পশ্চিমা বিশ্বে দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শুরু হচ্ছে আজ থেকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুইজারল্যান্ডের বৃহৎ ব্যাংক ক্রেডিট সুইসকে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অর্থাৎ টিকে থাকতে বড় কিছু করতে হবে, তা না হলে ভেঙেও পড়তে পারে তারা।
পশ্চিমা ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর গত সপ্তাহে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যাংক ক্রেডিট সুইস তারল্য বাড়াতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ঋণ নেয়। সেই রেশ কাটতে না কাটতে এবার জানা গেল, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেডিট সুইসকে ইউবিএস এজির সঙ্গে একীভূত হতে পরামর্শ দিয়েছে। খবর রয়টার্সের।
এদিকে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পাওয়ার খবরে ক্রেডিট সুইসের শেয়ারদর বাড়লেও শুক্রবার আবার কমেছে। সামগ্রিকভাবে ব্যাংকের শেয়ারদর পতন অব্যাহত আছে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেডিট সুইস ও ইউবিএসকে একীভূত হওয়ার পরামর্শ দিলেও তারা এ ব্যাপারে নিমরাজি। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে এমন ক্ষমতা নেই, যাতে তারা ব্যাংক দুটিকে একীভূত হতে বাধ্য করতে পারে। ব্যাংক দুটির পরিচালনা পর্ষদ এ সপ্তাহে পৃথক বৈঠক করবে বলেও জানা গেছে।
ক্রেডিট সুইসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা দীক্ষিত যোশী এ সপ্তাহে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যাংকের কৌশলগত অবস্থান ঠিক করবেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, এই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা দেশের অন্তত চারটি ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের সঙ্গে লেনদেনের বিষয়ে সীমাবদ্ধতা জারি করেছে, যেমন সোসিয়েত জেনারেল এসএ ও ডয়েচে ব্যাংক।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেটিক দলের বেশ কয়েকজন সাংসদ এসভিবির পতনে পেছনে বৃহৎ বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের হাত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিচার বিভাগকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিন দিনের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধের পর যে আশঙ্কা ছড়িয়েছিল, তা আরও ঘনীভূত হয় বুধবার সুইজারল্যান্ডের ব্যাংক ক্রেডিট সুইসের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার খবরে। বৃহস্পতিবার জানা গেল, আর্থিক সংকটে আছে আমেরিকারই ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কড়া নজরদারিতে ছিল তারা। তবে সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক এ ব্যাংকের পতন ঠেকাতে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ব্যাংক। জে পি মরগ্যান ও সিটি গ্রুপের নেতৃত্বে ১১টি ব্যাংক ফার্স্ট রিপাবলিককে ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলার আমানত দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, উচ্চ নীতি সুদের জমানায় ব্যাংকিং শিল্পের একাংশ আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে, তা স্পষ্ট। ফলে অনেক বিশ্লেষক যা–ই বলুন না কেন, এই পরিস্থিতি ২০০৮ সালের আর্থিক মন্দার স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে, যখন বিশ্বজুড়ে একের পর এক ব্যাংক দেউলিয়া হয়েছিল।
শেয়ারের দরপতন চলছে
এদিকে বৃহস্পতিবার ক্রেডিট সুইসের শেয়ারদর বাড়লেও শুক্রবার আবারও তাদের শেয়ারদর পড়েছে ৮ শতাংশ। ১৩ থেকে ১৫ মার্চ ব্যাংকটি থেকে ৪৫ কোটি ডলার আমানত তুলে নিয়েছেন আমানতকারীরা।
একই সঙ্গে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক ব্যাংকগুলোর রক্তক্ষরণ অব্যাহত ছিল। সেদিন তাদের এসঅ্যান্ডপি ব্যাংক ইনডেক্সের পতন হয়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। গত দুই সপ্তাহে এই সূচকের পতন হয়েছে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনাভাইরাসজনিত লকডাউনের পর তাদের শেয়ারদর আর কখনো এতটা পড়েনি।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে কলমানি পাওয়া ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংকের। শুক্রবার তাদের শেয়ারদর কমেছে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ। এতে গত ১০ অধিবেশনে তাদের শেয়ারদর কমেছে ৮০ শতাংশের বেশি।
কেন বন্ধ হলো দুটি ব্যাংক
গত বছরের শুরুতেই ফেডের নীতি সুদহার ছিল শূন্যের কাছাকাছি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলায় গত এক বছরে ফেড আটবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছে। এতে বাণিজ্যিক ঋণ ও বন্ডের সুদহার বেড়েছে। ঋণ ও বন্ডের সুদহার বৃদ্ধির সম্মিলিত ফলাফল হচ্ছে, বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি এড়িয়ে নিরাপদ জায়গায় বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়া। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাণিজ্যিক প্রকল্পে বিনিয়োগ না করে বরং বন্ডে বিনিয়োগ করাই ভালো, আরামে সুদ খাওয়া যাবে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো। স্টার্টআপগুলো সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে রাখা আমানত ভাঙতে শুরু করেছে। ফলে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের আমানতে টান পড়েছে। এ বাস্তবতায় এসভিবি গত বুধবার ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বন্ড বিক্রি করে, যার সিংহভাগই ছিল ট্রেজারি বন্ড। এর সুদহার ছিল ১ দশমিক ৯, অথচ ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার প্রায় ৩ দশমিক ৯। এ কারণে বন্ড বিক্রি মুখ থুবড়ে পড়ে। এতে তাদের ক্ষতি হয় ১৮০ কোটি ডলার।
এরপর সেই ক্ষতি পোষাতে ৯ মার্চ এসভিবি ২২৫ কোটি ডলার সমমূল্যের ইকুইটি বিক্রির ঘোষণা দেয়। বলা যায়, এটা ছিল কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার মতো। তখন হুড়মুড়িয়ে আমানত তুলে নিতে শুরু করেন আমানতকারীরা। পতন ঘটে ৪০ বছরের পুরোনো এই ব্যাংকের। তার জেরে তিন দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সিগনেচার ব্যাংক।
মন্তব্য করুন
৪৪ আরোহী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দুর্ঘটনার
কবলে পড়েছে একটি স্কুল বাস। এ দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গুরুতর
আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। বাসের সামনের টায়ারে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর বাসটি রাস্তা থেকে
ছিটকে খাদে পড়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য
জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাড়া করা বাসটি শিক্ষার্থীদের
নিয়ে লং আইল্যান্ড থেকে একটি ব্যান্ড ক্যাম্পে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে চলন্ত অবস্থায় সামনের
টায়ারে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে যায় এবং ওয়াওয়ায়ান্ডা শহরের
কাছে একটি খাদে পড়ে যায়। এই ঘটনার তদন্ত চলছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, বাসে ৪৪ জন আরোহী ছিলেন। তাদের
উদ্ধার করার পর চিকিৎসার জন্য ছয়টি আঞ্চলিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দুর্ঘটনায়
নিহত দুই ব্যক্তি হচ্ছেন- জিনা পেলেটিয়ের (৪৩) এবং বিট্রিস ফেরারি (৭৭)।
স্কুলের ওয়েবসাইট অনুসারে, নিহত জিনা পেলেটিয়ের
কাজ করতেন স্কুলের মিউজিক প্রোগ্রামে। নিউইয়র্ক শহর থেকে উত্তর দিকে প্রায় দুই ঘণ্টার
দূরত্বে স্থানীয় সময় প্রায় দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরে দুর্ঘটনাস্থলে
উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য পুলিশ হাইওয়ে বন্ধ করে দেয়।
বিবিসি বলছে, ফার্মিংডেল হাই স্কুল থেকে ৩০০ জন
শিক্ষার্থীকে পেনসিলভেনিয়ার গ্রিলিতে একটি সঙ্গীত শিবিরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছয়টি বাস
ভাড়া করা হয়েছিল। দুর্ঘটনাকবলিত এই বাসটি ছিল সেগুলোরই একটি।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার পর বাসটির পাশের
জানালা ভাঙ্গা এবং ভেতরে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করতে সেখানে একটি মই লাগানো রয়েছে।
নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বহন করা ওই বাসটি কয়েক মিনিটের মধ্যে আক্ষরিক অর্থে ৫০-ফুট গভীর (১৫ মিটার) গিরিখাতে পড়ে যায়। এটি বিস্ময়কর ঘটনা।’
তিনি বলেছেন, যদিও প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে সম্ভবত বাসের ত্রুটিপূর্ণ সামনের টায়ারের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও এই বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। বাসে থাকা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বয়স ছিল ১৪ বা ১৫ বছর।
এদিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের সবাইকে উদ্ধার করতে ৪৫ মিনিট সময় লেগেছে বলে জানিয়েছে গভর্নর বলেন।
যুক্তরাষ্ট্র সড়ক দুর্ঘটনা নিহত আহত বিশ্ব সংবাদ
মন্তব্য করুন
পরিবারের সদস্যদের
বেঁধে তাদের সামনেই তিন নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের
পানিপথে। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী,
সংঘবদ্ধ এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে। অভিযুক্তরা ছুরি ও অন্যান্য ধারালো
অস্ত্রে সজ্জিত ছিল। তারা প্রথমে পরিবারটির সদস্যদের রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর তিন
নারীকে ধর্ষণ করে বাড়িতে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়।
বুধবার সেখান থেকে এক কিলোমিটার দূরে আরও একটি ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় এক অসুস্থ নারী। এসময় আহত হয় তার স্বামী। পুলিশের ধারণা দুইটি ঘটনার সঙ্গেই একই ব্যক্তিরা জড়িত। দুই ক্ষেত্রেই শারীরিক নির্যাতন ও মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে পানিপথের
মাতলাউদা থানার স্টেশন হাউজ অফিসার বিজয় বলেন, দুটি ঘটনাই একই গ্রামে ঘটেছে। এ বিষয়ে
তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করার খবর পাওয়া যায়নি।
সূত্র: এনডিটিভি
মন্তব্য করুন
ভারত এবং কানাডার
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বাণিজ্য সবক্ষেত্রেই ভারতের সঙ্গে কানাডার
গভীর সম্পর্ক। প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় বসবাস করেন কানাডায়। সম্প্রতি খালিস্তান আন্দোলনকে
কেন্দ্র করে শিখ নেতা নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে করে মন্তব্য
করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এর পর থেকেই দুই
দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। চরম অবনতি হয়েছে তাদের কুটনৈতিক
সম্পর্কের।
কানাডার মোট জনসংখ্যা
৩ কোটি ৭০ লাখ। তার মধ্যে অন্তত ১৪ লাখ ভারতীয়। উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরির সূত্রে ভারত
থেকে তারা কানাডায় গেছেন। কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৭
শতাংশ।
আর এই কানাডায় প্রবাসী
ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই শিখ ধর্মাবলম্বী। সেখানে ৭ লাখ ৭০ হাজার শিখ রয়েছেন। যা দেশটির
মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ। ভারতে শিখদের অনুপাত কানাডার চেয়ে কম। ভারতের মোট জনসংখ্যার
বিচারে শিখদের সংখ্যা মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
কানাডায় ট্রুডোর
সরকার গঠনে শিখদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কানাডার হাউজ অব কমন্সে ১৮ জন শিখ সংসদ সদস্য
রয়েছেন। শিখরা কানাডার রাজনীতিতেও যথেষ্ট সক্রিয়। তাই ট্রুডো বা কানাডার কোনো রাজনৈতিক
দলই শিখদের চটাতে চান না।
বাণিজ্যের বিচারেও
ভারত-কানাডা সম্পর্ক যথেষ্ট মজবুত। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির মাধ্যমে এই দুই দেশ একে
অপরের ওপর নির্ভরশীল। ২০২২ সালে কানাডা-ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের পরিমাণ
ছিল সবচেয়ে বেশি।
কানাডা থেকে মূলত
সার, কয়লা, কোক, ব্রিকেটের মতো উপাদান আমদানি করে ভারত। ভারত থেকে কানাডায় যায় ভোগ্যপণ্য,
যানবাহন, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও পোশাক।
কানাডা সরকারের পরিসংখ্যান
বলছে, ২০২২ সালে ভারত ও কানাডার মধ্যে প্রায় ৯০০ কোটি ডলার (আমেরিকান) মূল্যের বাণিজ্যিক
আদান-প্রদান হয়, যা আগের বছরের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি।
কানাডা থেকে ভারতে
বিনিয়োগও কম হয় না। ভারতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের তালিকায় ১৭ নম্বরে আছে জাস্টিন ট্রুডোর
দেশ। ২০০০ সাল থেকে ভারতের বাজারে ৩৬০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ কানাডা থেকে আসে।
শিক্ষাখাতেও কানাডার
সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ নিবিড়। ভারতের অনেক ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডায় যান।
মেধাবী ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের কদর আছে কানাডায়।
কানাডায় পড়তে যাওয়া
বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ২০১৮ সাল থেকে ভারত কানাডায়
বিদেশি শিক্ষার্থী সরবরাহের সবচেয়ে বড় উৎসে পরিণত হয়েছে।
কানাডিয়ান ব্যুরো
অব ইন্টারন্যাশানাল এডুকেশনের, ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কানাডায় ভারতীয় ছাত্রছাত্রীর
সংখ্যা ৩ লাখ ২০ হাজার, যা কানাডার মোট বিদেশি শিক্ষাথীর ৪০ শতাংশ।
তবে তাৎপর্যপূর্ণ হলো
গত ২০ বছরের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, ভারত থেকে প্রচুর সংখ্যাক শিখ ধর্মাবলম্বী
মানুষ কানাডায় গেছেন ও সেখানেই থিতু হয়েছেন। মূলত উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানই তাদের
উদ্দেশ্য।
কানাডার সঙ্গে ভারত
সরকারের সম্পর্ক দুই দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থেই ছিল মজবুত। কিন্তু হঠাৎ গত কয়েক দিনে
সেই সম্পর্কে কালোমেঘের ঘনঘটা দেখা দিয়েছে। কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অনেক অবনতি
হয়েছে।
কানাডার মাটিতে খালিস্তানপন্থি
শিখ আন্দোলনকারী হরদীপ সিংহ নিজ্জারকে হত্যা করা হয় গত জুন মাসে। তিনি ছিলেন খালিস্তানপন্থি
সংগঠন ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কেটিএফের প্রধান।
দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী ৪৬ বছরের নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরে গুলি করে হত্যা করেন। কানাডা সরকারের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘হাত’ রয়েছে। পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে তেমনই দাবি করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী ট্রু়ডো।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে
ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ট্রুডো সরকার। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, নিজ্জর
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টদের যোগ থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে তার কাছে।
এ বিষয়ে জি-২০ সম্মেলনে তার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা হয়েছে বলেও
জানান ট্রুডো।
ভারতের পক্ষ থেকে
কানাডার অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কূটনীতিককে বহিষ্কারের বিষয়েও কড়া সমালোচনা করেছে নয়াদিল্লি।
কানাডার ঢিলের বদলে
পাটকেল ছুড়তেও দেরি করেনি ভারত। ভারতে নিযুক্ত কানাডার এক সিনিয়র কূটনীতিককে বহিষ্কার
করে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত কয়েক বছর ধরেই
কানাডা ও ভারতের সম্পর্কের অবনতির ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। ২০২০ সালে ভারতে কৃষক আন্দোলন
চলাকালীন সরকারবিরোধী সেই আন্দোলনকে সমর্থন করে বার্তা দিয়েছিলেন ট্রুডো। কৃষি আইনের
বিরুদ্ধে চলা আন্দোলন নিয়ে কানাডায় ভারতীয়দের কাছে উদ্বেগও প্রকাশ করেছিলেন তিনি, যা
দিল্লি ভালো চোখে দেখেনি।
কানাডা খালিস্তানপন্থিদের
সমর্থন করে তাদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ভারতের। এনআইএ-র পক্ষ থেকে বুধবার বিচ্ছিন্নতাবাদী
ও দুষ্কৃতী নেটওয়ার্কে জড়িত ৪৩ জনের তালিকা কানাডা সরকারকে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে ভারতে
‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা অনেকেই
কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। কানাডায় খালিস্তানপন্থি বিক্ষোভকারীদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ
করে গত মার্চ মাসে ভারত সরকার কানাডার হাইকমিশনারকে তলবও করেছিল।
মূলত, খালিস্তান সমস্যাই ভারত-কানাডা সম্পর্কের অবনতির আসল কারণ। বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
ভারত কানাডা সম্পর্ক ব্যবসা ছাত্রছাত্রী খালিস্তান নিজ্জার হত্যাকাণ্ড
মন্তব্য করুন
অঘোষিত এক সফরে কানাডায়
গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই সফরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন
ট্রুডোর সাথে দেখা করার পাশাপাশি কানাডিয়ান পার্লামেন্টে ভাষণও দেবেন ইউক্রেনীয় এই
প্রেসিডেন্ট।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর)
এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়,
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের পক্ষে সমর্থন জোগাড়ের জন্য অঘোষিত
এক সফরে কানাডায় পৌঁছেছেন। রাজধানী অটোয়াতে বিমানবন্দরের রানওয়েতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির
সাথে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে দেখা করার ফুটেজ প্রকাশ করেছে কানাডিয়ান টিভি।
বিবিসি বলছে, জাতিসংঘ
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান শেষে জেলেনস্কি ওয়াশিংটন থেকে অটোয়াতে পৌঁছান। এর
আগে যুক্তরাষ্ট্রে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ অন্যান্য রাজনীতিবিদদের সাথে
বৈঠক করেন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে,
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করা ছাড়াও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটনে
ছিলেন আরও একটি কারণে। আর সেটি হচ্ছে রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার দেশকে
সাহায্য করার জন্য আরও তহবিল নিশ্চিত করা।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে
তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত
রাখার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
কিন্তু, ইউক্রেনের
যুদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য সমর্থনও কিছু দেশে বিতর্কিত হয়ে উঠছে। অনেক দেশ সহায়তা দেওয়া
ধীরে ধীরে কমিয়ে দিচ্ছে। এমনকি ইউক্রেনের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট
বাইডেনের অনুরোধ সত্ত্বেও যুদ্ধে অর্থায়নের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের আচরণে
সংশয় বাড়ছে।
গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে ভাষণ দেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট
জো বাইডেন বলেন, ‘রাশিয়া বিশ্বাস করে, বিশ্ব ক্লান্ত হয়ে উঠবে এবং কোনও ধরনের ফলাফল
ছাড়াই ইউক্রেনে নৃশংসতা চালানোর সুযোগ দেবে। যদি আমরা ইউক্রেনকে ধ্বংস করতে দেই, তাহলে
কি কোনও দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে?’
মার্কিন কংগ্রেস
এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের জন্য ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের সহায়তা অনুমোদন
করেছে জানা গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে আমেরিকানদের
মধ্যে ইউক্রেনে আরও অর্থ ব্যয়ের পক্ষে সমর্থন বেশ হ্রাস পেয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
এদিকে কিয়েভের কট্টর
মিত্র বলে পরিচিত পোল্যান্ড গত বুধবার ঘোষণা করেছে, তারা আর ইউক্রেনে নতুন করে কোনও
অস্ত্র পাঠাবে না এবং এর পরিবর্তে আরও আধুনিক অস্ত্র দিয়ে নিজেদের আত্মরক্ষার দিকে
মনোনিবেশ করবে তারা।
ইউক্রেন রাশিয়া ইউক্রেন সংকট ভলোদিমির জেলেনস্কি কানাডা বিশ্ব সংবাদ
মন্তব্য করুন
বর্তমানে চীন সফরে আছেন সিরিয়ার
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে তার এই চীন সফর শুরু
হয়। চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর হ্যাংজু দিয়ে এ সফর শুরু করেন তিনি। শনিবার থেকে সেখানে
শুরু হচ্ছে এশিয়ান গেমস। এশিয়ান গেমসের অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি। এছাড়া কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসতেও
বাশার আল-আসাদের এই চীনা সফর। সফরে তার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলও রয়েছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণেই
দেশটি সফরে গেছেন আসাদ, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এই তথ্য জানা গেছে। এ
সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে বসবেন আসাদ।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সিরিয়ায় সংঘাত শুরু
হওয়ার পর এটি আসাদের প্রথম চীন সফর। এ সংঘাতে ৫ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, লাখো
বেসামরিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং সিরিয়ার অবকাঠামো ও শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লন্ডনের
চ্যাথাম হাউসের একজন পরামর্শক ফেলো হেইদ হেইদ লেখেছেন— জিনপিংয়ের সাথে আসাদের বৈঠকে
সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়তা সুরক্ষিত করার চেষ্টা করার বিষয়ে মনোনিবেশ করা হবে বলে
আশা করা হচ্ছে।
চীন মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রভাব বিস্তার করার
পরই এ সফরে গেলেন আসাদ। মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান এবং সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক
স্থাপনে রাজি হয়।
বেইজিং দীর্ঘদিন ধরে আসাদের সরকারকে সমর্থন জানিয়ে আসছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কূটনৈতিক সমর্থনও দিয়ে থাকে চীন। চীন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। আসাদের সরকারের বিপক্ষে যাওয়া প্রস্তাবগুলো আটকাতে এ পর্যন্ত আটবার তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেছে চীন।
মন্তব্য করুন
৪৪ আরোহী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে একটি স্কুল বাস। এ দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। বাসের সামনের টায়ারে ত্রুটি দেখা দেওয়ার পর বাসটি রাস্তা থেকে ছিটকে খাদে পড়ে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভারত এবং কানাডার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বাণিজ্য সবক্ষেত্রেই ভারতের সঙ্গে কানাডার গভীর সম্পর্ক। প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় বসবাস করেন কানাডায়। সম্প্রতি খালিস্তান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শিখ নেতা নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারতের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে করে মন্তব্য করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। চরম অবনতি হয়েছে তাদের কুটনৈতিক সম্পর্কের।
বর্তমানে চীন সফরে আছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে তার এই চীন সফর শুরু হয়। চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর হ্যাংজু দিয়ে এ সফর শুরু করেন তিনি। শনিবার থেকে সেখানে শুরু হচ্ছে এশিয়ান গেমস। এশিয়ান গেমসের অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি। এছাড়া কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসতেও বাশার আল-আসাদের এই চীনা সফর। সফরে তার সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলও রয়েছে।