ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ইস্যুতে বিভক্ত ইইউ

প্রকাশ: ০৩:৪৬ পিএম, ২৩ মার্চ, ২০২৩


Thumbnail

চীনকে নিয়ে চিন্তা বেড়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ)। বিশেষ করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের রাশিয়ার রাজধানী মস্কো সফরের পর। ইউক্রেনে যুদ্ধ করার জন্য চীন রাশিয়াকে অস্ত্র দিতে পারে, এমনটিও মনে করছে ইইউ।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যান্ডসবার্গিস বলেছেন, ‘শি জিনপিং যদি একজন ঘোষিত যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়ান, তাহলে আমাদেরও চীনকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।’

গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট। এরপর মস্কো সফরে গিয়ে পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন শি জিনপিং।

লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মনে করছেন,  চীনের সঙ্গে দ্রুত সম্পর্কচ্ছেদ করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি এটা করা হয়, ততই ভালো।

তবে ইইউয়ের সব সদস্য দেশ এরকম চরম পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে নয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইইউয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, গত কয়েকবছরে শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিন অন্তত ৪০ বার বৈঠক করেছেন। ফলে এখন শি জিনপিং রাশিয়া গিয়ে পুতিনের পাশে থাকার বার্তা দেবেন সেটাই স্বাভাবিক।

ইইউয়ের দেশগুলোর সাধারণ মনোভাব হলো, চীন এখন রাশিয়ার দুর্বলতার সুযোগ নিতে চাইছে। চীন-সহ বিশ্বের কয়েকটি দেশ এখনও ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে আগ্রাসন বলেনি। জাতিসংঘে চীন রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবে ভোট দেয়নি। তারা রাশিয়ার প্রচারমূলক কথারই পুনরাবৃত্তি করেছে।

প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্কে কোনও সীমারেখা থাকবে না। এমনিতেই ইইউয়ের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আগের তুলনায় খারাপ। রাশিয়ার কারণে তা আরও খারাপ হয়েছে।

বেশ কয়েকটি ইইউ দেশ মনে করছে, চীন এবার রাশিয়াকে অস্ত্র বিক্রি করতে পারে। ইইউয়ের সেক্রেটারি জেনারেল স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, চীন যে রাশিয়াকে অস্ত্র বিক্রি করতে চায়, এমন কোনও প্রমাণ তার কাছে নেই।

চীন বিশেষজ্ঞ স্টেক বলেছেন, ‘চীন এখন রাশিয়ার সঙ্গে আর্থিক কার্যকলাপ পুরোপুরি বজায় রেখেছে। রাশিয়া যে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে, তাকেও সমর্থন করেছে চীন। তারা রাশিয়াকে যে টায়ার, পোশাক ও অন্য জিনিস দিচ্ছে, তা রাশিয়ার সেনা ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু এখনও তারা কোনও অস্ত্র রাশিয়াকে দেয়নি।’

স্টেকের মতে, ‘তাইওয়ান নিয়ে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। উইঘুর নিয়ে ইইউয়ের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। ফলে চীনও চাপে আছে। ইইউ চীনের ওপর কিছু বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে। তবে ইইউ আরও ব্যবস্থা নিলে তাদের অর্থনীতিতে চাপ বাড়বে।’

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ডাকে ইইউ এখনও সাড়া দেয়নি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন চাইছেন, চীনকে কোণঠাসা করতে ইইউ এবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মেলাক। কিন্তু ইইউ এখনও সেটি থেকে বিরত রয়েছে। ইইউয়ের দেশগুলোর মধ্য়ে চীনের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য করে জার্মানি। তারা ও ইইউয়ের অন্য বেশ কয়েকটি দেশ চীনের লাভজনক বাজার থেকে চলে আসতে রাজি নয়।

তবে দুই পক্ষের মধ্যে সন্দেহ আছে, চীন ও ইইউ একে অন্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।  ইইউ-চীন কম্প্রিহেনসিভ ইনভেস্টমেন্ট এগ্রিমেন্টও ঠান্ডা ঘরে চলে গেছে। স্টেক বলেছেন, ‘চীন এখন চাইছে, তারা ইইউয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। ইইউও একইভাবে নিষেধাজ্ঞা তুলবে। তারপর চুক্তিতে সই হবে।’

ইইউ সূত্র জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো চীন ইস্যুতে বিভক্ত। কিছু দেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায়, আবার কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

উ. কোরিয়ার গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘোষণা, সতর্ক অবস্থানে জাপান

প্রকাশ: ০৮:১৩ এএম, ৩০ মে, ২০২৩


Thumbnail

আবারও উত্তর কোরিয়ার গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘোষণায় সতর্কতা জারি করেছে প্রতিবেশী দেশ জাপান। আগামীকাল বুধবার (৩১ মে) থেকে আগামী ১১ জুনের মধ্যে পিয়ংইয়ংয়ের এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা রয়েছে। এ নিয়ে টোকিও তার প্রতিক্রিয়ায় সোমবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলেছে। খবর রয়টার্সের।

টোকিও সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এ অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলবে এমন কর্মকাণ্ড শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে। জাপানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের ভূখন্ডে যদি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে, তাহলে এর কড়া জবাব দেওয়া হবে। নিয়ম লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া যদি এমন কর্মকাণ্ড চালায়, তাহলে তারাও হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। পালটা ব্যবস্থা তারাও গ্রহণ করবে।

দেশটির মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার যে কোনো উৎক্ষেপণ, এমনকি যদি স্যাটেলাইটও উৎক্ষেপণ করা হয়, তাহলে জাপানি নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে। সরকারের ধারণা যে, স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হবে তা তাদের দেশের ওপর দিয়ে যাবে। সে ধরনের কিছু ঘটলে তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাবে।  

উত্তর কোরিয়া জাপানের উপকূলরক্ষীকে পরিকল্পিত উৎক্ষেপণের বিষয়ে জানানোর পর নিয়মিত ব্রিফিংয়ে হিরোকাজু মাতসুনো বলেন, ‘স্যাটেলাইটটির আমাদের দেশের ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে’।

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্যাটেলাইটটি একটি নজরদারি প্রযুক্তি কর্মসূচির অংশ। এর মধ্যে রয়েছে ড্রোন; যা যুদ্ধক্ষেত্রে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক সময়ে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিকসহ একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। এ বিষয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, উত্তর কোরিয়ার যে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকলাপের নিন্দা প্রস্তাবের গুরুতর লঙ্ঘন হবে।  



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কাঁটাতার ডিঙিয়ে আসা সব হিন্দু-মুসলমানকে চলে যেতে হবে: শুভেন্দু

প্রকাশ: ০৮:১৪ পিএম, ২৯ মে, ২০২৩


Thumbnail

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, হিন্দু হোক বা মুসলিম! কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে যারা ঢুকেছো, তাদের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে যেতে হবে। গত শনিবার মালদহের মানিকচকের একটি জনসভা থেকে এই মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী। 

রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যেমন নিশানা করেন, তেমনি এত দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও যারা এই দলটিকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে তাদের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন শুভেন্দু। 

সভায় উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থায়নে বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের বিষয়টি উত্থাপন করে শুভেন্দু বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমস্ত উন্নয়ন করেছেন। আমি সংখ্যালঘুদের বলব আট জন সংসারে আছেন, গম আর চাল মিলিয়ে আপনারা ৪০ কিলোগ্রাম করে রেসনের মালামাল নিয়ে আসছেন। এটা আপনার দিদি বা বুয়ার রুপি নয়। এটা ভারত সরকারের অর্থ। ২০২১ সালের মে মাস থেকে ৮১ কোটি মানুষকে 'অন্ন সুরক্ষা যোজনা'তে বছরে দুই লক্ষ কোটি রুপি খরচ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। তখন তো আপনাদের ভেদাভেদের কথা মনে পড়ে না। কেন এই চোর পার্টিকে (তৃণমূল) ভোট দেবেন? কেন আমাদের (বিজেপি) সাথে আসবেন না?। আমরা রাষ্ট্রবাদীদের সাথে আছি।' 

এ সময় শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি '... যে কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে ঢুকেছো, তাকে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে যেতে হবে। সে হিন্দু হোক বা মুসলমান। কাঁটা তারের বেড়া ডিঙিয়ে এলে তার সাথে কোন ব্যাপার নেই। যে ভারতে জন্মেছ, যে রাষ্ট্রবাদকে বিশ্বাস করো,  জনগণমন-অধিনায়ক, বন্দেমাতারম বলো তার সাথে বিজেপির বিরোধ ছিল না, আজকেও নেই, কালকেও থাকবে না।'

তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর অভিযোগ, 'এনআরসির ভয় দেখিয়ে তারা ভোট নিয়েছে, আর সংখ্যালঘুরাও দলবেঁধে ভোট দিয়েছে।' 

তার অভিমত 'ভারতে যারা জন্মেছেন, ভারতে যারা ঘুমোতে চান, তাদের সঙ্গে বিজেপির কোন বিরোধ নেই। নরেন্দ্র মোদির একটা স্কিম শুধুমাত্র হিন্দু, আদিবাসী, জনজাতি বা তফসিলিদের জন্য নয়... সকলের জন্য।' 

বছর ঘুরলেই ২০২৪ সালে ফের লোকসভার ভোট। তার আগে শুভেন্দুর এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে সোরগোল পড়ে গিয়েছে। 

হিন্দু-মুসলমান   পশ্চিমবঙ্গ   শুভেন্দু অধিকারী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কিয়েভে ১৫ বারের মতো বিমান হামলা চালাল রাশিয়া

প্রকাশ: ১২:১৪ পিএম, ২৯ মে, ২০২৩


Thumbnail

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের সামরিক প্রশাসন বলছে, ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এ হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী ৪০টির বেশি হামলা প্রতিহতের দাবি করেছে। 

আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মে মাসে  এ নিয়ে রাশিয়া কিয়েভের ওপর ১৫ দফায় বিমান হামলা চালাল।

 শনিবার রাতেও কিয়েভে ড্রোন হামলা হয়েছিল। ওই হামলায় কয়েকজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। তবে স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, গতকালের হামলায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

হামলার পর কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, রাজধানী কিয়েভের জন্য এটি ছিল আরেকটি কঠিন রাত।

কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সেরহি পপকো এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলেন, ধারাবাহিকভাবে এসব হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে শত্রুপক্ষ বেসামরিক জনগণকে প্রচণ্ড রকমের মনস্তাত্ত্বিক চাপে রাখতে চাইছে।

হামলা নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো। 



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও লড়ছে কিউবা

প্রকাশ: ১১:১৯ এএম, ২৯ মে, ২০২৩


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবরোধের ৬০ বছর গতকাল পূর্ণ করেছে কমিউনিস্ট–শাসিত কিউবা। এমন প্রেক্ষাপটে দেশটি নিষেধাজ্ঞাবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। ছয় দশক ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা লাতিন আমেরিকার দেশ কিউবার অর্থনৈতিক অবস্থাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আর এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না।

১৯৬২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি কিউবার সঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। ঘোষণার চার দিন পর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। কেনেডির নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছিল, এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো কমিউনিস্ট শক্তির সঙ্গে দ্বীপরাষ্ট্রটির সম্পর্কের ফলে সৃষ্ট হুমকি হ্রাস করা। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও হাভানা তার অবস্থান বদল করেনি, ফলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার হয়নি।

কিউবার কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশটির অর্থনীতির যে ক্ষতি এখন পর্যন্ত হয়েছে, তা প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলারের সমান। ৩০ বছরের মধ্যে কিউবা এখন সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। দেশটির মুদ্রাস্ফীতি ৭০ শতাংশ। কিউবার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন। এই খাতের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে করোনা মহামারি। কিউবা খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকটে ভুগছে। দেশটিতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের জন্য মানুষের দীর্ঘ সারি এখন সাধারণ দৃশ্য হয়ে উঠেছে।

মধ্য আমেরিকার এই দেশ থেকে আমেরিকার দূরত্ব একটি খালের বলা যায়। বর্তমান বাস্তবতায় উন্নত-উন্নয়নশীল সব দেশেই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। সমাজতান্ত্রিক ও ফিদেলের কিউবা তা থেকে মুক্ত এমনটা ভাবার কোনো করার কারণ নেই। ছয় দশক ধরে মার্কিন ও তার মিত্রদের অবরোধের মধ্যে থাকা কিউবার সংকট আরও বেশি থাকার কথা। কিন্তু সে সংকটের মধ্যেও কিউবা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, মানবিক ও সামাজিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি ঘটিয়েছে। বিশ্বের দুইশ দেশের মধ্যে মানবিক উন্নয়নে তাদের অবস্থান ৭০তম।  

কিউবার সীমাবদ্ধতা দীর্ঘ একদলীয় শাসন, বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা। অতঃপর দীর্ঘ অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক অবরোধের কারণে এক ধরনের সংকটের মধ্যে দিয়ে তো তারা যাচ্ছেই। অনেকেই কিউবায় নাগরিক ও শ্রমিক বিক্ষোভকে পুরোপুরি বা শতভাগ মার্কিন ষড়যন্ত্র ও মদদে হচ্ছে বলে মনে করছেন। যেমন- জো বাইডেন বলছেন, কিউবার জনগণ একনায়কতন্ত্রের হাত থেকে মুক্তি চায়। সেদেশের জনগণের পাশে যুক্তরাষ্ট্র আছে। কাজেই তাদের সে অভিযোগের অনেকাংশে সত্যতা আছে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সেখানকার সাধারণ নাগরিকদের সরকারের প্রতি কোনো ক্ষোভ-বিক্ষোভ, দাবি-দাওয়া নেই, বিষয়টা এমন নয়। সেটা জানার সহজ উপায়ও নেই। কারণ সেখানে প্রতিপক্ষের বাদ-প্রতিবাদের অধিকার-প্রচার সেভাবে স্বীকৃত নয়। 

কিউবায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ও দাবি-দাওয়া নিয়েও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। নাগরিক বিক্ষোভের যে বিষয়গুলো প্রচার করা হচ্ছে, তা হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি, খাদ্যদ্রব্যের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি প্রধানত। বিক্ষোভকারীরা ইন্টারনেট সুবিধা থাকায় সামাজিকমাধ্যমে নিজেদের যোগাযোগ ও মতামত প্রকাশ করতে পারছেন, যা পূর্বে ছিল না। আর এই সুযোগ মার্কিন বিভিন্ন সংস্থা-প্রতিষ্ঠান ও কিছু বিভ্রান্ত কিউবান নিচ্ছে এবং বিভ্রান্তি তৈরি করছে। তারমধ্যে ক্রমাগত ঘি ঢালছে ও লাকড়ি ঠেলছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী প্রশাসন।

কিউবার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে রাশিয়া, মেক্সিকো, ভেনিজুয়েলা, বলিভিয়াসহ বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করেছে এবং সেখানে তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়ারও অভিযোগ এনেছে। মার্কিন ও পশ্চিমা শাসকদের যদি প্রকৃতই কিউবার জনগণের প্রতি দরদ থাকে, তাহলে কিউবার বিরুদ্ধে আরোপিত দীর্ঘ অবরোধ প্রত্যাহার করুক।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মণিপুরে পুলিশের গুলিতে ‘৪০ বিদ্রোহী’ নিহত

প্রকাশ: ০৯:৫৩ এএম, ২৯ মে, ২০২৩


Thumbnail

ভারতে জাতিগত সহিংসতা বিক্ষুদ্ধ মণিপুর রাজ্যের পুলিশের কমান্ডোরা বেশ কয়েকটি এলাকায় রোববার আট ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করেছে।

এতে অন্তত ’৪০ বিদ্রোহী’ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।

তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীরা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে এম-১৬, একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল এবং স্নাইপার বন্দুক ব্যবহার করছে। তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।

“আমরা সেনাবাহিনী ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় তাদের বিরুদ্ধে খুব শক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা প্রায় ৪০ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করার খবর পেয়েছি।”

“সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। মণিপুরকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টায় থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসী এবং কেন্দ্রের সহায়তায় রাজ্য সরকারের মধ্যে লড়াই চলছে৷”

বিদ্রোহীরা গভীর রাতে একযোগে ইম্ফল উপত্যকা ও এর আশেপাশের পাঁচটি এলাকায় হামলা করেছে বলে কয়েকটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে এনডিটিভি।

এলাকাগুলো হল- সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং এবং সেরু। অন্য আরও এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ চলছে। রাস্তায় লাশ পড়ে থাকার খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেকমাই-এ বন্দুকযুদ্ধ শেষ হয়েছে।

রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলের আঞ্চলিক ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (আরআইএমএস) চিকিৎসকরা রোববার ফোনে এনডিটিভি-কে জানিয়েছেন ফায়েং-এ বন্দুকযুদ্ধে আহত ১০ জনকে তারা পেয়েছেন।

বিষেনপুরের চান্দনপোকপিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কৃষক নিহত হয়েছেন; তার মরদেহ আরআইএমএস-এ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আরও অনেকে হতাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গত দু’দিনে ইম্ফল উপত্যকার উপকণ্ঠে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সহিংস হামলা বেড়ে যাওয়া সুপরিকল্পিত বলেই তিনি মনে করছেন। এটি কঠোরভাবে নিন্দনীয়, বিশেষ করে যখন রাজ্যের মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই শান্তি মিশনে মণিপুরে রয়েছেন, বলেন তিনি।

২৫টির বেশি কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় ‘অপারেশন স্থগিত’ (এসওও) চুক্তি সই করেছে। এসওও নিয়মের অধীনে, বিদ্রোহীদের সরকার চিহ্নিত শিবিরে থাকা আবশ্যক এবং তালা দিয়ে রাখা অস্ত্রও নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।

সোমবার মণিপুরে যাবেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সফরের আগেই তিনি মেইতি এবং কুকি উভয় সম্প্রদায়কে শান্ত থাকা ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডেও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শনিবার দুদিনের সফরে রাজ্যটিতে গিয়েছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি এবং নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে।

মেইতেই সম্প্রদায় অনেক দিন ধরে তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়ায় দাবি জানিয়ে আসছে। উপজাতিদের জন্য মণিপুরে আইনগত বেশ কিছু সুযোগসুবিধা ও কোটা রয়েছে।

মণিপুরে এক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংসতায় ৭০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। লাখো মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছে। সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।



মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন