ইনসাইড বাংলাদেশ

পাকিস্তানের চেয়েও কি দুর্নীতিবাজ বাংলাদেশ?


প্রকাশ: 25/01/2022


Thumbnail

প্রতি বছরের মত এবারো জার্মানির বার্লিন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের একটি তালিকা প্রকাশ করে। তাদের প্রকাশিত দুর্নীতির ধারণা সূচকের (সিপিআই) ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৪৭ নম্বরে। গতবার এ তালিকায় বাংলাদেশর অবস্থান ছিল ১৪৬ নম্বরে। ১০০ ভিত্তিতে এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর গত তিন বছরের মত এবারও ২৬। এই স্কেলে শূন্য স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতার ধারণায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ১০০ স্কোরকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত বা সর্বোচ্চ সুশাসনের দেশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এ তালিকায় ২৮ স্কোর নিয়ে ১৪০তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান।

শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত দেশ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাংলাদেশও তার বিপরীত নয়। কিন্তু মজার ব্যাপার এই যে, দুর্নীতি এবং অরাজকতার রোল মডেল হিসেবে যেখানে পাকিস্তান পুরো বিশ্বের কাছে প্রতিষ্ঠিত সেখানে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত তালিকায় পাকিস্তানের অবস্থান বাংলাদেশের উপরে। বাংলাদেশের থেকেও অধিক দুর্নীতিগ্রস্ত পাকিস্তান যদি তালিকায় বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকে তাহলে এমন তালিকা কতটা গ্রহণযোগ্য সে প্রশ্ন আসাটা অস্বাভাবিক নয়।

পাকিস্তানে যখন যারা ক্ষমতায় আসে তারাই সম্পদের যে বিপুল পাহাড় গড়ে তোলে। বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ আজ পাকিস্তানের দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, রাজনীতিবিদদের লুটপাটের কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি আজ ধ্বংস হয়ে গেছে। পাকিস্তানের টাকার মূল্যও আজ বাংলাদেশের অর্ধেক। অর্থনৈতিক এবং উন্নয়ন প্রতিটি ক্ষেত্রেই আজ পাকিস্তান বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে। এরকম একটা দেশ যখন বাংলাদেশের ঊর্ধ্বে থাকে তখন টিআই এর গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন উঠা অযৌক্তিক নয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতেও দুর্নীতির কথাও ব্যাপকভাবে বলা হচ্ছে। স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে চাকরি পাওয়া এমন কোথাও নেই যেখানে দুর্নীতি হয় না। ভারতের সুশীল সমাজ গণমাধ্যমে বলছে, ভারতে দুর্নীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেই ভারত ৪০ পয়েন্ট নিয়ে ৮৫ তে অবস্থান করছে। তাহলে ভারতের চেয়ে কি বাংলাদেশের দুর্নীতি বেশি? এমন তথ্য কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?

টিআই এর এই তালিকায় বাংলাদেশের উপরে থাকা অনেক দেশের বড় বড় রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ হয় প্যান্ডোরা পেপারসে। ব্রাজিল এবং পানামার মন অর্থনৈতিক বৈষম্য ও জালিয়াতিতে শীর্ষে থাকা দেশগুলোও টিআই এর এই তালিকার বাংলাদেশের থেকে এগিয়ে। অন্যদিকে ইরানের মতো দেশ যারা কিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেও টিআই এর এই তালিকায় ১৫০তম অবস্থানে রয়েছে। তাই টিআই এর এই তালিকার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭