ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সু’চি এবং কারাগার: এক লাটাই সুতোর গল্প

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২১


Thumbnail সু’চি এবং কারাগার: এক লাটাই সুতোর গল্প

সালটা ১৯৮৮। অসুস্থ মৃতপ্রায় মায়ের সেবার জন্য ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড থেকে দেশে ফিরে আসেন অং সান সু চি। মিয়ানমারের স্বাধীনতার জনক ও তুমুল জনপ্রিয় নেতা অং সানের কন্যা তিনি। তুমুল জনপ্রিয় এই সামরিক নেতা দেশকে ব্রিটিশ বাহিনীর হাত থেকে রক্ষার পথ তৈরি করে গিয়ে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু নিজে সেই স্বাদ গ্রহণ করতে পারেননি। ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সদ্য জন্ম নেওয়া দেশটি বেশিদিন গণতন্ত্রর স্বাদ উপভোগ করতে পারেনি, তার আগেই ১৯৬২ সালের ২ মার্চ দেশটিতে প্রথম সামরিক শাসনের শুরু হয়। সেই থেকেই অপার সম্ভাবনার দেশটি জ্বলছে বিদ্রোহের আগুনে। সেই আগুনে যেনো এক চামচ ঘি নয়, বরং আস্ত আগ্নেয়গিরি মতো বিস্ফোরণ ঘটান অং সান সু’চি দেশে ফিরে এসে। অসুস্থ মায়ের সেবা করতে এসে এক ছাত্র বিক্ষোভে অংশ নিলে সেখানে তার বাবার প্রতি মানুষের অপার ভালবাসা তাকে বিমোহিত করে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নিজ দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে বিদেশের সুখের জীবন, স্বামী, দুই সন্তান ছেড়ে মিয়ানমারেই অবস্থান করবেন। 

১৯৮৮ সালের সেই ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর পরই তিনি সামরিক জান্তার রোষানলে পড়ে যান। ১৯৮৯ সালে প্রথম তাকে বন্দি করে সামরিক সরকার। তার দেশের মানুষের প্রতি নিষ্ঠা আর একাগ্রতা তাকে বিশ্ব দরবারেও তুমুল জনপ্রিয় করে তুলে। গৃহবন্দী থাকা অবস্থাতেই ১৯৯১ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। তাকে অনেকেই এশিয়ার নেলসন মেন্ডেলার সাথে তুলনা করতে শুরু করে। মিয়ানমারে প্রবেশে পর তিনি বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় ২১ বছর গৃহবন্দী হিসেবে থেকে দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সর্বশেষ তিনি ২০১০ সালে গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হন। এর পর তিনি তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসিকে আরো শক্তিশালী করে তুলতে সচেষ্ট হন এবং ২০১৫ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিপুলভাবে জয় লাভ করে মিয়ানমারের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে সক্ষম হন।  

তবে তার সকল সংগ্রাম যেনো তিনি নিজ হাতে বাতাসে উড়িয়ে দেন, যখন ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির আরাকান অঞ্চলে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর বর্বর গণহত্যা পরিচালনা করে। সেই সময় তিনি অনেককে অবাক করে দিয়ে একেবারে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেন এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে এই অন্যায়কে সমর্থন যোগান। তার এই মনোভাবের আরো প্রকোপ বোঝা যায়, যখন তিনি রোহিঙ্গা হত্যা নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে ২০১৯ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে দাড়িয়ে যুক্তি প্রদর্শন করেন এবং কোন প্রকার গণহত্যা আরাকানে যে সংগঠিত হয়নি, তার ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তার এমন আচরণে বিশ্ববাসী বেশ বিস্ময় প্রকাশ করে কিন্তু তিনি তার মতের পক্ষে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যুক্তি প্রদর্শন করে যান। আরাকানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর এমন নির্যাতনে সেনাবাহিনীর পক্ষে কথা বলায় তিনি নিজ দেশের মানুষের কাছেই বেশ সমালোচিত হন। বিশ্ববাসীর কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকে। 

২০২০ সালের নভেম্বর মাস। সাধারণ নির্বাচনে ৭৯ শতাংশ ভোট পেয়ে তার দলে তখন সাজ সাজ রব। আবারও সরকার গঠনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঠিক এমন সময় দুধ-কলা দিয়ে কালসাপ পোষার মতো করেই যেন আচমকা বিপর্যয় নেমে এলো সুচির জীবনে। যে সেনাবাহিনীকে বাঁচাবার জন্য সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে নিজের অধ্যায়কে তিনি করেছিলেন প্রশ্নবিদ্ধ ও কালিমাময়, ঠিক এই সেনাবাহিনীই তাকে ক্ষমতা গ্রহণের ঠিক আগমুহূর্তে গ্রেপ্তার করে। সু’চিকে বন্দী করার পিছনে সেনাবাহিনীর যুক্তি ছিলো ২০২০ সালের নির্বাচনে তার দল ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। এজন্য তারা সে নির্বাচনের ফলকে অবৈধ বলে সারা দেশব্যাপী সু’চির দলের লোকদের ধরপাকড় শুরু করেন। এসময় সু’চির বিরুদ্ধে ১১ মামলা দায়ের করে সেনাবাহিনী। এই সবগুলো মামলার শুনানি চলছে সামরিক আদালতে। 

সু’চির বিরুদ্ধে আনিত মামলাগুলোর মাঝে আছে নির্বাচনে কারচুপি, জনসাধারণকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া, কোভিড নিয়ম ভঙ্গ করা, দুর্নীতি, গোপনীয়তা লঙ্ঘন সহ আরো অনেক।

আজ (৬ ডিসেম্বর) সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনসাধারণকে উস্কে দেওয়া এবং কোভিড নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে সামরিক আদালত। সু’চির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সবগুলো প্রমাণিত হলে তার কমপক্ষে যাবত জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে। 

একপলকে দেখে নেয়া যাক সু’চির জেল জীবন: 

২০ জুলাই, ১৯৮৯: বিরোধী এনএলডির সাধারণ সম্পাদক অং সান সু চিকে রাজ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে আটক করা হয় এবং রেঙ্গুনের ৫৪ ইউনিভার্সিটি অ্যাভিনিউতে তার মায়ের বাড়িতে গৃহবন্দী করা হয়।

২৭ মে, ১৯৯০: গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় এনএলডি নব্বইয়ের সাধারণ নির্বাচনে ৮২ শতাংশের মত আসনে জয় লাভ করে। তবে নির্বাচনের সে ফলাফল সামরিক বাহিনী অস্বীকৃতি জানায়। 

১০ জুলাই, ১৯৯৫: ছয় বছর গৃহবন্দী থাকার পর ৯৫ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন। 

৯ নভেম্বর, ১৯৯৬: রেঙ্গুনে অং সান সু চি এবং এনএলডি নেতা ইউ টিন উর সাথে একটি এনএলডি মোটর শোভাযাত্রায় প্রায় ২০০ জন লোকের দ্বারা আক্রমণের শিকার হন। বিশ্বাস করা হয় আক্রমণকারীরা সামরিক বাহিনীর সমর্থক ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (ইউএসডিএ) সদস্য। এই গোষ্ঠীটি সু’চির গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে। সামনে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা থাকার পরও তারা এই আক্রমণ প্রতিহত করতে কোন প্রচেষ্টা গ্রহণ করেনি। 

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০০: অং সান সু চিকে আবারো গৃহবন্দী করা হয়। যদিও তার কার্যক্রম ১৯৯৭ সালের শুরু থেকে কঠোরভাবে সীমিত করে দেওয়া হয়। 

৬ মে, ২০০২: সু’চিকে আবারো গৃহবন্দিত্ব থেকে পুনরায় মুক্তি প্রদান করে সামরিক জান্তা বাহিনী। এদিন তার বাড়ির সামনে হাজারো মানুষ ভিড় জমায় সমর্থন জানানোর জন্য। 

৩০ মে, ২০০৩: সরকার সমর্থিত একটি গোষ্ঠী আবারো সুচির উপর আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে চারজন এনএলডি সমর্থক বডিগার্ড নিহত হন। এরপর পরই সেনাবাহিনী তাকে পুনরায় গ্রেফতার করে ইনসেইন কারাগারে বন্দী করা হয়। আক্রমণের তিন মাস পর তাকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। 

২৫ মে, ২০০৭: সামরিক জান্তা অং সান সু’চির গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়ায়।

২৮ মে, ২০০৮: ১৯৭৫ সালের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা আইন মোতাবেক, "তার মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আদেশ" এর অধীনে অং সান সু চি'র আটকের আদেশ ২৭ মে, ২০০৯ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। 

১০ আগস্ট, ২০০৯: সামরিক জান্তার প্রধান, প্রেসিডেন্ট সিনিয়র জেনারেল থান শোয়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে একটি নির্দেশনা জারি করেন যে আদালতের রায় যাই হোক না কেন, সু চির সাজা অর্ধেক হবে এবং তাকে গৃহবন্দী অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

৪ ডিসেম্বর ২০০৯: সুপ্রিম কোর্ট অং সান সু চির গৃহবন্দি আদেশের আপিল বিবেচনা করতে সম্মত হয়।

১৮ জানুয়ারি, ২০১০: সুপ্রিম কোর্ট সু চির আইনজীবীদের বর্ধিত গৃহবন্দিত্বের আপিলের চূড়ান্ত যুক্তি বিবেচনা করে। আদালত ঘোষণা করে এটির বিষয়ে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত রায় প্রদান করবে।

১৩ নভেম্বর, ২০১০: গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান অং সান সু’চি।

অং সান সু চি   মিয়ানমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ইউক্রেনে পশ্চিমাদের সব এফ-১৬ বিমান ধ্বংস করার হুমকি পুতিনের

প্রকাশ: ১০:০৬ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ন্যাটোর কোনো দেশ নিয়ে রাশিয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই এবং তারা পোল্যান্ড, বাল্টিক দেশগুলো বা চেক রিপাবলিকে আক্রমণ করবে না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেইনে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান পাঠালে রুশ বাহিনীগুলো তা গুলি করে ভূপাতিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।

বুধবার রাশিয়ার স্থানীয় সময় রাতে দেশটির বিমান বাহিনীর পাইলটদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন প্রকাশিত ভাষণের অনুলিপি থেকে এমনটি জানা গেছে।

পুতিন বলেন, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো পূর্বে রাশিয়ার দিকে সম্প্রসারিত হয়েছে, কিন্তু কোনো ন্যাটো দেশে আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা মস্কোর নেই।

তিনি বলেন, এসব রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের কোনো আক্রমণাত্মক অভিপ্রায় নেই। আমরা আরও কিছু দেশে আক্রমণ করতে পারি- এমন ধারণায় পোল্যান্ড, বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর বাসিন্দারা ও চেকরাও ভয়ে আছে, কিন্তু এসব সম্পূর্ণ বাজে কথা, অর্থহীন প্রলাপ।

ইউক্রেনকে অস্ত্র, অর্থ ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে অভিযোগ ক্রেমলিনের। তারা বলছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক সম্ভবত কখনই এতটা খারাপ ছিল না।

পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এফ-১৬ জঙ্গি বিমান সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, এসব বিমান ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাতে পারবে না। যদি তারা এফ-১৬ সরবরাহ করে আর তারা এ নিয়ে কথা বলছে, সম্ভবত পাইলটদেরও প্রশিক্ষণ দেবে; এগুলোতে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আজ যেমন আমরা ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও মাল্টিপল রকেট লঞ্চারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ধ্বংস করছি তেমনি এসব আকাশযানগুলোও ধ্বংস করবো। এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক অস্ত্র বহনও করতে পারে।

পুতিন বলেন, তৃতীয় কোনো দেশের বিমানক্ষেত্র থেকে যদি এগুলোকে ব্যবহার করা হয় তাহলে অবশ্যই তারা আমাদের বৈধ লক্ষ্য হয়ে উঠবে, সেগুলো যেখানেই হোক না কেন।

বুধবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এফ-১৬ জঙ্গি বিমানের চালান ইউক্রেনে পৌঁছতে পারে। তার এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান পুতিন।

ইউক্রেন দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বাত্মক এক যুদ্ধে লড়াই করছে। দেশটি অনেক দিন ধরেই পশ্চিমা দাতাদের কাছে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান চেয়ে আসছে। বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডস দেশটিকে এফ-১৬ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আর ন্যাটো জোটের অনেকগুলো দেশ ইউক্রেনীয় পাইলটদের এসব যুদ্ধবিমান ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানিয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এর ফলে ১৯৬২ সালের কিউবা মিসাইল সংকটের পর থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সংকট সবচেয়ে গভীর পর্যায়ে রয়েছে।
 

ইউক্রেন   পশ্চিমা   এফ-১৬ বিমান   ভ্লাদিমির পুতিন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিরস্ত্র দুই ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর বুলডোজার দিয়ে বালুচাপা

প্রকাশ: ০৭:৫৫ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু দিন দিন হামলার ধরন নৃশংসতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে দখলদার বাহিনীর। ইসরায়েলি নৃশংশতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না নিরীহ মানুষ থেকে শুরু করে শিশুরাও। 

কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার হাতে এসেছে এক এক্সক্লুসিভ ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে সৈকতে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি পুরুষকে গুলি করে হত্যা করেছেন ইসরায়েলি সেনারা। পরে সামরিক বুলডোজার দিয়ে মরদেহ দুটি বালুচাপা দেন তারা। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার একটি সৈকতে এই ঘটনা ঘটে।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সৈকতে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি হাঁটছিলেন। একপর্যায়ে তাদের একজনকে বারবার একটি সাদা কাপড় নাড়তে দেখা যায়। কোনো হুমকি সৃষ্টি না করা সত্ত্বেও ওই দু'জনকে গুলি করে হত্যা করেন ইসরায়েলি সেনারা। পরে ইসরায়েলি সামরিক বুলডোজার এনে লাশ দুটি বালুচাপা দেন তারা।

এদিকে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটি বলছে, এই ঘটনা ইসরায়েলি ফ্যাসিবাদ ও অপরাধের মাত্রার আরও প্রমাণ হাজির করে। এটাই জায়নবাদী আচরণকে পরিচালিত করে।

আর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মুসলিম নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) বলেছে, গাজার সৈকতে দুই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি পুরুষকে হত্যা এবং বুলডোজার দিয়ে লাশ দুটি বালুর নিচে চাপা দেয়ার ঘটনার অবশ্যই জাতিসংঘকে তদন্ত করতে হবে।


ফিলিস্তিন   হত্যা   বুলডোজার   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজার সমুদ্র তীরে প্লট বুকিং দিচ্ছে ইসরায়েলিরা

প্রকাশ: ০৭:৪৯ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

ইসরায়েলে বসতি স্থাপনকারীরা গাজার সমুদ্র উপকূলে প্লট কিনছে। তারা অবরুদ্ধ উপত্যাকাটিও গ্রাস করতে চাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে ড্যানিয়েলা ওয়েইসিস (৭৮) নামের ইসরাইলি এক নারী জানিয়েছেন, গাজায় বসতি স্থাপন করতে যাওয়া ৫০০ ব্যক্তির তালিকা তার কাছে আছে।

তিনি জানিয়েছেন, তেল আবিবে বসবাস করা তার অনেক বন্ধুও নাকি গাজার সমুদ্র তীরে প্লট কিনতে আগ্রহী। তার মতে এই উপকূলীয় এলাকা সুন্দর। এর সোনালি বালু মনোমুগ্ধকর। সমুদ্র উপকূলে তাদের প্লট এরইমধ্যে বুক করা হয়ে গেছে। ড্যানিয়েলা ‌‘নাচালা’ নামের একটি উগ্রপন্থি বসতিস্থাপনকারী সংগঠনের প্রধান। দশকের পর দশক ধরে তিনি পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদি বসতি স্থাপনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। 

২০০৫ সালে ইসরায়েল গাজায় একতরফাভাবে বসতি স্থাপনকারীদের সরে যেতে নির্দেশ দেয়। তখন ২১টি বসতি ভেঙে ফেলা হয়েছিল এবং বসতির প্রায় ৯ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ইসরায়েলের সেনারা। এরপর থেকেই বসতি স্থাপনকারী আন্দোলনের পক্ষের অনেকেই গাজায় ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন লালন করে আসছে।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ৭ অক্টোবরের পর থেকে এখন ৩২ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। আহদের সংখ্যাও লাখ ছোঁয়ার পথে। এদিকে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অবরুদ্ধ উপত্যাকাটির ২০ লাখের মতো বাসিন্দা।


গাজা   সমুদ্র তীর   প্লট   বুকিং   ইসরায়েল  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাষ্ট্রে ছুরিকাঘাতে ৪ জন নিহত, আহত ৭

প্রকাশ: ০৭:৩৯ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাষ্ট্রের রকফোর্ডের উত্তর ইলিনয়ে ছুরিকাঘাতে ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ৭ জন।  এ ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

নিহতের পরিচয় জানা না গেলেও পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে একজন ১৫ বছর বয়সী তরুণী, ৬৩ বছর বয়সী এক নারী, ৪৯ বছর বয়সী এক পুরুষ এবং ২২ বছর বয়সী একজন তরুণ রয়েছেন।

রকফোর্ড পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ইউএসএটুডে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর ইলিনয়ে এক ব্যক্তির ছুরিকাঘাতে ৪ জন নিহত হয়েছেন।  এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৭ জন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় ২২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হামলা উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য জানা যায়নি। 

পুলিশ বলেছে, যে এলাকার বাসিন্দাদের ওপর হামলা হয়েছে, সেখানের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ওই এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্র   নিহত   আহত  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্ববাজারে আবারো বাড়লো স্বর্ণের দাম

প্রকাশ: ০৭:৩৩ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

চলতি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম আবারও বেড়েছে। বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি মার্কিন ট্রেজারি ইল্ড নিম্নমুখী হয়েছে। ফলে নিরাপদ আশ্রয় ধাতুটির দাম বেড়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।   

খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের আরও অর্থনৈতিক তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ, এর ওপরই নির্ভর করে সুদের হার কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। এর আগে ইউএস ট্রেজারি বন্ড ইল্ড নিম্নগামী হয়েছে। ফলে বুলিয়ন বাজার আরও চাঙা হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে শুক্রবার (২৮ মার্চ) স্পট মার্কেটে বৈশ্বিক বেঞ্চমার্ক স্বর্ণের মূল্য সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি আউন্সের দর স্থির হয়েছে প্রায় ২১৯৫ ডলারে। গত ২২ মার্চ যা ছিল ২১৬৭ ডলার। সেই হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে মূল্যবান ধাতুটির দাম ঊর্ধ্বগামী হয়েছে ২৮ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩০৭৪ টাকা।

বিশ্ববিখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান টেস্টিলাইভের বৈশ্বিক সামষ্টিক অর্থনীতির প্রধান ইলিয়া স্পিভাক বলেন, সুদের হার কমানোর আভাস দিয়েছেন ফেডের নীতি-নির্ধারকরা। তবে বিশ্বব্যাপী এখনও ভূ-রাজনৈতিক উদ্বেগ রয়ে গেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত বিদ্যমান। তাতে স্বর্ণ সমর্থন পাচ্ছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ধাতুটির মূল্য বাড়তি রয়েছে।   

গত সপ্তাহে ফেড সংকেত দেয়, ২০২৪ সালে তিনবার সুদের হার কমাতে পারে তারা। এরপর থেকেই প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রা ডলার চাপে পড়েছে। একই সঙ্গে স্বর্ণের বিশ্ববাজারে ঔজ্জ্বলতা বেড়েছে।    


বিশ্ববাজার   স্বর্ণ   যুক্তরাষ্ট্র   মুদ্রা   ডলার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন