কালার ইনসাইড

রিমেক - নকলের তফাৎ?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 10/12/2017


Thumbnail

আমরা কী নকল আর রিমেকের পার্থক্য বুঝি? এ ক্ষেত্রে ভারতের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উদাহরণ টানতে পারি। দক্ষিণী ছবি থেকে প্রায়ই বলিউড কিংবা টালিউডে রিমেক হয়। ভারতের দক্ষিণ থেকে ছবির রাইট কিনে এনে সেগুলা রিমেক করা হয়। অনেক সময় দেখা যায় একই পরিচালক একই ছবি হিন্দি, তামিল, তেলেগু তিনটা ভাষায় তিনবার রিমেক করেছে। উদাহরণ হিসেবে ‘এক দিওয়ানা থা’ হিন্দী ছবিটি ২০১২ সালে মুক্তি পায়, যা ছিল ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া তামিল মুভি ‘ভিন্নাইথান্ডি বারুবায়া’এর রিমেক। যা আবার একসঙ্গে শুটিং হয়েছে তেলেগু ভার্সনের সাথে, মুভির নাম ‘ইয়ে মায়া চেসবা’। তিনটি ছবির পরিচালক একই গৌতম মেনন।

অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘হলিডে’ ছবিটিও ২০১২ সালের তামিল মুভি ‘টুপাক্কি’র রিমেক, কিন্তু ছবি ২টার পরিচালক একই এ আর মুরগাদোস। ছবিটি আবার কলকাতায় রিমেক করা হয়েছে। জিত-শুভশ্রি অভিনীত ছবিটির নাম ‘গেইম’। কলকাতায় বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফল ছিল সিনেমাটি। নকল করে এত বাণিজ্য আর ইনভেস্টের সিনেমা নিয়ে কিন্তু পার পাওয়া যায় না।

কলকাতায় বাণিজ্যিক ঘরানার বেশিরভাগ সিনেমাই তামিল ও তেলেগু ছবির কপিরাইট কিনে এনে রিমেক করছে। যেমন দেবের যোদ্ধা, যা রামচরণের তেলেগু হিট ফিল্ম মাগাধিরার রিমেক। যে ছবি বেশিরভাগরই হিন্দি ডাব ভার্সন দেখা সনি ম্যাক্স এর কল্যাণে। কিন্তু তারপরও তারা এই ছবিতে কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করেছে। কারণ তারা জানে রিমেক জেনেও তাদের দর্শক এগুলা দেখতেআসবে, কারণ তাদের রিমেকেরও স্টান্ডার্ড মান থাকে। রিমেক মানে গল্পটা নিয়ে দর্শকের সামনে সেদেশের উপযোগী করে উপস্থাপনা করা। রিমেক মানে জগাখিচুড়ী বস্তাপচা কিছু নয়। রিমেক ছবির গানওসুপার ডুপার হিট হয়!

হৃত্বিক ও ক্যাটরিনার ‘ব্যং ব্যং’ সিনেমাটি টম ক্রুজ ও ক্যামেরন ডায়াজ অভিনীত নাইট অ্যান্ড ডের অফিসিয়াল রিমেক।

বাংলাদেশে কি হয়? সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ। প্রথমত তারা জঘন্যভাবে রিমেক করে। দ্বিতীয়ত রিমেক করতে গিয়ে কোনো অনুমতি নেয় না। প্রথম অস্বীকার, বলে সিনেমাটি মৌলিক। যখন ধরা খেয়ে আর উপায় থাকে না, তখন বলে অনুপ্রাণিত। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো কোনো কোনো বাংলা সিনেমায় কাটপিস ব্যাবহার করা হয় বাইরের সেসব সিনেমা থেকে। দর্শককে কত বড় বোকা বানানোর চেষ্টা! পরিচালকদের মনে রাখতে হবে, দর্শক বোকা না। পরিচালকরা নিজেরা ধোঁকাবাজ।

তাহলে কি বাংলাদেশে যথাযথ রিমেক হওয়া সম্ভব নয়? ঠিকই আছে। মনে আছে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির কথা? হিন্দী ছবি ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তক’ ছবির স্বত্ব কিনে বাংলাদেশি ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি নির্মাণ করা হয়। হ্যাঁ স্বত্ব কিনে এনে সোহানুর রহমান সোহান এই ছবিটা বানিয়েছিলেন। ছবিটি সবাই ভালবেসেছিল। আজও আলোচনায় সেই সিনেমা। একটি জনপ্রিয় সিনেমা হিসেবেই মানুষ আজও মনে করে। বেচে থাকলে সালমান শাহ গর্ব করে বলতেন ছবিটার কথা। মৌসুমী ঠিকই গর্ব করে বলেন।

প্রসঙ্গটা হলো, ছবির স্বত্ব এনে ভালো করে রিমেক করলে মানুষ অবশ্যই বাহবা দিবে। কিন্তু তা না করে নকল ছবি নিয়ে বড় গলা করলে সেটা-`চোরের মার বড় গলা বলে’ ছাড়া কিছুই নয়।অবাক করা বিষয় ডিজিটাল এ যুগে, যেখানে দুনিয়ার কোন অঞ্চলের সিনেমা দেখা বাদ থাকে না সিনেমাপ্রেমীদের।সেখানেও বাংলাদেশি পরিচালকরা সিনেমা নকল করে যাচ্ছে। তা স্বীকারও করছে না। নানা রকম অজুহাত দাড় করাচ্ছে যখন তা চুরি বলে দর্শকের কাছে ধরা খাচ্ছে।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭