কালার ইনসাইড

নির্বাচনে হেরে গিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন যুক্তি দাঁড় করেছেন: পীরজাদা হারুন


প্রকাশ: 31/01/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে উত্তাল এফডিসি। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) ছিল শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এদিন এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি চলচ্চিত্রের ১৭টি সংগঠনের সদস্যদের। এ বিষয়টি অপমানজনক দাবি করে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনকে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৭ সংগঠন।

এরপর (৩০ জানুয়ারি) প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করে চিত্রনায়িকা নিপুণ জানিয়েছেন, ভোটের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন তার কাছে দুটি চুমু চেয়েছিলেন। এ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এসব বিষয় নিয়ে কথা বললেন পীরজাদা শহীদুল হারুন।

চিত্রনায়িকা নিপুণ অভিযোগ করেছেন তার কাছে আপনি দুটি চুমু চেয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাই-

পীরজাদা শহীদুল হারুন: এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। কারণ তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন, সেই সময় সেখানে দুই প্যানেলের লোক উপস্থিত ছিল। বেশ কিছু চ্যানেলের লোকও ছিল। এমন জায়গায় প্রকাশ্যে কোনো সুস্থ লোক এমন কথা বলবে বলে আমার মনে হয় না। তার সাথে পারিবারিক দিক দিয়ে আমার অন্য রকম সম্পর্ক। সে আমাকে আঙ্কেল বলেন। আমি তাকে মামুনি বলি। এ ধরনের কথা বলার মতো সেখানে সুযোগ ছিল না। নির্বাচনে হেরে গিয়ে মানুষ কিন্তু ভেঙে পরে। হয়ত সেই কারণে একটু যুক্তি দাঁড় করিয়েছে। একটা মিথ্যাকে এভাবে প্রচার করা ঠিক না।

মিথ্যা প্রচার করে তার লাভ কী?

পীরজাদা শহীদুল হারুন: হয়ত কারো বুদ্ধিতে এমনটা করেছে। তবে আর একটু বিষয় যোগ করতে চাই যে, ফলাফল ঘোষণার পর তিনি আপিল করেছিলেন সেখানেও পূর্বের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে আপিল বোর্ড জানিয়েছে। নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপি হয়নি। সুস্থ নির্বাচন হয়েছে।

নির্বাচনের হেরে গিয়ে নিপুণের এমন অভিযোগ? 

পীরজাদা শহীদুল হারুন: নির্বাচনের আগের দিন রাতেও নিপুণ বলেছিল তারা নির্বাচন কমিশনের পুরো কার্যক্রমে সন্তুষ্ট। তাদের যেসব আবেদন ছিল তা সবই রেখেছি। এবারই প্রথম সমিতির দুটি রুম আমাদের দখলে ছিল। সেটি কিন্তু নিপুণদের আবেদনে করা। সিসি ক্যামেরা আমার সামনে রাখার দাবি করে সেটিও রেখেছি। ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলেছে সেটিও করেছি। তাদের সব দাবি মেনে নিয়েছি। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এফডিসি কর্তৃপক্ষ শর্ত দিয়েছিল যে, শুধু মাত্র ভোটার ও এ কাজে সংশ্লিষ্ট ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। তাদের শর্তে পুরো সিদ্ধান্ত আমরা তিন জন মিলে নিয়েছি। নির্বাচন সহায়ক তিন জন পরিচালক সমিতির সদস্য ছিল। শর্তের কারণে যা করা দরকার তা করেছি।

চলচ্চিত্রের ১৭ সংগঠন আপনাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে মন্তব্য? 

পীরজাদা শহীদুল হারুন: তাদের অভিমান করার যুক্তি আছে। পূর্বের নির্বাচনে সবাই প্রবেশ করতে পেরেছিল। কিন্তু এবারের নির্বাচনে করোনার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। আমি তাদের জায়গায় থাকলে আমিও অভিমান করতাম। তবে করোনার কারণে এফডিসির কর্তৃপক্ষের শর্তে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আলোচনা করার পর সিদ্ধান্ত হয় কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। যেহেতু আমাকে শর্ত দিয়েছে সে অনুযায়ী কাজ করেছি।

মিশা-জায়েদ প্যানেলের পক্ষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগটি কিভাবে দেখছেন?

পীরজাদা শহীদুল হারুন: তিন নির্বাচন কমিশন মিলে আমরা সকল সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাউকে একটি পাশ কার্ড বেশি দেওয়া হয়নি। আমরা কিন্তু দুই প্যানেলের জন্য খাবারের আয়োজন করেছি। কেউকে বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি। এ অভিযোগ সঠিক নয়। ৭টি করে দুই প্যানেলকে ১৪টি পাশ দিয়েছি নির্বাচন সহায়ক হিসেবে। এর বাইরে কোনো পাশ দেওয়া হয়নি। সাপোর্ট নিলে মিশা-জায়েদ পুরো প্যানেল পাশ করত। চারটি কেন করবে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। অভিযোগ গ্রহণযোগ্য কম আছে এই কারণে যে, সম্পাদকীয় যে দশটি পদ ছিল তার ছয়টি নিপুণের প্যানেলের পাশ করেছে। যদি কারচুপি হতো তাহলে বাকি চারটিও মিশা-জায়েদের পক্ষে যেত। অথবা বাকি ছয়টি তাদের পক্ষে যেত। একটি মাত্র প্যানেলে কারচুপি করা যায় না। তার নির্বাচনের দিনও বলেছেন সুস্থ নির্বাচনের কথা। আমি নিজেও বলছি এবার শতভাগ সুস্থ নির্বাচন হয়েছে।

নির্বাচনের দিন জায়েদ খান টাকা দিয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। আপনি ওইদিন কোনো অভিযোগ পেয়েছিলেন? 

পীরজাদা শহীদুল হারুন: নিপুণ একটি অভিযোগ করেছিল তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা নেই। কিন্তু সেখানে গিয়ে টাকা লেনদেনের কিছু পাওয়া যায়নি। সেখানে দুই প্যানেলের লোকই দাঁড়িয়েছিল। অভিযোগের পর তাদের সবাইকে সরিয়ে দিয়েছি। অভিযোগের সাথে সাথে ব্যবস্থা নেই।

একটি পদে নির্বাচন করা যায়?

পীরজাদা শহীদুল হারুন: না। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে একটি পদের জন্য এমন কোনো নির্বাচন হতে দেখিনি। এমন কোনো নজির আমাদের দেশে নেই। পুনরায় নির্বাচন হতে হলে আদালতের নির্দেশে পুরো প্যানেল নিয়েই নির্বাচন করতে হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭