ইনসাইড গ্রাউন্ড

টাইগারদের এই হতশ্রী পারফরমেন্সের শেষ কোথায়?


প্রকাশ: 17/06/2022


Thumbnail

বাংলাদেশ দল এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করছে। সেখানে তারা একটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবে। এরই মধ্যে গতকাল অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্ট শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অনেকে আশায় বুক বেঁধেছিল যে, সাকিব আল হাসান এখন অধিনায়ক। ফলে ভালো একটা কিছু তো বাংলাদেশ করবেই। কিন্তু অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিনে সেই আশার গুড়ে বালি। অ্যান্টিগায় টেস্টও বাংলাদেশের হতশ্রী পারফরমেন্সই ধরা দিয়েছে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৩ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। ছন্নছাড়া ব্যাটিং যাকে বলে আর কি। তবে উইন্ডিজের পেসাররা যেমন দাপট দেখিয়েছেন, পরে বল করতে নেমে একইরকমভাবে চোখ রাঙিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান-এবাদত হোসেনরা। তবে দিন শেষে ব্যাটিং ব্যর্থতার সঙ্গে আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে একাধিক ক্যাচ মিসের জন্য। শুধু তাই নয়, এই ম্যাচেও বাংলাদেশ শূন্যের রেকর্ড করেছে। ফলে এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে এই হতশ্রী পারফরমেন্সের শেষ কোথায়?

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। তবে শুরুটা একদম ভালো করতে পারেনি টাইগাররা। একের পর এক উইকেট হারিয়ে বিপাকে সাকিব বাহিনী। ৪৫ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৩২ ওভার ৫ বলে ১০৩ রান করতেই সব উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। ১০ ব্যাটারের মধ্যে মাত্র তিনজন দুই অঙ্কের রানের দেখা পান।  বাকি সাত ব্যাটারের মধ্যে এক অঙ্কের ঘরে মাঠ ছেড়েছেন ছয়জন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫টি দলের এক ইনিংসে ৬ ব্যাটারের ডাক মারার ঘটনা রয়েছে। তবে লজ্জাটা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশের। কারণ, বাংলাদেশের সঙ্গে ৩ বার এমন ঘটনা ঘটেছে। তাও আবার ব্যাক টু ব্যাক ২ টেস্টে। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোনো দলই একাধিকবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি। মজার বিষয় হলো প্রতিপক্ষকে সবেচেয়ে বেশি এমন লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখন পর্যন্ত ক্যারিবীয়রা দুই দলকে তিনবার এমন বাজে পরিস্থিতির সামনে দাঁড় করিয়েছে। তিনবারের ভেতর দুবার বাংলাদেশ। ১৯৮০ সালে প্রথম দল হিসেবে এই রেকর্ডের দাবিদার হয় পাকিস্তান। প্রতিপক্ষ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এই হতশ্রী পরফরমেন্সে ক্ষোভও ঝেড়েছেন নতুন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এমন হতশ্রী ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যা নেই অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের। জানালেন, আসলে ব্যাটসম্যানদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। তাদের কাজটা তাদেরই করতে হবে। কেউ এসে তাদের মুখে তুলে খাইয়ে দিয়ে যাবে না। সাকিব বলেন, কোনোভাবে ব্যাখ্যা করার কোনো সুযোগই দেখি না। আমার কাছে কোনো ব্যাখ্যা নেই। আমি জানি না অন্য কারো কাছে আছে কি না। সাধারনত যেটা হয়, কোচ-অধিনায়কের কাজটা সহজ। ধরুন কেউ পারফর্ম করল না, তাকে বাদ দিয়ে দেই। সবচেয়ে সহজ কাজ কোচ, অধিনায়ক ও নির্বাচকদের। তুমি পারফর্ম করছ না, বাদ দিয়ে দিলাম। এতেই বোঝা যাচ্ছে এই হতশ্রী ব্যাটিং তিনিও নিতে পারছেন না। 

ক্রিকেট বিশ্লেষকদের মতে, এটা আসলেই বাংলাদেশ দলের জন্য লজ্জার। কারণ ব্যাক টু ব্যাক ২ টেস্টে ৬ জন ব্যাটার ০ রানের আউট হয়েছে। তাও আবার টেস্টে। এটা মেনে নেওয়া কঠিন। এছাড়াও ক্যাচ মিসও করেছে বাংলাদেশ। নইলে হয়তো দিন শেষে ভালো অবস্থানে থাকতে পারতো টাইগাররা। কিন্তু এখন বিষয়টিকে কোনোভাবেই ভালো বলা যাচ্ছে না। কেউই ব্যাটিং এ ভালো করতে পারছেন না। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই সাজঘরে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ‘গোল্ডের ডাক’ সঙ্গী করে ফেরেন এই ডানহাতি। অফ ফর্মে ভোগা নাজমুল হাসান শান্তর পরিণতি একই। ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে নেতৃত্ব ছাড়া মুমিনুল হকও বৃত্ত ভেঙে বের হতে পারেননি, আগের দুইজনের মতো শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন। বিষয়গুলোতে আরও নজর দিতে হবে কোচদের। কারণ এই বিষয়গুলো ঠিক করার জন্য তাদেরই সবথেকে বেশি কাজ করতে হবে। তাহলেই এই হতশ্রী পারফরমেন্সের শেষ দেখতে পাবে বাংলাদেশ। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭