কালার ইনসাইড

একুশে যত আলোচিত ওয়েব সিরিজ


প্রকাশ: 31/12/2021


Thumbnail

২০২১ সাল ভালো-মন্দ মিলিয়ে-ই কেটেছে। তাই সারাবিশ্ব এখন নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায়। করোনার কারণে সিনেমা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর এ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে কিংবা সিনেমা প্রেমীদের ধরে রাখতে আগমন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের। এখন এই ওটিটির রেশ এতটাই প্রবল যে, সিনেমার চেয়েও ওয়েব সিরিজ দেখতে বেশি পছন্দ করছেন দর্শকরা। 

চলতি বছর ওটিটিতে এ রকম অনেক ওয়েব সিরিজ এসেছে, যা দর্শকদের হৃদয় ও মন কেড়ে নিয়েছে। বছরজুড়েই আলোচনায় ছিল ওয়েব সিরিজ। বছর শেষে স্মরণ করা যাক আলোচিত সিরিজগুলা।

মহানগর

দেশীয় ওয়েব সিরিজের মধ্যে চলতি বছরের আলোচিত ওয়েব সিরিজের মধ্যে অন্যতম ‘মহানগর’। গল্প, অভিনয়, নির্মাণ- সবদিক থেকে আলোচিত ছিল এই ওয়েব সিরিজটি। এটি নির্মাণ করেছেন আশফাক নিপুণ। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- মোশাররফ করিম, মোস্তাফিজুর নূর ইমরান, শ্যামল মাওলা, শাহেদ আলী, জাকিয়া বারী মম প্রমুখ। এই ওয়েব সিরিজে উঠে আসে মহানগর ঢাকার অপরাধ জগতের একটি খণ্ডচিত্র। এটি প্রচারের পর ভূয়সী প্রশংসা করেন দর্শক।

মরীচিকা

শিহাব শাহীন পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘মরীচিকা’ অবমুক্ত হওয়ার পর বেশ প্রশংসিত হয়। আরও বেশি বাহবা কুড়ান খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করা টিভি পর্দার অন্যতম শীর্ষ অভিনেতা আফরান নিশো। অভিনয়ের পাশাপাশি এখানে তার লুক, সংলাপ ও পারফরমেন্স বেশ আলোচিত হয়। নিশো ছাড়াও এখানে অভিনয় করেছেন- সিয়াম আহমেদ, মাহিয়া মাহি, জোভান প্রমুখ।

জানোয়ার 

বছরের শুরুতেই রায়হান রাফী হুলুস্থুল বাঁধিয়ে ফেলেছিলেন প্রথম ওয়েব ফিল্ম দিয়ে। সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই গল্প সাজানো হয়েছে। এই ওয়েব ফিল্মের বড় প্রাপ্তি রাশেদ মামুন অপুর প্রত্যাবর্তন, বলা যায় ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে ফেলেছেন। আরও ছিল তাসকিন রহমান, এলিনা শাম্মি, রাহুল, ফরহাদ লিমনরা। 

খাঁচার ভিতর অচিন পাখি

রাফি এই বছর ওয়েবে বেশ সক্রিয় ছিলেন। তার নির্মিত ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ সাহসী কাজ। তমা মির্জা, ফজলুর রহমান বাবু থেকে ইন্তেখাব দিনার, সুমন আনোয়ারেরাও ভালো অভিনয় করেছেন।

বলি

বিজ্ঞাপন নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্তের প্রথম ওয়েব সিরিজ। সোহরাব-রুস্তমের উপাখ্যান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এক দ্বীপে সাজিয়েছেন গল্প। ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নের সিরিজের শুরু থেকেই ছিল চমক জাগানিয়া, ট্রেলারেও ছিল সেই আভাস। তবে সেই অনুযায়ী প্রত্যাশা মিটায়নি। প্রথম কয়েক পর্ব ভালো লেগেছিল। আনারকলি চরিত্রটার প্রতি সুবিচার করা হয়নি, সোহানা সাবাও সেই অনুযায়ী অভিনয় দেখাতে পারেননি। মুখ্য চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরীর খল অভিনয় ভালো লেগেছে, নাসিরউদ্দিন খানকে পাওয়া গেল অন্যরকম। বরং এত তারকার ভিড়ে নবীন সাফা কবির, মৌসুমী মৌরা ভালো করেছে। ইরেশ যাকের, লুৎফর রহমান জর্জ মোটামুটি, সোহেল মণ্ডল ভালো অভিনয় করলেও চরিত্রটা আরও বিকাশ দাবি করে। চোখ জুড়ায় তাহসিন রহমানের সিনেমাটোগ্রাফি আর তানজীর তুহিনের শিরোনাম সংগীত অন্যমাত্রা এনে দেয়।

লেডিজ অ্যান্ড জেন্টেলম্যান

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম ওয়েব সিরিজ, স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। সেই তুলনায় প্রত্যাশা মিটেছে কম, তবে ভালোর তালিকায় রাখা যায়। সিরিজের সেরা প্রাপ্তি তাসনিয়া ফারিণের অভিনয়। আফজাল হোসেন  অনেক বছর পর আলোচনায় এলেন। হাসান মাসুদ, মারিয়া নূর দুজন  বেশ ভালো করেছেন, বাকিদের যথাযথভাবে তেমন পাওয়া যায়নি, পার্থ বড়ুয়া, মোস্তফা মনোয়ার, ইরেশ যাকেরও ছিলেন। এক নারীর শ্লীলতাহানির গল্প, সেইদিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ‘পরবাসী’ গানটা শুনতে ভালোই লাগে।

ইউটিউমার

আদনান আল রাজীব ওয়েব ফিল্ম বানাচ্ছেন, এটাই ছিল দর্শকদের জন্য যথেষ্ট। সাম্প্রতিককালের উঠতি কিছু তারকা আর স্যাটায়ার করে বানানো এই ওয়েব ফিল্ম শুরু থেকেই ছিল উপভোগ্য। সিরিয়াস সব কাজের ভিড়ে কমেডি হিসেবে এটা আলাদা মাত্রা এনে দিতে পারতো। কিন্তু এটাও শেষ পর্যন্ত হতাশই করে। আদনান আল রাজীবের আগের কাজগুলোর তুলনায় পিছিয়ে। প্রীতম হাসান গানের মানুষ, অভিনয় স্বাভাবিকভাবেই খুব ভালো করবেন না। গল্পের সঙ্গে খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও ভালো লেগেছে শরীফ সিরাজের অভিনয়।  আর জিয়াউল হক পলাশই ছিলেন বরং মন্দের ভালো।

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’

চার তরুণের সেন্ট মার্টিন বেড়াতে যাওয়ার গল্প নিয়ে নেটওয়ার্কের বাইরে বছরের সবচেয়ে আলোচিত বাংলা সিনেমা। বাংলাদেশের স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তির আগেই ছবির দুটি গান ভাইরাল হয়ে যায়। ছবি মুক্তির পর প্রতিক্রিয়ায় অনেক দর্শককেই বলতে শোনা গেছে, ছবির এমন হৃদয়বিদারক সমাপ্তি ছিল অপ্রত্যাশিত। তরুণ নির্মাতা মিজানুর রহমানের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান, খায়রুল বাসার, শরিফুল রাজ, জুনায়েদ বোগদাদী, অর্ষা, ফারিণ, তাসনুভা তিশা, তুষি প্রমুখ।

এদিকে শিবব্রত বর্মনের উপন্যাস অবলম্বনে অমিতাভ রেজার প্রথম ওয়েব ফিল্ম ‘মুন্সিগিরি’। মাসুদ মুন্সীকে কেন্দ্র করে এই ওয়েব ফিল্ম, খুব সম্ভবত পরবর্তীতে এর আরও সিক্যুয়েল বেরোবে। খুব ভালো না হলেও চলনসই বলা যায়। চঞ্চল চৌধুরী এমনিতেই ভালো অভিনয় করেন, তবে ব্যতিক্রম কিছু পাওয়া যায়নি। পূর্ণিমাকে অনেক দিন পরে দেখাটা বেশ চমকপ্রদ হলেও তাকে ভালো ব্যবহার করতে পারেননি নির্মাতা। আলো ছড়িয়েছেন শবনম ফারিয়া।

অন্যদিকে বছর শেষে আইএমডিবি ১০টি শীর্ষ ভারতীয় ওয়েব সিরিজের তালিকা প্রকাশ করেছে। সে তালিকায় চোখ রাখা যাক-

১. অ্যাসপিরেন্টস

২. ধিন্ডোরা

৩. দ্য ফ্যামিলি ম্যান

৪. দ্য লাস্ট আওয়ার

৫. সানফ্লাওয়ার

৬. কেনডি

৭. রয়

৮. গ্রহণ

৯. নভেম্বর স্টোরি

১০. মুম্বাই ডায়েরিস ২৬/১১


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭