ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

তাইওয়ান নিয়ে চীনের নিরাপত্তা–উদ্বেগ

প্রকাশ: ০৮:৩৫ এএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২২


Thumbnail তাইওয়ান নিয়ে চীনের নিরাপত্তা–উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঘিরে একের পর এক কড়া বক্তব্য দিয়েছে চীন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত নীতি বিষয়ে বেইজিংয়ের গভীর নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক দুর্দশা জনগণের থেকে আড়াল করতেও এই পথ বেছে নিয়েছে চীন।

রাজধানী তাইপেতে পেলোসির সামরিক উড়োজাহাজ অবতরণের কয়েক দিন আগে থেকেই আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করে আসছিল বেইজিং। তাইওয়ান সফর করলে পরিণাম ভোগ করার হুমকি দেওয়াসহ সামরিক শক্তি প্রদর্শনও করেছিল চীন। তাইওয়ান প্রণালিতে গত কয়েক দিনে সামরিক মহড়াও করেছে দেশটি। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস-এর সাবেক প্রধান সম্পাদক হু সিজিন বলেছিলেন, "বেইজিং জোরপূর্বক পেলোসির উড়োজাহাজকে সরিয়ে দিতে পারত বা গুলি করে ভূপাতিত করতে পারত।" 

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বেইজিংয়ের এই রুদ্রমূর্তির পেছনে ছিল তাদের নিরাপত্তা-উদ্বেগ। তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং দ্বীপটির স্বাধীনতাকে উৎসাহিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টাকে চীনের শাসকেরা হুমকি হিসেবে দেখে আসছেন। একই সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিজেদের সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনে তৎপর ছিলেন। এর পেছনে অবশ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও ছিল। কিছুদিনের মধ্যে বেইজিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তৃতীয় মেয়াদে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা সুরক্ষিত করতে চান শি। সেই সম্মেলনের আগে শক্তি দেখাতে চেয়েছিলেন শি।

গত সপ্তাহে শি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো এর সঙ্গে ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রকে তাইওয়ান প্রসঙ্গে ‘আগুন নিয়ে না খেলতে’ সতর্ক করেছিলেন। লন্ডনের এসওএএস চায়না ইনস্টিটিউটের পরিচালক স্টিভ সাং বলেন, সামনে ২০তম পার্টি কংগ্রেসে ক্ষমতা সুসংহত করার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বার্তাটি শি'র অভ্যন্তরীণ ভাবমূর্তিকে শক্তিশালী করতে কাজ করবে। শি যে জিনিসটি দেখাতে চান তা হলো, তাঁদের দুর্বলতার কোনো লক্ষণ নেই।

জাতীয়তাবাদী আবেগের ঢাক পেটানোর আরেক অর্থ হচ্ছে, চীনের মন্থর অর্থনীতি থেকে জনগণের মনোযোগ ফেরানো। এ ছাড়া বেইজিংয়ের কঠোর শূন্য কোভিড বিধিনিষেধে অধৈর্য জনগণের মেজাজ ঠিক করা। হংকংভিত্তিক চীনা রাজনৈতিক বিশ্লেষক উইলি লাম বলেন, "চীনের কমিউনিস্ট পার্টির জন্য বৈধতার দুটি স্তম্ভ রয়েছে। একটি হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আরেকটি হলো জাতীয়তাবাদ। তাইওয়ান নিয়ে বিভিন্ন শিরোনাম এবং আক্রমণাত্মক বার্তা দিয়ে চীনের অর্থনৈতিক সমস্যা থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।"

তাইওয়ানের প্রতি ওয়াশিংটনের পরিবর্তনশীল মনোভাব নিয়ে বেইজিংয়ের গভীর উদ্বেগ রয়েছে। তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড মনে করে বেইজিং। প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে এর দখল নিতে চায়। কিন্তু তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র মনে করে।

সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেন, "সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা আরও বেড়েছে। এটি চীনে স্বার্থের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধারণা থেকে বেইজিংয়ের সামরিক হুমকির বিষয়টি সামনে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় থেকেই বেইজিং ধারণা করছে, ওয়াশিংটন ক্রমে তাইওয়ানের স্বাধীনতার সমর্থনকারী হয়ে উঠেছে। চীনা কূটনীতিকেরা ওয়াশিংটন এবং তাইপের মধ্যে অস্ত্র চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আর ‘এক চীন নীতিকে’ সম্মান দেখাচ্ছে না। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের তাইওয়ানে সফরও বেড়েছে।

হংকংভিত্তিক বিশ্লেষক লাম বলেন, গত বছর থেকেই শি খুব বিরক্ত হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের ঘন ঘন তাইওয়ান সফর এই বিরক্তির কারণ। একই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্বতন্ত্র তাইওয়ানি পরিচয়ের বোধ তৈরি হচ্ছে। এটিও তাঁর বিরক্তির কারণ।

বেইজিংয়ের আক্রমণাত্মক ভঙ্গি সত্ত্বেও খুব কম লোকই বিশ্বাস করে যে তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে বেইজিং সক্রিয় সামরিক সংঘাতে যেতে চায়। তাইওয়ানের ন্যাশনাল সান ইয়াত-সেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক তিতাস চেন বলেন, "সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে শি অনিচ্ছাকৃত যুদ্ধ উসকে দিতে চান। তিনি আরও বলেন, পেলোসির তাইওয়ান সফর বেইজিংয়ের জন্য যে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটাতে শি'র বিকল্প পরিকল্পনা হচ্ছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালানো। 


চীন   তাইওয়ান   আমেরিকা   যুদ্ধ   গণতন্ত্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিজের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ঠেকাতে জরুরি বৈঠকে নেতানিয়াহু

প্রকাশ: ০৯:২৭ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও তার নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বেশ কয়েক জন জেষ্ঠ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। 

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই সিদ্ধান্ত ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণ জরুরি বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। 

গত মঙ্গলবার রাতে এ বৈঠক হয়েছিল বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলকে নিশ্চিত করেছে রাষ্ট্রটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর। সেখানে নেতানিয়াহুর তিন মন্ত্রী এবং আইন বিষয়ে অভিজ্ঞ সরকারের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যায়ের ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ান ঠেকাতে করণীয় নির্ধারণে ওই বৈঠকে আলোচনা করা হয়। 

হেগের আন্তর্জাতিক আপরাধ আদালতের পক্ষ থেকে নিকট ভবিষ্যতে গেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে এমন একটি বার্তা পাওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এ বৈঠকের ডাক দেন। 

বুধবার জেরুজালেম সফরে গিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালিনা বেয়ারবক। তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময়ও আইসিসির সম্ভাব্য গ্রেপ্তারি পরোনার প্রসঙ্গটি নেতানিয়াহু তুলেছিলেন বলে জানা গেছে। পরোয়ানা ঠেকাতে তিনি এই দুই দেশের সরকারের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে হামাস এবং আইডিএফের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত হয়েছিল। সেই যুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো নিয়ে ২০১৯ সালে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেয় আইসিসি। পরে করোনা মহামারির কারণে তা স্থগিত হলে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ফের তদন্ত শুরু করে আইসিসি। সেই তদন্তের অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বরে ইসরায়েল সফরে এসেছিলেন আইসিসির শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খান।




ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী   আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত   বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু   ফিলিস্তিন   গাজা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা শোষণের শিকার: জাতিসংঘ

প্রকাশ: ০৬:৪৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের দুরবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।

 শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ।

সংস্থাটির জেনেভা থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরেই দেশটিতে বাংলাদেশি অভিবাসীরা অসম্মানজনক অবস্থায় বসবাস করছে। এজন্যে দেশটির সরকারের প্রতি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। একই সাথে বাংলাদেশি শ্রমিকের ওপর যেন কোন শোষণ, অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন না করা হয় সেজন্যে জরুরি পদক্ষেপ নিতে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বেশিরভাগ অভিবাসী মালয়েশিয়ায় পৌঁছে দেখেন যে তাদের প্রতিশ্রুত অনুযায়ী কর্মসংস্থান নেই। এমন অবস্থায় প্রায়শই তাদের ভিসা শেষ করতে বাধ্য করা হয়।

ফলস্বরূপ এই অভিবাসীরা গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার এবং নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছে।

মালয়েশিয়া   বাংলাদেশি শ্রমিক   জাতিসংঘ  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইরানে ইসরায়েলের হামলায় সায় ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের

প্রকাশ: ০৬:১৭ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ইরানের ওপর ইসরায়েল হামলার খবর আগেই পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই হামলাকে সমর্থন বা হামলায় কোনো ধরনের ভূমিকা পালন করেনি দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমটি বলছে, ইরানের ভূখণ্ডে ইসরায়েল হামলা করেছে, তবে ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্য পারমাণবিক স্থাপনা ছিল না। 

একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েল বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়, তারা সামনের দিনগুলোতে ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের এই প্রতিক্রিয়া সমর্থন করেনি বলেও জানান তিনি।

এদিনের হামলার পর হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। হোয়াইট হাউসের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এ মুহূর্তে দেয়ার মতো কোনো খবর নেই।’

শুক্রবার সকালে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এবিসি নিউজ জানায়, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে। তবে কোথায় আঘাত হেনেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি তারা কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া অন্য কোনো যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা-ও জানাননি।

এদিকে আজ ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এরপর ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দেশটির কয়েকটি শহরে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।

এর আগে ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা হয়। এতে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) আল-কুদস ফোর্সের দুই শীর্ষ জেনারেলসহ অন্তত ১১ জন নিহত হন। ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার না করলেও ইরান ইসরায়েলকেই এর জন্য দায়ী করে আসছে। জবাবে গত শনিবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।

ইরান   ইসরায়েল   মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   ক্ষেপনাস্ত্র হামলা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভোট দিতে গিয়ে শুনলেন, তিনি মারা গেছেন

প্রকাশ: ০৩:০৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভোট দিতে গিয়ে এক বৃদ্ধা শুনেছেন- তিনি মারা গেছেন, আর ভোট দিতে না পেরে নিরাশ তিনি। কাগজে-কলমে মৃত হওয়ায় বাস্তবে জীবিত এই ভোটারের ভোট দিতে ব্যর্থ হওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিভি৯ বাংলা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার নাম বাসন্তী দাস। তিনি শুক্রবার সকাল সকাল চলে গিয়েছিলেন ভোট দিতে। কিন্তু, ভোটকেন্দ্রে গিয়ে শুনলেন তিনি নাকি মারা গেছেন। তাই ভোট দিতে দেওয়া হবে না তাকে। কাগজে-কলমে তিনি মৃত। তাই ভোটাধিকার নেই।

পরে অশ্রুসজল চোখ নিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে ফিরে আসেন বাসন্তী দাস নামে ওই বৃদ্ধা। এদিন ভোটের সকালে এই ঘটনা ঘটেছে ধূপগুড়ি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ধূপগুড়ির বৈরাতীগুড়ি হাই স্কুলে ভোট কেন্দ্র বাসন্তী দেবীদের। এদিন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তিনি।

ভোটের ডিউটিতে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার জানান, তার কিছু করার নেই, ভোটার তালিকায় ডিলিট রয়েছে তাই ভোট দিতে পারবেন না তিনি, তাই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওই বৃদ্ধাকে।

ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার ছেলে উজ্জ্বল দাস বলছেন, 'মা একাই ভোট দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ওখান থেকে বলেছে- তোমার নাম নেই, তুমি মৃত। মা বাইরে এসে আমাদের জানায়। ফের কথা বললে জানায়- নামের জায়গায় মৃত লেখা আছে। আমরা পরে বুঝে নেব।' 

তিনি আরও বলেন, মা প্রায় দেড় ঘণ্টা ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। তারপরেও ভোট দিতে পারেনি। আমরা তো প্রতিবার তো এখানেই ভোট দিই। এবারে কী হলো জানি না।

অন্যদিকে অশ্রুসজল চোখে বাসন্তী দেবী বলেন, 'আমি তো সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সাড়ে সাতটার সময় ভোট দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ লাইনে থাকার পরেও ভোট দিতে পারিনি। সরকারের খাতায় নাম নেই বলছে। অনেকক্ষণ ওরা কোথায় কোথায় সব ফোন করল। জেলা প্রশাসকের অফিসেও ফোন করেছিলাম। তারপর বলল আপনি এখন যান। এই বছর আর হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এলাকার লোকজনও অনেক চেষ্টা করল। কিন্তু ভোট দিতে পারলাম না। খুবই খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে- আমি মরে গিয়েছি। আমি তো প্রতিবারই ভোট দিই। কিন্তু, এবার পারলাম না।' 

উল্লেখ্য, শুক্রবার থেকে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় দেশটির ২১ রাজ্যের ১০২ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিন আসন- জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র।


ভোট   ভারত   পশ্চিমবঙ্গ   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচন: প্রথম দফায় ভোটে প্রার্থী যারা

প্রকাশ: ০১:৩৩ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

চলছে ভারতে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। আজ শুক্রবার সকাল সাতটায় শুরু হয় এ ভোট গ্রহণ। শেষ হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। নির্বাচন হচ্ছে সাত দফায়। 

আজ শুরু হয়েছে প্রথম দফার ভোট। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ১০২টি আসনে ভোট হচ্ছে আজ। এর মধ্যে রয়েছে পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ৩ আসনও।

ভোট শুরু হয়েছে দেশের ২৮টি রাজ্য ও আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ১৭টি রাজ্য ও ৪টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। আজ নির্বাচন হচ্ছে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্য বিধানসভার ৬০টি ও সিকিমের ৩২টি বিধানসভা আসনে। 

পশ্চিমবঙ্গের যে তিন আসনে ভোট শুরু হয়েছে, সেগুলো হলো কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার। কোচবিহারে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক, কংগ্রেসের পিয়া রায় চৌধুরী ও বামফ্রন্টের শরিক ফরোয়ার্ড ব্লকের নীতীশ চন্দ্র রায়।

জলপাইগুড়ি আসনে লড়ছেন তৃণমূলের নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপির জয়ন্ত কুমার রায়, বাম ফ্রন্টের সিপিএম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণ।

আলিপুরদুয়ারে লড়ছেন তৃণমূলের প্রকাশ চিক বরাইক, বিজেপির মনোজ টিগ্গা, বাম ফ্রন্টের মিলি ওঁরাও।

প্রথম পর্বের ভোটের দিন আজ নির্ধারিত হবে ভারতের আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভাগ্যও। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের। নিশীথ দাঁড়িয়েছেন কোচবিহার আসনে। এ আসনেরই সংসদ সদস্য তিনি।

এবার পশ্চিমবঙ্গে ভোট দেবেন ৭ কোটি ৬৯ লাখ ভোটার। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৩০ হাজারের বেশি। নারী ৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪ হাজারের বেশি। রাজ্যে আরও রয়েছেন ট্রান্সজেন্ডার ১ হাজার ৮৩৭ ভোটারও।

আজ পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনে ভোট দিচ্ছেন ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ১০৮ ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৫ হাজার ৮১৪টি। এর মধ্যে স্পর্শকাতর কেন্দ্র ৮৩৭টি।

এবারের ভোটকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ভোটকেন্দ্রগুলো। নিয়োগ করা হয়েছে ২৬৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য। প্রতিটি কেন্দ্রেই থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আরও থাকছেন ১২ হাজার ৩১০ রাজ্য পুলিশ সদস্য। নির্বাচন কমিশন স্পর্শকাতর কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

প্রথম পর্বের ভোটের দিন আজ নির্ধারিত হবে ভারতের আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ভাগ্যও। সেই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের। নিশীথ দাঁড়িয়েছেন কোচবিহার আসনে। এ আসনেরই সংসদ সদস্য তিনি।

অন্য আট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলেন নীতিন গড়করি, কিরেন রিজিজু, ভূপেন্দ্র যাদব, সর্বানন্দ সেনেওয়াল, জিতেন্দ্র সিং, অর্জুন রাম মেঘওয়াল, সঞ্জীব বালিওয়ান এবং এল মুরুগান।


লোকসভা নির্বাচন   ভোট   লোকসভা   পশ্চিমবঙ্গ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন