পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে সেখান থেকে পাকিস্তানের নেতৃত্বকে শিক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নিবন্ধটি লিখেছেন পাকিস্তানের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও কলাম লেখক সাহিবজাদা রিয়াজ নূর। "বাংলাদেশের নেতৃত্বের কাছ থেকে গ্রহণীয়" শিরোনামের ওই নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যার কৃতিত্ব দেশটির নেতৃত্বকে দেওয়া যেতে পারে।
নিবন্ধে সম্প্রতি উদ্বোধন করা পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলা হয়েছে, "পদ্মা সেতুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ‘গর্ব ও সক্ষমতার প্রতীক’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।"
সাহিবজাদা রিয়াজ নূর নিবন্ধে লিখেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির সঙ্গে অর্থনৈতিক নীতির ভারসাম্য রক্ষার দিকে মনোনিবেশ করেন। তিনি বাজারভিত্তিক পুঁজিবাদী প্রবৃদ্ধির পথে হাঁটেন। অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়া এশিয়ার অন্য দেশগুলো থেকে তিনি শিক্ষা নিয়েছেন। এসব দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য এসেছে চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে। এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক উন্নয়ন, রপ্তানিনির্ভর প্রবৃদ্ধিভিত্তিক বাণিজ্য উদারীকরণ ও অর্থনৈতিক সংযম।
নিবন্ধে বাংলাদেশের বাণিজ্য উদারীকরণের প্রশংসা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে একটি সম্মেলনে শেখ হাসিনার বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই সম্মেলনে একজন অর্থনীতিবিদ শেখ হাসিনাকে বাণিজ্য উদারীকরণের সুবিধা সম্পর্কে বলতে শুরু করেন। তখন তিনি তাঁকে বলেন, "বাণিজ্য উদারীকরণের বিষয়ে আপনার আমাকে বোঝাতে হবে না। যখন আমি যুগোস্লাভিয়ার সীমান্তবর্তী ইতালীয় শহর ত্রিয়েস্তে ছিলাম তখন দেখেছি সীমান্ত সপ্তাহে তিনবার খোলা হচ্ছে এবং দুই পাশ থেকে লোকজন যাতায়াত করছে, পণ্য কিনছে এবং ফিরে আসছে।" এটা প্রমাণ করে, রাজনীতিবিদেরা অন্য যেসব বিষয়ে আকৃষ্ট, সেগুলোর থেকে অর্থনীতিতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
নিবন্ধে আর্থসামাজিক নানা খাতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অবস্থানের পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ ৪৫ শতাংশ ধনী। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা পাকিস্তানের চেয়ে এক কোটি বেশি ছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানের জনসংখ্যা ২৩ কোটি আর বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর পাকিস্তানের রপ্তানি আয় ছিল ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার আর পাকিস্তানের ১ হাজার ৫৪৩ মার্কিন ডলার। এ বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) হচ্ছে ৪১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আর পাকিস্তানের ৩৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৬ শতাংশ আর পাকিস্তানের ১২ থেকে ১৫ শতাংশ, যা বেড়ে এখন ২১ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। পাকিস্তানের রুপির তুলনায় বাংলাদেশের টাকা এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখ করার মতো। তাছাড়া উচ্চ সাক্ষরতার হারও রয়েছে।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে সাহিবজাদা রিয়াজ নূর নিবন্ধে লিখেছেন, পাকিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যক্তিগত লাভের বিষয়ে আগ্রহী। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বারবার বাধা পরিবার কেন্দ্রিকতার বাইরে শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের বিকাশ ব্যাহত করেছে। অথচ এটা স্বীকৃত যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন, শক্তিশালী নাগরিক প্রতিষ্ঠান এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৫৮ সাল থেকে সরকারের সমস্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা জনগণের ক্ষমতায়নের পরিবর্তে সামন্তশক্তিকে ক্ষমতায়ন করেছে। পাকিস্তানে যে উন্নয়নের পথ অনুসরণ করা হয়েছে, তা সুবিধাভোগী, ধনী ও অভিজাতদের পক্ষে গেছে।
সাহিবজাদা রিয়াজ নূর লিখেছেন, বাংলাদেশকে অনুসরণ করে পাকিস্তানের নেতৃত্বকে জাতীয় অ্যাজেন্ডা হিসেবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে জোর দিতে হবে এবং আঞ্চলিক শান্তির পক্ষে থাকার পাশাপাশি সাংবিধানিক পথে চলতে হবে। কার্যকর প্রতিরক্ষার সঙ্গে আপস না করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ বরাদ্দ করতে হবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সুবিধাকে কাজে লাগাতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাণিজ্য উদারীকরণের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় ভারত, ইরান, চীন, আফগানিস্তান এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্য চুক্তি করতে হবে। এ ছাড়া রপ্তানিনির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পণ্যের বৈচিত্র্যের দিকে নজর দিতে হবে।
নিবন্ধের উপসংহারে সাহিবজাদা রিয়াজ নূর বলেছেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছুই পাকিস্তানের নেতৃত্ব শিখতে পারেন। তবে তাদের কাছে সবার আগে গ্রহণীয় হওয়া উচিত শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিষয়টি। এটাই এখন প্রতিরক্ষা ও গণতন্ত্র উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ পাকিস্তান অর্থনীতি বাণিজ্য শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা কম্বোডিয়া নাইজেরিয়া
মন্তব্য করুন
স্কটল্যান্ড গুরুদুয়ারা ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মানবাধিকার
লঙ্ঘনের অভিযোগে মধ্য আমেরিকার দেশ
নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের ১০০ কর্মকর্তার ওপর
ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার ওয়াশিংটনে এক ব্রিফিংয়ে এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
আন্তর্জাতিক
ও নিকারাগুয়ার স্থানীয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বহুদিন ধরে ওর্তেগা প্রশাসনের
বিরুদ্ধে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সংবাদমাধ্যম,
ব্যবসায়ী নেতা এবং ক্যাথলিক
চার্চের যাজকদের ওপর দমন-পীড়ন
চালানোর অভিযোগ জানিয়ে আসছে। সেসব অভিযোগ আমলে
নিয়েই এই পদক্ষেপ নেওয়া
হয়েছে বলে শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে
জানিয়েছেন ব্লিনকেন।
এর আগে নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট
ড্যানিয়েল ওর্তেগা, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও
ওর্তেগার স্ত্রী রোসারিও মুরিলো, তাদের তিন সন্তান এবং
সরকারি প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উচ্চ
পর্যায়ের বেশ কয়েক জন
কর্মকর্তার ওপর ভিসা বিধিনিষেধ
জারি করেছিল মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবার যে ১০০
কর্মকর্তাকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়
আনা হলো— তাদের অধিকাংশই
ওর্তেগা প্রশাসনের মাঝারি পর্যায়ের কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন
ভারী বর্ষণে
বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, সিটি
পার্কসহ বিশাল এলাকা। শহরটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বাসিন্দাদের
দ্রুত উচু এলাকায় আশ্রয়
নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিবিসির
খবরে বলা হয়েছে, টানা
বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় শহরের অনেক সাবওয়ে, রাস্তাঘাট
ও প্রধান সড়ক পানিতে ডুবে
গেছে। এ কারণে লাগার্দিয়া
বিমানবন্দরের অন্তত একটি টার্মিনাল শুক্রবার
(২৯ সেপ্টেম্বর) বন্ধ রাখা হয়েছে।
নিউইয়র্কের
গভর্নর ক্যাথি হচুল বলেছেন, শহরের
অবস্থা বিপজ্জনক এবং জীবনের জন্য
হুমকিস্বরূপ। অঞ্চলজুড়ে প্রবল বৃষ্টির কারণে নিউইয়র্ক সিটি, লং আইল্যান্ড এবং
হাডসন ভ্যালির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বন্যার
কারণে বিভিন্ন সাবওয়ে লাইনের পাশাপাশি মেট্রো উত্তর কমিউটার ট্রেন পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে মেট্রোপলিটন
ট্রান্সপোর্টেশন অথোরিটি। শহরের অন্তত চারটি সাবওয়ে লাইন সম্পূর্ণ বন্ধ
করে দেওয়া হয়েছে। আংশিক স্থগিত করা হয়েছে আরও
১২টি লাইন। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন
সড়ক বন্ধ করে দেওয়ার
কথা জানানো হয়েছে।
নিউইয়র্কে
মূলত সপ্তাহখানেক ধরেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
তবে গত বৃহস্পতিবার রাতভর
এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে
যে, তা সামলাতে প্রস্তুত
ছিল না শহরের ড্রেনেজ
ব্যবস্থা। এ পরিস্থিতিতে শহরে
জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক
অ্যাডামস। দিন শেষ হওয়ার
আগে আট ইঞ্চি পর্যন্ত
বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে
সতর্ক করেছেন তিনি।
মন্তব্য করুন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থ এবং অভিপ্রায় সুরক্ষা করতে চায়। ওই দেশটিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে চায়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে বেশ কিছু দেশে ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বটে তবে তা কার্যকর হয়নি। এই ভিসা নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে দেশগুলো স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। কাজেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
স্কটল্যান্ডে শিখ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় গুরুদুয়ারায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীকে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন কানাডায় শিখ ধর্মাবলম্বী ও খালিস্তান আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ভারত ও কানাডার মধ্যকার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
আবারও শাটডাউনের কবলে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কট্টরপন্থী রিপাবলিকানরা কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়ন করার যে বিল আনা হয়েছিল তা বাতিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে এ বিল উত্থাপন করা হয়। ফলে এটা এখন নিশ্চিত যে আগামীকাল রোববার বা ১ অক্টোবর থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাবে, যাকে বলে শাটডাউন।