প্রেস ইনসাইড

প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা সচল করার আবেদন


প্রকাশ: 11/11/2022


Thumbnail

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার হত্যা মামলা পুনরায় সচল করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছেন নাইমুল আবরারের বাবা মজিবর রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে এই আবেদন দাখিল করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর এই হত্যা মামলার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে। কিন্তু দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশের ব্যাপারে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি এবং একারণেই নিম্ন আদালতে বিচার কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এখন আবরারের বাবা মজিবর রহমান হাইকোর্টে এই মামলাটি দ্রুত নিষ্পতি করে নিম্ন আদালতে যেনো বিচার কাজ হয় সেজন্য আবেদন করেছেন। 

উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের পহেলা নভেম্বর কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে মারা যান নবম শ্রেণীর ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাত। এই ঘটনায় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের সীমাহিন গাফিলতি এবং দায়িত্বহীনতা ছিলো। এই অভিযোগে ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর আবরারের বাবা মজিবর রহমান প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর মামলা তদন্ত করে পুলিশ এবং ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রথম আলো সম্পাদক, কিশোর আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটের জন্য আবেদন করে পুলিশ। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর জজ কে এম ইমরুল কায়েস আবরার হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ৯ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। একই সঙ্গে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ঐ বছরের ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই হাইকোর্টে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। প্রথম আলো সম্পাদকের এই আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে বিচারপতি রেজাউল হক এবং বিচারপতি আতাউর রহমানের নেতৃত্ত্বে ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার সকল কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই মামলাটি ধামাচাপা পড়ে আছে। আবরারের বাবা মজিবর রহমান এই মামলা যেনো আবার চালু হয় নিম্ন আদালতে সেইজন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অবশেষে গতকাল তিনি হাইকোর্টে যেনো মামলা বাতিলের মতিউর রহমানের আবেদনের শুনানি শুরু হয় সেজন্য আবেদন করেছেন। 

তার আইনজীবীরা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, দীর্ঘ দুই বছর ধরে একটি হত্যা মামলা আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় পরে আছে। আমরা হাইকোর্টে আবেদন করবো। এবং হাইকোর্ট শুনানির পর এই মামলা সম্পর্কে নির্দেশনা দিবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। হাইকোর্ট যদি এই মামলার স্থগিতাদেশ তুলে নেয় সেক্ষেত্রে নিম্ন আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নাইমুল আবরারের বাবা মজিবর রহমান বলেন, ২০১৯ সালে আবরার মারা গেছে। তারপর প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ একের পর এক প্রভাব বিস্তার করছে। এই মামলা যেনো আমি এগিয়ে নিয়ে না যাই সেজন্য আমাকে নানারকম প্রলোভন দেখিয়েছে, ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। কিন্তু আমি আমার পুত্রের হত্যার বিচার চাই। আবেগ আপ্লুতভাবে  মজিবর রহমান বলেছেন যে এই বিচারের শেষ দেখে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চান। 

উল্লেখ্য যে, নাইমুল আবরার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের মেধাবী ছাত্র ছিলো। এ ধরণের হত্যাকান্ডের ঘটনার পর একই মামলা দুই বছর বিচারের অপেক্ষায় থাকা নিয়ে বিভিন্ন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যেখানে যে কোন হত্যা মামলার ব্যাপারে সমাজে একটা আলোড়ন তৈরী হয় এবং বিভিন্ন মহল এ নিয়ে সোচ্চার থাকে সেখানে নাইমুল আবরারের হত্যাকান্ড নিয়ে সব মহল চুপ। কারণ প্রথম আলোর সম্পাদক এর সাথে জড়িত রয়েছে। এ কারণেই এই মামলা নিয়ে কারো কোন উদ্বেগ- উৎকণ্ঠা নেই বলে আবরারের বাবা মনে করেন। তবে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এই মামলাকে তিনি এগিয়ে নিয়ে যাবেন। হাইকোর্টের নিয়ম অনুযায়ী আবেদন এখন নিষ্পত্তি করার জন্য একটি বেঞ্চে দেয়া হবে এবং সেই বেঞ্চ শুনানির দিন তারিখ ঠিক করবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭