আন্তর্জাতিক সংস্থা জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতি বছরই ২৬ জুন সারা বিশ্বে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ পালিত হয়ে থাকে। কিন্তু দিবস পালন করাই কি আর মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষা করতে পারবে?
মহামারী কভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে ধূমপান ও মাদকের ঝুঁকিপূর্ণতা সম্বন্ধে বরাবরই ঘোষণা এসেছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডব্লিওএইচও(হু) থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে, ধূমপায়ী বা তামাক এবং মাদকসেবীরা নানারকম স্বাস্থ্য সমস্যাসহ জটিল ও কঠিন রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে বিধায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির ঝুঁকিতে শীর্ষ অবস্থান করছে কারন ধূমপান করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে তোলে। করোনাভাইরাস যেমন আমাদের ফুসফুসকে সংক্রমণ করে তেমনি ধূমপান বা ই-সিগারেট কিংবা সিসা সমানভাবে আমাদের ফুসফুসকে সংক্রমণ করে। ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও ধূমপান বা ই-সিগারেট, গাঁজা, হেরোইন, কোকেইন ও সিসার মাধ্যমে ফুসফুস সংক্রমিত হয়। সে কারণে তাদের রোগাক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভেন্টিলেটরে থাকার ঝুঁকি অন্য অধূমপায়ীদের তুলনায় অনেকগুণে বেশি।
শুরুর দিকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস এর তেমন একটা প্রকোপ না থাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী কেহই তেমন একটা আমলে নেয় নি, মার্চের শেষের দিকে মিরপুরে যখন প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হলো তারপর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আনুষ্ঠানিক ভাবে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।এমতাবস্থায় মাদকাসক্ত তরুন যুবকরা আতংকিত হয়ে যায় এবং নিজেদের যতটা সম্ভব ধুমপান, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য সেবন কমিয়ে আনে। লকডাউনের কারনে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা এমনকি সাধারন মুদির দোকান(নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খোলা থাকবে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য ঘোষণা করা হয়৷ তার সাথে সর্বপ্রকার জনসমাগম নিষিদ্ধ করে সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার জন্যে কঠোরভাবে নির্দেশ আসে সরকার থেকে এবং স্থানীয়ভাবে অনেক স্থানে এলাকার লোকজন মদ্য, সিগারেট ও মাদকদ্রব্য বিক্রয় হয় এমন দোকানগুলোকে প্রশাসনের সাহায্য বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় একটি দীর্ঘ সময় ধরে ধমপান ও মাদকদ্রব্য বেচাকেনাও বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও মাদকদ্রব্যের অবৈধ প্রবেশের ফলে আমাদের তরুণ যুবসমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ৪৯% ভাগ মানুষ বয়সে তরুণ। দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। প্রতিনিয়ত তাদের মাঝে মাদকাসক্তের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে যা মাদক ব্যবসায়ীদের আরো উৎসাহী করছে। সরকার ইতিমধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে এবং প্রধানমন্ত্রী নিজে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- মহামারীর কারণে বেশ কয়েকটি দেশে নির্দিষ্ট কিছু মাদকের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক যে কভিড-১৯ করোনা মহামারীর কারণে অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রীর মতো মাদক সরবরাহের ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলেছে। এরই মধ্যে অনেক দেশে হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল সহ আমদানিকৃত মাদকদ্রব্যাদির স্বল্পতা দেখা দিয়েছে সেসব দেশে এখন এমন মাদকদ্রব্য ব্যবহার করা হচ্ছে যেগুলো স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত যা শরীরের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। সবচেয়ে দুঃখজনক ও ভয়ঙ্কর চিত্র হচ্ছে, এসব মাদকদ্রব্য গ্রহণকারী শতকরা ৮৫ ভাগই তরুণ যুবসমাজ। মাদক স্বল্পতার ফলে মাদকাসক্ত যুবকরা যেমন ধীরেধীরে নিজেদের সাধারণ জীবনযাপনে ফিরছে তেমনি মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারকারীরা নানান ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, তার মধ্যে কিডনি, লিভার ছাড়াও মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশে গত বছরের প্রথম দিন থেকেই সারা দেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলমান রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলবে। সম্প্রতি সরকারের একটি সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাতেই হয়, বিষয়টি হচ্ছে, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে ঢোকার আগে প্রার্থীদের মাদক পরীক্ষা বা ডোপ টেস্ট করা হবে। যাদের ডোপ টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ হবে, তিনি চাকরির জন্য অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’(২৫ জুন,২০২০ইং) এর তথ্য মতে দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ লাখ। মাদকসেবীদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ যার মধ্যে নারীরাও রয়েছে, ধারণা করা হয়, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ১ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। দিনকে দিন মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কভিড-১৯ এর মন্থরতা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে একটি পজিটিভ ভুমিকা লক্ষনীয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগ এর পরিচালক মুজিবুর রহমান পাটোয়ারীর ভাষ্যমতে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীন গবেষণায় জানা যায় করোনাকালীন সময়ে পরিবহন বন্ধ থাকায় মাদকদ্রব্যের ঘাটতির কারনে এপ্রিল ও মে মাসে মাদকাসক্তের তীব্রতা অনেকটা কম ছিলো। গণপরিবহন খুলে দেয়ায় পরবর্তী সময়ে তা আবার বৃদ্ধি পেয়েছে।
করোনা পরবর্তী সময়ে মাদকের তীব্রতা স্থিতিশীল এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে অধিদপ্তরের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লকডাউনের পর গত আগষ্ট মাসে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ মামলা দায়ের করা হয়। তাই পরিস্থিতি কিছুটা সাভাবিক রয়েছে, এই ধারাবাহিকতা অব্যহত রেখে ছোট পরিসরে এওয়ারনেস প্রোগ্রাম করে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও যুবকদের কাছে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে মাদকের কুফল নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্লোগান ও পোস্টারিং এর মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন তারা।
তিনি আরো বলেন, মাদকের প্রভাব কমিয়ে আনতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর, পুলিশ ও সাংবাদিকদের পাশাপাশি সমাজের ইনফ্লুয়েনশিয়াল ব্যাক্তিরা যদি এগিয়ে আসেন ইনশাআল্লাহ তাহলে আমরা ভালো থাকতে পারবো। তিনি জানান, চট্টগ্রামের অন্যতম মাদক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বাকলিয়া সহ বেশকিছু এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ইতিমধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর ও পুলিশের সহযোগিতায় “মাদক ছাড়তে হবে, নাহয় এলাকা ছাড়তে হবে” এই স্লোগান সামনে রেখে সামাজিকভাবে মাদকবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
পরিশেষে সকল অভিভাবকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “যুব সমাজকে মাদকের এই ভয়াবহ আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হলে সকল গার্ডিয়ানদের উচিৎ তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা। পরিবার থেকে সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা না হলে সমাজে মাদক নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।”
বাকলিয়া থানাধীন ১৯নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একজন কলেজ পড়ুয়া যুবক(২০) বলেন, বন্ধুদের পাল্লায় পরে প্রথম সখের বসে তিনি ই-সিগারেট খাওয়া শুরু করে পরে পকেট খরচের টাকা দিয়ে ইয়াবা ও মদ্য পান করে। তিনি যখন জানতে পারেন ধূমপায়ী ও মাদকাসক্তের করোনা সংক্রমণ এর ঝুঁকি বেশি এবং তা একজনের হলে তার পরিবারের লোকেরও হয় তারপর থেকে তিনি বাসা থেকে আর বের হয়নি প্রথম প্রথম লকডাউনে বাসায় বন্ধি থেকে লুকিয়ে কিছুদিন ধুমপান করলেও একটা সময় ধুমপান ছেড়ে দিতে তিনি বাধ্য হয়, এখন তিনি সম্পূর্ণ সাধারণভাবেই লেখাপড়ায় মনোযোগ দিচ্ছে। তার সাথে থাকা অন্য একজন(২১) বলেন, নিজের পরিবারের চেয়ে কখনো কিছু বড় হতে পারে পারে না, সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে জেনে তার বাবা তাকে মোটর বাইক কিনে দিয়েছে। ইয়াবা ও গাঁজা সেবনকারি মোঃ রুবেল(২৮) সাথে কথা বলে জানা যায়, ছোট বেলা থেকেই তিনি এসব মাদকদ্রব্য সেবন করে আসছে, অনেক চেষ্টা করেও তিনি তা ত্যাগ করতে পারেন নি তাই গত দেড় বছর আগে তাকে পরিবার থেকে বের করে দেওয়া হয়। এখন সে রিক্সার গ্যারেজ এ থাকে তার সাথে আরো অনেকেই এভাবে ইয়াবা সেবন করে নিজেদের মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছে। ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে আগামী প্রজন্মকে, সাথে তাদের পারিবার পরিজনকেও।।
নামঃ মোঃ আরিফুল ইসলাম
বয়সঃ (১৯)
কলেজঃ জে. এম. সেন কলেজ(বেচ-২০২০)।
কোতোয়ালী, চট্টগ্রাম
মন্তব্য করুন
৩৫
দশমিক ৪ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্ব নিতে আগ্রহী। আর
নীতি পরিবর্তন হলেই কেবল ৪৬
দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান।
বর্তমান
জাতীয় প্রেক্ষাপটে ‘তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক এক জরিপের ফলাফলে
উঠে এসেছে এ তথ্য। এসডিজি
বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আয়োজন শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে
যুব সম্মেলনে এ তথ্য জানানো
হয়।
ফলাফল
উপস্থাপন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান
সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম
খান।
জরিপের
জন্য চলতি বছরের সেপ্টেম্বর
ও অক্টোবর- এই দুই মাসে
পাঁচ হাজার ৭৫ জনের মতামত
নেওয়া হয়। এরমধ্যে ৫৩
শতাংশ শিক্ষার্থী, ৩৮ দশমিক ৩
শতাংশ চাকরিজীবী ও ২৮ শতাংশ
বেকার। এছাড়া ৭৮ দশমিক ৩
শতাংশ পুরুষ, ২১ দশমিক নারী
ও শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ তৃতীয়
লিঙ্গের জনগোষ্ঠী। এই পাঁচ হাজার
জনের মধ্যে ৫৯ দশমিক ২
শতাংশের বাস শহরে আর
৪০ দশমিক ৮ শতাংশের বসবাস
গ্রামে।
জরিপের ফলাফলে
জানানো হয়, ৬৭ শতাংশ
তরুণ কোনো রাজনৈতিক প্রতিনিধির
সঙ্গে কথা বলেননি। ৭৯
দশমিক ১ শতাংশ তরুণ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ও রাজনীতি
সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারেন।
৪৮ দশমিক ১ শতাংশ খবরের
কাগজের মাধ্যমে ও রাজনৈতিক আলাপ
সম্পর্কে জানতে পারেন। একইভাবে ৪১ দশমিক ৭
শতাংশ টেলিভিশন ও রেডিওর মাধ্যমে
এবং ৭ দশমিক ৭
দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ
খবর সম্পর্কে জানতে আগ্রহী নন।
জরিপে
উল্লেখ করা হয়, ৫৩
দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ
এখন পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি।
যাদের মধ্যে ১৮-২৫ বয়সীর
সংখ্যা ৭৬ দশমিক ৪
শতাংশ, ২৫-২৯ বয়সীর
সংখ্যা ৩৪ দশমিক ৫
শতাংশ ও ৩০-৩৫
বয়সীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ। ৪৬
শতাংশ তরুণ কোনো স্থানীয়
নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি।
৩৫ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ
রাজনীতি ও ছাত্র রাজনীতিতে
আগ্রহী নন।
জরিপে
অংশ নেওয়া ৮৯ দশমিক ৪
শতাংশ ভোটার হয়েছেন। ৩৬ দশমিক ৪
শতাংশ তরুণ তাদের মতামত
প্রকাশের জন্য নিগ্রহের স্বীকার।
অপরদিকে
৫১ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণ,
যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তারা মত
প্রকাশের জন্য নিগ্রহের স্বীকার
হয়েছেন। ১৯ দশমিক ৩
শতাংশ তরুণ মনে করেন
সিদ্ধান্ত গ্রহণে তরুণদের মতামত নেওয়া হয় না।
৫৬
দশমিক ২ শতাংশ তরুণ
মনে করেন দুর্নীতি ও
মত প্রকাশের স্বাধীনতার অভাব উন্নয়নে বড়
চ্যালেঞ্জ। ৫৫ দশমিক ৪
শতাংশ তরুণ মনে করেন
মানসম্মত শিক্ষা ও দক্ষতার অভাব
রয়েছে।
এছাড়া
১৮ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ
বিদেশে পুরোপুরিভাবে চলে যেতে চান।
তবে ৫৩ দশমিক ২
শতাংশ তরুণ দেশেই থাকতে
চান। ৩৫ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান।
আর নীতি পরিবর্তন হলে
৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ
দেশের নেতৃত্বে অংশ নিতে চান।
সেন্টার
ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও নাগরিক
প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
বলেন, দ্রুততার সঙ্গে আমাদের সমাজে যুবদের সংখ্যা ও অনুপাত বেড়ে
চলেছে। এই যুব সমাজের
আশা আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা কার্যকর
করার ক্ষেত্রে আমরা কতটা সফল।
এই জিজ্ঞাসা বার বার আসছে।
সামনে নির্বাচন। সেখানে আমরা যুব সমাজের
অংশগ্রহণ দেখতে চাই।
তরুণ সিপিডি জরিপ দায়িত্ব নেতৃত্ব দৃষ্টিভঙ্গি
মন্তব্য করুন
দেশের নদী দখলদারদের উচ্ছেদ ও নদীর প্রকৃত সংখ্যা যাচাই করে তালিকা প্রনয়ণের দাবিতে তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেছেন রাকিব হাসান (২৪)। রাকিব হাসান কক্সবাজারের মহেশখালীর শাপলাপুরের ষাইটমারা গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। "দুরত্ব ও সীমাবদ্ধতাকে পরাজিত কর" শিরোনামে গত ২০ এপ্রিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বাংলাবান্দা জিরোপয়েন্ট থেকে তিনি এ যাত্রা শুরু করেন। শেষ করবেন টেকনাফ জিরো পয়েন্টে গিয়ে। আগামী ১০ মে তিনি পর্যন নগরী কক্সবাজারে পৌঁছবেন। ১১ মে ভোর ৬ টায় টেকনাফের উদ্দেশ্যে মেরিন ড্রাইভ সড়ক পথে যাত্রা করবেন। ১২ মে অর্থাৎ ২৪ তম দিনে তিনি টেকনাফ গিয়ে যাত্রা বিরতি শেষ করবেন।
এই প্রতিবেদন লেখা অব্দি তিনি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার চকরিয়া সীমান্তবর্তী আজিজ নগরে অবস্থান করছেন। পায়ে হেটে এখন পর্যন্ত সে পথ অতিক্রম করেন ৮৪৫ কিলোমিটার। ভোর ৬টা থেকে শুরু করে রাত ৮/৯টা পর্যন্ত হাঁটেন তিনি। রাতে যেখানে হাঁটা বন্ধ হয়ে যেত, ওই এলাকায় পরিচিত কারও বাসায় পরিচিত না থাকলে হোটেলে, মসজিদে, পেট্রোল পাম্প এর রেস্ট হাউজে রাতযাপন করেন। দূরত্ব ভীতির কারনে কেউ সঙ্গী না হওয়ায় একাকী সে পদযাত্রা শুরু করে বলে জানায় তিনি। রাকিব আরও জানান, এটাই তার প্রথম দীর্ঘ একাকী পদযাত্রা। দুরত্ব ও দিনের হিসেব করে তিনি ২৪ দিনে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন বলে আশা করেন। এবং তিনি একাই ১০০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রাকিব জানান, তিনি একাকী পদযাত্রায় বিচলিত নন। বরং তিনি দেশের নদীর দখল ও নদীর বিলীন হয়ে যাওয়া নিয়ে বিচলিত। তিনি আরও জানান,, নদী আমাদের দেশের রক্তনালীর মত। দেশে প্রবাহমান সমস্ত নদী এখন শুকিয়ে গেছে। আগামি দশকের মধ্যে অনেক নদী হয়তো মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যাবে। যদি এই সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নদী রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে দেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়বে। এতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর বিপর্যয় নেমে আসবে। যা তাকে উদ্ধিগ্ন করেছে। তাই তিনি সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েই পদযাত্রার পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি আরো জানান, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নদী রক্ষায় জনসচেতনতা বাড়ানোর ও চেষ্টা করছেন তিনি।
পদযাত্রার সীমাবদ্ধতার প্রশ্নে রাকিব জানান, প্রথম কয়েকদিন হাটার পর পা ব্যথা ও ফুলে গেলেও এখন তা সুস্থ হয়ে গেছে। এবং তিনি মনোবলের উপর জোর দিচ্ছেন। এতে করে তিনি তার গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
বাঁচতে হলে মহাশয়, রক্ষা করুন জলাশয়। বাঁচলে নদী বাঁচবে দেশ,আলোর হবে পরিবেশ। দখল দূষণ বন্ধ করি/নদীর মতন জীবন গড়ি। এ স্লোগানকে সামনে রেখে নদী রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহবান সচেনতন মহলের প্রতি।
বাংলাদেচ পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) কক্সবাজার শাখার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী জানান, নদী, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য বাঁচাতে রাকিবের একক আন্দোলন ও প্রতিবাদ অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য যে বার্তা দিচ্ছেন এতে নদী ও পরিবেশ বাঁচাতে নতুন প্রজন্ম উদ্বুদ্ধ হবেন।তার এই কাজে সবার সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন। সেই সাথে নদী রক্ষায় দেশবাসীকে সচেতন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, নদী,পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারীদের কঠোর আইনের আওতায় আনতে তাঁর এ পদ যাত্রা যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ২৪ বছরের এ যুবক একজন শিক্ষার্থী। তাঁর দেশপ্রেম, অদম্য সাহস ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন স্মরণে রাখবে।
মন্তব্য করুন
(পর্ব-১)
স্বপ্নের নেপাল। হিমালয়ের কন্যা সে। সাদা সুউচ্চ পর্বত একে তুষারের শুভ্রতা দিয়ে আচ্ছন্ন করে রাখে গভীর আর মৌন সৌন্দর্যে। আর তাই যারা পাহাড় ভালোবাসেন, উচ্চতাকে ভালোবাসেন তাদের কাছে হিমালয় হলো স্বর্গ
এক একটা পাহাড় জয় করা যেনো পাহাড়প্রেমীদের কাছেও স্বপ্নের মতো। সেই স্বপ্নপূরণ করতে বাংলাদেশের থেকে যাত্রা করেন মোহাম্মদ তানভীর আলম। ছুয়ে আসেন ইয়ালা পিকের শিখর। ল্যাংটাং রিজিয়নের ইয়ালা পাহাড়ের উচ্চতা ৫৫২০ মিটার বা প্রায় ১৯ হাজার ফুট। সেই গল্প ও নেপাল পৌছানোর পর তার দিনলিপি নিয়ে লিখেছেন আমাদের কাছে। তার গল্প আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো দুইটি ভিন্ন পর্বে। আজকের পর্বে থাকছে সেই গল্পের একাংশ।
৩০.১০.২২, দিন ১
সকাল ৬ টায় বাসা থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার মাধ্যমে অভিযানের যাত্রা শুরু। কোন গাইড ছাড়া নিজের প্রচেষ্টায় নেপালের লাংটাং রিজিওনে ৫,৫০০ মিটার উচ্চতার ট্রেকিং চূড়া ইয়ালা পিক সামিট এই অভিযানের উদ্দেশ্য।
১২:৩০: ত্রিভূবন এয়ারপোর্ট, কাঠমান্ডু থেকে বের হয়ে হোটেল এর উদ্দেশ্যে ট্যাক্সি নিলাম। হোটেল ফ্লোরিড আজকের অস্থায়ী ঠিকানা। হাতে সময় না থাকায় ঢাকা থেকেই হোটেল বুকিং করে এসেছিলাম।যদিও রূম পছন্দ হয়নি কিন্তু ওদের নীচতলায় যে রেষ্টুরেন্ট তার জন্য হোটেল এর পিছনে খোলা উঠানে বসার ব্যবস্থাটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ওদের রিসেপশনে ছোট্ট একটা লাইব্রেরী বা বইয়ের সংগ্রহ আছে। হোটেল এর লোকেশনটা অবশ্য অনেক ভালো, কাঠমান্ডুর প্রাণকেন্দ্র থামেলের জেড স্ট্রীটে এটির অবস্থান। এবং হোটেল মালিক মিঃ দিপক খুবই আন্তরিক। বাজেট হোটেল হিসেবে হোটেলটি ভালো।
সন্ধ্যায় কিছু প্রয়োজনীয় কেনাকাটা শেষ করে ও স্লিপিং ব্যাগ ভাড়া নিয়ে রূমে ফিরে ব্যাকপ্যাক গোছানো শুরু করলাম। কালকে সকালে বাস ধরতে হবে।
৩১.১০.২২, ২য় দিন
গন্তব্য সায়াব্রুবেসি