ইনসাইড পলিটিক্স

ছিঃ ছিঃ ছিঃ, লজ্জা, লজ্জা এবং লজ্জা: নানক


প্রকাশ: 11/01/2023


Thumbnail

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘বিএনপির বন্ধুরা কি বলতে চান? ১০ দফা দিয়েছেন। কিসের ১০ দফা? কারা দেয় এই ১০ দফা, দেশের সংস্কার প্রস্তাব? যারা এ দেশের সেনাবাহিনীর ভেতরে শত শত ক্যু পাল্টা ক্যু করে হাজার হাজার সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর অফিসারকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করেছে। তারা দেয়, দেশে সংস্কার করতে হবে। কারা দেয়? যারা আমাদের দেশের ভোট লুট করে নিয়ে গিয়ে ‘হ্যাঁ-না’ভোট করে ক্ষমতায় এসেছিল। বিএনপির জিয়াউর রহমান ‘হ্যাঁ-না’ ভোট করেছিল। ভোট লাগে নাই, কিন্তু ভোট হয়ে গেছে শতকরা ৯৯ শতাংশ। জিয়াউর রহমান শতকরা ৯৯ শতাংশ ভোট দিয়ে ‘হ্যাঁ-না’ ভোট করেছিলেন।’ 

বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এই দেশে ভোট করেছিল। এই তেজগাঁওয়ে ভোট কেড়ে নিয়েছিল, মাগুরায় ভোট কেড়ে নিয়েছিল। তারা এখন বলে নির্বাচন ব্যবস্থার নাকি সংস্কার করতে হবে। লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়। ছিঃ ছিঃ ছিঃ, লজ্জা, লজ্জা এবং লজ্জা।’

বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর ফার্মগেটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ মহানগর উত্তর আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।  

বিএনপি শাসনকাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা পুলিশ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল, দলীয়করণ করেছিল। যারা সিভিল সার্ভিসকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। সমস্ত চেইন অব কমাণ্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল, তারা বলে সংস্কার করতে হবে। সেদিনের সরকার ছিল হাওয়া ভবনের কাছে বন্দি, তারেক রহমানের কাছে বন্দি। হাওয়া ভবন দ্বারা সরকার পরিচালিত হতো। সেই হাওয়া ভবন থেকেই সরকারের পৃষ্ঠপোশকতায় ২১ আগস্ট গ্র্যানেড হামলা চালিয়েছিল, আমাদের প্রাণের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। আমরা ভুলে যাইনি। বাংলার জনগণও ভুলে যায়নি। সেই বিএনপি ক্ষমতাকে ব্যবহার  করে আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করেছিল। এমএস কিবরিয়াকে হত্যা করেছিল। তারা হত্যার লীলাভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল।’
              
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘১০ই জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে। বঙ্গবন্ধু তখন বন্দি ছিলেন পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে, মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। তখন আমাদের কণ্ঠে ছিল জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান। বাঙালি জাতি ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায়, আমরা তখন বিজয় অর্জন করেছিলাম ১৬ ডিসেম্বর। সে বিজয় অর্জন হলেও আমরা সেদিন স্বস্থিতে থাকতে পারিনি। আমরা সেদিন শান্তিতে থাকতে পারিনি। কারণ আমাদের জীবনে ছিল স্বাধীনতা এবং বিজয় অর্জনের এক বিশাল অপূর্ণতা। সেই অপূর্ণতা ছিল বঙ্গবন্ধু মুজিব আমাদের মাঝে নেই, বঙ্গবন্ধু মুজিব তখন পাকিস্তানের কারাগারে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। আমার মুসলমান ভাই-বোনেরা জায়নামাজে দাঁড়িয়ে কান্নায় জায়নামাজ ভিজিয়ে ফেলেছিল, কোরআন শরীফের অজিফা পড়তে গিয়ে কোরআন শরীফের অজিফার পৃষ্ঠা ভিজিয়ে ফেলেছিল চোখের পানিতে। আমার হিন্দু মা-বোনেরা তুলশীতলায় গিয়ে প্রার্থনা করেছে, তাদের মুজিব যেন বাংলার মাটিতে ফিরে আসতে পারে। জীবিত অবস্থায় যেন ফিরে আসতে পারে।’

নানক বলেন, ‘আমাদের কৃতজ্ঞতা শ্রীমতি গান্ধীকে। তারা (পাকিস্তানিরা) তখন বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসি দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর কারাগারের সামনেই তাঁর কবর খোড়া হয়েছিল তাঁকে কবর দেওয়ার জন্য। কিন্তু শ্রীমতি গান্ধী বিশ্বের ৭৩টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে বঙ্গবন্ধু মুজিবকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি জরুরী বার্তা পাঠিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন, তার স্বদেশ ভূমিতে। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার যাত্রা শুরু করলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মুক্তিযুদ্ধকে দুই কুকুরের লড়াই হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল, তারাও বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারে নাই। তারা বঙ্গবন্ধুর শাষনের তীব্র বিরোধীতা করেছে, তীব্র প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তারপরেও বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ ৯.১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে পৃথিবীতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। সেই বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু যখন বাঙালি জাতির অন্নের অধিকার, বস্ত্রের অধিকার, শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যাত্রা করেছিলেন, তখনই বঙ্গবন্ধু মুজিবকে হত্যা করলো। কারা হত্যা করলো? যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, যারা সেদিন সপ্তম নৌ-বহর পাঠিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে মুক্তিযুদ্ধকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিল, সেই আন্তর্জাতিক শক্তিই পরাজিত হয়ে, সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ফজলে শামস পরশ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম,যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ। এর পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অয়োজন করা হয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭