ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বৈষম্যের দায়ে পর্যাপ্ত অর্থ আসেনা জলবায়ু ফান্ডে


প্রকাশ: 13/11/2022


Thumbnail

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা সহজ বা সেখানে খরচের তেমন ব্যাপার কেউ বলছে না। জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন কপ-২৭ যখন শুরু হয়েছে তখন এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, লক্ষ্য পূরণের জন্য শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলোরই বছরে প্রয়োজন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বিদেশি ফান্ডিং। এই ফান্ড প্রয়োজন কার্বন নিঃসরণ কমাতে, ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবিলায় ও প্রকৃতিকে আগের জায়গায় ফিরেয়ে নেওয়ার জন্য।

উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ নির্ভরতা থেকে সরে আসতে নভেম্বরে এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়াকে অন্তত ১৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে।

যদিও বিশ্বের ধনী দেশগুলো সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমন করে থাকে, মূলত বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য তারাই দায়ী। কিন্তু এজন্য সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে গরিব দেশগুলো। এখন পর্যন্ত যত কার্বন নিঃসরণ করা হয়েছে তার মাত্র ৩ শতাংশের জন্য দায়ী আফ্রিকা। কিন্ত মহাদেশটির পূর্বাঞ্চল বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরার কবলে পড়েছে। এতে একদিকে যেমন ফসল নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে হুমকির মুখে জীববৈচিত্র।

তাছাড়া অঞ্চলটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যা। এ বিষয় গুলোই কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনের মূল আলোচনা। কারণ তাদের নিঃসরিত কার্বনের কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তার জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করছে উন্নয়নশীল দেশগুলো। জলবায়ুর সঙ্গে যুদ্ধ করতে আফ্রিকার দেশগুলোর বার্ষিক ২৭৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০১৯ ও ২০২০ সালে ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও কম ফান্ড পেয়েছে।

প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে আফ্রিকার প্রায় সব অঞ্চলই অরক্ষিত। কিছু কিছু জায়গার অবস্থা খুবই খারাপ। বর্তমান ফান্ডিংয়ের ৬০ শতাংশ পাচ্ছে সেখানের মাত্র ১০টি দেশ। বাকি ৪০ শতাংশ ভাগ করে দেওয়া হয় ৪৫ দেশে। সবচেয়ে বেশি ফান্ডিং ঘাটতি আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে। এই অঞ্চলটির বছরে প্রয়োজন ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

এসব ফান্ডের অধিকাংশই আসে উন্নয়ন ব্যাংকগুলো থেকে। তবে এগুলো প্রায়ই অনুদান হিসেবে না এসে ঋণ আকারে আসে, যা অনেক সময়ই দুর্বল অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া আফ্রিকার জলবায়ু ফান্ডের মাত্র ১৪ শতাংশ আসে বেসরকারি বিনিয়োগ থেকে, যা অন্য যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে অনেক কম। কারণ উত্তর আমেরিকায় এই হার ৯৬ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ধনী দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ পায়। অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল ও ঋণে আবদ্ধ আফ্রিকার দেশগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্ব পায় না। আফ্রিকায় প্রত্যেক বছর জীবাশ্ম জ্বালানিতে বেসরকারি বিনিয়োগ পায় ২৯ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ক্লিন এনার্জিতে পায় মাত্র ৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, জলবায়ু খাতে প্রতি ডলারের বিনোয়োগের বিপরীতে গড়ে চার ডলারের উপকার পাওয়া যায়। ৯ নভেম্বর জাতিসংঘ ৯০ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এসব প্রকল্পের ২০ শতাংশই আফ্রিকায়। যদিও এটা খুব ভালো শুরু তারপরও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭