে প্রস্তুত পাকিস্তান

প্রকাশ: ০৩:১৭ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি তিন দিনের সরকারি সফরে ইসলামাবাদে যাচ্ছেন। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত পাকিস্তানের সরকার। 

পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে মাত্র কয়েক মাস আগেও ইরান এবং পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। তবে তখন সামরিক জবাব এড়িয়ে কূটনীতির মাধ্যমে সম্পর্ক জোড়া লাগায় মুসলিম বিশ্বের শক্তিধর এই দুই দেশ।

ইরানি প্রেসিডেন্টের সফর নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলন করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তখন তিনি বলেন, তিনি (ইব্রাহিম রাইসি) আসছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাব। তিনি আগামী ২২-২৪ এপ্রিল পাকিস্তান সফর করবেন। এ সফর নিয়ে আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।

ইব্রাহিম রাইসি এমন এক সময়ে পাকিস্তান সফর করবেন যখন পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে বর্তমানে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে রয়েছে। এমনকি ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনা ঘিরে রাইসির সফর স্থগিত করা হতে পারে, এমন কথাও গণমাধ্যমে চাউর হতে শুরু করেছিল। তবে এই ধরনের সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এসব ঘটনার বহু আগে এই সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে ৯০০ কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে। প্রায় সময় একে-অন্যের বিরুদ্ধে নিজ নিজ দেশের মাটিতে জঙ্গিদের আশ্রয় এবং আন্তঃসীমান্ত জঙ্গি হামলা ঠেকাতে পর্যাপ্ত সহায়তা না করার অভিযোগ তুলে দেশ দুটি।


ইরান   প্রেসিডেন্ট   পাকিস্তান  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত

প্রকাশ: ১২:১৭ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আন্তর্জাতিক ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পৃথক দু’টি হামলায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ২৮ জন সেনা নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সময় আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) দেশটির মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবসারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি।

এক প্রতিবেদনে গণমাধ্যমটি বলছে, শুক্রবার সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হোমসে সেনাসদস্যদের বহনকারী একটি বাসকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলা চালায় আইএসের বন্দুকধারীরা। এতে ওই বাসের মোট ২২ জন যাত্রীর সবাই নিহত হন।

নিহত এই সেনাসদস্যদের সবাই সিরীয় সশস্ত্র বাহিনীর কুদস ব্রিগেডের সদস্য। এই ব্রিগেডটির যোদ্ধারা সবাই জাতিগতভাবে ফিলিস্তিনি। একই দিন সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর আলবু কামালের একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ৬ সিরীয় সেনাকে হত্যা করেছে আইএস বন্দুকধারীরা। তবে সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমে দুই ঘটনার কোনোটিই প্রকাশ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে আইএসের উত্থান ঘটে সিরিয়া এবং ইরাকে। দুই দেশের বিশাল ভূখণ্ড দখল করে নিজেদের পৃথক রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিল আন্তর্জাতিক এই ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী।

তবে ২০১৫ সালে রুশ বিমানবাহিনী আইএস অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে অভিযান শুরুর পর থেকে এই গোষ্ঠীটির দৌরাত্ম্য কমতে থাকে। ২০১৪ সালে যে পরিমাণ ভূখণ্ড দখলে নিয়েছিল আইএস, বর্তমানে তার মাত্র এক পঞ্চমাংশ কোনো রকমে টিকিয়ে রাখতে পেরেছে এই গোষ্ঠীটি।


সিরিয়া   আইএস   হামলা   সেনা   নিহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা বিলে ভোট আজ

প্রকাশ: ১২:০৯ পিএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

কয়েক মাস বিলম্বের পর ইউক্রেনের বহুল প্রতীক্ষিত সহায়তা বিল নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে চূড়ান্ত পর্যায়ের ভোট হতে যাচ্ছে। 

শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে এই ভোট হবে। এদিন ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের জন্য কয়েক কোটি ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।

এদিন ইউক্রেন এবং ইসরায়েলের জন্য কয়েক কোটি ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কয়েক বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিয়েছে। দেশটি কিয়েভের সবচেয়ে বড় দাতা। তবে বর্তমানে সহায়তা কমে গেছে। হাউসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিত্ররা নতুন সহায়তা থামিয়ে দিচ্ছে। 

কংগ্রেসে বিলটি পাস হওয়া নিয়ে এখনও আশঙ্কা রয়ে গেছে। এ বিষয়ে হাউসের স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, বিষয়টিকে ভোটে আনতে বদ্ধপরিকর তিনি। এমনকি এতে যদি তার ক্ষমতা হুমকির মুখে পড়ে তবুও।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহায়তা প্যাকেজটিতে ভোট দিতে প্রস্তুত কংগ্রেস। একইসঙ্গে প্যাকেজটি অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে সিনেটও। বিলটি সিনেটে পাস হলে এটিকে আইনে স্বাক্ষর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

ইউক্রেনের এই সহায়তা প্রস্তাবের ভোট কিয়েভে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কেননা, রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রে লড়তে মিত্রদের কাছ থেকে নতুন এই সহায়তা ইউক্রেনের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে।


মার্কিন কংগ্রেস   ইউক্রেন   বিল   ভোট   ডোনাল্ড ট্রাম্প  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১১:৩৩ এএম, ২০ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বেশ কয়েকজন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।

বিশেষ এক সূত্রের বরাতে খবরটি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার শঙ্কায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নিজ কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিসির এই পদক্ষেপ ঠেকাতে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে নিজ কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন নেতানিয়াহু। তার যুদ্ধকালীন বিশেষ মন্ত্রিসভার বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন, স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও সরকারপন্থী বেশ কয়েকজন আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞ ওই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) জেরুজালেম সফরে গিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালিনা বেয়ারবক। তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময়ও আইসিসির সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে কথা বলেছেন নেতানিয়াহু। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই পদক্ষেপ ঠেকাতে ব্রিটিশ ও জার্মান সরকারের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে হামাস ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মধ্যে ব্যাপক সংঘাত হয়েছিল। সেই যুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো নিয়ে ২০১৯ সালে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেয় আইসিসি। পরে করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর তদন্তের কাজ স্থগিত থাকে। তবে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ফের তদন্ত শুরু করে আইসিসি।

সেই তদন্তের অংশ হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরে ইসরায়েল সফর করেছিলেন আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান। কিন্তু ইসরায়েলি প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর আপত্তির কারণে গাজা সফরে যেতে ব্যর্থ হন তিনি। সেই সফর শেষে ফিরে যাওয়ার আগে করিম খান বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ও তার জবাবে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়।

তিনি আরও বলেন, গাজায় যেসব সহিংসতা আগে হয়েছে, তা এখনো হচ্ছে। এসব সহিংসতা হামাস ও আইডিএফের পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে করেন করিম খান। এমনকি এ সংক্রান্ত কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণও তার হাতে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।


নেতানিয়াহু   গ্রেপ্তার   আইডিএফ   ইসরায়েল   আইসিসি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন