ইনসাইড বাংলাদেশ

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে কূটনীতিক পাড়ায় চাঞ্চল্য


প্রকাশ: 12/10/2022


Thumbnail

সুশীলরা উৎসুক্য। নির্বাচন কমিশন আজ গাইবান্ধার-৫ আসনে উপ-নির্বাচনের ভোট বন্ধ করেছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় আরপিওর ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই সিদ্ধান্ত কূটনীতিক পাড়ায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নাই, নির্বাচন কমিশন সরকারের লেজুড় কিংবা নির্বাচন কমিশন সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে- এরকম অভিযোগগুলো যারা প্রতিনিয়ত দূতাবাসগুলো যেয়ে করতেন সেই অভিযোগগুলো বড় রকমের ধাক্কা খেয়েছে নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে। এখন কূটনীতিক মহল এই সিদ্ধান্তের বিভিন্ন দিকগুলো পর্যালোচনা করছে। কেন নির্বাচন কমিশন ধরনের সিদ্ধান্ত নিল? তা তারা বিচার-বিশ্লেষণ করছে। এটি তাদের মধ্যে একটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি করছে। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে আলাপ করলে তারা কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। তবে অত্যন্ত দুইটি দেশের কূটনীতিকরা বলছেন, তারা সবসময় প্রত্যাশা করে জনগণ তাদের যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে তার প্রতিফলন যেন নির্বাচনে ঘটে। তারা একটি সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। 

নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় তাহলে তাহলে নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত এবং নির্বাচন কমিশনের পর্যাপ্ত সেই ব্যাপারে ক্ষমতা আছে কিনা সেটিও কূটনীতিকরা বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। সেই রকম অনেকগুলো প্রশ্নের জবাবে তারা পেয়েছেন। তবে কূটনীতিক পাড়ায় এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। গাইবান্ধার-৫ আসনের উপ-নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলেনি এবং এই নির্বাচনে জয়-পরাজযয়ের ওপর জাতীয় রাজনীতিতে কোনো কিছুই ঘটত না। এ কারণে এটি নির্বাচন কমিশনের জন্য ঝুঁকি বিহীন নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশন ইচ্ছা মতো তার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে কি নির্বাচন কমিশন এ রকম চাপ মুক্ত থাকবে? এই বিষয়টি কূটনীতিকরা বিশ্লেষণ করছেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমা দেশের একজন কূটনীতিক বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি দেখেছি। সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার কারণে নির্বাচন কমিশন ভোট বন্ধ করতেই পারে। এটি নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা। কিন্তু আমরা পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবো এবং পরবর্তী নির্বাচন কিভাবে হয় সে ব্যাপারেও আমরা নজর রাখব। তবে অন্য একটি দেশের কূটনীতিকরা বলছেন যে, এটি একটি উপ নির্বাচন, একটিমাত্র আসনের নির্বাচন। কাজেই ৩০০ আসনের নির্বাচন কমিশন কিভাবে সামাল দিতে পারবে সেটিও আমাদের বিচার বিশ্লেষণ করতে হবে। তবে কোনো কোনো দেশের কূটনীতিকরা মনে করছেন যে, নির্বাচন কমিশনকে আস্থায় আনতে, নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্যই এই রকম একটি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন একটি ফাঁদ পাতলো কিনা তাও বিচার বিশ্লেষণ করা দরকার বলেও কোনো কোনো দেশের কূটনীতিকরা মনে করছে। 

অন্যদিকে সুশীল সমাজ এই নির্বাচন স্থগিত ঘটনাটিকে অন্য চোখে দেখছে। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন যে,  একটি নির্বাচনে জেতার জন্য ক্ষমতাসীন দল এতো মরিয়া হয়, তখন জাতীয় নির্বাচনে তারা কি করতে পারে তা বলাই বাহুল্য। আর এ কারণেই গাইবান্ধা নির্বাচনের তাৎপর্য বিশ্লেষণ নানামুখী এবং বহুমাত্রিক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নির্বাচন স্থগিত করার ফলে লাভ-ক্ষতির হিসেব নিকেশে কে আসলে লাভবান হলো তা বুঝতে আরও সময় লাগবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭