ইনসাইড বাংলাদেশ

রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের ভাবনা?


প্রকাশ: 03/03/2023


Thumbnail

বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলন করছে। যদিও এই আন্দোলনে পশ্চিমা কূটনীতিকদের এখন পর্যন্ত সায় নেই। কিন্তু কূটনীতিকরা মনে করছেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া উচিত এবং আই লক্ষে বিএনপিরও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। এ লক্ষে কূটনীতিক পাড়ায় এক ধরনের তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। আগামী নির্বাচন একটি সমঝোতাপুর্ন জায়গায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বিভিন্ন মহল থেকে। আর এই চেষ্টার অংশ হিসেবে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা যায় কিনা এরকম একটি প্রস্তাব বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে দির্ঘদিন আলোচনা হচ্ছিল বলে বিভিন সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। আর সেই প্রেক্ষাপটেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এবার চমক দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি করার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো আগামী নির্বাচন।

২৪ এপ্রিল নতুন রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। তার নেতৃত্বেই এই বছরের ডিসেম্বরে অথবা আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদিও সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির পদটি অলংকারিক, কিন্তু নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতির পদ নানা কারণেই গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠে। এবার নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতির পদ আরও গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠতে পারে বলে একাধিক সূত্র মনে করছে। বিশেষ করে যখন বিরোধী দল নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলন করছে  তখন রাষ্ট্রপতির পদটির দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মহল।

বিভিন সূত্রগুলো বলছে রাজনৈতিক সমঝোতার একটি চেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে তত্বাবধায়ক সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে নিষ্ক্রিয় রাখার একটি প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন মহলে কথা বার্তা চলছে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী নিষ্ক্রিয় হয়ে পরবেন, তিনি কোন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিবেন না, এমনকি তার নির্বাচনি এলাকা ছাড়া অন্য কোন নির্বাচনি এলাকায় তিনি সরকারি প্রোটকল ব্যাবহার করতে পারবেন না, নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে হলে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা ব্যাবহার করা চলবে না। অর্থাৎ এক ধরনের নিষ্ক্রিয়ভাবে তিনি নামমাত্র দায়তে পালন করবেন। আর অন্যদিকে এই সময় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, সশস্ত্র বাহিনীসহ সামগ্রিক নির্বাচন পরিচালনার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেখভাল করবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির নির্দেশেই নির্বাচন কমিশন নতুন নির্বাচনের ব্যাবস্থাপনা করবে। এরকম একটি প্রস্তাব নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছিল বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে এবং এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কোন কোন মহল আলোচনা করেছেন। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের বেগ যদি বৃদ্ধি পায় এবং সরকারকে যদি একটি সমঝোতা প্রস্তাবে যেতে হয় তাহলে এরকম একটি সমঝোতা প্রস্তাব সরকারের জন্য শেষ ছাড় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এরকম একটি ছাড় দিতে গেলে একজন বিশ্বস্ত এবং পরীক্ষিত রাষ্ট্রপতি প্রয়োজন, যেটি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেই আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন।

তবে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত আনুস্টহানিকভাবে বলছে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী তারা কোন অবস্থাতেই মেনে নেবে না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটাও বলে হচ্ছে যে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং এই নির্বাচনে কে আসল না আসল এটা তাদের দেখার বিষয় না। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলে হচ্ছে যে, তারা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী আদায় করেই ছাড়বেন।

এরকম একটি অবস্থায় আগামী নির্বাচন যেন অর্থপূর্ণ হয় অংশগ্রহণমূলক হয় সেটি বিবেচনায় রেখেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার বিশ্বস্ততা, আনুগত্য এবং তার ব্যাক্তিত্বকে বিবেচনা করা হয়েছে। এ সমস্ত বিবেচনার প্রধান কারণ হল নির্বাচনকলীন সময় চাপ এবং নানারকম মেরুকরণ।

উল্লেখ্য যে, ২০০৭ সালের নির্বাচনে আগে ইয়াজুদ্দিন ব্যাপক ক্ষমতাবান হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতি হয়ে তিনি তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিত্বহীন হবার কারণে তিনি বিএনপিকে সে যাত্রায় রক্ষা করতে পারেননি। এখন দেখার বিষয় যে, নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সংকট শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে সমঝোতার প্রান্তে পৌছে কিনা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭