পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটে যাওয়া দুটি ভয়াবহ বিশ্বযুদ্ধের পর বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই স্নায়ু যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। ইতিহাসের পাতায় স্নায়ু যুদ্ধের সময়কালটা ছিল ১২ মার্চ ১৯৪৭ থেকে ২৬ ডিসেম্বর ১৯৯১ পর্যন্ত। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার শীতল যুদ্ধের ফলে বিশ্বে এর নানা রকম প্রভাব দেখা গেছে। বলা যায় পৃথিবীর ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ঘটনায় ঘটেছে এই সময়টায়।
সোভিয়েতের পতনের পর থেকে স্নায়ু যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলেও বর্তমানে চীন-রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান গভীর হওয়া সম্পর্কের পরিণতি শেষ পর্যন্ত স্নায়ু যুদ্ধে রুপ নিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে সহিংস দুটি বিপ্লবের উত্তরাধিকারীরা মস্কোতে একটি সাম্প্রতিক বৈঠকে হাত মিলিয়েছেন এবং তাদের ‘নতুন যুগের জন্য সমন্বয়ের ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান শি জিনপিং এবং রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে এই সম্পর্ক নিয়ে পশ্চিমের অনেকেই বিভ্রান্ত হয়েছেন। কেউ কেউ কল্পনা করেছেন, উদাহরণস্বরূপ, শি ইউক্রেনে পুতিনের যুদ্ধে একটি নিরপেক্ষ পক্ষ হবেন, বা তিনি এমনকি শান্তিপ্রণেতাও হতে পারেন।
কিন্তু কয়েক দশক ধরে শান্তিকালীন বিশ্বায়নের পর একটি সমস্যাজনক নতুন অংশীদারিত্ব অপ্রত্যাশিতভাবে আবির্ভূত হয়েছে তা কল্পনা করার পরিবর্তে বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়া এবং চীনের ভাগাভাগি দ্বন্দ্ব বোঝার জন্য আমাদের ইতিহাসের দীর্ঘ বৃত্তের দিকে তাকাতে হবে।
ইউক্রেনে পুতিনের আক্রমণকে চীনের অর্থনৈতিক শক্তির দ্বারা প্রকাশ্যে সমর্থিত করা হচ্ছে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন। এই যুদ্ধকে বিশ্লেষকরা বলছেন পুনরুদ্ধার করা রাশিয়া-চীন অক্ষের প্রথম ভূ-রাজনৈতিক পণ্য এবং দুটি রাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন যাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা স্নায়ু যুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি দ্বারা কখনো পূরণ হয়নি। আবারও, বিশ্বের গণতন্ত্রগুলো ইউরোপ এবং এশিয়া উভয় দেশেই এই দুই স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগঠিত করার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
১৯৫০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের উপস্থাপিত স্নায়ু যুদ্ধের চ্যালেঞ্জের চারপাশে আমেরিকান গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি সমন্বয় করতে শুরু করলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের আধিকারিক পল নিটজে অভ্যুত্থানের সময়কাল ব্যাখ্যা করেছিলেন যা তার প্রজন্মের আন্তর্জাতিক বিষয়গুলির অভিজ্ঞতাকে সংজ্ঞায়িত করেছিল। তার মতে, বিগত পঁয়ত্রিশ বছরের মধ্যে বিশ্ব প্রচণ্ড সহিংসতার দুটি বৈশ্বিক যুদ্ধের সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়াও রুশ এবং চীনা বিপ্লবের মতো দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব। এর মধ্যে অটোমান, অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান, জার্মান, ইতালীয় এবং জাপানি, এই পাঁচটি সাম্রাজ্যের পতনও দেখা গেছে এবং সেইসঙ্গে দুটি প্রধান সাম্রাজ্য ব্যবস্থা, ব্রিটিশ এবং ফরাসিদের তীব্র পতন উল্লেখযোগ্য।
নিটজে এমন একটি বিশ্ব পর্যবেক্ষণ করেছেন যেখানে ‘ক্ষমতার আন্তর্জাতিক বন্টন মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে।’ এই পরিবর্তন এবং অস্থিরতার কারণগুলির মধ্যে ছিল দুটি বিপ্লব যা তিনি বিজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করেছিলেন। সেগুলো অবশ্যই রুশ এবং চীনা। দুটি বিপ্লব যার পরিণতি, আমাদের এখন স্বীকার করা উচিত, পুরোপুরি শেষ হয়নি।
আমাদের নিজেদেরকে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত যে ২১ শতকের রাশিয়া এবং চীন এবং তাদের পরিচালনাকারী নেতারা মূলত রুশ এবং চীনা বিপ্লবেরই পণ্য যা নিটজ বুঝতে পেরেছিলেন যে তার জীবনকালের ইতিহাস এবং ভূ-রাজনীতিকে রূপ দেবে। শি এবং পুতিন, এই বিপ্লবগুলির পণ্য হিসেবে তাদের পশ্চিমা-বিরোধী ধারণা এবং সংঘাতের কৌশলগুলোর উত্তরাধিকারী।
আমেরিকান স্পাইমাস্টার জ্যাক ডিভাইন যেমন উল্লেখ করেছেন, পুতিনের কর্মজীবন পূর্ব জার্মানির ড্রেসডেনে রূপ নিয়েছিল, ওয়ারশ চুক্তি বিশ্বে আবদ্ধ ছিল এবং তিনি সোভিয়েত সাম্রাজ্যের পতনকে ‘২০ শতকের সর্বশ্রেষ্ঠ ভূ-রাজনৈতিক বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন। এখন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে শি তার উত্তরাধিকারী যাকে পার্টি ‘চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণ’ বলে অভিহিত করে, জাতীয় পুনরুজ্জীবনের একটি প্রকল্প যা মাও সে তুংয়ের ‘নয়া চীন’ থেকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং বিভিন্ন রূপে অব্যাহত রয়েছে।
শির চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং ‘বিশ্বের কেন্দ্রস্থলে’ চীনের সঙ্গে একটি নতুন আদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই প্রচেষ্টায় পুতিনের রাশিয়া হল শির প্রধান সহযোগী এবং ‘কৌশলগত অংশীদার।’
২০ শতকে সর্বগ্রাসী কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হিসেবে, রাশিয়া এবং চীন বিশ্বের গণতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করেছিল এবং তাদের নিজস্ব একটি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল। দশকব্যাপী চীন-সোভিয়েত জোট কোরিয়ান যুদ্ধ এবং একাধিক তাইওয়ান সংকটকে ছড়িয়ে দিয়েছে, যা ইউরোপ এবং এশিয়া উভয় অঞ্চলে বিস্তৃত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের জন্য একটি দ্বি-থিয়েটার কৌশলগত চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাত্র আটলান্টিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়েছে, সম্ভবত একটি দুই-থিয়েটার কৌশলগত প্রতিযোগিতা পরিচালনা করার জন্য আরও প্রস্তুত ছিল।
কমিউনিস্ট চীন এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন উভয়ের একযোগে নিয়ন্ত্রণ তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে একটি চেক প্রদান করেছিল। চীন-সোভিয়েত জোট শেষ পর্যন্ত টেকসই হয়ে ওঠে এবং অনেকাংশে ভেঙ্গে যায় কারণ মাও চীনকে বিশ্বব্যাপারে একটি ক্ষমতা ও কেন্দ্রিয়তার অবস্থানে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন; তিনি মস্কোর জুনিয়র পার্টনার হিসেবে ভূমিকা সহ্য করবেন না।
আজ এই ভূমিকাগুলি বিপরীত হয়েছে এবং এই উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। কমিউনিস্ট মতাদর্শের নামে নয়, একটি আক্রমণাত্মক, সামরিক জাতীয়তাবাদের আলোকে যা উভয় শাসনকে সক্রিয় করে।
শি এবং পুতিন ইউক্রেনে পুতিনের আক্রমণের কয়েক সপ্তাহ আগে ২০২২ সালে বেইজিং অলিম্পিকে অংশীদারিত্বের যৌথ ঘোষণায় তাদের সম্পর্কের দার্শনিক গভীরতা এবং রূপ বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও আগেই শুরু হয়েছে।
২০১০ এর দশক জুড়ে উভয় দেশ তাদের সামরিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রসারিত করার জন্য কাজ করেছে। বেইজিং অলিম্পিকের বিবৃতিতে চীন এবং রাশিয়া একে অপরের ‘মূল স্বার্থের’ জন্য পারস্পরিক সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাইওয়ানের ওপর বেইজিংয়ের দাবির প্রতি মস্কো তার সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যাকে এটি ‘চীনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ’ বলে অভিহিত করেছে এবং বেইজিং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে ‘উভয় পক্ষই ন্যাটোর আরও বিস্তৃতির বিরোধিতা করে এবং উত্তর আটলান্টিক জোটকে তার আদর্শিক স্নায়ু যুদ্ধের পন্থা পরিত্যাগ করার আহ্বান জানায়।’
যৌথ পারমাণবিক সক্ষম বোমারু বিমানের মহড়া, স্থল ও নৌ মহড়া, শক্তি, প্রযুক্তিতে বাণিজ্য বৃদ্ধি, মস্কোর জন্য চীনের প্রচার সমর্থন এবং রাশিয়ার জন্য চীনা অ্যাসল্ট রাইফেল এবং বডি আর্মারের নতুন প্রতিবেদন, পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে যা রূপ নিয়েছে তার কিছু উপাদান মাত্র।
ইউরোপ এবং এশিয়ার ভাগ করা চীন-রাশিয়া বিভাগ চীন-সোভিয়েত জোটের মূল ভূগোলকে স্মরণ করিয়ে দেয়। স্তালিন যেমন কমিউনিস্ট চীনে তার সমকক্ষদের বলেছিলেন, ‘আমাদের মধ্যে শ্রমের কিছু বিভাজন হওয়া উচিত... আপনি পূর্বে কাজ করার জন্য আরও দায়িত্ব নিতে পারেন... এবং আমরা পশ্চিমে আরও দায়িত্ব নেব।’
ইউক্রেনে পুতিনের যুদ্ধই একমাত্র সংঘাত নয়, অবশ্যই এই অক্ষটি সংঘাত তৈরিও করতে পারে। স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে গণতন্ত্রের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা একটি আধুনিক গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে সুপারচার্জ করেছে যেটি এখন সমালোচনামূলক প্রযুক্তি এবং কৌশলগত শিল্পে বিশ্বের গণতন্ত্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং এশিয়ায় অতুলনীয় সুযোগের একটি সামরিক বাহিনী গড়ে তুলেছে যা প্রশান্ত মহাসাগরে এর নিজস্ব সক্ষমতা দেখাতে পারে। এটি হলো বিংশ শতাব্দীর বিরোধীদের প্রত্যাবর্তন যাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সত্যিকার অর্থে চলে যায়নি।
চিন রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র স্নায়ুযুদ্ধ
মন্তব্য করুন
প্রায় দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে
ভ্রমণে পাড়ি জমান রোজারিও পরিবার। স্বপ্নপূরণে স্থায়ীভাবে থাকতে আবেদনও করেছিল আমেরিকায়।
তাই দুই বছর আগে গ্রিনকার্ড অনুমোদন হয়। তবে আর দু-এক মাসের মধ্যেই উইন রোজারিও পেয়ে
যেত স্বপ্নের গ্রিনকার্ড। তার স্বপ্ন ছিল গ্রিনকার্ড পেলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে
যোগ দেবেন। কিন্তু এর আগেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল উইনের। ধরে দেখা হলো না কাঙ্ক্ষিত
গ্রিনকার্ড, আর অপূর্ণই থেকে গেল নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন।
বুধবার (২৭ মার্চ) স্থানীয় সময় নিউইয়র্কের
কুইন্স এলাকায় নিজ বাসায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৯ বছরের উইন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ওই তরুণ
পুলিশ সদস্যদের দিকে এক জোড়া কাঁচি নিয়ে তেড়ে গেলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল।
ছেলে হারানোর শোকে ভালো করে কথাও বলতে পারছেন না বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও।
বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ছেলে
আমার নিউইয়র্কের জন এডাম স্কুল থেকে থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছিল। তাকে নিয়ে আমাদের
কত স্বপ্ন ছিল!’
ফ্রান্সিস রোজারিও বলেন, মানসিক সমস্যার
কারণে দুবার জ্যামাইকা হসপিটালে ভর্তি হয়েছিল উইন। এ সমস্যার জন্যই আমাদের কাছে বেশি
আদরের ছিল সে। আর সে ছেলেই হারিয়ে গেল মায়ের কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে।
উইনের ছোট ভাই উৎস রোজারিও বলেন, পুলিশ
গুলি ছোড়ার আগে পুরোটা সময় তার মা ভাইকে জাপটে ধরে রেখেছিলেন। এমনকি ভাইকে ধরে রাখা
অবস্থায়ই গুলি ছোড়ে পুলিশ। এই গুলি ছোড়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।
মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী মা ইভা ডি কস্টার
আর্তনাদ যেন থামার নয়। ক্রমাগত কেঁদেই চলেছেন ছেলের কথা বলতে বলতে। বাঙালি কমিউনিটির
আইনি পরামর্শকেরা এসেছেন তাঁদের সান্ত্বনা দিতে এবং মামলার বিষয়ে পরামর্শ করতে। কমিউনিটির
নেতাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সিস রোজারিও।
রোজারিও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান
আইনজীবী মঈন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পরিবারের অনুমতি নিয়ে আমরা পুলিশের কার্যক্রম তদন্ত
করছি। তাদের কোনো ত্রুটি থাকলে আমরা নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে শিগগিরই
মামলা করব।’
নিহত উইনের দূর সম্পর্কের আত্মীয় সুখেন
জোসেফ গোমেজ। তিনি বলেন, উইনের মায়ের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর বাবার বাড়ি পুবাইলে।
আমার মা এবং উইনের মা বাংলাদেশ থেকেই পরিচিত। এ ছাড়া রোজারিও পরিবারের সঙ্গে অন্য
কারও খুব একটা যোগাযোগ ছিল না।’
সুখেন বলেন, রোজারিও পরিবার এখানে আসার
পর গুটিকয় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে খুব একটা দেখা যেত
না। তাঁদের বাসায় যতবার গিয়েছি, উইনকে দেখেছি পড়ালেখা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে
ব্যস্ত থাকতে।
উইনের ভাই উৎস রোজারিও বলেন, ‘ভাই ছিলেন খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের। খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন সব সময়। আমেরিকার মেরিনে (নৌবাহিনী) যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছাড়াও তাঁর ইচ্ছা ছিল বড় অ্যাথলেট হওয়ার। বাসায় চর্চাও করতেন। খুব একটা বন্ধুবান্ধব ছিল না তাঁর। আমিই ছিলাম তাঁর বন্ধু।’
মন্তব্য করুন
প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে ভারতে আসন্ন
লোকসভা নির্বাচনের। প্রচারের পাশাপাশি বিতর্কিত মন্তব্যে জড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। এসব
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে অনেকের প্রার্থিতাও বাতিল হচ্ছে। অনেকের প্রচারে বাধা দেওয়া
হচ্ছে বলে অভিযোগও উঠেছে।
পশ্চিমবঙ্গে দিলীপ ঘোষের পর এবার বিতর্কে
জড়ালেন বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে
নিয়ে ‘বেফাঁস’ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তমলুকের এ বিজেপি প্রার্থী। তার একটি মন্তব্য
তুলে ধরে তৃণমূল অভিযোগ করেছে, নেত্রী মমতার মৃত্যু কামনা করেছেন সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি
তথা বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ। এ নিয়ে অভিজিতের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের
করারও প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া
একটি ভিডিওতে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে হচ্ছে মৃত্যুঘণ্টা
বেজে গেছে। মনে হচ্ছে!’ যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। অভিজিতের
বক্তব্যের যে অংশটি তুলে তৃণমূল কংগ্রেস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে,
তা ছয় সেকেন্ডের। তার আগে পরে তিনি কী বলেছেন তার কোনো উল্লেখ নেই। এই মন্তব্য নিয়ে
প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কে কত নিম্নরুচির পরিচয় দিতে
পারেন, সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বিজেপির প্রার্থীরা। কী অবস্থা! এরা এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
মৃত্যু কামনা করছেন।’
তৃণমূলের তরফে দাবি জানানো হয়েছে, অভিজিৎকে
অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে বাংলার মানুষ এর জবাব দেবে। তৃণমূলপ্রধান মমতা ব্যানার্জিকে
ব্যক্তিগত আক্রমণ করে অবশ্য বিপাকে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাকে তার দল বিজেপি শোকজ করেছে।
পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনও মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের এবারের
বিজেপি প্রার্থী দিলীপকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআরও
দায়ের হয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল। মমতার
পিতৃপরিচয় তুলে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। এবার অভিজিতের বিরুদ্ধেও কমিশনের দ্বারস্থ
হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসকদল।
মন্তব্য করুন
দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায়
৪৫ জন নিহত হয়েছেন। যাত্রীবাহী একটি বাস সেতু থেকে গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর প্রাণহানির
এই ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় কেবল একটি মেয়ে শিশু বেঁচে গেছে। জরুরী অবস্থায় তাকে
হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম
বিবিসি।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি বাস সেতু থেকে প্রায় ৫০ মিটার (১৬৫
ফুট) গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর পঁয়তাল্লিশ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
অবশ্য এই ঘটনায় আট বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুকে একমাত্র জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং
গুরুতর আহত অবস্থায় পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিবিসি বলছে, উত্তর-পূর্ব লিম্পোপো
প্রদেশে বাসটি একটি ব্যারিয়ারে ধাক্কা দেওয়ার পর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং পরে এটিতে
আগুন ধরে যায়। যাত্রীরা সবাই ছিলেন তীর্থযাত্রী এবং তারা বতসোয়ানার রাজধানী গ্যাবোরোন
থেকে মোরিয়া শহরে ইস্টার সার্ভিসে যাচ্ছিলেন।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পাবলিক ব্রডকাস্টার
এসএবিসি জানিয়েছে, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোহানেসবার্গের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার
(১৯০ মাইল) উত্তরে মোকোপানে এবং মার্কেনের মধ্যে মামামতলাকালা পর্বত গিরিপথে একটি সেতু
থেকে ছিটকে পড়ে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলেছে
উদ্ধার তৎপরতা এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিহত কয়েকজনের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে
বলে জানা গেছে।
দেশটির পরিবহন মন্ত্রী সিন্দিসিওয়ে
চিকুঙ্গা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং পরে তিনি ‘মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত
পরিবারগুলোর প্রতি আন্তরিক সমবেদনা’ জানান। তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার মৃতদেহ
ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে এবং দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে পূর্ণ তদন্ত করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে আমাদের
চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা আপনার সাথে আছে। আমরা এই ইস্টার উইকএন্ডে আমাদের রাস্তায়
আরও বেশি লোক থাকায় আরও বেশি সতর্কতার সাথে সবসময় দায়িত্বশীল ভাবে ড্রাইভিং করার
জন্য অনুরোধ করছি।’
অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার খারাপ সড়ক নিরাপত্তার
রেকর্ড রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মন্তব্য করুন
ইউক্রেন পশ্চিমা এফ-১৬ বিমান ভ্লাদিমির পুতিন
মন্তব্য করুন
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু দিন দিন হামলার ধরন নৃশংসতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে দখলদার বাহিনীর। ইসরায়েলি নৃশংশতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নিরীহ মানুষ থেকে শুরু করে শিশুরাও।
কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার হাতে এসেছে এক এক্সক্লুসিভ ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে সৈকতে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি পুরুষকে গুলি করে হত্যা করেছেন ইসরায়েলি সেনারা। পরে সামরিক বুলডোজার দিয়ে মরদেহ দুটি বালুচাপা দেন তারা। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার একটি সৈকতে এই ঘটনা ঘটে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সৈকতে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি হাঁটছিলেন। একপর্যায়ে তাদের একজনকে বারবার একটি সাদা কাপড় নাড়তে দেখা যায়। কোনো হুমকি সৃষ্টি না করা সত্ত্বেও ওই দু'জনকে গুলি করে হত্যা করেন ইসরায়েলি সেনারা। পরে ইসরায়েলি সামরিক বুলডোজার এনে লাশ দুটি বালুচাপা দেন তারা।
এদিকে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটি বলছে, এই ঘটনা ইসরায়েলি ফ্যাসিবাদ ও অপরাধের মাত্রার আরও প্রমাণ হাজির করে। এটাই জায়নবাদী আচরণকে পরিচালিত করে।
আর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মুসলিম নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) বলেছে, গাজার সৈকতে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি পুরুষকে হত্যা এবং বুলডোজার দিয়ে লাশ দুটি বালুর নিচে চাপা দেয়ার ঘটনার অবশ্যই জাতিসংঘকে তদন্ত করতে হবে।
ফিলিস্তিন হত্যা বুলডোজার ইসরায়েল
মন্তব্য করুন
প্রায় দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ভ্রমণে পাড়ি জমান রোজারিও পরিবার। স্বপ্নপূরণে স্থায়ীভাবে থাকতে আবেদনও করেছিল আমেরিকায়। তাই দুই বছর আগে গ্রিনকার্ড অনুমোদন হয়। তবে আর দু-এক মাসের মধ্যেই উইন রোজারিও পেয়ে যেত স্বপ্নের গ্রিনকার্ড। তার স্বপ্ন ছিল গ্রিনকার্ড পেলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে যোগ দেবেন। কিন্তু এর আগেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল উইনের। ধরে দেখা হলো না কাঙ্ক্ষিত গ্রিনকার্ড, আর অপূর্ণই থেকে গেল নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। যাত্রীবাহী একটি বাস সেতু থেকে গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় কেবল একটি মেয়ে শিশু বেঁচে গেছে। জরুরী অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।