ইনসাইড টক

‘হিরো আলম সহজেই সমাজের নিম্নবর্গের লোকজনের সমর্থন পেয়েছেন’


প্রকাশ: 02/02/2023


Thumbnail

আমাদের মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষ্যমতে ভোটার উপস্থিতি ২৫ শতাংশ। গত ৩০ বছরের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, গত উপ-নির্বাচনগুলোতে ভোটারদের উৎসাহ উদ্দীপনা কম ছিল। এর প্রধান কারণ হচ্ছে মেয়াদের শেষের দিকে উপ-নির্বাচন অুনষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনের জয়-পরাজয়, কোন অবস্থাতেই সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ করে না। এটা হচ্ছে ভোটার উপস্থিতি কম থাকার প্রধান কারণ।

গতকাল বুধবার ( ফেব্রুয়ারি) বিএনপির পদত্যাগ করা আসনে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া উপ-নির্বাচন নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় প্রফেসর . নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য প্রফেসর . কলিম উল্লাহ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান খান।

উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রফেসর . কলিম উল্লাহ বলেন, প্রথমত, মেয়াদের শেষের দিকে উপ-নির্বাচন অুনষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনের জয়-পরাজয়, কোন অবস্থাতেই সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ করে না। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যত উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, প্রায় সবগুলোই ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। এই নির্বাচন পরবর্তীকালে প্রার্থীরা কতটুকু অবদান রাখতে পারবে সেটা নিয়ে একটি সংশয় থেকেই যায়। এটি আরেকটি কারণ। তৃতীয়ত মনে রাখতে হবে, ছয়টি আসন বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসন। তাদের পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা এই সংসদে থাকবে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বিএনপির টিকিট ছাড়াই সাবেক বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি তার দল থেকে পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু ব্যক্তি মানুষটাতো ওই ব্যক্তিই রয়ে গেছেন। সেটাও একটি কারণ।

বগুড়া- আসনে প্রথম দিকে হিরো আলম এগিয়ে থাকলেও পরে হিরো আলম হেরে মন্তব্য করেছেন যে, নির্বাচনের ফলাফল চুরি হয়েছে। এই অভিযোগটা কতটা সত্যি? - বিষয়ে তিনি বলেন, এই জায়গাটা ঐতিহাসিকভাবেই ডান ধারার লোক অধ্যুষিত এবং তার ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ব্র্যাক যখন সেখানে তুত গাছ লাগিয়েছিল; তারা এতোটাই ইমোশোনাল যে, তারা সেই তুত গাছ ছিড়ে ফেলেছিল, জায়েজ নয়- এই বিবেচনায়। আমি পরবর্তীতে জায়গাটা ঘুরে দেখেছি। মাগুরার যে উপ-নির্বাচনটি হয়েছিল বিএনপির আমলে, তার মাস দুই/তিন পরে, বগুড়া উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই উপ-নির্বাচন আমি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলাম এবং পরিবেশ পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে যে, দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতাই এখনো বজায় আছে। সেখানে যেহেতু বিএনপি নির্বাচন করছে না, তাই হিরো আলম একটি পপুলার ফিগার হওয়ায় সহজেই নিম্নবর্গের মানুষদের সমর্থন পেয়েছিল। তিনি যেহেতু একজন পাবলিক ফিগার, এই ইমেজটি তিনি ব্যবহার করেছিলেন। ফলে সেই বিবেচনায় আমার মনে হয, তিনি ভালোই ভোট পেয়েছেন। তবে আসলে ব্যক্তি আর দল দুটোর মধ্যেতো গুণগত পার্থক্য আছে। এখানে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হয়েছে, সেখানে বুকে হাত দিয়ে বলা যাবে না যে, ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কলিম উল্লাহ বলেন, আমি তাকে (হিরো আলম) সম্মান করি। তিনি এটা বলতে পারেন, সমাজের নিম্নবর্গের একজন মানুষ তিনি এবং তিনি নির্বাচনে জয় লাভ করতে চাইছেন, এটি একটি শ্রেণির মানুষ হয়তো নাও চাইতে পারে, যদি সমাজের শ্রেণিভুক্ত মানুষজনের বিচার বিশ্লেষন আমরা করতে চাই। তবে তিনি যে যুক্তি দাড় করিয়েছেন যে শিল্পী মমতাজ যদি তৃণমূল থেকে ওঠে এসে সংসদে থাকতে পারেন, তবে উনি পারবেন না কেন? এটা হচ্ছে তার যুক্তি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, একই সঙ্গে তিনি দুইটি আসনে দাড়িয়েছেন, ফলে তার মনোযোগ দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে এবং তার যে চেষ্টা সেটাও কিন্তু সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি যদি শুধুমাত্র বগুড়া- আসনেই চেষ্টা করতেন- আমার ধারনা আরও হয়তো ভালো করতে পারতেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭