ইনসাইড গ্রাউন্ড

স্টয়নিসের তান্ডবে লন্ডভন্ড লঙ্কানরা


প্রকাশ: 25/10/2022


Thumbnail

মার্কাস স্টয়নিসের ব্যাটিং দেখে মনে হতে পারে কোন টিভি পর্দায় কোন পুরনো ম্যাচের হাইলাইটস চলছে। বিভ্রান্ত হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়, কেননা বেছে বেছে বাউন্ডারিগুলো যে দেখানো হয় হাইলাইটসে। তবে এটি কোন ম্যাচের হাইলাইটস নয়, অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সুপার টুয়েলভ ম্যাচের লাইভ এটি। যেখানে এক স্টয়নিস ঝড়ে উড়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। তার অতিমানবীয় ইনিংসের কল্যাণে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে আসরের প্রথম জয় পেলো অস্ট্রেলিয়া।

পার্থ স্টেডিয়ামে সুপার টুয়েলভ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা। টস জিতে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ের পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। এই ম্যাচটি ছিলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের জন্য টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াই । ম্যাচের শুরুতেই ফর্মে থাকা কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে সেই কথার সমর্থন দেয় স্বাগতিকরা। তবে পাথুম নিশাঙ্কা ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এগিয়ে নেন দলকে। অ্যাডাম জাম্পার পরিবর্তে একাদশে ঢোকা অ্যাস্টন অ্যাগারের শিকার হয়ে দলীয় ৭৫ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন ডি সিলভা। ৯৭ রানে রান আউটে কাটা পড়েন নিশাঙ্কাও। এরপরই আবার ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায় অজিরা। 

২৩ রানের ব্যবধানে অজি বোলাররা তুলে নেন রাজাপাকশে, অধিনায়ক শানাকা ও হাসারাঙ্গার উইকেট। মিডল অর্ডারের এই ধস বড় সংগ্রহের পথে বাঁধা হয়ে দাড়ায় শ্রীলঙ্কার জন্য। একাই যতটুকু লড়াই চালিয়ে গেলেন চারিথ আশালঙ্কা। তার ২৫ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি পায় দল। ঠিক ওয়ানডে মেজাজে খেলা নিশাঙ্কার ব্যাট সর্বোচ্চ থেকে আসে সর্বোচ্চ ৪০ রান। নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৫৭ রান তুলতে পারে লঙ্কানরা।

এ ম্যাচে ৭জন ভিন্ন ভিন্ন বোলারকে আক্রমণে আনেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। ১টি করে উইকেট নেন হ্যাজেলউড, কামিন্স, স্টার্ক, অ্যাস্ট অ্যাগার ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দীর্ঘদিন পর বোলিং করা মিচেল মার্শ ও মার্কাস স্টয়নিস ছিলেন উইকেট শূন্য।

স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের শুরুটা ছিলো সাদামাটা। এ ম্যাচও ব্যাট হাতে ব্যর্থ ডেভিড ওয়ার্নার। মাহেশ থিকসানার বলে শানাকার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেন মাত্র ১১ রান। মিচেল মার্শকে নিয়ে একটু একটু করে এগোতে থাকেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। দলীয় ৬০ রানে বিদায় নেন মিচেল মার্শ। ক্রিজে এসে ম্যাক্সওয়েল শুরু থেকেই চড়াও হন লঙ্কান বোলারদের উপর। ১১তম ও ১২তম ওভারে যথাক্রমে এক ও দুই রান দিয়ে চাপ সৃষ্টি করেন অজিদের উপর। বাউন্ডারি লাইনে আশেন বান্দারার দারুণ এক ক্যাচে ১২ বলে ২৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ম্যাক্সওয়েলও। এরপরই মাঠে নামেন স্টয়নিস।

স্ট্রেইন ইনজুরি থেকে ফেরার পর ব্যাটে হাতে দ্যুতি ছড়াতে পারছিলেন না মার্কাস স্টয়নিস। তবে দলের বাঁচা মরার লড়াইকে প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তুলে নেন ৩টি বাউন্ডারি। খানিকটা চাপমুক্ত হয় স্বাগতিকরা। তখনো কেউ ভাবতে পারেনি লঙ্কানদের জন্য কি অপেক্ষা করছে! স্টয়নিসের এই আগ্রাসী মনোভাব দেখে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক বল তুলে দেন চলতি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হাসারাঙ্গার হাতে। সে ওভার থেকে ১৯ রান তুলে নেন স্টয়নিস। পরের ওভারে বোলিং এ আসেন আরেক স্পিনার মাহেশ থিকসানা। আগে দুই ওভার বল করে মাত্র ৩ রান দেয়া থিকসানার এই ওভারে ৩টি ছয় হাকিয়ে নামের পাশে আরো ২০ রান যোগ করেন তিনি। এতেই ১৭ বলে অর্ধশতক তুলে নিয়ে অজিদের ইতিহাসে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েন স্টয়নিস। 

তার ৬ ছক্কা ও ৪ বান্ডারিতে ২১ বল হাতে রেখই জয় নিশ্চিত করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ১৮ বলে ৫৯ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন স্টয়নিস। এ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২ পয়েন্ট ছাড়াও ঋণাত্নক রানরেটও বেশ কমিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

ম্যাচে লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়েছে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা উপর। ওভারপ্রতি ১৭.৬৬ গড়ে ৩ ওভার বল করে ৫৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল বোলার হাসারাঙ্গা। 

আগামী ২৮ অক্টোবর মেলবোর্নে নিজেদর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭