যে কোন যুদ্ধে বা সহিংসতায় হাসপাতালে হামলা চালানো যুদ্ধনীতির পরিপন্থী। যে কোন সহিংসতার ঘটনায় হাসপাতালগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া হয় যুদ্ধের নীতি দ্বারা। আর সেই নীতি হলো হাসপাতাল কখনোই হামলার লক্ষবস্তু হবেনা। যুদ্ধক্ষেত্রে যে কোন হাসপাতালকে সুরক্ষা দেয় জেনেভা কনভেনশন। যুদ্ধকালে জেনেভা কনভেনশন কার্যকর থাকে। এই আইনে যুদ্ধের নিয়মকানুন বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল জেনেভা কনভেনশনে সই করা একটি দেশ। তাই আন্তর্জাতিক এই আইন মানতে বাধ্য দেশটি।
১৮৬৪ থেকে ১৯৪৯ সালের
মধ্যে চারটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ধারাবাহিক রূপ জেনেভা কনভেনশন। ১৯৪৯ সালে চতুর্থ
কনভেনশন গৃহীত হয়। এতে যাঁরা সরাসরি যুদ্ধে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ, বিশেষ করে শিশু,
অসুস্থ ব্যক্তি এবং প্রাপ্তবয়স্ক বেসামরিক মানুষের সুরক্ষার কথা বলা হয়।
এই জেনেভা কনভেনশনের
১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে হাসপাতালকে নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে বলা অছে
চিকিৎসা সংক্রান্ত সবকিছুর মর্যাদা দিতে হবে। এবং সবসময় রক্ষা করতে হবে। আর এটি কখনোই
আক্রমনের লক্ষবস্তু হবেনা।
১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে
বলা হয়েছে, বেসামরিক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ,
যুদ্ধের সময় হাসপাতালে হামলা করা, স্বাস্থ্যকর্মী ও হাসপাতালে অবস্থানরত বেসামরিক মানুষদের
হত্যা করা জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন।
জেনেভা কনভেনশনে বলা আছে,‘ তবে কখনো কখনো হাসপাতালও সে সুরক্ষা বলয় হারাতে পারে। যদি সেটি মানবিক কাজের বাইরে শত্রুর ক্ষতি করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।’ ইসরায়েল বলছে, ‘গাজার সবচেয়ে বড় আল শিফার ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে।’
ইসরায়েলের দাবি,
আল-শিফা হাসপাতাল হামাসের সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার হতো যা হামাস এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
অস্বীকার করেছে। তবে এর পক্ষে এখনো তারা যথেষ্ট প্রমাণ হাজির করতে পারেনি।
সম্প্রতি, আল-শিফা
হাসপাতালের গোপন সুরঙ্গের যে ভিডিও প্রকাশ করেছে তাকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে হামাস।
এর বিপক্ষে এক বিবৃতিতে
হামাস বলেছে, ইসরায়েলি সেনারা টানেল খুঁজে পাওয়ার যে দাবি করেছে সেটি হাসপাতালের ভেতরে
নয়, হাসপাতাল থেকে বেশ খানিকটা দূরের একটি গর্ত। একটি পানির কূপ ও আরেকটি টানেলের ভিডিও
জোড়া লাগিয়ে প্রচার করা হয়েছে ।
ইসরায়েলের একজন কূটনৈতিক
‘মার্ক রেগেভ’ বলেন, হাসপাতালকে যুদ্ধক্ষেত্রে
পরিণত করেছে হামাস। তারা পরিকল্পিতভাবে তাদের ঘাঁটি করেছে হাসপাতালে।
আন্তর্জাতিক আদালতের
প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান বলেন, এ ক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণ হওয়াটা খুব জরুরি।
এদিকে, আল-শিফা হাসপাতালের
নিচে সুরঙ্গে যে দাবি করেছে ইসরায়েলের তাতে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্টের ডেপুটি
পেন্টাগন প্রেস সেক্রেটারি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে হামাস এবং ফিলিস্তিনি
ইসলামিক জিহাদ বন্দিদের আটকে রাখা এবং মিলিটারি অপারেশনে সহায়তা করার জন্য আল-শিফা
সহ গাজার কিছু হাসপাতাল ব্যবহার করছে। তবে হামাস এটি শুরু থেকেই অস্বিকার করে আসছে।’
জেনেভা কনভেনশনে
হাসপাতালে হামলার বিষয়ে বলা আছে, একটি হাসপাতাল কেবল তখনই তাদের নিরাপত্তা স্ট্যাটাস
হারাবে যখন সেখানে একটা সতর্কবার্তা দেওয়া হবে এবং হাসপাতালটি খালি করার জন্য পর্যাপ্ত
সময় দেওয়া হবে।
ইসরায়েল বলছে, ‘তারা
হামলা চালানোর পূর্বে সতর্কবার্তা দিয়েছে এবং হাসপাতালটিকে খালি করার জন্য যথেষ্ট সময়
দিয়েছে।’
জাতিসংঘের মতে,
‘আন্তর্জাতিক আইনের কোনো একক নথি দিয়ে সব ধরনের যুদ্ধাপরাধের ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।
এ জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক মানবিক, ফৌজদারি ও প্রথাগত আইনের বিভিন্ন শাখার শরণাপন্ন
হতে হবে।’
সংস্থাটি বলছে,
“সশস্ত্র সংঘাতের সময় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের সময় জেনেভা কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক
মানবিক আইন কার্যকর থাকে, যা ‘ল অব ওয়ার’ নামে পরিচিত। যুদ্ধাপরাধের ক্ষেত্রে এ দুই আইনের লঙ্ঘন ঘটে।”
জাতিসংঘ মনে করে,
‘যদি হাসপাতাল যুদ্ধে শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে এই প্রমাণ থাকে এবং সতর্কবাণী
আগে থেকে দেওয়া হয় তারপরও যুদ্ধের আন্তর্জাতিক নীতির কাছে ইসরায়েলের কিছু দায়বদ্ধতা
আছে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার
বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে হামলার
ক্ষেত্রে পূর্বসতর্কতা এবং সম্ভাবনার বিষয়গুলোও ভেবে দেখতে হবে। আর সেটা করতে ব্যর্থ
হওয়াটাও যুদ্ধের নীতি লঙ্ঘন যার মারাত্বক প্রভাব পড়ে বেসামরিক নাগরিকদের উপর।
তবে ইসরায়েল সচরাচরই
এ হামলা বন্ধ করার কোন আভাস দেয়নি এখনো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা ইসরায়েলকে
যুদ্ধবন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন এ হামলার নিন্দা
করেছে। ইতোমধ্যেই ইসরায়েল গাজায় অনেক সহিংসতা চালিয়েছে যা যুদ্ধপরাধের সামিল। তাই যুদ্ধ
বন্ধ হলে ইসরায়েলকে নিশ্চতই এর জন্য আন্তর্জাতিক মহলে জবাবদিহিতা করতে হবে।
যুদ্ধ হাসপাতাল হামলা আন্তর্জাতিক নীতি
মন্তব্য করুন
মার্কিন অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক সাময়িকী ফোর্বস
২০২৩ সালের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার অবস্থান ৪৬তম। এর আগে ২০২২ সালে শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪২তম। রাজনীতি,
ব্যবসা-বাণিজ্য, গণমাধ্যম ও বিশ্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রভাবকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বের
সেরা ১০০ প্রভাবশালী নারীকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে
বলা হয়, তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বপালন করছেন।
শুধু তাই নয়, তিনি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে নারী সরকার প্রধান হিসেবেও দায়িত্বপালন
করছেন।
বর্তমানে তিনি চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় রয়েছেন
এবং পঞ্চমবারের জন্য নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এছাড়াও বলা হয়েছে রাজনীতির ক্ষেত্রে জিডিপি-জনসংখ্যার
বিষয় ও কর্পোরেট নেতাদের ক্ষেত্রে আয় ও কর্মীদের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
এ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পরপর তিনবারসহ শেখ
হাসিনা চতুর্থবারের মতো জয়ী হয়েছেন। সবশেষ তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৩০০ সংসদীয় আসনের
মধ্যে ২৮৮টিতে জয় পেয়েছে।
ফোর্বসের এ তালিকায় ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট
উরসুলা ভন ডার লেনকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয়
স্থানে আছেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ক্রিস্টিনা লাগার্দ ও তৃতীয় স্থানে
আছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর ফোর্বস
বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাধর নারীদের এই তালিকা প্রকাশ করে আসছে।
মন্তব্য করুন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন ট্রাম্প নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে হয়তো তিনিও নির্বাচনে অংশ নেবেন না। ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের রাজধানী বোস্টনে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ প্রচারণায় এ কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সমর্থকদের এক বক্তৃতায় বাইডেন বলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করে, তবে তিনিও হয়তো ২০২৪ সালে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন না। বাইডেনের এ আকস্মিক মন্তব্যে দলের অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তবে বাইডেন আরও বলেন, দেশের স্বার্থে ও গণতন্ত্রের
স্বার্থে কোন ভাবেই ট্রাম্পকে জিততে দেয়া যাবে না। এর আগেও ২০২০ এর নির্বাচনী প্রচারণায়
বাইডেনের প্রধান অস্ত্র ছিল 'ট্রাম্প দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি'।
এই মন্তব্যের পর বাইডেন তাঁর বিরোধী দলের
পক্ষ থেকেও সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন, যার মধ্যে মিনেসোটার রিপাবলিক ডিন ফিলিপস অন্যতম।
তিনি বলেছেন, বাইডেনের বয়স হয়েছে এবং তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে দিতে তাঁর সরে যাওয়া
উচিত। তবে বয়সের ভার থাকার পরও বাইডেন আগামী নির্বাচনে লড়াইয়ের পণ করেছেন এবং তিনি
বিশ্বাস করেন তিনিই একমাত্র ডেমোক্র্যাট প্রার্থী, যিনি ট্রাম্পকে আবারও পরাজিত করতে
পারবেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
ক্যাপিটাল হিলের হামলা, বিগত নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা, দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির
একাধিক মামলা চলমান। এসব মামলায় দণ্ডিত হলে ট্রাম্প নির্বাচন করতে পারবেন কি না, তা
এখনো নিশ্চিত নয়।
সূত্র: ফক্স নিউজ
মন্তব্য করুন
বাবা প্রণব মুখার্জির স্মৃতিচারণ করে শর্মিষ্ঠা
মুখার্জি একটি বই লিখেছেন। ‘ইন প্রণব, মাই ফাদার: এ ডটার্স রিমেমবার্স’ নামক বইটি প্রকাশের
অপেক্ষায় রয়েছে। তার এই বইটিতে তিনি তুলে ধরেছেন প্রণব মুখার্জির নানা অজানা তথ্য।
সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে যাওয়া
পর যখন গুঞ্জন শুরু হয় তাহলে কে হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী- সেই সময়ে প্রণব মুখার্জিকে
এই প্রশ্ন করেন শর্মিষ্ঠা। বইটিতে এ সংক্রান্ত তথ্যও উঠে এসেছে।
প্রকাশিতব্য এ বইয়ে শর্মিষ্ঠা, বাবা প্রণব
মুখার্জির বর্ণাঢ্য জীবনের অংশবিশেষ তুলে ধরেছেন। শর্মিষ্ঠার কথায়, প্রধানমন্ত্রী না
করায় সোনিয়া গান্ধীর প্রতি কোনো ক্ষোভ ছিল না তার বাবার। তখন প্রধানমন্ত্রী হওয়া মনমোহন
সিংকে নিয়েও প্রণব মুখার্জির কোনো ঈর্ষাও ছিল না।
এ বইয়ে উঠে এসেছে, ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে
একক গরিষ্ঠতা পাওয়া দল কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে সোনিয়া গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার
পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তে কংগ্রেস ছাড়াও অংশীদার জোটের সম্পূর্ণ সমর্থন
ছিল। কিন্তু সোনিয়া এই পদে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। সোনিয়ার এই সিদ্ধান্ত নিজ দলের
নেতাকর্মীসহ ভারতের সব মানুষকে অবাক করে দিয়েছিল।
বইটির মধ্যে ‘দ্য পিএম ইন্ডিয়া নেভার হ্যাড’
শিরোনামের অধ্যায়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়াতে
সোনিয়ার ঐ সিদ্ধান্তের পরে গণমাধ্যমে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র জল্পনা-কল্পনা শুরু
হয়।
তিনি আরও লিখেছেন, ড. মনমোহন সিং এবং প্রণবের
নাম এই পদের জন্য শীর্ষ প্রতিযোগী হিসেবে আলোচনায়। বাবা প্রচুর ব্যস্ত থাকায় কয়েক দিন
তার সঙ্গে আমার দেখা করার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমি তার সঙ্গে ফোনে কথা বলি।
উচ্ছ্বসিতভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করেছি- তিনি
প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন কিনা। তার জবাব ছিল, না, ‘তিনি আমাকে প্রধানমন্ত্রী করবেন
না। মনমোহন সিং হবেন।‘
তবে ১৯ মে ডায়েরিতে প্রণবকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যায়। প্রণব লিখেছেন, সমস্যার সমাধান হয়েছে। মনমোহন সিং হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। মনমোহন ও সোনিয়া প্রেসিডেটের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। প্রেসিডেন্ট মনমোহনকে সরকারগঠনের অনুমতি দিয়েছেন।
শর্মিষ্ঠা মুখার্জি উল্লেখ করেছেন, যদিও সেই
সময়ে তার বাবা আর কিছু লেখেননি, ৩১ ডিসেম্বর বছরের বড় ঘটনাগুলো বর্ণনা করার সময়
তিনি লিখেছেন, সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ছিল প্রধানমন্ত্রীত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকার করে সোনিয়া
গান্ধীর আশ্চর্যজনক আত্মত্যাগ। দলের ভেতরে এবং বাইরের চাপ সত্ত্বেও তিনি রাজি হননি।
তার এই সিদ্ধান্ত বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে তিক্ত সংঘাত থেকে দেশকে বাঁচিয়েছে।
তিনি আরও লিখেছেন, তার বাবা সোনিয়া গান্ধীকে
মনে করতেন বুদ্ধিমতি, পরিশ্রমী এবং শিখতে আগ্রহী একজন ব্যক্তি হিসেবে।
এর আগে প্রণব মুখার্জির একটি ডায়রিতে রাহুল
গান্ধীর ব্যাপারেও কিছু কিছু লেখা পাওয়া যায়। ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি কংগ্রেসের
কার্যনির্বাহী কমিটির (সিডব্লিউসি) বৈঠকের আলোচনা নিয়ে লিখেছেন। সেই বৈঠকের অন্যতম
আলোচ্য বিষয় ছিল একই বছরের আসন্ন লোকসভার নির্বাচন।
রাহুল গান্ধী মাঝে মধ্যে দেখা করতে যেত বলে
ডায়রিতে লিখেছেন প্রণব। শর্মিষ্ঠার ভাষ্য, রাহুল গান্ধীকে ‘খুবই বিনয়ী’ ও ‘কৌতূহলী’
মনে করতেন প্রণব। কিন্ত তার মত ছিল, রাহুলের মধ্যে এখনো রাজনৈতিক পরিপক্বতা আসেনি।
রাষ্ট্রপতি ভবনে দেখা করতে গেলে প্রণব রাহুলকে
মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিতেন, যাতে তিনি সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ
পান। শর্মিষ্ঠা লিখেছেন, রাহুল যে এ পরামর্শ কানে তোলেননি আমরা সবাই সেটা জানি।
২০১৩ সালের ২৫ মার্চ রাহুল তার সঙ্গে দেখা
করতে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রণব লিখেছেন, বহু বিষয় নিয়ে রাহুল আগ্রহী। কিন্ত খুবই
দ্রুত সে একটা বিষয় ছেড়ে আরেকটা বিষয়ে চলে যায়। আমি জানি না সে আসলে কতটা শোনে ও সে
কথা বা পরামর্শ নিজের মধ্যে ধারণের চেষ্টা করে।
প্রসঙ্গত, প্রণব মুখার্জি একসময় ভারতের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরবর্তীতে দেশটির পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েছেন। সবশেষ তিনি ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারতের ত্রয়োদশ প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট ৮৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
সোনিয়া গান্ধী রাহুল গান্ধী প্রণব মুখার্জি
মন্তব্য করুন
পশ্চিম তীরের সহিংসতাকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা
জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল বা ফিলিস্তিন দু পক্ষেরই সহিংসতাকারী হিসেবে চিহ্নিত
ব্যক্তিদের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে বলে জানা গেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে যারা বেসামরিক
নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিদ্যমান ভিসা
এবং ভবিষ্যতের আবেদন বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এমনই ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
পশ্চিম তীরে সহিংসতার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী
বা ফিলিস্তিনি দুপক্ষের জন্যই এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা।
নতুন ভিসা নীতির এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে,
এক বিবৃতিতে সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন ‘উগ্রপন্থী বসতি স্থাপনকারী
যারা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংস আক্রমণ করেছে, তাদের ওপর এটি কার্যকর হবে’।
শীর্ষ এই কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
'পশ্চিম তীরে শান্তি, নিরাপত্তা বা স্থিতিশীলতা নষ্ট করার' সঙ্গে জড়িত যেকোনো ব্যক্তি
বা যারা বেসামরিক নাগরিকদের 'প্রয়োজনীয় পরিষেবা এবং মৌলিক প্রয়োজনগুলো গ্রহণ করতে
অযৌক্তিকভাবে বাধা দেবে, তাদেরকে এই ভিসানীতির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
তিনি ফিলিস্তিনিদের কথাও বলেছেন। তার মতে,
যারা ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাবে তাদের জন্যও ভিসা নিষেধাজ্ঞা
কার্যকর হবে।
মিলার বলেন, নতুন ভিসা নীতি চালু হচ্ছে। এটা
অনেকের জন্যই প্রযোজ্য হতে পারে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরও ভিসা প্রত্যাহার করা
হতে পারে।
ভিসানীতি নিয়ে নিজের এক্সে (পূর্বের টুইটার)
একটি পোস্ট করেছেন ব্লিঙ্কেন।
ওই বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, অধিকৃত পশ্চিম
তীরে বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না ইসরাইল।
যার ফলে যুদ্ধ বেড়েছে বলে দাবি করেছে অধিকার গোষ্ঠীগুলো।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। এখনও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।
গাজা-উপত্যকা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-সংঘাত ইসরায়েল ফিলিস্তিন ভিসা যুক্তরাষ্ট্র
মন্তব্য করুন
বৈশ্বিক জলবায়ুর ভয়াবহ বিপর্যয়ের সাক্ষী হতে
যাচ্ছে রাশিয়া। এ বছর শতাব্দীর সবচেয়ে বেশি তুষারপাত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ায়।
গত সেপ্টেম্বর থেকেই শীত শুরু হয়েছে দেশটিতে। দেশের অধিকাংশ
অঞ্চলে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ঘরে বা তার নিচে বিরাজ করছে। তবে আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার সবচেয়ে
বড় ভৌগোলিক অঞ্চল সাইবেরিয়ায় মাইনাস ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
সাইবেরিয়ার ইয়াকুৎস শহরের এই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
সাইবেরিয়ার আয়তন ১ কোটি ৩১ লাখ বর্গকিলোমিটার।
গত কয়েক দিন ধরেই সাইবেরিয়ার বিভিন্ন শহর ও গ্রামে তাপমাত্রা
মাইনাস ৫৫ ডিগ্রি বা তার আশপাশের ঘরে ওঠানামা করলেও মঙ্গলবার অঞ্চলটির ইয়াকুৎস শহরের
তাপমাত্রা মাইনাস ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল।
ইয়াকুৎস শহরের অবস্থান রাশিয়ার রাজধানী মস্কো
থেকে প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার পূর্বে। শহরটি বিশ্বের শীতলতম শহরের একটি। ফলে প্রতিবছরই
এখানে শীত দেখতে এ সময় পর্যটকরা ভিড় করেন। তাদের একজন ড্যানিলা। তিনি বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে
শীত দেখতে এখানে এসেছি। আমি ভাগ্যবান, আমি তা দেখতে পেয়েছি। কেননা ডিসেম্বরে এখানে
সাধারণত এমন শীত পড়ে না।’
তিনি বলেন, আমি বেশ ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে
এসেছি। ফলে আমার তেমন ঠান্ডা লাগছে না। যদি আমি সঠিক জামাকাপড় না পরতাম তাহলে কয়েক
মিনিটের মধ্যে জমে হিম হয়ে যেতাম।’
সাইবেরিয়ার উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত সাখা
প্রজাতন্ত্রের কিছু এলাকার তাপমাত্রা মাইনাস ৫৫ ডিগ্রির নিচে নেমে গেছে। সাখার ওয়ম্যাকনে
মঙ্গলবার তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,
এই তাপমাত্রা ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে।
খবর: রয়টার্স।
মন্তব্য করুন
মার্কিন অর্থ ও বাণিজ্য বিষয়ক সাময়িকী ফোর্বস ২০২৩ সালের বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান ৪৬তম। এর আগে ২০২২ সালে শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪২তম। রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, গণমাধ্যম ও বিশ্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রভাবকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্বের সেরা ১০০ প্রভাবশালী নারীকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
বাবা প্রণব মুখার্জির স্মৃতিচারণ করে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি একটি বই লিখেছেন। ‘ইন প্রণব, মাই ফাদার: এ ডটার্স রিমেমবার্স’ নামক বইটি প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। তার এই বইটিতে তিনি তুলে ধরেছেন প্রণব মুখার্জির নানা অজানা তথ্য। সোনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে যাওয়া পর যখন গুঞ্জন শুরু হয় তাহলে কে হতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী- সেই সময়ে প্রণব মুখার্জিকে এই প্রশ্ন করেন শর্মিষ্ঠা। বইটিতে এ সংক্রান্ত তথ্যও উঠে এসেছে।
পশ্চিম তীরের সহিংসতাকারীদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল বা ফিলিস্তিন দু পক্ষেরই সহিংসতাকারী হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে বলে জানা গেছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে যারা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিদ্যমান ভিসা এবং ভবিষ্যতের আবেদন বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি এমনই ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। পশ্চিম তীরে সহিংসতার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী বা ফিলিস্তিনি দুপক্ষের জন্যই এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা।
বৈশ্বিক জলবায়ুর ভয়াবহ বিপর্যয়ের সাক্ষী হতে যাচ্ছে রাশিয়া। এ বছর শতাব্দীর সবচেয়ে বেশি তুষারপাত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ায়। গত সেপ্টেম্বর থেকেই শীত শুরু হয়েছে দেশটিতে। দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ঘরে বা তার নিচে বিরাজ করছে। তবে আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ভৌগোলিক অঞ্চল সাইবেরিয়ায় মাইনাস ৫৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সাইবেরিয়ার ইয়াকুৎস শহরের এই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।